ডরথি ম্যালোন
ডরথি ম্যালোন (২৯ জানুয়ারি ১৯২৪ - ১৯ জানুয়ারি ২০১৮) ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী। তার চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয় ১৯৪৩ সালে এবং শুরুর বছরগুলোতে তিনি মূলত ছোট চরিত্রে, বিশেষ করে বি-শ্রেণির চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। এক দশক অভিনয়ের পর, বিশেষ করে রিটেন অন দ্য উইন্ড (১৯৫৬) চলচ্চিত্রে অভিনয় পর তিনি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে কাজের সুযোগ পেতে থাকেন। রিটেন অন দ্য উইন্ড চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।
ডরথি ম্যালোন | |
---|---|
Dorothy Malone | |
জন্ম | ম্যারি ডরথি ম্যালোন ২৯ জানুয়ারি ১৯২৪ |
মৃত্যু | ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ | (বয়স ৯৩)
মাতৃশিক্ষায়তন | সাউদার্ন মেথডিস্ট বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | অভিনেত্রী |
কর্মজীবন | ১৯৪৩-১৯৯২ |
দাম্পত্য সঙ্গী | জাক বের্জরাক (বি. ১৯৫৯; বিচ্ছেদ. ১৯৬৪) রবার্ট টমার্কিন (বি. ১৯৬৯; বাতিল. ১৯৬৯) চার্লস হাস্টন বেল (বি. ১৯৭১; বিচ্ছেদ. ১৯৭৩) |
সন্তান | ২ |
১৯৬০-এর দশকে তিনি তার কর্মজীবনের শীর্ষে পৌঁছান এবং এরপর টেলিভিশনে পেটন প্লেস (১৯৬৪-১৯৬৮) ধারাবাহিকে কনস্ট্যান্স ম্যাকেঞ্জি চরিত্রে অভিনয় করে সফলতা অর্জন করেন। পরবর্তী বছরগুলোতে তাকে কম সক্রিয় দেখা যায় এবং তার সর্বশেষ চলচ্চিত্র ছিল ১৯৯২ সালের বেসিক ইনস্টিংক্ট।[১]
ম্যালোন ২০১৮ সালের ১৯শে জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি হলিউডের স্বর্ণযুগের সর্বশেষ জীবিত তারকাদের একজন ছিলেন।
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাম্যারি ডরথি ম্যালোন ১৯২৪ সালের ২৯শে জানুয়ারি ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরে জন্মগ্রহণ করেন।[২] তার মাতা এস্তার এমা "এলোইস" স্মিথ (১৯০২-১৯৮৩)[৩] এবং পিতা রবার্ত ইগ্নাশিয়াস ম্যালোনি (১৮৯৫-১৯৮৫)[৪] ছিলেন এটিটি টেলিফোন কোম্পানির নিরীক্ষক।[৩][৫] ম্যালোনের পাঁচ ভাইবোন ছিল, তাদের মধ্যে দুই বোন পোলিও'র জটিলতায় মারা যায়।
ম্যালোনের যখন ছয় মাস বয়স, তখন তারা সপরিবারে ডালাসে চলে যায়।[৬] সেখানে তিনি নেইমান মার্কাসের জন্য মডেলিং করেন এবং উরসুলিন একাডেমি অব ডালাস, হাইল্যান্ড পার্ক হাই স্কুল, হোকাডে জুনিয়র কলেজ এবং সাউদার্ন মেথডিস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।[৩]
কর্মজীবন
সম্পাদনাআরকেও - ডরথি ম্যালোনি
সম্পাদনাম্যালোন ১৮ বছর বয়সে তার প্রকৃত নাম ডরথি ম্যালোনি নাম নিয়ে আরকেও পিকচার্সের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন।[৭][৮] গিল্ডারস্লিভ অন ব্রডওয়ে (১৯৪৩) দিয়ে তার চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে।[৯][১০] এর কিছুদিন পর তিনি তার ডরথি ম্যালোনি নামের অধীনে দ্য ফ্যালকন অ্যান্ড দ্য কো-এডস।[৮]
আরকেও সাথে তার অন্যান্য চলচ্চিত্র হল ফ্রাঙ্ক সিনাত্রার বিপরীতে হাইয়ার অ্যান্ড হাইয়ার (১৯৪৩) ও স্টেপ লাইভলি (১৯৪৪), এডি ক্যান্টরের বিপরীতে সেভেন ডেস অ্যাশোর (১৯৪৪) ও শো বিজনেস (১৯৪৪), এবং প্রযোজক ভাল লিউটনের ইয়ুথ রানস ওয়াইল্ড (১৯৪৪)।[১১] আরকেও তার সাথে চুক্তি নবায়ন করেনি।[১২] এ সময়ে তিনি কলাম্বিয়া পিকচার্সের বস্টন ব্ল্যাকি চলচ্চিত্র ওয়ান মিস্টেরিয়াস নাইট (১৯৪৪)-এ অভিনয় করেন, তবে পর্দায় তার নামের কৃতিত্ব দেওয়া হয়নি।[১৩]
রিটেন অন দ্য উইন্ড ও তারকা খ্যাতি
সম্পাদনাতিনি রিটেন অন দ্য উইন্ড (১৯৫৬) চলচ্চিত্রে প্লাটিনাম ব্লন্ডি রূপে আবির্ভূত হন এবং নিজেকে "ভালো মেয়ে" হিসেবে উপস্থাপন করেন। ডগলাস সার্ক পরিচালিত এই চলচ্চিত্রে তিনি রক হাডসন, লরেন বাকল, ও রবার্ট স্ট্যাকের সাথে অভিনয় করেন। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।[১৪]
ব্যক্তিগত জীবন ও মৃত্যু
সম্পাদনাম্যালোন একজন রোমান ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বী।[১৫] ১৯৫৯ সালের ২৮শে জুন হংকংয়ের এক ক্যাথলিক গির্জায় অভিনেতা জাক বের্জরাককে বিয়ে করেন। তিনি সেখানে তার ১৯৬০ সালের চলচ্চিত্র দ্য লাস্ট ভয়েজ-এর শুটিংয়ে ছিলেন। তাদের দুই কন্য ছিল, তারা হলেন মিমি (জ. ১৯৬০) ও ডায়ান (জ. ১৯৬২)।[৩] ১৯৬৪ সালের ৮ই ডিসেম্বর এই দম্পতির বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।[৩][১৬]
