ডোনাল্ড কার
ডোনাল্ড ব্রাইস কার, ওবিই (ইংরেজি: Donald Carr; জন্ম: ২৮ ডিসেম্বর, ১৯২৬ - মৃত্যু: ১১ জুন, ২০১৬) জার্মানির ওয়েজবাডেন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।[১] দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। পাশাপাশি, স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়েও পারদর্শীতা দেখিয়েছেন তিনি। ১৯৪৬ থেকে ১৯৬৭ মেয়াদে ডার্বিশায়ার,[২] ১৯৪৮ থেকে ১৯৫১ মেয়াদে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও দুইবার ১৯৫১-৫২ মৌসুমে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন ডোনাল্ড কার। এছাড়াও, ১৯৫৫ থেকে ১৯৬২ মেয়াদে ডার্বিশায়ারের অধিনায়কত্ব করেন তিনি। কাউন্টি দলের পক্ষে ১০,০০০-এরও বেশি রান তুলেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | ডোনাল্ড ব্রাইস কার | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ওয়েজবাডেন, জার্মানি | ২৮ ডিসেম্বর ১৯২৬||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১১ জুন ২০১৬ | (বয়স ৮৯)||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ডার্বিশায়ার অধিনায়ক ১৯৫৫-১৯৬২ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | জন লিলিংস্টন কার (পিতা) জন ডোনাল্ড কার (পুত্র) | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৩৬২) | ২ নভেম্বর ১৯৫১ বনাম ভারত | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪৬–১৯৬৩ | ডার্বিশায়ার | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪৯-১৯৫১ | অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬৪-১৯৬৮ | ফ্রি ফরেস্টার্স | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৯ মে ২০১৭ |
ক্রিকেট প্রশাসনেও তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। তন্মধ্যে, এমসিসিতে সহকারী সচিবের পদে বারো বছর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, ১৯৭৬ সালে টেস্ট ও কাউন্টি ক্রিকেট বোর্ডের সচিব ছিলেন তিনি। এ পদে দশ বছর দায়িত্ব পালন প্রসঙ্গে ক্রিকেট লেখক কলিন ব্যাটম্যান মন্তব্য করেন যে, কারের মিশ্র কূটনীতির কারণে প্রথমে প্যাকার বিষয়ে ও পরবর্তীতে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম বিদ্রোহী দলের সফরে বিশ্ব ক্রিকেটকে বিভক্তির আশঙ্কা দূরীভূত হয়েছিল।[১]
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাজার্মানির রাইনে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত রয়েল বার্কশায়ার রেজিমেন্টের কর্মকর্তা জে. এল. কারের পুত্র ছিলেন তিনি। সোয়ানাজের ফোরেস বোর্ডিং স্কুলে অধ্যয়ন করেন তিনি। ঐ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ও ডরসেট মাইনর কাউন্টিজের ১ম একাদশের সাবেক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান আর. এম. চাডিক তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। এরপর বারসারে পদে স্থানান্তরিত হলে তাকে রেপটন স্কুলে নিয়ে আসা হয়। লিওনেল ব্ল্যাক্সল্যান্ড ও গার্নেট লি'র প্রশিক্ষণে বালক ক্রিকেটারদের মধ্যে গড়পড়তা তিনি অন্যতম সেরা তরুণ অল-রাউন্ডারে পরিণত হন তিনি। রেপটনে অবস্থানকালীন সর্বশেষ বছরে ১৯৪৪ সালে লর্ডস স্কুলসের বিপক্ষে বাদ-বাকী একাদশ ও লর্ডস একাদশের বিপক্ষে পাবলিক স্কুলসের পক্ষে অধিনায়কত্ব করেন।[৩]
১ জানুয়ারি, ১৯৪৫ তারিখে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন কার। এরপর তাকে উত্তর আয়ারল্যান্ডে প্রেরণ করা হয়। সেখানে তিনি খুব কমই খেলার সুযোগ পেয়েছেন। গ্রীষ্মে রোথামে প্রশিক্ষণের জন্যে যান। সেখানে লর্ডসে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ভিক্টোরি টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জর্জ পোপ নিজ নাম প্রত্যাহার করলে ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলার সুযোগ পান তিনি।[১] এরপর স্যান্ডহার্স্টের রয়েল মিলিটারী কলেজে চলে যান। ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৬ সালে রয়েল বার্কশায়ার রেজিমেন্টে কমিশনপ্রাপ্ত হন। ১৯৪৬ সালে প্রথমবারের মতো ডার্বিশায়ারের পক্ষে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে অংশ নেন। কেন্টের বিপক্ষে তার অভিষেক পর্বটি সুখকর হয়নি। ড্র হওয়া খেলার একমাত্র ইনিংসে তিনি শূন্য রান করেন। কিন্তু, দুই উইকেট সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়াও কম্বাইন্ড সার্ভিসেস দলের পক্ষে খেলেছেন তিনি।[৩]
