ট্রডল ইয়ুঙ্গে
গেরট্রড "ট্রডল" ইয়ুঙ্গে (পৈতৃক উপনামঃ হাম্পস্ ; জন্মঃ ১৬ই মার্চ ১৯২০ - ১০ই ফেব্রুয়ারি ২০০২) ছিলেন আডলফ হিটলারের সর্বশেষ ব্যক্তিগত সচিব (প্রাইভেট সেক্রেটারি) যিনি ডিসেম্বর ১৯৪২ থেকে এপ্রিল ১৯৪৫ অব্দি হিটলারের অধীনে কাজ করেছিলেন। ১৯৪৫ সালের জুন মাসে তাকে গ্রেপ্তার ও কারারোধ করা হয় এবং কারাবাসের সময় তাকে উভয় সোভিয়েত (বর্তমান রাশিয়া) এবং মার্কিন সেনাবাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হয়। বৃদ্ধ বয়সে ট্রডল ইয়ুঙ্গে নাৎসিদের মূর্খতা এবং তাদের বর্বরতা নিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে তার স্মৃতিকথা প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্ত নাৎসিদের উপর যথাযথ তদন্ত করার সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপ তার মধ্যে রয়ে যায়। তার স্মৃতিকথা উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছিল যার মধ্যে ২০০৪ সালের জার্মান চলচ্চিত্র ডের উন্টারগাং (বা ডাউনফল) ছিল অন্যতম।
ট্রডল ইয়ুঙ্গে Traudl Junge | |
---|---|
জন্ম | গেরট্রড হাম্পস্ ১৬ মার্চ ১৯২০ |
মৃত্যু | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০০২ মিউনিখ, বাভারিয়া, জার্মানি | (বয়স ৮১)
মৃত্যুর কারণ | ক্যান্সার |
জাতীয়তা | জার্মান |
পেশা | সচিব, উপ-সম্পাদক, বিজ্ঞান প্রতিবেদক[১] |
নিয়োগকারী | আডলফ হিটলার |
পরিচিতির কারণ | দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে আডলফ হিটলার'র ব্যক্তিগত সচিব |
দাম্পত্য সঙ্গী | হান্স ইয়ুঙ্গে (ওয়াফেন-এসএস অফিসার) |
সন্তান | নাই |
পিতা-মাতা | ম্যাক্স হাম্পস্ (বাবা) এবং হিল্ডেগার্ড হাম্পস্ (মা) |
আত্মীয় | ইঙ্গে হাম্পস্ (বোন) |
প্রারম্ভিক জীবনী
সম্পাদনাগেরট্রড "ট্রডল" হাম্পস্ জার্মানির মিউনিখে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ম্যাক্স হাম্পস্ ছিলেন ছিলেন জার্মানির সংরক্ষিত সেনাবাহিনীর (রিজার্ভ আর্মি) অধস্তন অফিসার (ল্যাফট্যানেন্ট) এবং তার মার নাম ছিল হিল্ডেগার্ড হাম্পস্ (পৈতৃক উপনামঃ জোটম্যান)। তার ইঙ্গে নামের একটি ছোট বোন ছিল যার জন্ম হয়েছিলো ১৯২৩ সালে। ট্রডল হাম্পস্ কিশোরী বয়সে ব্যালে নৃত্যশিল্পী হতে চেয়েছিলেন।[২]
হিটলারের অধীনে কর্মজীবন
সম্পাদনাট্রডল ইয়ুঙ্গে ডিসেম্বর ১৯৪২ সাল থেকে হিটলারের অধীনে তার কর্মজীবন শুরু করেন। হিটলারের ব্যক্তিগত সচিবদের মধ্যে ট্রডল ছিলেন সবচেয়ে কনিষ্ঠতম কর্মচারী।
এক বিবৃতিতে ট্রডল বলেছিলেন, "সেই সময় আমার বয়স ছিল ২২ এবং রাজনীতি নিয়ে আমি কিছুই বুঝতাম না; বস্তুত রাজনীতি নিয়ে আমার কোন আগ্রহই ছিল না।" এছাড়া সেই সময়ে হিটলারের মত পৃথিবীর অন্যতম অপরাধীর প্রতি তার অনুরক্তির জন্য ট্রডল ইয়ুঙ্গে অনুতপ্ত ছিলেন।
ট্রডল আরো বলেন, "আমি এটা স্বীকার করি যে, আমি অ্যাডলফ হিটলার কর্তৃক বিমুগ্ধ ছিলাম। হিটলার একজন মনোরম নেতা এবং একজন পিতৃসুলভ বন্ধু ছিলেন। ইচ্ছাকৃতভাবেই সেই সময় আমি আমার বিবেকের সকল সতর্কবাণী এড়িয়ে চলেছি এবং সেই তিক্ত অবসান আসা পর্যন্ত আমি হিটলারের হয়ে কাজ করা উপভোগ করেছি।"
