জেন গুডঅল

জেন গুডঅল হলেন একজন ইংরেজ প্রিমাটোলজিস্ট, এথোনোলজিন্ট , নৃবেজ্ঞানী, এবং ইউ.ই. শান্তি দূত]. ভালেরি জ

ডেম জেন গুডঅল, অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (/ˈɡʊdˌɔːl/; ভালেরি জেন মরিস গুডঅল একজন ইংরেজ প্রাইমেটলজিস্ট এবং নৃবিজ্ঞানী[] তিনি মূলতঃ শিম্পাঞ্জি বিশেষজ্ঞ নামেই বিশ্বজুড়ে পরিচিত। [] ১৯৬০ সালে তানজানিয়ায় যাওয়ার পর থেকেই সেখানে এক নাগাড়ে ৫৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্য শিম্পাঞ্জির সামাজিক ও পারিবারিক প্রেক্ষাপট নিয়ে তিনি গবেষণা করেছেন। তিনি একাধারে জেন গুডঅল ইন্সটিটিউট এবং দ্যা রূটস্ এন্ড সুটস এর প্রতিষ্ঠাতা। একই সাথে তিনি পশু সংরক্ষণ এবং কল্যাণ বিষয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করেছেন।১৯৯৬ সাল থেকে তিনি নন-হিউম্যান রাইটস প্রজেক্টে অবদান রাখছেন। [][]

জন্ম (1934-04-03) ৩ এপ্রিল ১৯৩৪ (বয়স ৯০)
মাতৃশিক্ষায়তননিয়নহাম কলেজ, কেমব্রিজ
ড্রউইন কলেজ, কেমব্রিজ
পরিচিতির কারণবানর তত্ত্ব বিশ্লেষক,পশু কল্যাণ ও সংরক্ষণ
পুরস্কারকিয়োটো পদক (১৯৯০)
হুবার্ড পদক (১৯৯৫)
পরিবেশগত অবদানের জন্য টিলার পুরস্কার (১৯৯৭)
অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (২০০৪)
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
ডক্টরাল উপদেষ্টারবার্ট হাইড

প্রাথমিক জীবন

সম্পাদনা

জেন গুডঅল ১৯৩৪ সালে লন্ডন, ব্রিটিশ এম্পায়ারে জন্মগ্রহণ করেন । তার পিতার নাম হার্বার্ট মরিস গুডঅল ও মাতার নাম মার্গারেট ম্যানফ্যানউই জোসেফ []। জন্মের পর থেকেই তার জীবপ্রেম দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে থাকে। বাল্যকালে পিতার কাছ থেকে পাওয়া "জুবলি" নামক এক খেলনা বানর প্রাপ্তির মাধ্যমে প্রাইমেট বর্গের প্রতি তার আগ্রহ জন্মে। পরবর্তীতে বাস্তব জীবনেই তিনি বানর প্রজাতি নিয়ে কাজ শুরু করেন। []

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

গুডঅল দুইবার বিয়ে করেছেন। ২৪ মার্চ, ১৯৬৪ সে একজন ডাচ বন্য জীবন চিত্রগ্রাহক ব্যারন হুগো ফ্যান লাভিকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনি লন্ডনের একজন নামকরা ফটোগ্রাফার ছিলেন। এই দম্পত্তির এক পুত্র সন্তান রয়েছেন। ১৯৭৪ সালে এই দম্পত্তির বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এর পরের বছর অর্থাৎ ১৯৭৫ সালে সে ডিরেক ব্রাইকিসানকে (তানজানিয়ার সাবেক সাংসদ ও জাতীয় পার্কের সাবেক পরিচালক) বিয়ে করেন। ডিরেক অক্টোবর ১৯৮০ সালে ক্যানসারে মারা যান।[]

