ডেভিড কপারফিল্ড
ডেভিড কপারফিল্ড চার্লস ডিকেন্সের লেখা অষ্টম উপন্যাস। বইটির পুরো নাম দ্য পারসোনাল হিস্ট্রি, অ্যাডভেঞ্চার্স, এক্সপেরিয়েন্স অ্যান্ড অবজার্ভেশন অফ ডেভিড কপারফিল্ড, দ্য ইয়াংগার অফ ব্লান্ডারস্টোন রুকারি (হুইচ হি নেভার মেন্ট টু পাবলিশ অন এনি অ্যাকাউন্ট)।[১] বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৫০ সালে। ডিকেন্সের অন্যান্য অনেক উপন্যাসের মতো এটিও বই আকারে প্রকাশের এক বছর আগে ধারাবাহিকভাবে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। উপন্যাসের অনেক ঘটনা ডিকেন্সের নিজের জীবন থেকে নেওয়া। তাই সম্ভবত এটিই তাঁর প্রধানতম আত্মজৈবনিক উপন্যাস।[২] ১৮৬৭ সালের সংস্করণের মুখবন্ধে ডিকেন্স লেখেন, "... অনেক স্নেহময় বাবা-মায়ের মতো, আমার হৃদয়ের গভীরেও একটি প্রিয় সন্তান রয়েছে, তার নাম ডেভিড কপারফিল্ড।"[৩]
লেখক | চার্লস ডিকেন্স |
---|---|
মূল শিরোনাম | দ্য পারসোনাল হিস্ট্রি, অ্যাডভেঞ্চার্স, এক্সপেরিয়েন্স অ্যান্ড অবজার্ভেশন অফ ডেভিড কপারফিল্ড, দ্য ইয়াংগার অফ ব্লান্ডারস্টোন রুকারি (হুইচ হি নেভার মেন্ট টু পাবলিশ অন এনি অ্যাকাউন্ট The Personal History, Adventures, Experience and Observation of David Copperfield the Younger of Blundeston Rookery (which he never meant to publish on any account) |
অঙ্কনশিল্পী | হ্যাবলট নাইট ব্রাউন (ফিজ) |
প্রচ্ছদ শিল্পী | হ্যাবলট নাইট ব্রাউন (ফিজ) |
দেশ | যুক্তরাজ্য |
ভাষা | ইংরেজি |
ধারাবাহিক | মাসিক: মে ১৮৪৯ – নভেম্বর ১৮৫০ |
ধরন | কথাসাহিত্য সামাজিক সমালোচনা |
প্রকাশক | ব্র্যাডবেরি অ্যান্ড ইভানস |
প্রকাশনার তারিখ | ১৮৫০ |
মিডিয়া ধরন | মুদ্রণ (ধারাবাহিক, হার্ডব্যাক ও পেপারব্যাক) |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ৯৩৬ |
পূর্ববর্তী বই | ডম্বে অ্যান্ড সন |
পরবর্তী বই | ব্লেক হাউস |
প্লট-সারাংশ
সম্পাদনাএই উপন্যাসে শিশু ডেভিড কপারফিল্ডের বড় হয়ে ওঠার গল্প বলা হয়েছে। ইংল্যান্ডের নরফোক কাউন্টির গ্রেট ইয়ারমাউথের কাছে ব্লান্ডারস্টন নামে এক জায়গায় ১৮২০ সালে ডেভিড কপারফিল্ডের জন্ম হয়েছিল। তার জন্মের ছয় মাস আগে তার বাবা মারা যায়। ডেভিডের যখন সাত বছর বয়স তখন তার মা মিস্টার এডওয়ার্ড মার্ডস্টোনকে বিয়ে করেন। মিস্টার মার্ডস্টোনের সঙ্গে তাঁর বোন জেনও ডেভিডদের বাড়িতে এসে বসবাস শুরু করেন। ডেডিড দু'জনকেই অপছন্দ করত। পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়লেই মিস্টার মার্ডস্টোন ডেভিডকে মারধর করতেন। এইরকম মারধর করার সময় একবার ডেভিড তাঁকে কামড়ে দেয়। তারপরই ডেভিডকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সালেম হাউস নামে একটি বোর্ডিং স্কুলে। এই স্কুলের হেডমাস্টার মিস্টার ক্রিকল খুব কড়া মেজাজের লোক ছিলেন। এখানেই জেমস স্টিয়ারফোর্থ ও টমি ট্র্যাডলস নামে দুটি ছেলের সঙ্গে ডেভিডের বন্ধুত্ব হয়। উপন্যাসের পরবর্তী অংশে এই দুটি চরিত্রের উপস্থিতি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।
ছুটির সময় ডেভিড বাড়ি ফিরে দেখল তার মায়ের একটি ছেলে হয়েছে। সালেম হাউসে ফিরে যাওয়ার পর একদিন সে খবর পেল, তার মা আর তার ছেলে দু'জনেই মারা গেছে। ডেভিড তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে এল। মিস্টার মার্ডস্টোন তাকে লন্ডনের একটি কারখানায় কাজ করতে পাঠালেন। মিস্টার মার্ডস্টোন নিজে ছিলেন ওই কারখানার যৌথ মালিক। ডিকেন্সের নিজে কারখানায় কাজ করেছিলেন। সেই স্মৃতি থেকেই তিনি উপন্যাসের এই অংশের ছবি আঁকেন। এখানেই জীবনের কঠোর সত্য সম্পর্কে অবহিত হয় ডেভিড। কিন্তু কারখানার মালিক মিস্টার উইলকিনস মিকাওবার দেউলিয়া হয়ে ডেটার'স প্রিজনে বন্দী হন। বেশ কয়েক মাস পরে ছাড়া পেয়ে তিনি চলে যান প্লাইমাউথে। এর পর লন্ডনে ডেভিডের দেখাশোনা করার আর কেউ থাকে না। সে পালিয়ে যায়।
