জ্যাসন রিঅ্যাক্টর

জ্যাসন রিয়েক্টর (ইংরেজি: JASON reactor) হলো যুুক্তরাজ্যের নৌবাহিনীর পারমাণবিক সাবমেরিন প্রকল্পে জড়িত সামরিক ও বেসামরিক কর্মীদের প্রশিক্ষণের জন্য লন্ডনের গ্রিনিচের রয়্যাল নেভাল কলেজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্থাপিত একটি স্বল্প-শক্তি সম্পন্ন পারমাণবিক গবেষণা চুল্লী[]

এটি মূলত আর্গোনট সিরিজের ১০ কিলোওয়াটের একটি গবেষণা চুল্লি, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্গোন ন্যাশনাল ল্যাবরেটরীতে ডিজাইন করা। যুক্তরাজ্যের রাজকীয় নৌবাহিনী পরীক্ষামূলকভাবে এবং প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করেছিল।[][] রাজকীয় নৌবাহিনীর পারমাণবিক শক্তি চালিত ডুবোজাহাজগুলোতে ব্যবহৃত চুল্লিগুলো আসলে চাপযুক্ত জল চুল্লি (পিডাব্লুআর), যা কয়েক মিলিয়ন মেগাওয়াট শক্তি সরবরাহ করে।

তৎকালীন সময়ে জনবহুল অঞ্চলে অবস্থিত অন্যতম পারমাণবিক চুল্লীগুলোর মধ্যে জ্যাসন রিয়েক্টর ছিল অন্যতম (অন্যটি ছিল পূর্ব লন্ডনের কুইন মেরিতে)– এবং নিঃসন্দেহে এটি ছিল ১৭ শতকের একটি ভবনে স্থাপিত একমাত্র চুল্লী। রয়েল নেভাল কলেজের ভবনটি পূর্বে গ্রিনিচ হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহৃত হত। ১৬৯৬ থেকে ১৭১২ সালের মধ্যে ক্রিস্টোফার রেন ভবনটি নির্মাণ করেন। সেখানে কিং উইলিয়াম ভবনের মধ্যে চুল্লিটি ছিল। মধ্য লন্ডনের খুব কাছাকাছি জায়গায় থাকা সত্ত্বেও এই পারমাণবিক চুল্লীটির অস্তিত্ব সাধারণ জনগণের কাছে অনেকটাই অজানা ছিল। এমনকি ১৯৯৭ সালে "মেরিটাইম গ্রিনিচ"-কে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য হিসাবে স্থানও দেওয়া হয়েছিল।

পরিচালনা এবং ক্ষয়ক্ষতি

সম্পাদনা

জ্যাসন রিয়েক্টর ১৯৬২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সেখানে সচল ছিল (এর আগে, ১৯৫৯ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এটি স্লাও'র ল্যাংলিতে হকার সিডলি নিউক্লিয়ার পাওয়ার কর্পোরেশন দ্বারা পরিচালিত হত) এবং ১৯৯৯ সালে এটি সম্পূর্ণরূপে ভেঙে ফেলা হয়েছিল। তখন সেখান থেকে ২৭০ টন (২৯৭ মার্কিন টন; ৫৯৫,২৪৮ পাউন্ড) তেজস্ক্রিয় বর্জ্য অপসারণ করা হয়।

 
জ্যাসন ফুয়েল রডের রেপ্লিকা

ইউরেটম চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগে ইউরোপীয় কমিশন ইউরোপের ন্যায়বিচার আদালতে যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে একটি মামলা (সি-৬১/০৩ কমিশন বনাম যুক্তরাজ্য) দায়ের করে।  এই মামলাটি ২০০২ সালের ১২ এপ্রিল খারিজ হয়ে যায়।[] আদালত রায়ে উল্লেখ করে যে, এই চুক্তিটি সামরিক উদ্দেশ্যে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।[]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Welcome to the University of Greenwich, London"গ্রিনিচ বিশ্ববিদ্যালয় (ইংরেজি ভাষায়)। ১৭ জুন ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৪ 
  2. Decommissioning of research reactors : evolution, state of the art, open issues. (ইংরেজি ভাষায়)। ভিয়েনা: আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা। ২০০৬। আইএসবিএন 9201126050ওসিএলসি 71317149 
  3. লকউড, রিক; বেলি, ফিলিপ (১৯৯৯)। "The removal of the Jason reactor at Greenwich"ইনজেনিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। ১০: ২৯–৩৪। ২৯ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০২০ 
  4. "Judgement of the court in case 61/03"অফিসিয়াল জার্নাল অব দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইংরেজি ভাষায়): সি ১৩২/৩। ২৮ মে ২০০৫। 
  5. "International Atomic Energy Agency Conventions on nuclear accidents" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৭-০৯-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।  (Select Committee on European Scrutiny Second Report)

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা