টংসা
টংসা[১](বৈজ্ঞানিক নাম: Hypolycaena erylus (Godart)) 'লাইসিনিডি' গোত্রের এবং 'থেকেলিনি' উপগোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছোট আকার বিশিষ্ট প্রজাতি।[২]
টংসা Common tit | |
---|---|
ডানা বন্ধ অবস্থায় | |
ডানা খোলা অবস্থায় | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | Arthropoda |
শ্রেণী: | Insecta |
বর্গ: | Lepidoptera |
পরিবার: | Lycaenidae |
গণ: | Hypolycaena |
প্রজাতি: | H. erylus |
দ্বিপদী নাম | |
Hypolycaena erylus (Godart, 1823) | |
Subspecies | |
Many, see text | |
প্রতিশব্দ | |
|
আকার
সম্পাদনাটংসা এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৩২-৩৬ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[১]
উপপ্রজাতি
সম্পাদনাএখনও পর্যন্ত টংসা প্রজাপতিদের ১৫টি উপপ্রজাতি চিহ্নিত করা গেছে।
- H. e. erylus
- H. e. pupienus Fruhstorfer, 1912
- H. e. teatus Fruhstorfer, 1912
- H. e. himavantus Fruhstorfer, 1912
- H. e. andamana Moore, 1877
- H. e. syphax Fruhstorfer, 1912
- H. e. gamatius Fruhstorfer, 1912 (Sulawesi) (= H. e. pigres Fruhstorfer, 1912 (Obi))
- H. e. tmolus C. & R. Felder, 1862
- H. e. orsiphantus Fruhstorfer, 1912
- H. e. aimnestus Fruhstorfer, 1912
- H. e. georgius Fruhstorfer, 1912
- H. e. thyrius Fruhstorfer, 1912
- H. e. moutoni Ribbe
- H. e. figulus Fruhstorfer, 1912
- H. e. erna Kalis, 1933
ভারতে প্রাপ্ত টংসা এর উপপ্রজাতি
সম্পাদনাভারতে প্রাপ্ত টংসার উপপ্রজাতি হল-[৩]
- Hypolycaena erylus himavantus Fruhstorfer, 1912 – Sikkim Common Tit
- Hypolycaena erylus andamana Moore, 1877 – Andaman Common Tit
বিস্তার
সম্পাদনাভারত (সিকিম থেকে অরুণাচল প্রদেশ, উত্তর-পূর্ব ভারত, আন্দামান)[৪] নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, লাওস, ভিয়েতনাম, জাভা, মালয়েশিয়া উপদ্বীপ, সুমাত্রা, বোর্নিও, ফিলিপিন্স ইত্যাদি অঞ্চলে এদের পাওয়া যায়।[২][৫]
বর্ণনা
সম্পাদনাপ্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিশদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-
ডানার উপরিতল : পুরুষ প্রকারে ডানার উপরিতল গাঢ় নীল ও কালচে খয়েরির মিশ্রণ। পুরুষ নমুনায় উপরিতলের নীল রঙ ডানার বিশেষ কৌণিক অবস্থানে (ডানা মেলা অবস্থায়) আলোর প্রতিফলনের কারণে দৃশ্যমান হয়; অন্যথায় তা কালচে খয়েরিই দেখায়| সামনের ডানায় কোস্টাল প্রান্তরেখা ও টার্মিনাল প্রান্তরেখা বরাবর সরুভাবে নীল রঙ অনুপস্থিত। এছাড়াও সেল-এর বহিঃপ্রান্তে ডিসকাল অংশে ২,৩,৪ ও ৫ নং শিরা জুড়ে খানিকটা জায়গায় নীল রঙ দেখা যায় না; কালচে-খয়েরি রঙ অস্পষ্টভাবে পরিস্ফুট। পিছনের ডানার গোড়ার (base) নিচের দিকের অংশ ও ডরসাম ফ্যাকাশে ছাইরঙা রোঁয়ায় আবৃত। টরনাস ফ্যাকাশে সাদা এবং টরনাল ছোপটি কালোয় ঘেরা ঈষৎ হলুদ। পিছনের ডানায় ১ ও ২ নং শিরাস্থলে দুটি লেজ বর্তমান। ১ নং শিরাস্থলের লেজটি ৬ মি.মি. ও ২ নং শিরাস্থলের লেজটি ৫ মি.মি.।
স্ত্রী প্রকারে উপরিতলের রঙ গাঢ় বা কালচে খয়েরি। উভয় ডানায় কোস্টার খানিক নিচ থেকে ডরসামের খানিক উপর পর্যন্ত অস্পষ্ট ডিসকাল রেখা বিদ্যমান। পিছনের ডানায় মধ্যভাগ থেকে ডরসামের উপর অবধি ৩-৪ টি সাদা পোস্ট-ডিসকাল ছোপের সারি লক্ষ্য করা যায়। সাব-টার্মিনাল আঁকাবাঁকা সাদা রেখাটি অস্পষ্ট এবং টার্মেন সুস্পষ্ট ও সরুভাবে সাদা। টরনাস ফ্যাকাশে সাদা এবং টরনাল ছোপদুটি কালো ও সাদা বলয় দ্বারা ঘেরা।