ডেভিড হাঁটতে হাঁটতে লন্ডন থেকে চলে আসে ডোভারে। সেখানে সে মিস বেটসি ট্রটউড নামে তার বাবার এক ফুপিকে খুঁজে পায়। ডেভিডের এই অর্ধ্বোন্মাদ দাদীটি মিস্টার মার্ডস্টোনের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও ডেভিডকে লালন পালন করার দায়িত্ব নেন। তিনি ডেভিডের নামটি পালটে দিয়ে রাখেন 'ট্রটউড কপারফিল্ড', সংক্ষেপে 'ট্রট'।
এরপর ধীরে ধীরে ডেভিড বড় হয়ে ওঠে। এই সময় অনেক পরিচিত চরিত্র উপন্যাসের পটে আসে আবার চলেও যায়। এদের মধ্যে আছেন ডেভিডের মায়ের প্রাক্তন বিশ্বস্ত দাসী পেগোটি ও তার পরিবারবর্গ। পেগোটির পিতৃমাতৃহীন ভাইঝি 'ছোট্ট এমলি'ও তাদের সঙ্গে আসে। এই মেয়েটিকে খুব পছন্দ হয় ছোট ডেভিডের। ডেভিডের রোম্যান্টিক অথচ আত্মকেন্দ্রিক বন্ধু স্টিয়ারফোর্থ এমলিকে ফুসলিয়ে তার সম্মানহানি করে। এইভাবে ঘটে যায় উপন্যাসের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডিটি। তার মালিকের মেয়ে অ্যাগনেস উইকফিল্ড তার অন্তরঙ্গ বন্ধুতে পরিণত হয়। ঋণের দায় থেকে মুক্তি পাওয়া মিকাওবারকে আবার দেখা যায়। আর দেখা যায় দুষ্টু কেরানি উরিহ হিপকে। মিকাওবারের সাহায্যে ধীরে ধীরে হিপের বদমায়েশি ধরা পড়ে যায়।
ডিকেন্সের উপন্যাসের ধারা অনুযায়ী, প্রতিটি চরিত্রই তাদের দোষের শাস্তি ও পুরস্কার পেয়ে যায় এবং কয়েকটি ঘটনার কোনো মীমাংসাই হয় না। ড্যান পেগোটি মিসেস গামবিজ ও মিকাওবারদের সঙ্গে এমলিকে পাঠিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ায়। তারা সেখানে নিরাপদে জীবনযাপন করতে থাকে। ডেভিড প্রথমে সুন্দরী অথচ নিরীহ ডোরা স্পেনলোকে বিয়ে করে। কিন্তু তার গর্ভের সন্তান নষ্ট হওয়ায় সে মনোদুঃখে কাতর হয়ে মারা যায়। এরপর ডেভিড আত্ম-অনুসন্ধানে বের হয় এবং পরে তার হিতাকাংখী সংবেদনশীল অ্যাগনেসকে বিয়ে করেন। অ্যাগনেসকে সে চিরদিনই ভালবাসত। তাই তাদের বিবাহিত জীবন সুখের হয়। ডেভিড ও অ্যাগনেসের মোট তিনজন সন্তান, একজন ছেলে আর দুজন মেয়ে হয়েছিল। তাদের মধ্যে একটি মেয়ের নাম বেটসি ট্রটউড অপরটির নাম ডোরা।
পাদটীকা
সম্পাদনা- ↑ Dickens invented over 14 variations of the title for this work, see "Titles, Titling, and Entitlement to", by Hazard Adams in The Journal of Aesthetics and Art Criticism, Vol. 46, No. 1 (Autumn, 1987), pp. 7–21
- ↑ "Autobiographical Elements in Charles Dickens' David Copperfield"। By The Book। The Knowledge Network। ২০০৯-০৮-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৬-২৮।
- ↑ Preface to the 1867 Charles Dickens edition
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাঅনলাইন সংস্করণ
- ডেভিড কপারফিল্ড at Internet Archive.
- ডেভিড কপারফিল্ড at Project Gutenberg.
- ডেভিড কপারফিল্ড, at Bartleby.com (HTML w/ additional commentary)
- ডেভিড কপারফিল্ড, at Librivox (audiobook)
অন্যান্য
- Information and analysis, Illustrations, Forums, and Select Resources on the novel
- Analysis of the theme of David Copperfield and its characters.[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- List of over 50 characters.
- David Copperfield: Cummings Study Guides
- David Copperfield: Lectures d'une Oeuvre
- David Copperfield: General Concordances