ম্যালোন এরপর ১৯৬৯ সালের ৩রা এপ্রিল নেভাডার লাস ভেগাসের সিলভার বেলস ওয়েডিং চ্যাপেলে নিউ ইয়র্কের ব্যবসায়ী রবার্ট টোমারকিনকে বিয়ে করেন। তার দ্বিতীয় বিবাহের নির্দিষ্ট সময় পরে অবৈধ ঘোষিত হয় কারণ ম্যালোন দাবী করেন টোমারকিন তাকে তার অর্থের জন্য বিয়ে করেছেন।[৩]
ম্যালোন ১৯৭১ সালের ২রা অক্টোবর ডালাসের মোটেল চেইন নির্বাহী চার্লস হিউস্টন বেলকে বিয়ে করেন। তিন বছর পর তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে।[৩][১৭]
ম্যালোন ডালাসে একটি নার্সিং হোমে ২০১৮ সালের ১৯শে জানুয়ারি তার ৯৪তম জন্মদিনের ১০ দিন পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন।[১৮][১৭][১৯]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Dorothy Malone, Star of TV's Peyton Place, Dies at 93"। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। জানুয়ারি ১৯, ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০২০।
- ↑ "Mary Dorothy Maloney"। Illinois, Cook County, Birth Certificates, 1871–1940। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০২০ – ফ্যামিলি সার্চ-এর মাধ্যমে।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "Dorothy Malone"। গ্ল্যামার গার্ল অব দ্য সিলভার স্ক্রিন। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০২০।
- ↑ "Robert Ignatius Maloney Sr."। জিনি.কম। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০২০।
- ↑ টেরি, রোওয়ান (২০১৫)। Who's Who In Hollywood!। লুলু.কম। পৃষ্ঠা ২৪১। আইএসবিএন 978-1-3290-7449-1।
- ↑ লিয়েবেনসন, ডোনাল্ড (মে ২৩, ২০০৯)। "Dorothy Malone recalls her days in 'Peyton Place'"। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। মার্চ ৩, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০২০।
- ↑ "Of Local Origin"। New York Times। সেপ্টে ২১, ১৯৪৩। পৃষ্ঠা 29।
- ↑ ক খ "Dorothy Malone"। টার্নার ক্লাসিক মুভিজ। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ মিলার, ফ্রাঙ্ক। "Articles: Gildersleeve on Broadway"। টার্নার ক্লাসিক মুভিজ। এপ্রিল ১, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ কিং, সুজান (জুন ২৮, ২০১০)। "Hollywood Star Walk: Dorothy Malone"। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ শ্যালার্ট, ই. (আগস্ট ১৭, ১৯৪৩)। "DRAMA AND FILM"। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস।
- ↑ "HOLLYWOOD'S SHAPELIEST SHADOW-GIRL: WINNER AND RUNNERS-UP IN A SCREEN CURVILINEAR CONTEST"। দ্য স্কেচ। ২০০ (2596)। ১৯৪৪। পৃষ্ঠা ১৫৪–১৫৫।
- ↑ "SCREEN NEWS HERE AND IN HOLLYWOOD"। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। মে ২৪, ১৯৪৪।
- ↑ "The 29th Academy Awards: 1957"। একাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস। জুন ২, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ অল্ডরিজ, জেমস (১৯৮৫)। The true story of Lilli Stubeck। পাফিন প্লাস। আইএসবিএন 978-0140320558।
- ↑ বার্নস, মাইক (জুন ২৫, ২০১৪)। "French Actor Jacques Bergerac Dies at 87"। দ্য হলিউড রিপোর্টার। মার্চ ২১, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ ক খ কোলম্যান, ফিলিপ; বায়ার্ন, জেমস; কিং, জেসন, eds. (২০০৮)। Ireland and the Americas: Culture, Politics, and History। ২। এবিসি-সিএলআইও। পৃষ্ঠা ৫৪৬। আইএসবিএন 978-1851096145।
- ↑ "Oscar winner Dorothy Malone, mom on Peyton Place, has died"। দ্য গার্ডিয়ান। এসোসিয়েটেড প্রেস। জানুয়ারি ১৯, ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "Dorothy Malone, 'Peyton Place' Star and Oscar Winner, Dies at 93"। দ্য হলিউড রিপোর্টার। সংগ্রহের তারিখ ২৬ ডিসেম্বর ২০২০।