হিটলারের পরামর্শে ১৯৪৩ সালের জুন মাসে ট্রডল ওয়াফেন-এস এস-এর (নাৎসি পার্টির সশস্ত্র শাখা) অফিসার হান্স হারম্যান ইয়ুঙ্গে (১৯১৪-১৯৪৪) সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু পরের বছর অর্থাৎ ১৯৪৪ সালের অগাস্ট মাসে ফ্রান্সে যুদ্ধরত অবস্থায় ট্রডলের স্বামী হান্স শহীদ হন। হিটলারের হয়ে ট্রডল বার্লিন, বের্শটেসগাদেনের ব্যারঘোফে (বাভারিয়ায় অবস্থিত হিটলারের বাড়ি), পূর্ব-প্রুশিয়ার উলফ্শানজেতে এবং সর্বশেষ বার্লিনে হিটলারের বাঙ্কারে কাজ করেন।
বার্লিন, ১৯৪৫
সম্পাদনা১৯৪৫ সালে ট্রডল হিটলারের সাথে বার্লিনে ছিলেন। হিটলার তার শেষ দিনগুলিতে বার্লিনে অবস্থানকালীন সময় তার দুই সচিব ট্রডল ও গের্ডা ক্রিশ্চিয়ানের সাথে মধ্যাহ্ন ভোজে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন।[৩] যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এক স্মৃতিচারণে ট্রডল বলেছিলেন, গের্ডা একবার হিটলারের কাছ থেকে জানতে চেয়েছিল তিনি বার্লিন ত্যাগ করবেন কি না কিন্ত প্রত্যুত্তরে হিটলার দৃঢ়তার সাথেই "না" বলেছিলেন। [৪] ট্রডল এবং গের্ডা উভয়ই তাদের স্মৃতিচারণে বলেন যে, হিটলার একবার কথোপকথনে এটা বলেছিলেন তার মৃতদেহ যেন কোন মূল্যেই সোভিয়েতদের হাতে গিয়ে না পড়ে।[৪] ট্রডল ইয়ুঙ্গে হিটলারের আত্মহত্যার দেড় দিন পূর্বে হিটলারের শেষ রাজনৈতিক ইচ্ছাপত্র (উইল) টাইপ করেছিলেন। ট্রডল তার লেখায় উল্লেখ করেছিলেন যে, এপ্রিলের ৩০ তারিখ তিনি যখন গোয়েবলসের সন্তানদের সাথে খেলছিলেন, তখন "হঠাৎ করে একটি গুলির আওয়াজ শোনা যায়, যা এতো প্রবল, এতো নিকটস্থ ছিল যে আমরা সবাই নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছিলাম। শব্দটির প্রতিধ্বনি প্রত্যেকটা রুমেই শোনা যাচ্ছিল। 'সেটা ছিল সরাসরি আঘাত' এটা বলেই গোয়েবলস কাঁদছিল। ফিউরার (হিটলার) এখন মৃত।"
মে মাসের ১ তারিখ ট্রডল ইয়ুঙ্গে ওয়াফেন-এসএস-এর ব্রিগেডফিউরার উইলহ্যাম মঙ্কের নেতৃত্বে হিটলারের বাঙ্কার ত্যাগ করেন। তাদের সাথে আরো ছিলেন হিটলারের ব্যক্তিগত পাইলট হান্স বাউর, ব্যক্তিগত দেহরক্ষি হান্স রাটেনহিউবার, সচিব গের্ডা ক্রিশ্চিয়ান, সচিব এলস্ ক্রুগার, হিটলারের পথ্যব্যবস্থাবিদ্যাবিৎ (ডায়েটিশিয়ান) কন্সটানজে মাঞ্জিয়ার্লি এবং নাৎসি ডাক্তার এর্ন্সট্-গুন্থার শেঙ্ক। ট্রডল, গের্ডা এবং এলস্ ক্রুগার এল্ব নদী দিয়ে বার্লিন ত্যাগ করতে পারলেও গ্রুপের বাকি সদস্যরা পরবর্তী দিন অর্থাৎ মে মাসের ২ তারিখে সোভিয়েত সেনাবাহিনী (বর্তমান রাশিয়ান সেনাবাহিনী) কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে যারা হিটলারের বাঙ্কারে কাজ করতো, সোভিয়েত সেনাবাহিনী যুদ্ধ সমাপ্তির শেষ এক সপ্তাহে কি হয়েছিল তা জানার নিমিত্তে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের গোয়েন্দা কার্যালয়ে প্রেরণ করে।[৫]
