টুংভূম
টুংভূম বা তুঙ্গভূম অধুনা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বাঁকুড়া জেলার রাইপুরের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রাচীন রাজ্যের নাম।[১]
ইতিহাস
সম্পাদনাস্থানীয় কিংবদন্তি অনুসারে, টুং দেও গণ্ডকী নদীর তীরবর্তী অঞ্চল থেকে পুরীতে তীর্থ করতে এসেছিলেন। জগন্নাথের আশীর্বাদে তিনি পুরীর রাজা হন। জগন্নাথ তার নাতি গঙ্গাধর টুংকে স্বপ্নাদেশে জানান যে তার পরে পুরীর সিংহাসনে কোনো উত্তরাধিকার থাকবে না। তাই তাঁর পুত্র যেন নিজের নাম পরিবর্তন করে অন্য কোনো অঞ্চলে চলে যান; সেখানে তিনি রাজা হতে পারবেন।[১]
দশ বছর ঘুরতে ঘুরতে গঙ্গাধর টুঙের পুত্র নুকুর টুং নিজের স্ত্রী, ধনসম্পতি ও সৈন্যসামন্ত নিয়ে ১৩৪৮ সালে (অন্যমতে ১৪৪৮ সালে) শ্যামসুন্দরপুরের কাছে টিকরাপাড়া নামে এক জায়গায় এসে বসতি স্থাপন করেন। সেই সময় রাজগ্রাম নামে সেই জায়গাটি শ্যামসুন্দরপুর, ফুলকুসমা, রায়পুর, সিমলাপাল ও ভালাইদিহা নিয়ে গঠিত ছিল। আগে সামন্তসার রাজা সেখানে রাজত্ব করতেন। এক অগ্নিকাণ্ডে তার পরিবার-পরিজনের মৃত্যু হয়েছিল। শাসকহীন সেই অঞ্চল ডাকাতদের রাজত্বে পরিণত হয়েছিল। নুকুর টুং ডাকাতদের পরাজিত করে সেখানে রাজা হয়ে বসেন। নাম নেন ছত্রনারায়ণ দেব। তিনি তার রাজ্যের নাম রেখেছিলেন জগন্নাথপুর। তিনি ২৫২টি উৎকল ব্রাহ্মণ পরিবারকে সেই অঞ্চলে এনেছিলেন।[১]
রাজা তাঁর গুরু ও সেনাপতি শ্রীপতি মহাপাত্রকে সিমলাপাল পরগণা দান করেন। শিখর রাজপরিবারের এক সদস্যকে রাইপুর পরগণাটি দান করা হয়েছিল। পরে শ্যামসুন্দরপুর ও ফুলকুসমা পরগণাদুটি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে অন্তর্কলহ শুরু হয়।[১]