বার্মায় কর্মরত থাকায় ১৯৪৭ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেননি তিনি। এপ্রিল, ১৯৪৮ সালে সেনাবাহিনী ত্যাগ করে অক্সফোর্ডের ওরচেস্টার কলেজে চলে যান। ১৯৪৮ সালে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপে ডার্বিশায়ারের পক্ষে খেলেন। এরপর ১৯৪৯ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় দলে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। এছাড়াও, ১৯৪৯ সালে ডার্বিশায়ারের সদস্যরূপে ১,২১০ রান সংগ্রহ করেন। তন্মধ্যে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যরূপে লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে তার খেলোয়াড়ী জীবনের সর্বোচ্চ ১৭০ রানসহ তিনটি সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ১৯৫০ সালে অক্সফোর্ডের অধিনায়কত্ব করেন ও ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে ৬/৩৯ লাভ করেন। অক্সফোর্ডে সর্বশেষ বছরে ভার্সিটি খেলায় কেমব্রিজের বিপক্ষে ৩৪ ও ৫০ রান তুলে দলকে জয়ের মুখ দেখান। এছাড়াও, ১৯৫১ সালে ডার্বিশায়ার চ্যাম্পিয়নশীপে অধিনায়কত্ব করেছিলেন।[৩]
টেস্ট ক্রিকেট
সম্পাদনাবিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে আসার পর মিডল্যান্ডস ব্রিওরিতে কাজের সন্ধানে যান। কিন্তু এরপূর্বেই নাইজেল হাওয়ার্ডের নেতৃত্বাধীন এমসিসি দলে সহঃ অধিনায়কের দায়িত্ব দিয়ে ভারত, পাকিস্তান ও সিলনে যাবার অনুমতি দেয়া হয়। ১৯৫১-৫২ মৌসুমে ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টে অংশ নেন।[১] দিল্লিতে অ্যালান ওয়াটকিন্স ও তিনি দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা ক্রিজে অবস্থান করে ১৫৮ রান তুলে দলের বিপর্যয় রুখে দেন। দ্বিতীয় টেস্টে হাওয়ার্ডের অনুপস্থিতিতে তিনি অধিনায়কের দায়িত্ব পান। কিন্তু ভারতে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড দল পরাজিত হয় ও সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্র হয়।[১] টেস্ট জীবনে দুই খেলায় অংশ নিয়ে চার ইনিংসে ৩৩.৭৫ গড়ে রান সংগ্রহ করেন। তন্মধ্যে নিজস্ব সর্বোচ্চ করেন ৭৬। এছাড়াও ১৪০ রান দিয়ে ২ উইকেট পান।[৩]
১৯৫৯ মৌসুমে ৪৪-এর অধিক গড়ে রান দিয়ে ২,২৯২ রান তোলেন। এরফলে, ১৯৬০ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন তিনি।[৪]
৪৪৬টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় ৭৪৫ ইনিংসে অংশ নেন। ২৮.৬১ গড়ে রান তোলেন ও ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৭০ করেন। ৩২৮টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট ৩৪.৭৪ গড়ে তোলেন ও নিজস্ব সেরা ৭/৫৩ পরিসংখ্যান গড়েন।[৫]
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ফুটবলেও প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৯৫১ ও ১৯৫৩ সালে এফএ অ্যামেচার কাপ ফাইনালে দুইবার বিজয়ী পেগাসাস দলের সদস্য ছিলেন।
অবসর
সম্পাদনাপরবর্তীকালে আইসিসি’র ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালন করেছেন। অবসর গ্রহণের পর ১৯৬৩ থেকে ১৯৭৬ সময়কালে এমসিসি’র সহকারী সচিব মনোনীত হন। এরপর ক্রিকেট কাউন্সিল এবং টেস্ট ও কাউন্টি ক্রিকেট বোর্ড যা পরবর্তীতে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডে (ইসিবি) দশ বছর কাজ করেন। এছাড়াও, ১৯৬০-এর দশক ও ১৯৭০-এর দশকে অনেকগুলো এমসিসি’র সফর পরিচালনা করেছেন তিনি।
কারের পুত্র জন মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। এ পরিবারের সাথে সাবেক ইংল্যান্ড ও নটিংহ্যামশায়ার ক্রিকেট দলের অধিনায়ক আর্থার কারের কোন সম্পর্ক নেই।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 37। আইএসবিএন 1-869833-21-X।
- ↑ "Derbyshire players". CricketArchive. Retrieved 29 May, 2017.
- ↑ ক খ গ ঘ Wisden Cricketer of the Year 1960 – Donald Carr
- ↑ Full List on Cricinfo, Retrieved 4 May, 2017.
- ↑ Donald Carr at Cricket Archive
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে ডোনাল্ড কার (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে ডোনাল্ড কার (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- Donald Carr, cricketer – obituary from The Daily Telegraph
ক্রীড়া অবস্থান | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী গাই উইলট |
ডার্বিশায়ার ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯৫৫-১৯৬২ |
উত্তরসূরী চার্লস লি |