টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে ৫ উইকেট লাভকারী নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটারদের তালিকা
যখন একজন বোলার কোন একটি ইনিংসে পাঁচ বা ততোধিক ব্যাটসম্যানকে আউট করতে সক্ষম হন, তখন ক্রিকেটের পরিভাষায় তা ‘পাঁচ-উইকেট অর্জন’ নামে পরিচিত পায়। পাঁচ-উইকেট অর্জনকে ‘ফাইভ-ফর’ বা ‘ফিফার’ নামেও ডাকা হয়ে থাকে।[২][৩] টেস্ট ক্রিকেট খেলায় এটি একটি অন্যতম সম্পর্কযুক্ত বিষয় কিন্তু অসাধারণ অর্জন হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।[৪] ১৭ মার্চ, ২০১৯ তারিখ পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে বিশ্বের ১৫৪ জন ক্রিকেটার পাঁচ-উইকেট অর্জন করতে পেরেছেন।[৫]
মার্চ, ২০১৯ সাল পর্যন্ত সর্বমোট নয়জন নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটার তাদের টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট লাভের গৌরবগাঁথা রচনা করেছেন।[৬] ঐ পাঁচ-উইকেটগুলো ছয়টি পৃথক দেশের বিপক্ষে এসেছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনবার, পাকিস্তানের বিপক্ষে দুইবার এবং ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একবার হয়।[৭] তন্মধ্যে, নিউজিল্যান্ড দল চারবার বিজয়ী হয়, তিনবার ড্র ও দুইবার পরাজয়বরণ করে।[৮][৯][১০] নয়টি ভিন্ন মাঠে খেলোয়াড়ের এ কীর্তি গড়েন। ছয়বারই নিউজিল্যান্ডের বাইরে হয়। সাম্প্রতিককালের পাঁচ-উইকেট লাভ হয়েছে আবুধাবির শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।[১১]
প্রথম নিউজিল্যান্ডীয় বোলার হিসেবে ফেন ক্রেসওয়েল এ সম্মাননায় অভিষিক্ত হন। ১৯৪৯ সালে ওভালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের অভিষেক টেস্টে তার এই ফিফারটি এসেছে। তিনি ১৬৮ রান খরচায় ছয় উইকেট তুলে নিয়েছিলেন।[১২][১৩][১৪][১৩] এছাড়াও, ক্রেসওয়েল, অ্যালেক্স মইর ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম - এ তিন নিউজিল্যান্ডীয় প্রত্যেকেই তাদের অভিষেক টেস্টে ছয় উইকেট পেয়েছিলেন।[৬] গ্র্যান্ডহোমের সংগৃহীত ৬/৪১ যে-কোন নিউজিল্যান্ডীয় বোলারের অভিষেক টেস্টে সেরা বোলিং পরিসংখ্যান। ২০১৬ সালে হ্যাগলে ওভালে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে এ কীর্তিগাঁথা রচনা করেন। [৬][১৫] তিনি খেলায় সর্বমোট ৬৪ রান খরচায় সাত উইকেট পেয়েছিলেন। এটিই যে-কোন নিউজিল্যান্ডীয় খেলোয়াড়ের টেস্ট অভিষেকে সেরা।[১৪] এছাড়াও, গ্র্যান্ডহোম ও এজাজ প্যাটেল একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট অভিষেকে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পেয়েছেন।[১৫][১৬] বোলারদের মধ্যে ব্রুস টেলর একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে টেস্ট অভিষেকে অল-রাউন্ডারের কীর্তি গড়েন। ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে কোলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ভারতের বিপক্ষে[ট ১] ১০৫ রান ও ৫/৮৬ পান।[১৭]
অন্য পাঁচজন খেলোয়াড় তাদের টেস্ট অভিষেকে পাঁচ-উইকেট পেয়েছেন।[৬] সর্বশেষ ক্রিকেটার হিসেবে রয়েছেন গ্র্যান্ডহোম। নভেম্বর, ২০১৬ সালে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলে ওভালে তিনি ৬/৪১ পেয়েছিলেন।[১৮] অন্যান্য বোলারদের মধ্যে পল ওয়াইজম্যান সেরা মিতব্যয়ী বোলিং করেন ওভারপ্রতি ১.৭৫ রান দিয়ে ও টিম সাউদি সেরা স্ট্রাইক রেটের অধিকারী।.[ট ২] সাম্প্রতিককালে নভেম্বর, ২০১৮ সালে এ কৃতিত্বের অংশীদার হয়েছেন এজাজ প্যাটেল।[৬][১৫] একমাত্র স্পিন বোলার হিসেবে রয়েছেন - অ্যালেক্স মইর, পল ওয়াইজম্যান ও এজাজ প্যাটেল। বাদ-বাকী ছয়জনই ফাস্ট বোলার।[২০][২১]
নির্দেশনাসমূহ
সম্পাদনা
|
পাঁচ-উইকেট অর্জনের তালিকা
সম্পাদনানং | বোলার | তারিখ | স্থান | প্রতিপক্ষ | ইনিংস | ওভার | রান | উইকেট | ইকোনোমি | ব্যাটসম্যান | ফলাফল |
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১ | ফেন ক্রেসওয়েল | ১৩ আগস্ট ১৯৪৯ | দি ওভাল, লন্ডন | ইংল্যান্ড | ২ | ৪১.২ | ১৬৮ | ৬ | ৪.০৬ | ড্র[১৩] | |
২ | অ্যালেক্স মইর | ১৭ মার্চ ১৯৫১ | ল্যাঙ্কাস্টার পার্ক, ক্রাইস্টচার্চ | ইংল্যান্ড | ২ | ৫৬.৩ | ১৫৫ | ৬ | ২.৭৪ | ড্র[২২] | |
৩ | ব্রুস টেলর | ৫ মার্চ ১৯৬৫ | ইডেন গার্ডেন্স, কলকাতা | ভারত | ২ | ২৩.৫ | ৮৬ | ৫ | ৩.৬০ | ড্র[২৩] | |
৪ | পল ওয়াইজম্যান | ২৭ মে ১৯৯৮ | আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম, কলম্বো | শ্রীলঙ্কা | ৪ | ৪৬.৫ | ৮২ | ৫ | ১.৭৫ | জয়[২৪] | |
৫ | মার্ক গিলেস্পি | ১৬ নভেম্বর ২০০৭ | সুপারস্পোর্ট পার্ক, সেঞ্চুরিয়ন | দক্ষিণ আফ্রিকা | ২ | ৩০.০ | ১৩৬ | ৫ | ৪.৫৩ | পরাজয়[২৫] | |
