জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন
জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন বা জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া হলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর সাথে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া। এগুলো বর্তমান বা সম্ভাব্য প্রভাব উভয়ই হতে পারে।[১] খাপ খাইয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্য হলো মানুষের ক্ষতি হ্রাস করা, এমনকি এ থেকে উপকৃত হওয়ার সুযোগগুলো কাজে লাগানো। প্রাকৃতিক ব্যবস্থায় মানিয়ে নেওয়ার জন্যও মানুষের হস্তক্ষেপ থাকতে পারে।[১] জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে অনেক কৌশল বা বিকল্প রয়েছে। এগুলো মানুষ ও প্রকৃতির ওপর প্রভাব এবং ঝুঁকি পরিচালনা করতে সাহায্য করতে পারে। অভিযোজনের পদক্ষেপগুলোকে চার ভাগে ভাগ করা যায়: অবকাঠামোগত ও প্রযুক্তিগত; প্রাতিষ্ঠানিক; আচরণগত ও সাংস্কৃতিক; এবং প্রকৃতিভিত্তিক।[২]:fig. ১৬.৫
জায়গাভেদে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন হয়। এটা ঐ এলাকায় মানুষ কিংবা প্রাকৃতিক ব্যবস্থার উপর ঝুঁকির পরিমাণের উপর নির্ভর করে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অভিযোজন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।[৩] এর কারণ তারা জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি শিকার হয়ে এর প্রভাবগুলো বহন করে।[৪][৫] খাদ্য, পানি ও অর্থনৈতিক উৎপাদন, কর্মসংস্থান এবং আয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য ক্ষেত্রের জন্য খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তাও অধিক।
জলবায়ু ঝুঁকি পরিচালনা করতে দেশগুলোকে সাহায্য করার জন্য খাপ খাইয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ। ৭০% এরও বেশি দেশে পরিকল্পনা, নীতিমালা বা কৌশল প্রস্তুত আছে।[৬] শহর ও প্রদেশের মতো সরকারের অন্যান্য স্তরও খাপ খাইয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা ব্যবহার করে; অর্থনৈতিক খাতগুলোও ব্যবহার করে। জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য উন্নয়নশীল দেশসমূহ আন্তর্জাতিক তহবিল পেতে পারে। আরও বেশি খাপ খাইয়ে নেওয়ার বাস্তবায়নের জন্য এটা তাঁদের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এ পর্যন্ত সম্পাদিত খাপ খাইয়ে নেওয়া বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিগুলো মোকাবেলায় পর্যাপ্ত নয়।[৭]:২০[৮] :১৩০ ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিগুলোর কথাও মাথায় রাখা জরুরি। আগামী দশকগুলোতে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় খরচ হতে পারে বছরে কয়েক বিলিয়ন ডলার। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে, এই খরচ এর ফলে যে ক্ষতি এড়ানো যাবে সেই তুলনায় কম হবে।
পারিভাষিক সংজ্ঞা
সম্পাদনাআইপিসিসি (IPCC) জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়াকে নিম্নভাবে সংজ্ঞায়িত করে:
- মানব ব্যবস্থায়: বাস্তব বা সম্ভাব্য জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাবের সাথে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া, যার লক্ষ্য ক্ষতি কমানো বা উপকারী সুযোগগুলো কাজে লাগানো।[৭]:৫
- প্রাকৃতিক ব্যবস্থায়: খাপ খাইয়ে নেওয়া হল প্রকৃত জলবায়ুর সাথে মানিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া; মানুষের হস্তক্ষেপ একে ত্বরান্বিত করতেও পারে। খাপ খাইয়ে নেওয়ার পদক্ষেপগুলো ক্রমবর্ধমান বা রূপান্তরকারী হতে পারে।[৭]:৫
ক্রমবর্ধমান পদক্ষেপ: এ ধরনের পদক্ষেপের লক্ষ্য হলো একটি ব্যবস্থার মূল প্রকৃতি এবং অখণ্ডতা বজায় রাখা।
রূপান্তরকারী পদক্ষেপ: এ ধরনের পদক্ষেপ জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাবের প্রতিক্রিয়ায় একটি ব্যবস্থার মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলিকে পরিবর্তন করে।[৯]
অভিযোজনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা
সম্পাদনা১৯৯০ এর দশক থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজনের উপর গবেষণা চলছে। সেই থেকে এই বিষয়ে অধ্যয়নের উপ-বিষয়গুলোর সংখ্যা এবং বৈচিত্র্য অনেক বেড়েছে। ২০১০ এর দশকে, বিশেষত প্যারিস চুক্তির পর থেকে, অভিযোজন বা খাপ খাইয়ে নেওয়া নীতি-নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন এটি নীতি-গবেষণার (policy research) একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।[৮]:১৬৭[১০]
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিষয়ক গবেষণা
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন এর উপর বৈজ্ঞানিক গবেষণা সাধারণত শুরু হয় মানুষ, বাস্তুতন্ত্র এবং পরিবেশের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য প্রভাবের বিশ্লেষণের মাধ্যমে। এই প্রভাবগুলো জীবন, জীবিকা, স্বাস্থ্য ও সুস্থতা, বাস্তুতন্ত্র ও প্রজাতি, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সম্পদ এবং অবকাঠামোর উপর এর প্রভাবগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে।[১১] :২২৩৫ এই প্রভাবের মধ্যে থাকতে পারে কৃষি উৎপাদনে পরিবর্তন, বন্যা ও খরার পরিমাণ বৃদ্ধি বা প্রবাল প্রাচীরের ক্ষতি (coral reef bleaching)। বর্তমান ও ভবিষ্যতের অভিযোজনের প্রয়োজনীয়তা এবং উপায় বোঝার ক্ষেত্রে এই ধরণের প্রভাবগুলোর বিশ্লেষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
২০২২ সাল পর্যন্ত, শিল্প বিপ্লবের আগের তুলনায় বিশ্বব্যাপী উষ্ণতার মাত্রা ১.২° সেলসিয়াস (২.২° ফারেনহাইট) বৃদ্ধি পেয়েছে। শতাব্দীর শেষ নাগাদ এটি ২.৫ থেকে ২.৯° সেলসিয়াস (৪.৫ থেকে ৫.২° ফারেনহাইট) পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।[১২] এর ফলে বৈচিত্র্যময় গৌণ প্রভাব দেখা দিচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং মানব সমাজের উপর প্রভাব ফেলে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবী ক্রমশ উষ্ণ হচ্ছে, আবহাওয়া আরও চরম হচ্ছে এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিবর্তনগুলো প্রকৃতি, বন্যপ্রাণী, মানব বসতি এবং সমাজের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।[১৩] মানুষের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ব্যাপক এবং দীর্ঘস্থায়ী। যদি আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না গ্রহণ করি, তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। বিশেষজ্ঞরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে জলবায়ু সংকট হিসাবে বর্ণনা করেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের অনেক নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যে রয়েছে চরম আবহাওয়ার ঘটনার ধরন বা ভিন্নতার পরিবর্তন। এখানে গড় অবস্থার পরিবর্তনের চেয়ে চরম ঘটনাগুলোর পরিবর্তনই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।[১৪] উদাহরণস্বরূপ, কোনো বন্দরে সাধারণ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা এত গুরুত্বপূর্ণ নয়, যতটা গুরুত্বপূর্ণ ঝড়ের সময় সমুদ্রতলের উচ্চতা। কারণ, ঝড়ের কারণেই বন্যা দেখা দেয়। আবার, কোনো এলাকায় গড় বৃষ্টিপাত কতটুকু তা ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, যতটা গুরুত্বপূর্ণ হলো খরা বা অতিবৃষ্টির মতো ঘটনা কতবার ও কত তীব্রভাবে ঘটছে।[১৫]
বিপর্যয়ের ঝুঁকি, প্রতিক্রিয়া এবং প্রস্তুতি
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তন বিপর্যয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। তাই বিশেষজ্ঞরা প্রায়শই জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়াকে বিপর্যয় ঝুঁকি কমানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখেন।[১৬] একইভাবে, বিপর্যয় ঝুঁকি কমিয়ে আনা টেকসই উন্নয়নের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়া এবং বিপর্যয় ঝুঁকি কমিয়ে আনার একই রকম লক্ষ্য রয়েছে - বিপদের সম্ভাব্য প্রভাব কমিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করা। উভয় পন্থা একই ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি এবং একই ধরনের গবেষণা দ্বারা সমর্থিত।[১৭]
বিপর্যয় সাধারণত প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ঘটে। আগুন বা বন্যার মতো প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো নিজেরাই বিপর্যয় নয়। বরং, যখন এগুলো মানুষের উপর প্রভাব ফেলে বা মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে ঘটে তখনই এগুলো বিপর্যয় হিসেবে বিবেচিত হয়। বলা হয় যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় সবসময় মানুষের কর্মকাণ্ড বা নিষ্ক্রিয়তার সাথে সম্পর্কিত থাকে অথবা মানুষের সৃষ্ট পরিবেশগত পরিবর্তনের ফলে ঘটে। বিপর্যয়, অর্থনৈতিক ক্ষতি এবং ঝুঁকি বৃদ্ধির মূলে থাকা দুর্বলতাগুলো ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক ঝুঁকি সর্বত্র বিরাট প্রভাব ফেলছে।[১৮] বিজ্ঞানীরা পূর্বাভাস দিয়েছেন যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরম আবহাওয়ার ঘটনা এবং বিপর্যয়ের ঘন ঘনতা ও তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে। তাই, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়ার মধ্যে প্রস্তুতি বৃদ্ধি এবং বিপর্যয় মোকাবেলার ক্ষমতা উন্নত করার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
লক্ষ্য
সম্পাদনামানুষের ক্ষেত্রে, পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার (adaptation) লক্ষ্য হলো ক্ষতি কমানো বা এড়িয়ে চলা, এবং নতুন সুযোগগুলো কাজে লাগানো। প্রাকৃতিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে, মানুষ পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করার জন্য নানাভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে।[১]
নীতিগত লক্ষ্য
সম্পাদনা২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তির অধীনে, বিভিন্ন দেশকে বাধ্য করা হয়েছে যাতে শতাব্দীর শেষে শিল্প বিপ্লব-পূর্ব স্তরের তুলনায় বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২° সেলসিয়াসের কম রাখা যায়। এছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫° সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য প্রচেষ্টা চালানোর কথাও বলা হয়েছে।[১৯] এমনকি যদি অদূর ভবিষ্যতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বন্ধ করাও হয়, তবুও বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং এর প্রভাব বহু বছর ধরে থাকবে। জলবায়ু ব্যবস্থার জড়তার কারণেই এমনটি হবে। সুতরাং, কার্বন নিরপেক্ষতা ("নেট জিরো" বা শূন্য কার্বন নির্গমন) এবং জলবায়ুর সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া উভয়ই প্রয়োজনীয়।[২০]
প্যারিস চুক্তির আওতায় 'জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনের বৈশ্বিক লক্ষ্য' (Global Goal on Adaptation) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই বৈশ্বিক লক্ষ্যের নির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং সূচকগুলো ২০২৩ সাল পর্যন্ত উন্নীত পর্যায়ে রয়েছে। চুক্তিতে অংশ নেওয়া সরকারগুলোর দীর্ঘমেয়াদী অভিযোজনের লক্ষ্যকে এটি সমর্থন করবে। এছাড়াও ১.৫/২°সেলসিয়াস লক্ষ্য পূরণের প্রসঙ্গে, সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর অভিযোজনের প্রয়োজনীয়তার জন্য অর্থায়ন সহায়তা প্রদানেরও লক্ষ্য রয়েছে এর। এই লক্ষ্যের তিনটি মূল উপাদান রয়েছে, যেগুলো হলো জলবায়ু পরিবর্তনের দুর্বলতা হ্রাস করা, অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা, স্থিতিস্থাপকতা জোরদার করা[২১]
ঝুঁকির কারণগুলো হ্রাস করা: দুর্বলতা এবং ঝুঁকিতে পতিত হওয়া
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন (Adaptation) তিনটি সম্পর্কিত ঝুঁকির উপাদানের উপর কাজ করে জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে। এই উপাদানগুলো হলো: বিপদ (hazards), দুর্বলতা (vulnerability), এবং ঝুঁকিতে পতিত হওয়া (exposure)। বিপদগুলো সরাসরি হ্রাস করা সম্ভব নয়। কারণ বিপদগুলো বর্তমান এবং ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বারা প্রভাবিত হয়। এর পরিবর্তে, অভিযোজন সেই ঝুঁকিগুলো মোকাবেলা করে যেগুলো মানুষ ও বাস্তুতন্ত্রের ঝুঁকির কারণসমূহ এবং দুর্বলতার সাথে জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপদের মিথস্ক্রিয়ার ফলে তৈরি হয়।[৮]:১৪৫–১৪৬ ঝুঁকিতে পতিত হওয়া (exposure) বলতে বোঝায়, কোনো স্থানে মানুষ, তাদের জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র এবং অন্যান্য সম্পদ উপস্থিত থাকা, যা নেতিবাচক প্রভাবের শিকার হতে পারে।[১] উদাহরণস্বরূপ, বন্যাপ্রবণ এলাকা থেকে সরে যাওয়ার মাধ্যমে ঝুঁকিতে পতিত হওয়ার পরিমাণ কমানো সম্ভব। প্রারম্ভিক সতর্কতা ব্যবস্থা উন্নত করা এবং উদ্ধার প্রক্রিয়া আরও কার্যকর করাও ঝুঁকিতে পতিত হওয়া কমানোর উপায়।[২২]:৮৮ IPCC জলবায়ু পরিবর্তনের দুর্বলতা (climate change vulnerability) কে সংজ্ঞায়িত করেছে "জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বারা বিরূপভাবে প্রভাবিত হওয়ার প্রবণতা বা পূর্বপ্রবণতা" হিসেবে।[১] এটি মানুষের পাশাপাশি প্রাকৃতিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হতে পারে।[৭]:১২ মানুষ এবং বাস্তুতন্ত্রের দুর্বলতা পরস্পর সম্পর্কিত। IPCC-এর মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের দুর্বলতা বিভিন্ন ধারণা এবং উপাদান অন্তর্ভুক্ত করে, যার মধ্যে রয়েছে ক্ষতির প্রতি সংবেদনশীলতা বা প্রবণতা এবং এই পরিস্থিতি মোকাবেলা বা মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতার অভাব।[৭]:৫ উদাহরণস্বরূপ, একটি জলাধারের পানি ধারণের ক্ষমতা বাড়িয়ে বা জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল ফসল লাগিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতি সংবেদনশীলতা কমানো যেতে পারে।[২৩] শহরাঞ্চলে সবুজ বাগান তৈরির মাধ্যমেও দুর্বলতা কমানো সম্ভব। এটি নিম্ন-আয়ের এলাকার মানুষের তাপমাত্রার চাপ এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা কমাতে পারে।[২৪]:৮০০