যুদ্ধ-পরবর্তী সময়
সম্পাদনাযদিও ট্রডল এল্ব নদী পর্যন্ত পৌছেছিল কিন্তু সে পশ্চিমে মিত্রশক্তির এলাকায় পৌছাতে পারে নি এবং তাই তাকে বার্লিনে আবার ফিরে আসতে হয়েছিলো। এক মাস অতিবাহিত হওয়ার পর জুলাই ৯ তারিখে ট্রডল সোভিয়েত সেনাবাহিনীর প্রশাসনের দুইজন বেসামরিক কর্মকর্তা দ্বারা গ্রেপ্তার হন এবং গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ট্রডলকে বার্লিনে রাখা হয়। কারাগারে অবস্থানলীন সময় কারাগারের এক সোভিয়েত রক্ষিবাহিনী থেকে ট্রডল জানতে পারেন কীভাবে জার্মান সৈন্যরা রাশিয়ায় তার পরিবারের উপর অত্যাচার চালিয়েছিল এবং সেটা জানার পর ট্রডল উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, এতোদিন ধরে যুদ্ধের কারণ নিয়ে ট্রডল যা জানতেন তা আসলে ছিল নাৎসিদের অপপ্রচার যেটা নাৎসিরা জার্মানির জনসাধারণকে এতোদিন ধরে শুনিয়ে এসেছিল এবং সোভিয়েতদের জার্মান আক্রমণের কারণ ছিল মূলত এতোদিন ধরে জার্মানরা রাশিয়ানদের যে অত্যাচার করে এসেছিল সে প্রতিক্রিয়ার ফলস্বরূপ।[৬]
ট্রডলকে অনেকগুলো কারাগারে রাখা হয়েছিল যেখানে জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রায়শই তাকে হিটলারের পরিপার্শ্ব হিসেবে তার ভূমিকা কি এবং হিটলারের আত্মহত্যাকে ঘিরে অন্যান্য ঘটনাগুলো কি ছিল সে ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হতো। ১৯৪৫ সালে তাকে কারাবাস থেকে মুক্তি দেওয়া হলেও তার বিচরণ শুধু সোভিয়েত শাসিত বার্লিনেই সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয়। ১৯৪৬ সালে ইংরেজি নব-বর্ষের প্রাক্কালে ডিপথেরিয়া রোগে আক্রান্ত হলে ট্রডলকে জার্মানির ব্রিটিশ শাসিত অঞ্চলের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় এবং সেখানে প্রায় দুই মাস তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতালে থাকাকালীন ট্রডলের মা তার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে সক্ষম হন যা তাকে ব্রিটিশ শাসিত জার্মানি থেকে বাভারিয়ায় গমনের অনুমতি দেয়। তাই তিনি ১৯৪৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বার্লিন থেকে যাত্রা শুরু করে সোভিয়েত শাসিত তৎকালীন পূর্ব-জার্মানি হয়ে ব্রিটিশ শাসিত এলাকা দিয়ে মার্কিন শাসিত জার্মানির অঞ্চল বাভারিয়ায় চলে আসেন। মার্কিন শাসিত বাভারিয়ায় আসার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ট্রডল মার্কিনীদের অধীনে প্রায় ছ'মাস ছিলেন। পরে তাকে সেখান থেকে মুক্তি দেওয়া হয় এবং যুদ্ধপরবর্তী জার্মানিতে বসবাস করার তিনি অনুমতি পান।[৭]
পরবর্তী জীবন
সম্পাদনাট্রডল বিখ্যাত ব্রিটিশ ডক্যুমেন্টারী চলচ্চিত্র দ্য ওয়ার্ল্ড এট ওয়ার-এর দুইটি এপিসোডে [নং: ১৬ "ইনসাইড দ্য রাইখ (১৯৪০-১৯৪৪)" এবং নং:২১ "নেমেসিস: জার্মানি (ফেব্রুয়ারি-মে ১৯৪৫)"] এবং মার্কিন সাহিত্যিক ও সাংবাদিক জেমস পি. ও'ডোনেলের ১৯৭৫ সালে প্রকাশিত বই দ্য বাঙ্কার-এর জন্য সাক্ষাতকার দেন। এছাড়া যুদ্ধপরবর্তী সময়ে ট্রডল জার্মানিতে বিভিন্ন সাচিবিক পেশায় কাজ করতেন এবং দীর্ঘ সময় তিনি কুইক নামের জার্মান ম্যাগাজিনে নির্বাহি সম্পাদকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। ট্রডল তার ছোট বোনের কাছে কিছুকাল অস্ট্রেলিয়াতেও বসবাস করেছিলেন এবং অস্ট্রেলিয়ায় পাকাপাকীভাবে থাকার জন্য তিনি আবেদনও জানিয়েছিলেন কিন্তু তার পূর্ব-নাৎসি ইতিহাস থাকায় তার আবেদনপত্র বাতিল করে দেওয়া হয়।[৮]
১৯৮৯ সালে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ট্রডলের জীবন কাহিনী নিয়ে তার হস্তলিখিত কিছু কথা 'ভয়সেস ফ্রম দ্য বাঙ্কার' গ্রন্থে প্রকাশ করা হয়। সে বছর ট্রডল বিবিসি'র 'দ্য ফাটাল এট্রাকশ্যান অব আডলফ হিটলার' নামক ডক্যুমেন্টারী চলচ্চিত্রে সাক্ষাৎকার দেন এবং সেখানে হিটলারের প্রতি সেই সময়ে তার গভীর অনুভূতির কারণ এবং হিটলারের বাঙ্কারে যুদ্ধের শেষ দিনগুলো নিয়ে তিনি সবিস্তারে আলোচনা করেন। পাশাপাশি ১৯৯১ সালে জুয়াইতাস ডয়েচেস ফের্নসেহেন নামের একটি জার্মান টিভি চ্যানেলে 'হিটলার'স হ্যানশম্যান' নামক একটি ধারাবাহিক ডক্যুমেন্টারী চলচ্চিত্রে তিনি সাক্ষাৎকার প্রদান করেন। এছাড়াও ২০০২ সালে ট্রডল অস্ট্রিয়ান লেখিকা এবং সাংবাদিক মেলিসা মুলারের সাথে তার স্মৃতিকথা আনটিল দ্য ফাইনাল আউয়ার প্রকাশ করেন যেখানে তিনি হিটলারের সাথে তার কাজ করার মূহুর্ত নিয়ে বর্ণনা করেছিলেন এবং এটি অধিকতর মিডিয়া কাভারেজও অর্জন করেছিলো। এছাড়া ২০০২ সালে তিনি ব্লাইন্ড স্পট: হিটলার'স সেক্রেটারি নামের একটি অস্ট্রিয়ান প্রামাণ্যচিত্রেও সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন এটিও ব্যাপক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলো।
ট্রডল ইয়ুঙ্গে ২০০২ সালে ১০ই ফেব্রুয়ারি ৮১ বছর বয়সে ক্যান্সার রোগে মৃত্যুবরণ করেন।[৯] মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে তিনি বলেছিলেন, "যেহেতু আমি আমার (জীবনের) গল্পকে বিদায় করেছি, তাই এখন আমি আমার জীবনকেও বিদায় জানাতে পারি।" তাছাড়া ট্রডল ইয়ুঙ্গে আরো বেশি করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠেছিলো, যখন হিটলারের সাথে তার জীবনসম্পর্কিত কিছু অভিজ্ঞতা অস্কার মনোনীত জার্মান চলচ্চিত্র ডের উন্টারগাং-এ অভিনয়ের মাধ্যমে ফুঁটিয়ে তোলা হয়েছিলো। উক্ত চলচ্চিত্রের শুরু এবং শেষ হয়েছিল তার উদ্ধৃতাংশ দিয়ে। চলচ্চিত্রটির শেষে ট্রডল বলেছিলেন,[১০]
আমি নুরেমবার্গ বিচারে নাৎসিদের অপরাধের যে ভয়াবহতার কথা শুনেছি, ৬০ লক্ষ ইহুদিদের করুণ পরিণতি এবং অন্যান্য জাতি এবং ধর্মমতের অনুসারীদের উপর চালানো নাৎসিদের গণহত্যার ব্যাপারে যা জেনেছি, তা অবশ্যই আমাকে প্রচন্ডভাবে অভিঘাত করেছিল। কিন্তু সেই সময় এসব কিছুর সাথে আমি তখন আমার অতীতের যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছিলাম না। আমি শুধুমাত্র এই কারণে খুশি ছিলাম যে এসব অপরাধের জন্য ব্যক্তিগতভাবে আমাকে