তারকেশ্বর, পশ্চিমবঙ্গ

তারকেশ্বর পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার একটি পুণ্য তীর্থের নাম। এটি উক্ত জেলার চন্দননগর মহকুমার একটি থানাও বটে।[] এই প্রসিদ্ধ হিন্দু তীর্থক্ষেত্রের খ্যাতি সারাদেশে সমাদৃত। রাজ্যের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় শিবমন্দিরটি এই শহরেই অবস্থিত। এই শহর রাজ্যের রাজধানী কলকাতার থেকে ৫৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

তারকেশ্বর
শহর
Baba Taraknath Temple of Tarakeshwar
Baba Taraknath Temple of Tarakeshwar
তারকেশ্বর পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
তারকেশ্বর
তারকেশ্বর
তারকেশ্বর ভারত-এ অবস্থিত
তারকেশ্বর
তারকেশ্বর
পশ্চিমবঙ্গ, ভারতে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°৫৩′ উত্তর ৮৮°০১′ পূর্ব / ২২.৮৯° উত্তর ৮৮.০২° পূর্ব / 22.89; 88.02
দেশ ভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
জেলাহুগলি
সরকার
 • ধরনMunicipality
 • শাসকTarakeswar Municipality
আয়তন[]
 • মোট৩.৮৮ বর্গকিমি (১.৫০ বর্গমাইল)
উচ্চতা১৮ মিটার (৫৯ ফুট)
জনসংখ্যা (2011)[]
 • মোট৩০,৯৪৭
 • জনঘনত্ব৮,০০০/বর্গকিমি (২১,০০০/বর্গমাইল)
Languages
 • OfficialBengaliEnglish
সময় অঞ্চলIST (ইউটিসি+5:30)
Telephone code91 3212
আইএসও ৩১৬৬ কোডIN-WB
Lok Sabha constituencyArambag
Vidhan Sabha constituencyTarakeswar
ওয়েবসাইটwb.gov.in


তারকেশ্বর মন্দিরের প্রবেশদ্বার

শহরটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২২°৫৩′ উত্তর ৮৮°০১′ পূর্ব / ২২.৮৯° উত্তর ৮৮.০২° পূর্ব / 22.89; 88.02[] সমুদ্র সমতল হতে এর গড় উচ্চতা হল ১৮ মিটার (৫৯ ফুট)।

জনপরিসংখ্যান

সম্পাদনা

ভারতের ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে তারকেশ্বর শহরের জনসংখ্যা হল ২৮,১৭৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫৩% এবং নারী ৪৭%। এখানে সাক্ষরতার হার ৭২%। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৮% এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৬৬%। সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৫৯.৫%, তার চাইতে তারকেশ্বর এর সাক্ষরতার হার বেশি। এই শহরের জনসংখ্যার ১০% হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী।[]

অর্থনীতি

সম্পাদনা

তারকেশ্বর কৃষিতে বেশ উন্নত। এই শহরে একাধিক হিমঘর রয়েছে। আলু ও লঙ্কা এখানকার প্রধান ফসল। []

তারকেশ্বর মন্দির

সম্পাদনা

তারকেশ্বর শিবের মন্দির এই শহরের প্রধান পর্যটক আকর্ষণ। মন্দিরটি বাংলা আটচালা শৈলীর মন্দির। মন্দিরের সামনে একটি নাটমন্দির অবস্থিত। অদূরেই কালীলক্ষ্মী-নারায়ণের দুটি মন্দির রয়েছে। মন্দিরের উত্তরে অবস্থিত পুকুরটির নাম দুধপুকুর। লোকবিশ্বাস অনুযায়ী, এই পুকুরে স্নান করলে মনস্কামনা পূর্ণ হয়।

সারাবছরই তারকেশ্বর মন্দিরে পূণ্যার্থীদের ভিড় লেগে থাকে। প্রতি সোমবার ও শ্রাবণ মাসে শ্রাবনী মেলাতে প্রচুর জনসমাগম হয়। এছাড়া ফাল্গুন মাসে শিবরাত্রি ও চৈত্র-সংক্রান্তিতে গাজন উৎসবেও বহু মানুষ আসেন। সমগ্র শ্রাবণ মাস জুড়ে প্রতি সোমবার শিবের বিশেষ পূজা হয়ে থাকে। তারকেশ্বর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে একটি বৌদ্ধ মন্দির। এই স্থানটির নাম দেউলপাড়া। এটি হুগলি জেলার একমাত্র বৌদ্ধ মন্দির[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

পরিবহণ

সম্পাদনা

হাওড়া-তারকেশ্বর লাইনে রেলযোগাযোগ স্থাপিত হয় ১৮৮৫ সালে।[] এই রেলপথে তারকেশ্বর রেলওয়ে স্টেশনটি কলকাতা আন্তঃনগরীয় রেল ব্যবস্থার অঙ্গ। অতীতে তারকেশ্বরে বেঙ্গল প্রভিনশিয়াল রেলওয়ের একটি প্রান্তিক স্টেশন ছিল। ভবিষ্যতে তারকেশ্বর হুগলি জেলার অন্যতম বৃহত্তম জংশন স্টেশন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে, বিভিন্ন রেল প্রকল্প যেমন তারকেশ্বর ধনিয়াখালি মগরা, তারকেশ্বর চাঁপাডাঙ্গা আমতা বাগনান, তারকেশ্বর বড়গাছিয়া সাঁতরাগাছি, তারকেশ্বর বারুইপাড়া বর্তমানে চলমান আছে।

সড়কপথেও তারকেশ্বর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হুগলি জেলার সর্বাপেক্ষা বৃহত্তম বাস স্ট্যান্ডটি তারকেশ্বরেই অবস্থিত। প্রতিদিন প্রায় সমগ্র হুগলি জেলার স্থানীয় বাস সহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গার দূরপাল্লার বাস চলাচল করে। তারকেশ্বর থেকে বর্ধমান দুর্গাপুর বাঁকুড়া বিষ্ণুপুর জঙ্গলমহল খড়গপুর মেদিনীপুর দীঘা হলদিয়া বাগনান হাওড়া চুঁচুড়া কালনা নবদ্বীপ কৃষ্ণনগর কাটোয়া বোলপুর প্রভৃতি জায়গার সরাসরি দূরপাল্লার এক্সপ্রেস বাস পরিষেবা বর্তমানে আছে।

যোগাযোগ

সম্পাদনা

চাঁপাডাঙা এলাকা এক্সচেঞ্জের কোড ০৩২১২ বেগমপুর, ভগবতীপুর, চাঁপাডাঙা, চণ্ডীতলা, ডিহি-বাদপুর, দ্বারহট্ট, একসারা, গোপীনগর, হরিপাল, হরিণখোলা, জাঙ্গিপাড়া,সন্তোষপুর, নছিপুর, জিনপুর, মশাট, নলিপুর, রাজবলহাট, শ্যামপুর ও তারকেশ্বরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।[]

রাজনীতি

সম্পাদনা

তারকেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের বর্তমান বিধায়ক হলেন রামেন্দু সিংহ রায়। আগের বিধায়ক ছিলেন রচপাল সিং, তিনি ২০১১ ও ২০১৬ সালে এই কেন্দ্র থেকে টিএমসি প্রার্থী হিসেবে এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। ১৯৯১ ও ১৯৮৭ সালে নির্দল প্রার্থী শান্তি চট্টোপাধ্যায় এবং ১৯৮২ ও ১৯৭৭ সালে নির্দল প্রার্থী রাম চট্টোপাধ্যায় এখান থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।[] দীর্ঘদিন স্থানীয় বিধায়ক না হওয়ায় তারকেশ্বরের মানুষদের মধ্যে ক্ষোভ সঞ্চার হয়েছিল।

তারকেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রটি আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের অংশ।[১০]যদিও তারকেশ্বর কে পৃথক লোকসভা ও মহকুমা করার দাবি হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে রয়েছে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Tarakeswar Municipality" 
  2. http://www.censusindia.gov.in/pca/SearchDetails.aspx?Id=343377
  3. District-wise list of statutory towns
  4. "Tarakeswar"Falling Rain Genomics, Inc (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৫, ২০০৬ 
  5. "ভারতের ২০০১ সালের জনগণনা" (ইংরেজি ভাষায়)। Archived from the original on ১৬ জুন ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৫, ২০০৬ 
  6. "List of functioning Cold Storage of West Bengal District wise as on 18.01.07" (ইংরেজি ভাষায়)। West Bengal State Marketing Board। ২০০৯-০১-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০১-২৮ 
  7. Chaudhuri, Sukanta, The Railway Comes to Calcutta, in Calcutta, the Living City, Vol. I, edited by Sukanta Chaudhuri, p. 239, Oxford University Press, আইএসবিএন ৯৭৮-০-১৯-৫৬৩৬৯৬-৩.
  8. "Adjacent Area Dialling Schemes" (ইংরেজি ভাষায়)। BSNL। ২০১১-০৭-২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০১-২৯ 
  9. "State Elections 2006 - Partywise Comparision for 185-Tarakeswar Constituency of West Bengal" (ইংরেজি ভাষায়)। Election Commission of India। ২০০৫-০২-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-২১ 
  10. "Assembly Constituencies - Corresponding Districts and Parliamentary Constituencies" (পিডিএফ)West Bengal (ইংরেজি ভাষায়)। Election Commission of India। ২০০৮-১০-০৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১০-০১ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা