ট্রাইডেন্ট (যুক্তরাজ্যের পারমাণবিক কর্মসূচি)
ট্রাইডেন্ট, ট্রাইডেন্ট নিউক্লিয়ার প্রোগ্রাম বা ট্রাইডেন্ট নিউক্লিয়ার ডিটারেন্ট নামেও পরিচিত, যুক্তরাজ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের উন্নয়ন, সংগ্রহ ও পরিচালনা এবং তাদের সরবরাহের উপায়সমূহকে কভার করে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের দ্বারা বলা হয়েছিল, যে এর উদ্দেশ্য হল "আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও জীবনযাত্রার জন্য সবচেয়ে চরম হুমকি রোধ করা, যা অন্য উপায়ে করা যায় না"। ট্রাইডেন্ট হল ট্রাইডেন্ট ২ ডি-৫ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা সজ্জিত চারটি ভ্যানগার্ড-শ্রেণির ডুবোজাহাজের একটি কার্যক্রম ব্যবস্থা, যা একাধিক স্বাধীনভাবে লক্ষ্যযোগ্য পুনঃপ্রবেশকারী যান (এমআইআরভিএস) থেকে থার্মোনিউক্লিয়ার ওয়ারহেড সরবরাহ করতে সক্ষম। এটি রাজকীয় নৌবাহিনী দ্বারা পরিচালিত হয় এবং স্কটল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলে ক্লাইড নৌ-ঘাঁটিতে অবস্থিত। একটি অবিচ্ছিন্ন সমুদ্রে সক্ষমতা প্রদানের জন্য কমপক্ষে একটি ডুবোজাহাজ সর্বদা টহলে থাকে। প্রত্যেকে আটটির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও চল্লিশটি ওয়ারহেড বহন করে না, যদিও তাদের ক্ষমতা আরও বেশি। ক্ষেপণাস্ত্রসমূহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, অন্যদিকে ওয়ারহেডসমূহ ব্রিটেনে তৈরি করা হয়।
ট্রাইডেন্ট | |
---|---|
প্রকল্পের ধরন | ট্রাইডেন্ট ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ডুবোজাহাজ মোতায়েন |
দেশ | যুক্তরাজ্য |
প্রতিষ্ঠিত | ১৯৮০ |
ব্রিটিশ সরকার প্রাথমিকভাবে ট্রাইডেন্ট আই সি-৪ ক্ষেপণাস্ত্র ক্রয়ের জন্য কার্টার প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে। রিগান প্রশাসন ১৯৮১ সালে তার ট্রাইডেন্টকে নতুন ট্রাইডেন্ট ২ ডি-৫ ক্ষেপণাস্ত্রে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। এর জন্য আরেক দফা আলোচনা ও ছাড়ের প্রয়োজন ছিল। ইউকে ট্রাইডেন্ট কর্মসূচিটি ১৯৮০ সালের জুলাই মাসে ঘোষণা করা হয়েছিল এবং ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বরে টহল কার্য শুরু হয়েছিল। ট্রাইডেন্ট ডুবোজাহাজ-ভিত্তিক পোলারিস ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করেছে, যা ১৯৬৮ সাল থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত চালু ছিল। ট্রাইডেন্ট হল ১৯৯৮ সালে কৌশলগত ডব্লিউই.১৭৭ ফ্রি-ফল বোমাসমূহ নিষ্ক্রিয় করার পর থেকে যুক্তরাজ্য দ্বারা পরিচালিত একমাত্র পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবস্থা।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ন্যাটোর সামরিক মনোভাব শিথিল করা হয়েছিল। ট্রাইডেন্ট ওয়ারহেডসমূহ কখনই একটি কার্যক্ষম টহলে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে লক্ষ্য করেনি, তবে কো-অর্ডিনেটের জন্য অপেক্ষা করে যা তাদের কম্পিউটারে প্রোগ্রাম করা যেতে পারে এবং কয়েক দিনের নোটিশ দিয়ে ছোড়া করা যেতে পারে। যদিও ট্রাইডেন্টকে একটি কৌশলগত প্রতিবন্ধক হিসাবে নকশা করা হয়েছিল, তবে ঠান্ডা যুদ্ধের সমাপ্তি ব্রিটিশ সরকারকে এই উপসংহারে নিয়ে যায়, যে একটি উপ-কৌশলগত—কিন্তু কৌশলগত নয়—ভূমিকার প্রয়োজন ছিল।
ভ্যানগার্ড-শ্রেণির প্রতিস্থাপনের জন্য একটি কর্মসূচি চলছে। হাউস অব কমন্স ২০১৬ সালের ১৮ই জুলাই একটি বৃহৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট প্রদান করে ড্রেডনট-শ্রেণির ডুবোজাহাজের একটি বহর তৈরি করেতে, যা ২০২৮ সালের মধ্যে চালু হবে, বর্তমান নৌবহরটি ২০৩২ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সম্পূর্ণভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
পটভূমি
সম্পাদনাদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রথম দিকে, যুক্তরাজ্যের (ইউকে) একটি পারমাণবিক অস্ত্র প্রকল্প ছিল, যার কোড-নাম টিউব অ্যালোয় ছিল,[১] যেটিকে ১৯৪৩ সালের কুইবেক চুক্তি মার্কিন ম্যানহাটন প্রকল্পের সাথে একত্রিত করে একটি সম্মিলিত মার্কিন, ব্রিটিশ ও কানাডীয় প্রকল্পে পরিণত করেছিল। ব্রিটিশ সরকার আশা করেছিল, যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (মার্কিন) পারমাণবিক প্রযুক্তি ভাগ করে নেবে, যেটিকে তারা একটি যৌথ আবিষ্কার হিসাবে বিবেচনা করে, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক শক্তি আইন ১৯৪৬ (ম্যাকমোহন আইন) প্রযুক্তিগত সহযোগিতার অবসান ঘটিয়েছিল।[২] মার্কিন বিচ্ছিন্নতাবাদের পুনরুত্থানের ভয়ে ও তার নিজস্ব মহা শক্তির খেতাব হারানোর ভয়ে, ব্রিটিশ সরকার তার নিজস্ব উন্নয়ন প্রচেষ্টা পুনরায় শুরু করে।[৩] অপারেশন হারিকেনের মাধ্যমে ১৯৫২ সালের ৩ অক্টোবর প্রথম ব্রিটিশ পারমাণবিক বোমা পরীক্ষা করা হয়।[৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Gowing 1964, পৃ. 108–111।
- ↑ Jones 2017, পৃ. 1–2।
- ↑ Gowing ও Arnold 1974, পৃ. 181–184।
- ↑ Jones 2017, পৃ. 25।