টম কর্টনি

ব্রিটিশ অভিনেতা

স্যার টমাস ড্যানিয়েল কর্টনি (ইংরেজি: Thomas Daniel Courtenay; ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭)[] হলেন একজন ইংরেজ অভিনেতা। তিনি ১৯৬০-এর দশকের শুরুতে চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সফলতা অর্জন করেন। এই সময়ে তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসমূহ হল দ্য লোনলিনেস অব দ্য লং ডিসটেন্স রানার (১৯৬২), বিলি লায়ার (১৯৬৩), কিং অ্যান্ড কান্ট্রি (১৯৬৪) এবং ডক্টর ঝিভাগো (১৯৬৫)। শেষোক্ত চলচ্চিত্রটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে অস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি ১৯৮৩ সালে দ্য ড্রেসার চলচ্চিত্রে অভিনয় করে সেরা নাট্যধর্মী চলচ্চিত্র অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন এবং শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে অস্কারবাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রসমূহ হল লাস্ট অর্ডারস (২০০১), নিকোলাস নিকলবি (২০০২) এবং ফোর্টি ফাইভ ইয়ার্স (২০১৫)।


টম কর্টনি
Tom Courtenay
২০১৫ সালের বার্লিনালে-তে কর্টনি
জন্ম
টমাস ড্যানিয়েল কর্টনি

(1937-02-25) ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭ (বয়স ৮৭)
হাল, ইস্ট রাইডিং অব ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
মাতৃশিক্ষায়তনরয়্যাল একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্ট
পেশাঅভিনেতা
কর্মজীবন১৯৬০-বর্তমান
দাম্পত্য সঙ্গীশেরিল কেনেডি
(বি. ১৯৭৩; বিচ্ছেদ. ১৯৮২)

ইজাবেল ক্রসলি (বি. ১৯৮৮)

টেলিভিশনে তিনি আ র‍্যাদার ইংলিশ ম্যারিজ টিভি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে এবং আনফরগিভেন ধারাবাহিকে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে বাফটা টিভি পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া তিনি লিটল ডোরিট ধারাবাহিকে অভিনয় করে একটি প্রাইমটাইম এমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। চলচ্চিত্র ও মঞ্চে অবদানের জন্য ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাকে নাইট ব্যাচেলর উপাধিতে ভূষিত করা হয়।

প্রারম্ভিক জীবন

সম্পাদনা

কর্টনি ১৯৩৭ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি ইস্ট রাইডিং অব ইয়র্কশায়ারের হালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা টমাস হেনরি কর্টনি একজন নৌ চিত্রশিল্পী ছিলেন এবং তার মাতা অ্যানি এলিজা (প্রদত্ত নাম: কোয়েস্ট; মৃ. ১৯৬২)।[] তিনি কিংস্টন হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন এবং লন্ডনের রয়্যাল একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টে নাট্যতত্ত্ব বিষয়ে অধ্যয়ন করেন।

কর্মজীবন

সম্পাদনা

কর্টনির মঞ্চাভিনয়ের অভিষেক হয় ১৯৬০ সালে এডিনবারার লাইসিয়ামে মঞ্চস্থ ওল্ড ভিস থিয়েটার কোম্পানির দ্য সিগাল নাটক দিয়ে।[] ১৯৬১ সালে তিনি ক্যামব্রিজ থিয়েটারে বিলি লায়ার মঞ্চনাটকে নাম ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য অ্যালবার্ট ফিনির স্থলাভিষিক্ত হন, এবং পরবর্তী কালে এই নাটকের চলচ্চিত্রায়নেও এই চরিত্রে অভিনয় করেন। ফিনি সম্পর্কে তিনি বলেন, "আমাদের দুজনেরই একই সমস্যা ছিল, উত্তরাঞ্চলের কর্কশ উচ্চারণের সমস্যা থেকে উতরানো।"