৬ | টিম সাউদি | ২২ মার্চ ২০০৮ | ম্যাকলিন পার্ক, নেপিয়ার | ইংল্যান্ড | ১ | ২৩.১ | ৫৫ | ৫ | ২.৩৭ | পরাজয়[১] | |
৭ | ডগ ব্রেসওয়েল | ১ নভেম্বর ২০১১ | কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব, বুলাওয়ে | জিম্বাবুয়ে | ৪ | ২৫.০ | ৮৫ | ৫ | ৩.৪০ | জয়[২৬] | |
৮ | কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম | ১৭ নভেম্বর ২০১৬ | হ্যাগলে ওভাল, ক্রাইস্টচার্চ | পাকিস্তান | ১ | ১৫.৫ | ৪১ | ৬ | ২.৬৮ | জয়[১৫] | |
৯ | এজাজ প্যাটেল | ১৬ নভেম্বর ২০১৮ | শেখ জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আবুধাবি | পাকিস্তান | ৪ | ২৩.৪ | ৫৯ | ৫ | ২.৪৯ | জয়[১৬] |
পাদটীকা
সম্পাদনা- ↑ Calcutta was renamed as Kolkata in 2001.
- ↑ In cricket, strike rate is referred to the average number of deliveries bowled before a bowler takes a wicket.[১৯]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "3rd Test: New Zealand v England at Napier, Mar 22–26, 2008"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ Buckle, Greg (৩০ এপ্রিল ২০০৭)। "Pigeon's almost perfect sendoff"। Canberra Times। ১৫ আগস্ট ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০০৯।
McGrath didn't get the five-for that he had hoped for...
- ↑ "Swinging it for the Auld Enemy – An interview with Ryan Sidebottom"। The Scotsman। ১৭ আগস্ট ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০০৯।
... I'd rather take fifers (five wickets) for England ...
- ↑ Pervez, M. A. (২০০১)। A Dictionary of Cricket। Orient Blackswan। পৃষ্ঠা 31। আইএসবিএন 978-81-7370-184-9।
- ↑ "Bowling records: Test matches"। ESPN Cricinfo। ৫ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Bowling records: Test matches (New Zealand)"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / By opposition team"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / Won match"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / Drawn match"। ESPNcricinfo। ২৯ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / Lost match"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / Ground averages"। ESPNcricinfo। ১০ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / By year of match start"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ ক খ গ "4th Test: England v New Zealand at The Oval, Aug 13–16, 1949"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ ক খ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / By year of match start"। ESPNcricinfo। ১০ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ ক খ গ ঘ "1st Test: New Zealand v Pakistan at Christchurch, Nov 17–21, 2016"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ ক খ "1st Test, New Zealand tour of United Arab Emirates at Abu Dhabi, Nov 16-19 2018"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Menon, Mohandas (৪ আগস্ট ২০১৬)। "Rahane and rain hold sway, but Chase outshines all"। Wisden India। ১২ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / Ground averages"। ESPNcricinfo। ১০ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ Williamson, Martin। "An explanation of cricket – A glossary of cricket terms"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩।
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / Spin bowler"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Statistics / Statsguru / Test matches / Bowling records / Fast bowler"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "1st Test: New Zealand v England at Christchurch, Mar 17–21, 1951"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "2nd Test: India v New Zealand at Kolkata, Mar 5–8, 1965"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "1st Test: Sri Lanka v New Zealand at Colombo (RPS), May 27–31, 1998"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "2nd Test: South Africa v New Zealand at Centurion, Nov 16–18, 2007"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Only Test: Zimbabwe v New Zealand at Bulawayo, Nov 1–5, 2011"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ নভেম্বর ২০১৬।