ডানার নিম্নতল :স্ত্রী-পুরুষ উভয় নমুনাতেই ডানার নিম্নতল ফ্যাকাশে ধূসর বাদামি| উভয় ডানাতেই সেল-এর বহিঃপ্রান্তে দুটি করে ছোট, সমান্তরাল ঈষদ কমলা-হলুদ দাগ বিদ্যমান (double bar)| উভয় ডানাতেই কোস্টা থেকে ডরসামের উপর পর্যন্ত তির্যক, সাদা কিনারাযুক্ত, কমলা-হলুদ ও সরু ডিসকাল বন্ধনী বা ডিসকাল রেখা দেখা যায়| সামনের ডানার ডিসকাল বন্ধনীটি অবচ্ছিন্ন (continuous) ও পিছনের ডানারটি খন্ডখন্ড (broken)| পিছনের ডানায় কালো টরনাল ছোপদুটি ভিতরের দিকে কমলা অর্ধ-বলয় দিয়ে ঘেরা| টরনাল ছোপদুটির মধ্যবর্তী অংশ চকচকে ঈষদ নীলচে আঁশে ছাওয়া এবং ডরসামের প্রান্তরেখা সাদা|
শুঙ্গ সাদা-কালোয় ডোরাকাটা, শীর্ষভাগ কালো ও শীর্ষবিন্দু কমলা-হলুদ| পুরুষ প্রকারে মাথা, বক্ষদেশ ও উদর উপরিতলে নীলচে ও কালচে বাদামি; স্ত্রী নমুনাতে কালচে খয়েরি ও উভয় নমুনাতেই নিম্নতলে ফ্যাকাশে ধূসর বাদামি|[৬][৭][৮]
আচরণ
সম্পাদনাদ্রুত ও স্বল্প-পাল্লার উড়ান বিশিষ্ট এই প্রজাতি ভূমির কাছাকাছি নিচ দিয়ে ওড়ে। পুরুষ প্রকারকে সবসময়েই দেখা গেলেও স্ত্রী নমুনার দর্শন মেলে কদাচিৎ। প্রায়শই এদের পাতায় বসে রোদ পোহাতে (busking) দেখা যায়, তবে ফুলে বসতে দেখা যায় কালেভদ্রে। কম উচ্ছতাবিশিষ্ট পাহাড়ি জঙ্গলে (১৩০০ মি. পর্যন্ত) মাটির ভিজে ছোপে, জঙ্গলের পথে, ঝর্ণা বা নদীর কিনারে ও নদীখাতের বালির চড়াতে মাড-পাডলিং করতে এই প্রজাতির পুরুষ প্রকারকে নিয়মিতভাবে চোখে পরে এপ্রিল থেকে জুলাই ও সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। তরাই ও সাধারণ বনভূমিতেও অনুরূপ পরিবেশে এদের প্রায়শই দর্শন পাওয়া যায়।[২][৯]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ A Pictorial Guide Butterflies of Gorumara National Park (2013 সংস্করণ)। Department of Forests Government of West Bengal। পৃষ্ঠা 92।
- ↑ ক খ গ Kunte, Krushnamegh (২০১৩)। Butterflies of The Garo Hills। Dehradun: Samrakshan Trust, Titli Trust and Indian Foundation of Butterflies। পৃষ্ঠা ৬২।
- ↑ "Hypolycaena erylus Godart, 1824 – Common Tit"। ১৩ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ R.K., Varshney; Smetacek, Peter (২০১৫)। A Synoptic Catalogue of the Butterflies of India। New Delhi: Butterfly Research Centre, Bhimtal & Indinov Publishing, New Delhi। পৃষ্ঠা 119। আইএসবিএন 978-81-929826-4-9। ডিওআই:10.13140/RG.2.1.3966.2164।
- ↑ দাশগুপ্ত, যুধাজিৎ (২০০৬)। পশ্চিমবঙ্গের প্রজাপ্রতি (১ম সংস্করণ সংস্করণ)। কলকাতা: আনন্দ। পৃষ্ঠা ১৫১। আইএসবিএন 81-7756-558-3।
- ↑ Haribal, Meena (১৯৯২)। The Butterflies of Sikkim Himalaya and Their Natural History। Gangtok, Sikkim, India: Sikkim Nature Conservation Foundation। পৃষ্ঠা 107।
- ↑ Evans, W.H. (১৯৩২)। The Identification of Indian Butterflies (2nd সংস্করণ)। Mumbai, India: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 294, ser no H80.3।
- ↑ Wynter-Blyth, Mark Alexander (১৯৫৭)। Butterflies of the Indian Region। Bombay, India: Bombay Natural History Society। পৃষ্ঠা 253–254। আইএসবিএন 978-8170192329।
- ↑ Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা ২৩১। আইএসবিএন 978 019569620 2।