বাস্তুতন্ত্র-ভিত্তিক অভিযোজন (Ecosystem-based adaptation) হলো জলবায়ু বিপর্যয়ের দুর্বলতা কমানোর একটি উপায়। উদাহরণস্বরূপ, ম্যানগ্রোভ বন ঝড়ের তীব্রতা কমাতে পারে, তাই বন্যা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। এইভাবে, ম্যানগ্রোভ বাস্তুতন্ত্র সুরক্ষা কার্যকরী অভিযোজনের একটি উদাহরণ হতে পারে। বীমা এবং জীবিকার বৈচিত্র্য স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করে ও দুর্বলতা হ্রাস করে। দুর্বলতা হ্রাসের অন্যান্য উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে সামাজিক সুরক্ষা জোরদার করা এবং বিপদ-প্রতিরোধী অবকাঠামো নির্মাণ করা।[২২]
অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধি
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে, অভিযোজন ক্ষমতা (adaptive capacity) বলতে বোঝায় মানুষ, প্রাকৃতিক ও পরিচালিত ব্যবস্থাগুলোর জলবায়ু পরিবর্তনশীলতা এবং চরম আবহাওয়ার ঘটনার সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া ও সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা। এটি কোনো ব্যবস্থার জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়া, সম্ভাব্য ক্ষতি কমানো, নতুন সুযোগ গ্রহণ করা বা ফলাফলের সাথে মোকাবিলা করার ক্ষমতাকেও নির্দেশ করে।[১] অভিযোজন ক্ষমতা নিজে থেকেই খাপ খাইয়ে নেওয়া (adaptation) প্রক্রিয়ার সমান নয়।[২৫] জলবায়ু-সম্পর্কিত বিপদের নেতিবাচক প্রভাব কমাতে সাহায্য করার ক্ষমতাই হলো অভিযোজন ক্ষমতা।[২৬] এটি কার্যকর অভিযোজন পদ্ধতি অবলম্বন এবং পরবর্তী বিপদ ও চাপের প্রতি সাড়া দেওয়ার মাধ্যমে অর্জিত হয়। যেসব সমাজ পরিবর্তনের প্রতি দ্রুত ও কার্যকরভাবে সাড়া দিতে পারে তাদের অভিযোজন ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি থাকে।[২৭] তবে উচ্চ অভিযোজন ক্ষমতা সর্বদা সফল অভিযোজন (adaptation) প্রক্রিয়া, সমতা বৃদ্ধি এবং কল্যাণ সাধনের লক্ষ্য অর্জনের নিশ্চয়তা দেয় না।[৮]:১৬৪ উদাহরণস্বরূপ, পশ্চিম ইউরোপে অভিযোজন ক্ষমতা সাধারণত উচ্চ বলে মনে করা হয়। বিশেষজ্ঞরা ক্রমবর্ধমান উষ্ণ শীতকালে গবাদি পশুর বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির ঝুঁকি নথিভুক্ত করেছেন। কিন্তু ইউরোপের অনেক অংশ ২০০৭ সালে গবাদিপশুর ব্লুটং ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের দ্বারা মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল।[২৮]
সাধারণভাবে, উচ্চ আয়ের দেশগুলো এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলোর মধ্যে অভিযোজন ক্ষমতা পরস্পর ভিন্ন।[২৯] কিছু সূচকে যেমন ND-GAIN, উচ্চ-আয়ের দেশগুলো তুলনামূলকভাবে বেশি অভিযোজন ক্ষমতা রাখে। তবে, দেশের মধ্যেও অনেক বৈচিত্র্য রয়েছে।[৮]:১৬৪
অভিযোজন ক্ষমতার নিয়ামকগুলোর মধ্যে রয়েছে:[৩০]:৮৯৫–৮৯৭
- অর্থনৈতিক সম্পদ: ধনী রাষ্ট্র দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোর তুলনায় জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন প্রক্রিয়ার খরচ বহন করতে বেশি সক্ষম।
- প্রযুক্তি: প্রযুক্তির অভাব অভিযোজনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে পারে।
- তথ্য ও কুশলতা: সফল অভিযোজনের বিকল্প নিরুপণ এবং অবলম্বনের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রশিক্ষিত জনশক্তি থাকা জরুরী।
- সামাজিক অবকাঠামো
- প্রতিষ্ঠান: উন্নত সামাজিক প্রতিষ্ঠান সম্বলিত রাষ্ট্রের অভিযোজন ক্ষমতা সাধারণত কম প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান বিশিষ্ট রাষ্ট্রের তুলনায় বেশি থাকে। সাধারণত উন্নয়নশীল দেশে এবং অর্থনীতি এমন রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত।
- সাম্যতা: কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে, যেসব রাষ্ট্রে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও অনুশাসন সমতাভিত্তিকভাবে সম্পদ বণ্টনের অনুমতি দেয়, সেখানে অভিযোজন ক্ষমতা বেশি হয়।
অভিযোজন ক্ষমতা অধিকাংশ সময় সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সম্পর্কিত থাকে।[৩১] সাধারণভাবে, উচ্চ স্তরের উন্নয়নের অর্থ উচ্চ স্তরের অভিযোজন ক্ষমতা । যাই হোক, কোনো কোনো উন্নয়ন ক্ষেত্রে মানুষকে নির্দিষ্ট পদ্ধতি বা আচরণে বদ্ধ করে থাকে।এবং উন্নত এলাকায় যাদের আগে কখনো নতুন প্রকার প্রাকৃতিক বিপদের অভিজ্ঞতা হয়নি, তাদের নতুন ধরনের প্রাকৃতিক বিপদের সাথে অভিযোজন ক্ষমতা কম হতে পারে।
টেকসই উন্নয়ন বৃদ্ধির পদ্ধতি প্রায়ই অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধির পদ্ধতির সাথে মিলে যায়। উভয় ধরণের কার্যক্রম জলবায়ু ঝুঁকি হ্রাস করতে পারে এবং একইসাথে উন্নয়নের সুফল বয়ে আনতে পারে।[৩২] এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে : সমপদের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি করা, দারিদ্র্য হ্রাস করা, গোষ্ঠীর সম্পদ ও ধনের অসমতা হ্রাস করা, শিক্ষা ও তথ্য সমৃদ্ধকরণ বৃদ্ধি করা, অবকাঠামো উন্নত করা, প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি করা, এবং স্থানীয় দেশীয় অভ্যাস, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা প্রচার করা।[৩০]:৮৯৯
জলবায়ুর সহনশীলতা শক্তিশালীকরণ
সম্পাদনাআইপিসিসি (আন্তঃসরকারী প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ) জলবায়ু সহনশীলতা বা রেজিলিয়েন্সকে "কোনো বিপজ্জনক ঘটনা, প্রবণতা বা ব্যাঘাতের মোকাবেলায় সামাজিক, অর্থনৈতিক ও বাস্তুতন্ত্রের ক্ষমতা" হিসেবে ব্যাখ্যা করে। এর মধ্যে রয়েছে পুনর্গঠিত হওয়া এবং শেখার ক্ষমতা।[৭]:৭ জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনের ধারণাটি এর সাথে অনেকটা মিল। তবে সহনশীলতা বা রেজিলিয়েন্স বলতে পরিবর্তনকে আরও সুশৃঙ্খলভাবে মোকাবিলা করার ক্ষমতাকে বোঝায়। এর মাধ্যমে পরিবর্তনগুলোকে কাজে লাগিয়ে সিস্টেমকে আরও কার্যকর করে তোলা সম্ভব। ধারণাটি হলো, যখন কোনো বিপর্যয় বা ব্যাঘাত কোনো সুযোগ তৈরি করে, তখন মানুষ সিস্টেমটিকে পুনর্গঠিত করার জন্য পদক্ষেপ নিতে পারে।[৮]:১৭৪ তারা এই পুনর্গঠনকে সামাজিক বা উন্নয়ন লক্ষ্যের মতো আরও কাঙ্ক্ষিত দিকে পরিচালিত করতে পারে।[৩৩]
কার্যকর অভিযোজন প্রায়শই বিপর্যয়ের পর পুনরুদ্ধারের মাধ্যম হিসেবে সহনশীলতাকে ভিত্তি করে। বিশেষজ্ঞরা একে পরিবর্তনমূলকের পরিবর্তে ধীরে ধীরে বিকশিত হওয়া বলে মনে করেন।[৮]:১৩০,১৩৪ অন্যদিকে, জলবায়ু সহনশীলতা-কেন্দ্রিক প্রকল্পগুলো পরিবর্তনমূলক অভিযোজনকে উৎসাহিত এবং সমর্থন করার কার্যক্রম হতে পারে। কারণ ব্যাপক পরিসরে এবং আদর্শগতভাবে সিস্টেম-স্তরে পরিবর্তনমূলক অভিযোজন কার্যকর হয়।[৮]:৭২
সহনশীলতা বৃদ্ধি করা তাই পরিবর্তন করার ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। রূপান্তর এবং রূপান্তরের প্রক্রিয়াগুলো বড় সিস্টেম এবং খাতগুলোকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। এগুলো হলো শক্তি, ভূমি ও বাস্তুতন্ত্র, নগর ও অবকাঠামো এবং শিল্প ও সামাজিক।[৮]:১২৫ পরিবর্তনগুলো ব্যর্থ হতে পারে যদি সেগুলো সামাজিক ন্যায়বিচারকে অন্তর্ভুক্ত না করে, ক্ষমতার পার্থক্য ও রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি বিবেচনা না করে এবং সবার জন্য আয় ও সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের উন্নতি নিশ্চিত না করে।[৮]:৭২[৩৪]:২৬
জলবায়ু সহনশীল উন্নয়ন সম্প্রতি উদ্ভূত একটি ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত কাজের ক্ষেত্র এবং গবেষণার বিষয়। এটি এমন পরিস্থিতিকে বর্ণনা করে যেখানে অভিযোজন (adaptation), প্রশমন (mitigation) এবং উন্নয়ন কৌশলগুলোকে একত্রে অনুসরণ করা হয়। এই সমন্বিত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার সুবিধা নিতে পারে এবং এক লক্ষ্য অর্জনের জন্য অন্য লক্ষ্যকে বাদ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তাকে (trade-offs) কমিয়ে আনতে পারে।[৮]:১৭২
প্রশমনের সাথে সহ-উপকারিতা
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি, জলবায়ু পরিবর্তনকে সীমাবদ্ধ করার কৌশলও গুরুত্বপূর্ণ।[৮]:১২৮ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমিয়ে এবং বায়ুমণ্ডল থেকে সেগুলোকে অপসারণের মাধ্যমে উষ্ণায়নকে নিয়ন্ত্রণ করাকে জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন (mitigation) বলা হয়।
অভিযোজন (adaptation) এবং প্রশমন (mitigation) এর মধ্যে কিছু সমন্বয় (synergies) বা সহ-উপকারিতা (co-benefits) বিদ্যমান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গণপরিবহন, যা প্রশমন এবং অভিযোজন উভয়ের জন্যই উপকারী। গণপরিবহনে প্রতি কিলোমিটার ভ্রমণে গাড়ির তুলনায় গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন অনেক কম। এছাড়াও, একটি উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থা বিপর্যয়ের সময় সহনশীলতা বৃদ্ধি করে। কারণ এটি সরিয়ে নেওয়া এবং জরুরি প্রবেশকে সহজ করে তোলে। গণপরিবহন বায়ু দূষণ কমিয়ে স্বাস্থ্যের উন্নতি করে, যা অর্থনৈতিক সহনশীলতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে কারণ সুস্থ কর্মীরা উন্নত কর্মক্ষমতা প্রদর্শন করে।[৩৫]
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা বলতে আমরা যেসব পদক্ষেপ নিই সেগুলো গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে বা কার্বন সিঙ্ক (যেসব প্রাকৃতিক উপায়ে কার্বন শোষিত হয়) বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এই পদক্ষেপগুলোর সাথে কিছু অতিরিক্ত সুবিধা বা উপকারিতা যুক্ত থাকে, এগুলোই হলো সহ-সুবিধা।
কার্বন করের মাধ্যমে রাজস্ব আদায় এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে অর্থনীতিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়। নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর নির্ভরতা বাড়ালে জীবাশ্ম জ্বালানির চাহিদা কমে, ফলে দেশের জ্বালানি সরবরাহের ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাস পায়। নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পগুলি গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে। পরিচ্ছন্ন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি সহজলভ্য হলে তা গ্রামীণ অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার বিভিন্ন উদ্যোগ মাটির গুণমান, উর্বরতা রক্ষায় সহায়ক হতে পারে এবং বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংরক্ষণেও ভূমিকা রাখতে পারে। তবে, পুরোপুরি পরিকল্পনা ছাড়া কিছু প্রকল্প (যেমন বায়োফুয়েল চাষ) ঝুঁকিও তৈরি করতে পারে। স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার পদক্ষেপগুলো স্থানীয়দের কর্মদক্ষতা বাড়াতে পারে। জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় বন সংরক্ষণ জরুরি। এটি বন সম্পর্কিত আইন-কানুন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় উৎসাহ যোগায়।
