তিনসুকিয়া জেলা
তিনসুকিয়া জেলা (অসমীয়া: তিনিচুকীয়া জিলা) আসামের ৩৩টি প্ৰশাসনিক জেলার মধ্যে একটি। এর সদর দপ্তর তিনসুকিয়া। তিনসুকিয়া জেলার আয়তন মোট ৩৭৯০ বৰ্গ কিলোমিটার (১৪৬০ বৰ্গ মাইল)।[১] ১৯৮৯ সনে তিনসুকিয়াকে আসামের ২৩তম জেলা হিসাবে ঘোষণা করা হয়। তিনসুকিয়া, শদিয়া এবং মাৰ্ঘেরিটা এই জেলার তিন মহকুমা।
তিনসুকিয়া জেলা | |
---|---|
আসামের জেলা | |
![]() | |
![]() আসামে তিনসুকিয়ার অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | আসাম |
সদরদপ্তর | তিনসুকিয়া |
মহকুমা | 1. Tinsukia, 2. Sadiya, 3. Margherita, 4. Doomdooma |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্র | 1.Dibrugarh (shared with Dibrugarh district), 2.Lakhimpur (shared with Lakhimpur and Dhemaji districts) |
• বিধানসভা আসন | 1. Tinsukia, 2. Digboi, 3. Doomdooma, 4. Margherita, 5. Sadiya |
আয়তন | |
• মোট | ৩,৭৯০ বর্গকিমি (১,৪৬০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১৩,১৬,৯৪৮ |
• জনঘনত্ব | ৩৫০/বর্গকিমি (৯০০/বর্গমাইল) |
জনতাত্ত্বিক | |
• সাক্ষরতা | ৭০.৯২% |
• লিঙ্গানুপাত | ৯৪৮ মহিলা প্রতি ১০০০ পুরুষে |
প্রধান মহাসড়ক | NH 37, NH 38, NH 153 |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
ইতিহাস
সম্পাদনাতিনসুকিয়া এবং ডিব্রুগড় জেলার বৃহৎ অংশ পূৰ্বে মটক রাজ্য অংশ ছিল। এর রাজধানী ছিল বেংমরা বা চাংমাই পথার।[২]
ভৌগোলিক তথ্য
সম্পাদনাতিনসুকিয়া জেলার আয়তন মোট ৩৭৯০ বৰ্গকিলোমিটার। এর দক্ষিণ-পূর্বে অরুণাচল প্রদেশ, দক্ষিণ-পশ্চিমে ডিব্রুগড় জেলা এবং উত্তর ব্ৰহ্মপুত্ৰই পৃথক করা ধেমাজি জেলা। ব্ৰহ্মপুত্ৰর বাহিরে তিনসুকিয়ার মাঝে লোহিত, বুঢ়ী দিহিং এবং ডিব্ৰু নদী উপনদী বয়ে গেছে। জিলাটির মুখ্য বনাঞ্চলসমূহ হচ্ছে ডিব্রু-শইখোয়া জাতীয় উদ্যান, তরানি সংরক্ষিত বনাঞ্চল, বুঢ়ীদিহিং সংরক্ষিত বনাঞ্চল, দুবারমরা সংরক্ষিত বনাঞ্চল, লক্ষীপথার সংরক্ষিত বনাঞ্চল, কাকজান সংরক্ষিত বনাঞ্চল, ফিল'বারী সংরক্ষিত বনাঞ্চল আদি।
লোকসংখ্যা
সম্পাদনা২০১১ সালের লোকগণনা অনুসারে তিনসুকিয়া জেলার মোট জনসংখ্যা ১,৩১৬,৯৪৮ জন,[৩] প্ৰায় মরিশাস দেশের সমান।[৪]
তিনসুকিয়াতে হিন্দু ধর্মের লোক ১,০২৯,১৪২ জন, খ্রিস্টান ধর্মের লোক ৬২,৪০৩ জন এবং ইসলাম ধর্মের লোক ৪০,০০০ জন আছে।
প্ৰশাসনিক বিভাজন
সম্পাদনাতিনসুকিয়া জেলার সদর দপ্তর তিনসুকিয়া। অন্য দুটা মহকুমা শদিয়া এবং মাৰ্ঘেরিটা। জিলাটির অন্য অন্য নগরাঞ্চলসমূহ হচ্ছে ডিগবৈ, জাগুন, ডুমডুমা এবং মাকুম। জিলাটির বৰ্তমানের উপায়ুক্ত সাম্ভাজী রাও এবং আরক্ষী অধীক্ষক দিগন্ত চেতীয়া।[৫]
অৰ্থনীতি
সম্পাদনাতিনসুকিয়া আসামের এখন উদ্যোগিক জেলা। ডিগবৈত ভারতের ভিতর পুরানো তেল শোধনাগার থাকার পরেও লিডু এবং মাৰ্ঘেরিটা কিছু স্থান কয়লা খনির জন্য বিখ্যাত। জেলাতে থাকা কেইটামান বৃহৎ ঔদ্যোগিক প্ৰতিষ্ঠান হচ্ছে ইণ্ডিয়ান অইল কৰ্প'রেশন, ক'ল ইণ্ডিয়া লিমিটেড, ইউনিলিভার আদি। আসামের এক অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্ৰ হোহবার জন্য এখানে যথেষ্ট পরিমাণে চা, ধান এবং কমলালেবু উৎপাদন হয়।[৬]
যাতায়াত
সম্পাদনাবিমানপথ এবং রেলের তিনসুকিয়া জেলার আসামের অন্যান্য স্থানসমূহের সাথে যোগাযোগের ব্যবস্থা আছে। আসামের রাজধানী দিসপুর-এর থেকে এর পথ দূরত্ব ৫৩২ কিলোমিটার।[৭] ৪০ কিলোমিটার দূরত্বে অৱস্থিত নিকটতম বিমানবন্দর হচ্ছে ডিব্রুগড় মোহনবাড়ি। দিল্লী, কলকাতা এবং গুয়াহাটিতে দৈনিক বিমান চলাচল কর। তিনসুকিয়া জেলার মাঝে তিনটা রাষ্ট্ৰীয় সড়কপথ ৩৭, ৩৮ এবং ১৫৩ পার হয়ে গেছে। সকল পথের মোট দৈৰ্ঘ্য ৩০৮৬.০৬৪ কিলোমিটার।[৫]
শিক্ষা প্ৰতিষ্ঠান
সম্পাদনা১৮৯৭ সনে তিনসুকিয়ার প্ৰথম শিক্ষা প্ৰতিষ্ঠান "আদৰ্শ প্ৰাথমিক বিদ্যালয়" স্থাপন করা হয়েছিল।[২] জেলাটির অবস্থিত অন্যান্য উচ্চ শিক্ষার প্ৰতিষ্ঠান হল:[৮]
- তিনসুকিয়া মহাবিদ্যালয়
- তিনসুকিয়া আইন মহাবিদ্যালয়
- তিনসুকিয়া ছোরালী মহাবিদ্যালয়
- তিনসুকিয়া বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়
- ডুমডুমা মহাবিদ্যালয়
- ডিগবৈ মহাবিদ্যালয়
- ডিগবৈ মহিলা মহাবিদ্যালয়
- মাৰ্ঘেৰিটা মহাবিদ্যালয়
- শদিয়া মহাবিদ্যালয়
- লিডু মহাবিদ্যালয় আদি।
উল্লেখযোগ্য স্থান
সম্পাদনালোহিত, দিবাং এবং ডাঙরী নদীর বুকে থাকা একটা নদী দ্বীপ। এর বিস্তৃতি প্ৰায় ৩৪০ বৰ্গ কিলোমিটার। এখানে প্ৰায় ৩৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্ৰাণী, ৫০২ প্রজাতির পাখি, ১০৪ প্রজাতির মাছ, ৪৩ প্রজাতির সরীসৃপ প্ৰাণী, এবং ৬৮০ প্রকার উদ্ভিদের প্ৰজাতি পাওয়া যায়।[৮] ১৯৯৯ সনে এটিকে রাষ্ট্ৰীয় উদ্যানের স্বীকৃতি দেয়া হয়। বনরীয়া ঘোঁরা এবং দেওহাঁহ-এর জন্য এই উদ্যান বিখ্যাত।
আসামের একখান সেমেকা চিরসবুজ অরণ্য। জিলার দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে অবস্থিত এই অরণ্যের বিস্তৃতি প্ৰায় ৩০০ বৰ্গকিলোমিটার। এখানে হলৌ বান্দর, গাহৰি-নেজীয়া বান্দর, বাঘ, হাতি আদি প্ৰাণী পাওয়া যায়।
গ্যালারি
সম্পাদনাতথ্যসূত্ৰ
সম্পাদনা- ↑ Srivastava, Dayawanti et al. (ed.) (২০১০)। "States and Union Territories: Assam: Government"। India 2010: A Reference Annual (54th সংস্করণ)। New Delhi, India: Additional Director General, Publications Division, Ministry of Information and Broadcasting (India), Government of India। পৃষ্ঠা 1116। আইএসবিএন 978-81-230-1617-7। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-১১।
- ↑ ক খ "The History of Tinsukia"। NIC Tinsukia। ২৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ১৭, ২০১২।
- ↑ "District Census 2011"। Census2011.co.in। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০।
- ↑ US Directorate of Intelligence। "Country Comparison:Population"। ২০১১-০৯-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-০১।
Mauritius1,303,717July 2011 est.
- ↑ ক খ "Tinsukia district administration"। NIC Tinsukia। ১৩ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ১৭, ২০১২।
- ↑ "Economy of Tinsukia District"। IndiaNetzone। মার্চ ৫, ২০১০। সংগ্রহের তারিখ জুন ১৭, ২০১২।
- ↑ "District profile of Tinsukia"। NIC Tinsukia। ২৭ জুলাই ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ১৭, ২০১২।
- ↑ ক খ "Tinsukia district attractions"। Assam Info। সংগ্রহের তারিখ জুন ১৭, ২০১২।