টি এইচ খান
তোফাজ্জেল হোসেন খান (১ অক্টোবর ১৯২০–১৬ জানুয়ারি ২০২২) যিনি টি এইচ খান নামে পরিচিত। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, সাবেকমন্ত্রী ও সাবেক বিচারপতি। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান। ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়ে তিনি আইন ও বিচার, তথ্য ও বেতার, শিক্ষা, ভূমি, প্রশাসন, ধর্ম, যুব ও ক্রীড়া এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[১][২][৩]
টি এইচ খান | |
---|---|
তোফাজ্জেল হোসেন খান | |
হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি | |
সাবেক মন্ত্রী | |
ময়মনসিংহ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৯৭৯ – ২৪ মার্চ ১৯৮২ | |
পূর্বসূরী | মোঃ দেলোয়ার হোসেন |
উত্তরসূরী | এমদাদুল হক |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ঔটি গ্রাম, হালুয়াঘাট, ময়মনসিংহ, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত, (বর্তমান বাংলাদেশ) | ১ অক্টোবর ১৯২০
মৃত্যু | ১৬ জানুয়ারি ২০২২ |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত(১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান(১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল |
দাম্পত্য সঙ্গী | বেগম রওশন আরা জোবায়দা খানম (১৯৩২-২০১১) |
সন্তান | আফজাল এইচ খান (ছেলে)
ফজলে এলাহী খান (ছেলে) |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
জন্ম ও প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাটি এইচ খান ২১ অক্টোবর ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণ করেন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার ঔটি গ্রামে। তিনি ১৯৪২ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন ময়মনসিংহের ফুলপুর হাইস্কুল থেকে। ইন্টারমিডিয়েট আনন্দ মোহন কলেজ থেকে। এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আইন বিভাগে প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন।[২][৪][৫]
কর্মজীবন
সম্পাদনাটি এইচ খান প্রথম জীবনে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ, ঢাকার জগন্নাথ কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন ও আইন বিষয়ে অধ্যাপনা করেন । ১৯৪৭ সালে তিনি আইন পেশায় যোগদেন। ১৪ মার্চ ১৯৫১ সালে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে যোগ দেন। তিনি মার্চ ১৯৬৮ সালে বিচারপতি হিসেবে পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টে যোগদান করেন। বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের পূর্বে তিনি পূর্ব পাকিস্তান সরকারের অ্যাডভোকেট জেনারেলের (অ্যাটর্নি জেনারেল) দায়িত্ব পালন করেন।[২] ৭ জুন ১৯৭১ বিচারপতি নিযুক্ত হন তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সরকার পক্ষের কৌসুলি। [৬][৭] জুলাই ১৯৭৩ সালে থেকে পুনরায় আইন পেশায় যোগ দেন। তিনি বাংলাদেশ আইনজীবীদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ১ম বার সভাপতি নির্বাচিত হন ১৯৭৪ সালে। ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ক্ষমতা গ্রহণ করলে তিনি সুইজারল্যান্ডে হিউম্যান রাইটস কমিশনের মেম্বার ও পরে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসঙ্ঘে নিয়োগ পান। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির তিনি ২য় বার সভাপতি নির্বাচিত হন ১৯৯৪ সালে। তিনি সাউথ এশিয়া জোনে আন্তর্জাতিক অপরাধ কোর্ট রুয়ান্ডা ট্রাইব্যুনালে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৯৯৫ সালে। আন্তর্জাতিক আদালতে এশিয়া মহাদেশে তিনিই একমাত্র বিচারপতি। জাতিসঙ্ঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে ১৯ জুন ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত বিচার পরিচালনার দায়িত্ব পালনের পর দেশে ফিরে আবারো আইন পেশায় যোগ দেন।[২][৮]
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনা১৯৭৯ সালে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৫ নভেম্বর ১৯৮১ সালে আইন ও বিচার, তথ্য ও বেতার, শিক্ষা, ভূমি, প্রশাসন,ধর্ম, যুব ও ক্রীড়া এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২৪ মার্চ ১৯৮২ সালে এরশাদের সামরিক আইন জারি হলে আবারও আইন পেশায় ফিরে যান তিনি। এরশাদের বিরোধিতা করায় ১৯৮৬ সালে গ্রেফতার হন তিনি। ১৯৯২ সালে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম প্রতিষ্ঠার পর হতে ২০১১ সাল পর্যন্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।[১][২]
পারিবারিক জীবন
সম্পাদনাটি এইচ খানের স্ত্রী বেগম রওশন আরা জোবায়দা খানম যিনি ৭৯ বছর বয়সে ১৭ মে ২০১১ সালে মারা যান। তাদের তিন ছেলে সন্তান আফজাল এইচ খান , ফজলে এলাহী খান এবং ফায়সাল এইচ খান। বড় ছেলে আফজাল এইচ খান (সাংবাদিক ও ময়মনসিংহ-১ (হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।) আর ফয়সাল এইচ খান আইন পেশায় নিযুক্ত আছেন। মেজো ছেলে ফজলে এলাহী খান চাকরি করছেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। একমাত্র মেয়ে ডা. মাহমুদা ফাতেমা খান ঢাকার হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের চিকিৎসক।[২][৯]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "পঁচানব্বই বছরেও তারুণ্যে টি এইচ খান | বাংলাদেশ প্রতিদিন"। Bangladesh Pratidin (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১১।
- ↑ BanglaNews24.com। "টিএইচ খানের ৯৭তম জন্মদিন শুক্রবার"। banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১২।
- ↑ "বিচারপতি টি এইচ খানের জন্মদিন পালিত"। Daily Nayadiganta। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১১।
- ↑ "আজ বিচারপতি টি এইচ খানের জন্মদিন"। Daily Nayadiganta। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১২।
- ↑ "আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১১।
- ↑ "৭ জুন ১৯৭১ টি এইচ খান বিচারপতি নিযুক্ত"। সংগ্রামের নোটবুক (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০১-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১১।
- ↑ "৯৬-তেও পেশায় সক্রিয় বিচারপতি টি এইচ খান | বাংলাদেশ প্রতিদিন"। Bangladesh Pratidin (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১২।
- ↑ "টি এইচ খানের স্ত্রী জোবায়দা মারা গেছেন"। bangla.bdnews24.com। ২০১৯-১০-১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১১।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাপূর্বসূরী: আবদুস সাত্তার |
বাংলাদেশের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী ২৭ নভেম্বর ১৯৮১ – ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ |
উত্তরসূরী: শাহ আজিজুর রহমান |