কর্টনির চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় ১৯৬২ সালে ফিনীয় পরিচালক কাসপার ভ্রেদের প্রাইভেট পটার চলচ্চিত্র দিয়ে। ভ্রেদে তাকে রয়্যাল একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টে প্রথম দেখেছিলেন। তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র টনি রিচার্ডসনের দ্য লোনলিনেস অব দ্য লং ডিসটেন্স রানার (১৯৬২) এবং তৃতীয় চলচ্চিত্র জন শ্লেসিঞ্জারের বিলি লায়ার (১৯৬৩)। ছবি দুটি বহুল প্রশংসিত হয়[] এবং ১৯৬০-এর দশকের শুরুতে ব্রিটিশ নব কল্লোলকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। প্রথম কাজটির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ সম্ভাবনাময় নবাগত হিসেবে বাফটা পুরস্কার অর্জন করেন এবং দ্বিতীয় কাজটির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

তিনি ১৯৬৪ সালে জোসেফ লোজি পরিচালিত কিং অ্যান্ড কান্ট্রি ছবিতে ডার্ক বোগার্ডের সাথে অভিনয় করেন এবং এই কাজের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে ভল্পি কাপ অর্জন করেন ও শ্রেষ্ঠ অভিনেতার বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। পরের বছর তিনি ডেভিড লিনের ধ্রুপদী ডক্টর ঝিভাগো (১৯৬৫) ছবিতে বিপ্লবী পাশা অ্যান্টিপভ চরিত্রে অভিনয় করেন।[] এই কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে অস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, কিন্তু মার্টিন বালসামের কাছে পরাজিত হন। এই সময়ে তিনি মাইকেল অ্যান্ডারসনের অপারেশন ক্রসবো (১৯৬৫) ছবিতে জর্জ পেপার্ড ও সোফিয়া লরেনের সাথে এবং ব্রায়ান ফোর্বসের কিং র‍্যাট (১৯৬৫) ছবিতে জেমস ফক্স ও জর্জ সিগালের সাথে এবং আনাতোলে লিতভাক দ্য নাইট অব দ্য জেনারেলস (১৯৬৭) ছবিতে পিটার ওটুলওমর শরিফের সাথে অভিনয় করেন।

তিনি রোনাল্ড হারউডের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ১৯৮৩ সালে দ্য ড্রেসার চলচ্চিত্রে তার পুরনো বন্ধু অ্যালবার্ট ফিনির সাথে অভিনয় করেন। কর্টনি ও ফিনি দুজনেই শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে অস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন,[] কিন্তু রবার্ট ডুভলের কাছে পরাজিত হন। এছাড়া কর্টনি এই কাজের জন্য সেরা নাট্যধর্মী চলচ্চিত্র অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন এবং বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।

তিনি ব্রিটিশ প্রণয়মূলক নাট্যধর্মী ফোর্টি ফাইভ ইয়ার্স (২০১৫) চলচ্চিত্রে শার্লট র‍্যাম্পলিংয়ের সাথে অভিনয় করেন। এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে রৌপ্য ভল্লুক অর্জন করেন এবং তার সহশিল্পী র‍্যাম্পলিংও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার অর্জন করেন।[] ২০১৮ সালে তিনি হ্যাটন গার্ডেনের হাস্যরসাত্মক কিং অব থিভস ছবিতে মাইকেল কেইন, জিম ব্রডবেন্ট ও রে উইনস্টোনের সাথে এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন প্রণয়ধর্মী দ্য গের্নি লিটেরারি অ্যান্ড পট্যাটো পিল পাই সোসাইটি ছবিতে অভিনয় করেন।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Tom Courtenay Biography (1937-)"ফিল্ম রেফারেন্স। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  2. রজার্স, জুড (২০ এপ্রিল ২০১৮)। "Tom Courtenay: 'I've done my best work since I was diagnosed with prostate cancer'"দ্য গার্ডিয়ান। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  3. "Sir Tom Courtenay wins film award"বিবিসি নিউজ (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  4. ইভান্স, মার্টিন (২০ এপ্রিল ২০১৮)। "Tom Courtenay gets a new lease of life after being cured of colour blindness at 81"দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা