ডেভিড হার্ভে
ডেভিড হার্ভে (জন্ম ৩১ অক্টোবর, ১৯৩৫) হলেন ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত মার্ক্সবাদী ভূগোলবিদ এবং নিউইয়র্কের সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক ৷১৯৬১ সালে তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইডডি ডিগ্রি অর্জন করেন ৷তিনি অনেকগুলো বই এবং প্রবন্ধ রচনা করেছেন, যেগুলো আধুনিক ভূগোলকে একটি শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে ৷ তিনি রাইট টু দি সিটি নামক সামাজিক আন্দোলনের প্রবক্তা ৷ ২০০৭ সালে, ইনস্টিটিউট অব সায়েন্টিফিক ইনফরমেশন(আইএসআই) এর ডাটাবেজ অনুযায়ী, তিনি মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান শাখায় ১৮তম সর্বোচ্চ আলোচিত লেখক নির্বাচিত হন ৷[১]
ডেভিড হার্ভে | |
---|---|
জন্ম | গিলিংহাম, কেন্ট, ইংল্যান্ড | ৩১ অক্টোবর ১৯৩৫
জাতীয়তা | ব্রিটিশ |
মাতৃশিক্ষায়তন | সেন্ট জোনস কলেজ, কেমব্রিজ |
পরিচিতির কারণ | মার্কবাদী ভূগোল |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | নৃবিজ্ঞান, ভূগোল, রাজনৈতিক অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্ক |
অভিসন্দর্ভের শিরোনাম | কেন্টে কৃষিজ ও গ্রামীণ পরিবর্তনের প্রভাব, ১৮০০-১৯০০ (১৯৬১) |
যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন | কার্ল মার্কস, চার্লস ডারউইন, সিগমুন্ড ফ্রয়েড |
যাদেরকে প্রভাবিত করেছেন | নীল স্মিথ, এন্ডি মেরিফিল্ড |
ভূমিকা
সম্পাদনাহার্ভে গিলিংহাম গ্রামার স্কুল এবং কেমব্রিজের সেন্ট জনস কলেজে যোগদান করেন ৷ সেখান থেকে তিনি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন ৷ পিএইডি ডিগ্রি অর্জনের সময় থেকে মূলত হার্ভের প্রথম দিকের গবেষণাধর্মী কাজগুলো শুরু হয় ৷
হার্ভে বর্তমানে নিউইয়র্কে বসবাস করেন ৷ তার একমাত্র কন্যা ডেলফিনা ১৯৯০ সালের জানুয়ারীতে জন্মগ্রহণ করে ৷ [২]
কর্মজীবন ও অবদান
সম্পাদনা১৯৬০ এর দশকের মধ্যভাগে, তিনি সামাজিক বিজ্ঞানে পরিমাণগত পদ্ধতি অনুসরণ করা শুরু করেন যা স্থান সংক্রান্ত বিজ্ঞান এবং প্রত্যক্ষবাদ মতবাদে অবদান রাখে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানকালে, ভূগোল বিভাগে তিনি এই পদ্ধতি অনুসরণ করে গবেষণার সূচনা করেন যেখানে রিচার্ড চোর্লে এবং পিটার হ্যাগেট শিক্ষকতা করতেন ৷ তার রচিত এক্সপ্লানেশন ইন জিওগ্রাফি(১৯৬৯) বইটিতে ভৌগোলিক দর্শন এবং কার্যপদ্ধতি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন, ভৌগোলিক জ্ঞানের সাথে দর্শনের মৌলিক ধারণার ব্যবহার করেছেন ৷ কিন্তু এটি প্রকাশের পরে, তিনি তারই প্রদানকৃত কিছু ধারণা থেকে সরে আসেন, তিনি মূলত সামাজিক অবিচার এবং পূঁজিবাদের গতিপ্রকৃতির বিষয়ে একমত ছিলেন না ৷ বইটিতে যে বিষয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল সেটাকে তিনি কখনও সমর্থন করেননি ৷
৭০'র দশকে মার্ক্সবাদী ভূগোল ও নগর ভূগোলের বৃদ্ধি
সম্পাদনাব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাল্টিমোরের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরের পরে তিনি প্রগতিশীল এবং মার্ক্সবাদী ভূগোলের বিষয়ে নিজেকে আরও দক্ষ করে তোলেন ৷ বাল্টিমোরের বিভিন্ন স্থানে অবিচার, বর্ণবৈষম্য এবং নির্যাতন দৃশ্যমান ছিল এবং এসবের বিরুদ্ধে সত্তরের দশকের প্রথম দিকে পূ্র্ব কোস্টে প্রতিবাদ দেখা যায় ৷ ক্লার্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যান্টিপড নামে জার্নাল প্রকাশিত হয় ৷ সেখানে হার্ভে প্রথম সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ৷
সোশ্যাল জাস্টিস এন্ড দি সিটি
সম্পাদনামার্ক্সবাদী ভূগোলে জাগরণে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছিল নগর ভূগোল ৷ সোশ্যাল জাস্টিস এন্ড দি সিটি(১৯৭৩) প্রকাশের মাধ্যমে তিনি এই বিষয়ে নিজেকে অধিকর্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন ৷ এই বইটিতে তিনি নগরকেন্দ্রিক দারিদ্রতা এবং সমস্যা মোকাবেলার ক্ষেত্রে ভূগোল যে একটি অবজেক্ট হতে পারে না সেই বিষয়ে আলোচনা করেছেন ৷ [৩]