আফ্রিকা

সম্পাদনা

গুডঅল সবসময় প্রাণী এবং আফ্রিকা সম্পর্কে উৎসাহী ছিলেন । তিনি ১৯৫৭ সালে কেনিয়ায় এর বন্ধুর ফার্মে যান।[] সেখানে তিনি কিছুদিন তার এক বন্ধুর সহায়িকা হিসেবে কাজ করেন। এরপর তাকে জন নেপার এবং ওসামা হিলের সাথে লন্ডন, ইংল্যান্ডে পশুর ওপরে পড়ালেখার জন্য পাঠানো হয়।[] তখন তিনি একজন শিম্পাঞ্জি গবেষণাকারী হিসেবে একজন হোমিডিস বিশেষজ্ঞের সহায়িকা হিসেবে নিযুক্ত হন। এই সূত্রে তাকে তানজানিয়া পাঠানো হয়। সেখানে তিনি গম্বি স্ট্রিম জাতীয় পার্কে তার গবেষণা শুরু করেন।[]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

গম্বি স্ট্রিম জাতীয় পার্কে গবেষণা

সম্পাদনা
জেন গুডঅল সিলভার ডোনাল্ড কেমরেুনের সাথে তার কাজ সম্পর্কে আলোচনা করছেন

গুডঅল শিম্পাঞ্জিদের সামাজিক ও পারিবারিক গবেষণার জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। তিনি কাসাখেলা শিম্পাঞ্জি কমিউনিটি নিয়ে তানজানিয়ার গম্বি স্ট্রিম জাতীয় পার্কে ১৯৬০ সালে গবেষণা শুরু করেন।[১০] তিনি শিম্পাঞ্জি পর্যবেক্ষণের সময় তাদের নাম্বার দ্বারা মনে না রেখে সে শিম্পাঞ্জিদের ফিফি, ডেভিড এরকম নাম প্রদান করতেন। সে প্রত্যেকের সাথে এক এক জন আলাদা মানুষের মতো আচরণ করতেন, যা সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে অভাবনীয় ছিলো।[১১]

তার দেয়া বানরদের কিছু নাম:

  • ডেভিড গ্রেব্রেড, ধূসর রং-এর গুডঅলের পর্যবেক্ষিত প্রথম শিম্পাঞ্জি;[১২]
  • গোলিয়াত, ডেভিড গ্রেব্রেডের বন্ধু, অন্যদের চেয়ে বড় বপু এবং দলের নেতা হওয়ার কারণে গোলাইত নাম দেওয়া হয়;
  • মাইক, গোলিয়াতের মতই আরেক শিম্পাঞ্জি;
  • হামাফ্র, বড়, শক্তিশালী ও অন্যদের বিরক্ত করতে পটু পুরুষ বানর;
  • গিগি, একটা বড় ও মোটা মেয়ে শিম্পাঞ্জি , অন্য সব শিম্পাঞ্জিরা একে "আন্টি" বলে ডাকতো;
  • মি. ম্যাক, এক বুদ্ধিমান বৃদ্ধ পুরুষ শিম্পাঞ্জি;
  • ফোলো, বড় নাকযুক্ত ও লম্বা নাকাওলামা শিম্পাঞ্জি; ফিগান, ফাবেন, ফ্রিডু, ফিফি এবং ফালিন্ট;[১৩][১৪]
  • ফ্রোডো, ফিফির দ্বিতীয় সন্তান[১৫]

তিনি মনে করেন, "শুধু মানুষ-ই নয় শিম্পাঞ্জিদের মাঝেও সুখ, দুংখ,আনন্দ ও ভালবাসা রয়েছে "[১১] তিনি শিম্পাঞ্জিদের জড়িয়ে ধরে, চুমু খেয়ে এমন কি কথা বলে তাদের আচরণের সাথে মানুষের আচরণের মধ্যকার মিল পর্যবেক্ষণ করতেন।[১১]

জেন গুডঅল ইন্সটিটিউট

সম্পাদনা

১৯৭৭ সালে জেন গুডঅল আফ্রিকায় তার গবেষণার সুবিধার জন্য জেন গুডঅল ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন।[১৬] জেন গুডঅল ইন্সটিটিউটের মূল কাজ ছিলো গম্বি স্ট্রিম জাতীয় পার্কের গবেষণায় সহায়তা করার সাথে সাথে সারা পৃথিবীতে নন-হিউমান রাইটস্ প্রোজেক্টের মাধ্যমে শিম্পাঞ্জি ও নরবানরদের আধিকার নিশ্চিত করা।[১৭]

 
জেন গুডঅল ২০০৮ সালে হাঙ্গেরিতে
 
জেন গুডঅল ২০০9 সালে লুই পিরতির সাথে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "ডেম জেন গুডঅল"উইমেনস হাওয়ার। ২০১০ মৌসুম। ২৬ জানুয়ারি ২০১০। বিবিসি রেডিও ৪। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১০ 
  2. হ্যালোওয়ে, এম. (১৯৯৭) প্রোফাইল: জেন মরিস গুডঅল – গম্বের বিখ্যাত প্রাইমেট, আমেরিকান বৈজ্ঞানিক ২৭৭(৪), ৪২–৪৪.
  3. "জেন আবারো বনে"। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক। এপ্রিল ২০০৩। সংগ্রহের তারিখ ১৭ নভেম্বর  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  4. "আমাদের সম্মন্ধে"এন.এইচ.আর.পি. ওয়েবসাইট। Nনন-হিউম্যান রাইটস প্রোজেক্টে। ২৬ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩ 
  5. "২০১৩ আসছে আর আমরা প্রস্তুত!"এন.এইচ.আর.পি. ওয়েবসাইট। নন-হিউম্যান রাইটস প্রোজেক্টে। ১৬ জানুয়ারি ২০১৩। ১৪ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩পরের বছর,একটি বোর্ড সদস্য হিসেবে আমি মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ জন্য জেন গুডঅলের সঙ্গে নন-হিউম্যান রাইটস প্রকল্প, ইনক, কেন্দ্র তৈরি করছিলাম। 
  6. দ্যা বায়োগ্যাফি চ্যানলে (২০১০)। "জেন গুডঅল-এর জীবনী"। ১০ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ জুলাই ২০১০ 
  7. গুডঅল, জেন; ফিলিপ ব্যারম্যান (২০০০)। রিসন ফর হোপ। নিউ ওয়ার্ক: ওয়ার্নার বুকস। পৃষ্ঠা ৪। আইএসবিএন 978-0-446-67613-7 
  8. ওয়াল্কিং উইথ্ দ্যা গ্রেট এ্যাপিস। হউগটন। ১৯৯১। পৃষ্ঠা ১২৫–১২৬। আইএসবিএন 0-395-51597-1 
  9. মরেল, ভারজেনিয়া (১৯৯৫)। এনকিসট্রাল প্যাসানস। যুক্তরাষ্ট্র: সিমন এবং সাকহোস্টার। পৃষ্ঠা 242। আইএসবিএন 0-684-80192-2 
  10. "স্টাডি কর্নার – গম্ব টাইমলাইন"। Jane Goodall Institute। ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ০২ মার্চ ২০১৫  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  11. "জনে গুডলের বানর প্রতি ধারণা"। পিবিএস। ১৯৯৬। সংগ্রহের তারিখ ০২ মার্চ ২০১৫  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  12. Gombe National Park, ডেভিড গ্রেব্রেড, Janegoodall.org
  13. ফ্লো (১৯২৯ – ১৯৭২),
  14. ফিফি (১৯৫৮-২০০৪), Janegoodall.org
  15. ফ্লো, এ. (২০০৩)। "ফ্রোডো"। ন্যাশনাল জিওগ্রফ্রিক সোসাইটি। ২৮ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০০৯ 
  16. "আমাদের ইতিহাস"রুটস আর সুটস। দ্যা জেন গুডঅল ইন্সটিটিউট। ২০ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৫ 
  17. "আমাদের লক্ষ্য"রুটস আর সুটস। দ্যা জেন গুডঅল ইন্সটিটিউট। ২০ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ মার্চ ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা