জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা

জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা (ইংরেজি: National coat of arms) বলতে পূর্ণাঙ্গ বংশমর্যাদাসূচক নকশার অনুরূপ একটি নকশাকে বোঝায়, যা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রকে নির্দেশ করে।

এটি জাতীয় পতাকা থেকে ভিন্ন। কোন দেশের সাধারণ জনগণ জাতীয় পতাকা ব্যবহার করেন। এছাড়া যানবাহনে ও ঘরের বাইরেও জাতীয় পতাকা ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা কোন দেশের সরকার, রাজা বা রাষ্ট্রপ্রধান প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। এই প্রতীকটি মুদ্রণে, বা আভিজাতিক পরিচয়বাহী চিনামাটির সামগ্রীতে এবং সরকারী ভবনগুলিতে দেওয়ালের অলঙ্করণে ব্যবহৃত হয়।

প্রায়শই কোন দেশের নাগরিকত্বের পরিচায়ক বৈদেশিক ভ্রমণের ছাড়পত্র তথা পাসপোর্টের প্রচ্ছদে সেই দেশের জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশাটি মূল প্রতীক হিসেবে মুদ্রিত থাকে। এটি জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগ।

জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশাটিকে অবশ্যই আভিজাতিক চিহ্নবিদ্যার প্রতিষ্ঠিত নিয়মগুলি মেনে সৃষ্টি করতে হয়। এই নিয়মগুলি মূলত ইউরোপে মধ্যযুগে বানানো হয় এবং পরবর্তীয় আধুনিক যুগে এসে ইউরোপীয় রাজতন্ত্রগুলি এই নিয়মগুলি মেনেই জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা প্রস্তুত করে।

ইউরোপের বাইরে জাপানে "মোন" (জাপানি 紋) নামের এক ধরনের মর্যাদাবাহী নকশা তৈরির ঐতিহ্যহী নিয়মরীতি বহু আগে থেকেই বিদ্যমান এবং পূর্ব এশীয় অনেক দেশে (জাপান, তাইওয়ান, ভুটান) জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা নির্মাণে এই ঐতিহ্য অনুসরণ করা হয়।

যদি উপরের নিয়মগুলি না মানা হয়, তাহলে জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশার পরিবর্তে সাধারণতর জাতীয় প্রতীক (national emblem) পরিভাষাটি ব্যবহার করাই শ্রেয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে আভিজাতিক চিহ্নের ঐতিহ্যবাহী নিয়ম অনুসরণ না করে সৃষ্ট জাতীয় প্রতীককেও জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা নামেও ডাকা হয়, কেননা উভয়েই মূলত একই উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়।

অনেক দেশে জাতীয় মোহর বা সীলমোহরকেই জাতীয় প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়, যেমন বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক।

চিত্র প্রদর্শনী

সম্পাদনা

ঐতিহ্যবাহী পূর্ণাঙ্গ বংশমর্যাদাসূচক নকশার অনুরূপ জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা

সম্পাদনা