পরিচিতি লাভ
সম্পাদনাডেভিড হার্ভে বিশ্বব্যাপী নগর ভূগোল এর জনক বলা হয় ৷ [৪] হার্ভের রচিত বইগুলো বিভিন্ন ভাষার অনুবাদ করা হয়েছে ৷ রসকিলড(ডেনমার্ক), বুয়েন্স আয়ান্স(আর্জেন্টিনা), উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের(সুইডেন) সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগ[৫], ওহিয়ো বিশ্ববিদ্যালয়, সুইডেনের লান্ড বিশ্ববিদ্যালয়, রিপাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়[৬] এবং ইংল্যান্ডের কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে ডক্টরেট প্রদান করা হয়েছে ৷ এছাড়াও সুইডেনের নৃতত্ব ও ভূগোল সোসাইটি তাকে গোল্ড মেডেল এবং রয়েল জিওগ্রাফিকাল সোসাইটি তাকে পেট্রনস্ মেডেল প্রদান করে ৷ [৭]
সংশিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহ
সম্পাদনা- বিএ(অনার্স) সেন্ট জোনস কলেজ, কেমব্রিজ,১৯৫৭
- পিএইডি সেন্ট জোনস কলেজ, কেমব্রিজ, ১৯৬১
- পোষ্ট-ডক, উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়, সুইডেন ১৯৬০-৬১
- লেকচারার, ভূগোল, ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়,
যুক্তরাষ্ট্র (১৯৬১-৬৯)
- সহযোগী অধ্যাপক, ভূগোল এবং পরিবেশ বিজ্ঞান প্রকৌশল বিভাগ, জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়, (১৯৬৯-৭৩)
- অধ্যাপক, ভূগোল এবং পরিবেশ বিজ্ঞান প্রকৌশল বিভাগ, জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়, (১৯৭৩–১৯৮৭,এবং ১৯৯৩–২০০১)
- অধ্যাপক, নৃতত্ব,অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৮৭–১৯৯৩)
- প্রখ্যাত অধ্যাপক, নৃতাত্বিক বিভাগ, সিটি বিশ্ববিদ্যালয়, নিউইর্য়ক (২০০১–বর্তমান)
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- এক্সপ্লেনেশন ইন জিওগ্রাফি (১৯৬৯)
- সোশ্যাল জাস্টিস এন্ড দ্য সিটি (১৯৭৩)
- দ্য লিমিটস টু ক্যাপিটাল (১৯৮২)
- দি আরবানাইজেশন অব ক্যাপিটাল(১৯৮৫)
- কনসিয়াসনেস এন্ড দি আরবান এক্সপেরিয়েন্স (১৯৮৫)
- দ্য কন্ডিশন অব পোস্টমর্ডানিটি: এন এনকোয়ারি ইনটু দি অরিজিন অব কালচারাল চেঞ্জ (১৯৮৯)
- দি আরবান এক্সপেরিয়েন্স (১৯৮৯)
- স্পেসেস অব হোপ (২০০০)
- স্পেসেস অব ক্যাপিটাল: টুওয়ার্ডস এ ক্রিটিক্যাল জিওগ্রাফি (২০০১)
- দ্য নিউ ইমপেরিয়ালিজম (২০০৩)
- প্যারিস, ক্যাপিটাল অব মর্ডানিটি (২০০৩)
- এ ব্রিফ হিস্টিরি অব নিওলিবারেলিজম (২০০৫)
- স্পেসেস অব গ্লোবাল ক্যাপিটালিজম (২০০৬)
- সেভেনটিন কন্ট্রাডিকশনস এন্ড দি ইন্ড অব ক্যাপিটালিজম (২০১৪)
- দি ওয়েস অব দ্য ওয়ার্ল্ড (২০১৬)
- মার্ক্স, ক্যাপিটাল এন্ড দি ম্যাডনেস অব ইকনোমিক রিজন (২০১৭)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Most cited authors of books in the humanities, 2007" (পিডিএফ)। Times Higher Education (THE) (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-০৩-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১০-১০।
- ↑ https://soundcloud.com/freshed-podcast/freshed-100-a-marxist-critique-of-higher-education-david-harvey
- ↑ Fyfe, Nicholas R.; Kenny, Judith T. (২০০৫)। The Urban Geography Reader। New York: Psychology Press। পৃষ্ঠা 2।
- ↑ Castree, N. and Gregory, D. eds., 2008. David Harvey: a critical reader. John Wiley & Sons.
- ↑ "Honorary doctorates - Uppsala University, Sweden"।
- ↑ "Portal Universidad de la República | Títulos Honoris Causa"। www.universidad.edu.uy। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-১৪।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ 'International Organization for a Participatory Society – Interim Committee Retrieved 2012-3-31