তাজাম্মুল আলী
তাজাম্মুল আলী (১৯১৪ – ৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৬; লাউড়ী হুজুর নামেও পরিচিত) ছিলেন একজন বাংলাদেশি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত ও রাজনীতিবিদ। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের প্রথম সভাপতি ছিলেন। আধ্যাত্মিক জীবনে তিনি হুসাইন আহমদ মাদানির খলিফা ছিলেন। এছাড়াও তিনি যশোর জেলার লাউড়ী মাদ্রাসার প্রিন্সিপ্যাল ও শায়খুল হাদিস ছিলেন।[১]
তাজাম্মুল আলী | |
---|---|
![]() | |
আমীর, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ | |
কাজের মেয়াদ ১৯৭৪ – ১৯৭৪ | |
উত্তরসূরী | আব্দুল করিম কৌড়িয়া |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯১৪ পঞ্চখণ্ড, বিয়ানীবাজার, সিলেট |
মৃত্যু | ৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ | (বয়স ৯১–৯২)
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
রাজনৈতিক দল | জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
পিতামাতা |
|
আখ্যা | সুন্নি |
ব্যবহারশাস্ত্র | হানাফি |
আন্দোলন | দেওবন্দি |
প্রধান আগ্রহ | রাজনীতি |
ঊর্ধ্বতন পদ | |
এর শিষ্য | হুসাইন আহমদ মাদানি |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাতাজাম্মুল আলী ১৯১৪ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার পঞ্চখণ্ড পরগনার আংগুরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা শরাফত আলী। গ্রামের মক্তবে তিনি কুরআন ও পঞ্চখণ্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। পরে বাহাদুরপুর মাদ্রাসা ও সিলেট সরকারী আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে কামিল পাশ করেন। এ সময় সিলেটে হুসাইন আহমদ মাদানি এতেকাফ করতেন। তার প্রতি আগ্রহ তৈরি হলে তিনি ১৯৪১ সালে দারুল উলুম দেওবন্দ গমন করেন এবং ২ বছর লেখাপড়া করে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন। মাদানি ছাড়াও দেওবন্দে তার শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন: ইজাজ আলী আমরুহী, ইব্রাহিম বালিয়াভি প্রমুখ। আধ্যাত্মিক জীবনে তিনি হুসাইন আহমদ মাদানির খলিফা ছিলেন। তার শিষ্যদের মধ্যে কাজী মুতাসিম বিল্লাহ, মুহাম্মদ ওয়াক্কাস অন্যতম।
কর্মজীবন
সম্পাদনাশিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর গোলাপগঞ্জের বারোকুট মাদ্রাসায় শিক্ষকতার মাধ্যমে তার কর্মজীবনের সূচনা হয়। এরপর তিনি জামিয়া কাসিমুল উলুম দরগাহে হজরত শাহজালাল (রহ.) ও বিয়ানীবাজারের বাহাদুরপুর মাদ্রাসায় কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। ১৯৪৩ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ৪০ বছর তিনি যশোর জেলার মনিরামপুর থানার লাউড়ী রামনগর আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। যশোর থেকে আসার পর ঢাকার যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় ২ বছর মুহতামিম ও শায়খুল হাদিসের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি নির্বাচিত হন। ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯০ সালে তিনি জমিয়তের প্রধান পৃষ্ঠপোষক নির্বাচিত হন।
সাহিত্যকর্ম
সম্পাদনাতার রচনাবলীর মধ্যে রয়েছে:
- গোমর ফাঁস
- মাকামে আম্বিয়া ও সাহাৰা
- মোনাজাতে মকবুল
- সালাসিলে ত্যায়্যিবা (বাংলা)
তিনি শেষ জীবনে একটি আত্মজীবনীও লিখেছিলেন।
মৃত্যুবরণ
সম্পাদনাতিনি ২০০৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। পরদিন মুহাম্মদ ওয়াক্কাসের ইমামতিতে সিলেট সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে তার জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। তাকে তার পারিবারিক কবরস্থান আঙ্গুরায় দাফন করা হয়।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ এস এম আমিনুল ইসলাম, মাওলানা; ইসলাম, সমর (জানুয়ারি ২০১৪)। বাংলার শত আলেমের জীবনকথা। বাংলাবাজার,ঢাকা-১১০০: বইঘর। পৃষ্ঠা ৩৯৪–৩৯৬। আইএসবিএন 9847016800481।