জামিয়া ইসলামিয়া মাহমুদিয়া বরিশাল
আল জামিয়া আল ইসলামিয়া আল মাহমুদিয়া (সংক্ষেপে মাহমুদিয়া মাদ্রাসা/বেলতলা মাদ্রাসা) বরিশাল শহরের আমানতগঞ্জে অবস্থিত একটি কওমি মাদ্রাসা। ১৯৪৭ সালে এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন সৈয়দ মাহমুদ মুস্তফা আল মাদানি। ১৯৮৩ সালে মাদ্রাসাটির বর্তমান নামকরণ করা হয়। ২০০৪ সাল থেকে এখানে ফিকহ বিভাগ চালু করা হয়। বর্তমানে এ মাদ্রাসার মুহতামিম হিসেবে দায়িত্বরত আছেন ওবাইদুর রহমান মাহবুব। ১৯৫৮ সালে এখানে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) খোলা হয়। ২০১৯ সালে মাদ্রাসার ছাত্রসংখ্যা ১২০০ জন। দারুল উলুম দেওবন্দের প্রথম ছাত্র মাহমুদ হাসান দেওবন্দির নামানুসারে মাদ্রাসাটির নামকরণ করা হয়েছে।
ধরন | কওমি মাদ্রাসা |
---|---|
স্থাপিত | ১৯৪৭ ইং |
প্রতিষ্ঠাতা | সৈয়দ মাহমুদ মুস্তফা আল মাদানি |
মূল প্রতিষ্ঠান | দারুল উলুম দেওবন্দ |
অধিভুক্তি | আল হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ |
ধর্মীয় অধিভুক্তি | ইসলাম |
আচার্য | ওবাইদুর রহমান মাহবুব |
শিক্ষার্থী | ১২০০+ (২০১৯) |
অবস্থান | |
সংক্ষিপ্ত নাম |
|
ইতিহাস
সম্পাদনাদারুল উলুম দেওবন্দের চার ছাত্র নেছার উদ্দিন, আবদুল মান্নান, আবদুল কাদির ও নূর আহমদ হুসাইন আহমদ মাদানির কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে দেশভাগের সময় বরিশালের হাজী ওমর শাহ (বটতলা) মসজিদে মাদ্রাসাটির প্রাথমিক কাজ শুরু করেন। তাদের কর্মতৎপরতা দেখে সে অঞ্চলের প্রসিদ্ধ আলেম মাহমুহ মোস্তফা মাদানি ১৯৪৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর বরিশালের চক বাজার জামে এবাদুল্লাহ মসজিদে নতুন প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার সার্বিক সহযেগিতার বিষয়ে একটি সাধারণ বৈঠকের আয়োজন করেন। সবাই সহযোগিতার আশ্বাস দিলে মাদ্রাসার স্থায়ী জায়গার বন্দোবস্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত বটতলা মসজিদেই প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক কার্যাদি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। জায়গার বন্দোবস্ত হওয়ার পর আবদুল কাদিরকে মুহতামিম, নেছারুদ্দিনকে নায়েবে মুহতামিম, আবদুল মান্নানকে ছদরুল মুদাররিসিন ও নূর আহমদকে নায়েবে নাযিম মনোনীত করে মাদ্রাসার কার্যক্রম চালানো হতে থাকে।
এ মাদ্রাসা বর্তমানে ৮টি বিভাগ নিয়ে পরিচালিত।
- আবাসিক ও অনাবাসিক নূরাণী এবং নাদিয়া বিভাগ
- তাহফিজুল কুরআন বিভাগ
- কিতাব বিভাগ। জামিয়ার প্রধান ও বৃহত্তম বিভাগ এটি। এতে বর্তমানে ৬টি স্তর রয়েছে।
- ইবতেদায়ী বা প্রাইমারী স্তর
- মুতাওয়াস্সিতাহ বা মাধ্যমিকস্তর
- ছানুবী বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তর
- ফযীলত বা স্নাতক স্তর
- তাকমীল বা দাওরায়ে হাদীস বা স্নাতকোত্তর স্তর
- ফতওয়া বিভাগ
- ফতওয়া ও ফারায়েজ বিভাগ
- দেয়ালিকা
- কুতুবখানা
- লিল্লাহ বোর্ডিং
- আবাসিক ছাত্রাবাস
এ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠার পর থেকে যারা প্রধান মুফতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য: মুফতী ইয়াসনী, নূর আহমদ, আবদুল মান্নান, আমজাদ হোসাইন, শাব্বির আহমদ, আজিজুর রহমান, শহীদুস সালাম কাসেমী এবং বর্তমানে এ বিভাগে প্রধান মুফতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মুফতি সানাউল্লাহ।[১][২][৩]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ গোলাম ছরোয়ার, মুহাম্মদ (নভেম্বর ২০১৩)। "বাংলা ভাষায় ফিকহ চর্চা (১৯৪৭-২০০৬): স্বরূপ ও বৈশিষ্ঠ্য বিচার"। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ২৫৩।
- ↑ সাইয়েদ, আহসান (২০০৬)। বাংলাদেশে হাদীছ চর্চা উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ। সেগুনবাগিচা, ঢাকা: অ্যাডর্ন পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা ১০৭। আইএসবিএন 9842000184।
- ↑ আলম, মো. মোরশেদ (২০১৪)। হাদীস শাস্ত্র চর্চায় বাংলাদেশের মুহাদ্দিসগণের অবদান (১৯৭১-২০১২)। বাংলাদেশ: ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ২৩৮।