দোষী সাব্যস্ত হতে হয় নি এবং এইসবের ব্যাপারে আমি তখন কিছু জানতামও না। যাই হোক, একদিন আমি মিউনিখের শোয়াবিং নগরে হাঁটার সময় একটি দেয়ালে সোফি শলের (তৎকালীন নাৎসি বিরোধী তরুণ সক্রিয়-কর্মী) স্মৃতিতে একটি ফলক দেখতে পায়। সেই সময় আমি লক্ষ্য করেছিলাম, যে সালে 'সোফি শল'-এর জন্ম হয়েছিলো, ঠিক একই সালে জন্ম হয়েছিলো আমারও এবং যে বছর নাৎসি বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য তাঁকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছিলো, সেই একই বছর আমি হিটলারের হয়ে কাজ করার জন্য যোগদান করি। এবং সেই মূহুর্তেই আমি সত্যিই উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম যে, অল্প বয়স হওয়ার কারণে নাৎসিদের চিনতে না পারা আসলে কোনরূপ আমার অজুহাত হতে পারে না। নাৎসিদের সাথে কাজ করার পূর্বে আমি অন্ততপক্ষে সেই সময় নাৎসিদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখতে পারতাম।
মিডিয়ায় চিত্রায়ণ
সম্পাদনানিম্নে উল্লেখিত অভিনেত্রীদের দ্বারা ট্রডল ইয়ুঙ্গে বিভিন্ন চলচ্চিত্র এবং নাটকে চিত্রায়িত হয়েছেন।[১১]
- ওয়ান্ডা মুর, ১৯৭৩ সালে নির্মিত নাটক দ্য ড্যাথ অব আডলফ হিটলার।
- অ্যান লিন, ১৯৭৩ সালে নির্মিত ব্রিটিশ চলচ্চিত্র হিটলার: দ্য লাস্ট টেন ডেইজ
- সারাহ মার্শাল, ১৯৮১ সালে নির্মিত মার্কিন চলচ্চিত্র দ্য বাঙ্কার (১৯৮১ চলচ্চিত্র)[১২] যেটি [[জেমস পি.
ও'ডোনেল|জেমস পি. ও'ডোনেলের]] বই দ্য বাঙ্কার-এর গল্পের উপর নির্মিত হয়েছিলো।
- অ্যালেক্সান্দ্রা মারিয়া লারা, ২০০৪ সালে নির্মিত জার্মান চলচ্চিত্র ডের উন্টারগাং (বা ডাউনফল)।
- স্ট্যাসি হার্ট, ২০০৫ সালে নির্মিত ব্রিটিশ নাটক 'আঙ্কেল আডলফ'।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑
Compare: Taylor, Charles (২০০৩-০১-৩১)। "Blind Spot: Hitler's Secretary"। Salon। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-১৪।
[...] she worked as an editor and science journalist, living in a one- room apartment in suburban Munich from the '50s onward.
line feed character in|quote=
at position 71 (সাহায্য) - ↑ Junge, Traudl (জুন ১৪, ২০০৪)। Melissa Muller, সম্পাদক। Until the Final Hour: Hitler's Last Secretary। Phoenix। আইএসবিএন 0753817926।
- ↑ Joachimsthaler 1999, পৃ. 131, 169, 170।
- ↑ ক খ Joachimsthaler 1999, পৃ. 169, 170।
- ↑ Beevor, pp. 382, 383, 388, 389
- ↑ Junge, pp. 219–222
- ↑ Junge, pp. 223–230
- ↑ "Hitler's secretary lived in Australia"। The Age। ২০০৫-০৮-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৭-০৬।
- ↑ Hooper, obituary
- ↑ Der Untergang (Downfall).
- ↑ "Traudl Junge (Character)"। IMDb.com। জানুয়ারি ২১, ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ৮, ২০০৮।
- ↑ "The Bunker (1981) (TV)"। IMDb.com। সংগ্রহের তারিখ মে ৮, ২০০৮।