অভিযোজনের ধরন অনুযায়ী কৌশল
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার অনেক উপায় রয়েছে। এগুলোকে কখনো কখনো অভিযোজন ব্যবস্থা, কৌশল বা সমাধান বলেও ডাকা হয়। এগুলো মানুষ এবং প্রকৃতির উপর জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব ও ঝুঁকি মোকাবেলায় সহায়তা করে।
বর্তমান অভিযোজন পদ্ধতিগুলো সাধারণত স্বল্পমেয়াদী জলবায়ু ঝুঁকির দিকে মনোনিবেশ করে। এছাড়া, পানি ও কৃষির মতো নির্দিষ্ট খাত এবং আফ্রিকা ও এশিয়ার মতো নির্দিষ্ট অঞ্চলের উপরও বিশেষ নজর দেয়।[৭] বর্তমান সময়ের জলবায়ু ঝুঁকি কমিয়ে আনার জন্য চলমান অভিযোজন প্রক্রিয়াগুলো আরও উন্নত করা জরুরি। তবে ভবিষ্যতে অভিযোজনের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিও বিবেচনা করা আবশ্যক। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন বাড়ার সাথে সাথে কিছু কৌশল কম কার্যকর হয়ে যেতে পারে বা একেবারেই ব্যবহারের অনুপযোগী হতে পারে।
ঝুঁকি কমানো এবং সুযোগ কাজে লাগানোর লক্ষ্যে অভিযোজনমূলক পদক্ষেপগুলোকে চারটি বিভাগে ভাগ করা যায়:[২]:২৪২৮
- অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত অভিযোজন: প্রকৌশল, নির্মিত পরিবেশ, ও উচ্চ-প্রযুক্তির সমাধান ইত্যাদির ব্যবহার।
- প্রাতিষ্ঠানিক অভিযোজন: অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, আইন ও নিয়মনীতি, সরকারি নীতিমালা ও কর্মসূচি।
- আচরণগত ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন: ব্যক্তি ও পরিবার পর্যায়ে কৌশল, সেইসাথে সামাজিক ও কমিউনিটির পদ্ধতি।
- প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান: পরিবেশ ব্যবস্থা-ভিত্তিক অভিযোজন কৌশলসমূহ।
আমরা কৌশলগুলোকে তিনটি ভাগেও ভাগ করতে পারি:
১. কাঠামোগত এবং বাস্তব অভিযোজন: প্রকৌশল এবং নির্মিত পরিবেশ, প্রযুক্তিগত, পরিবেশ ব্যবস্থা ভিত্তিক, ও সেবামূলক কাজকর্ম।
২. সামাজিক অভিযোজন: শিক্ষাগত, তথ্যভিত্তিক, আচরণগত।
৩. প্রাতিষ্ঠানিক অভিযোজন: অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, আইন ও নিয়মনীতি, সরকারি নীতিমালা ও কর্মসূচি।[৯]:৮৪৫
অভিযোজন ধরন আলাদা করার অন্যান্য উপায়গুলো হল:[৮]:১৩৪
- প্রত্যাশী বনাম প্রতিক্রিয়াশীল: কোন সমস্যা দেখা দেওয়ার আগে প্রস্তুতি নেওয়া বনাম দেখা দেওয়ার পর প্রতিক্রিয়া জানানো।
- স্বায়ত্তশাসিত বনাম পরিকল্পিত: স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোন পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়া বনাম আগে থেকেই পরিকল্পনা করে অভিযোজন।
- ক্রমবর্ধমান বনাম রূপান্তরকারী: ধাপে ধাপে সিস্টেমের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পদ্ধতি বনাম জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাবের প্রতিক্রিয়ায় সিস্টেমের সম্পূর্ণ বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন।[১]
স্বায়ত্তশাসিত অভিযোজন হল যখন কোন সমাজ বা ব্যবস্থা ইতিমধ্যে বোধগম্য জলবায়ু পরিবর্তন ও তার প্রভাবের ফলে নিজে থেকেই খাপ খাইয়ে নেয়। এর মধ্যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকে না এবং জলবায়ু পরিবর্তনের দিকে বিশেষভাবে মনোনিবেশ করা হয় না।[১] পরিকল্পিত অভিযোজন প্রতিক্রিয়াশীল বা প্রত্যাশী হতে পারে। প্রত্যাশী অভিযোজন প্রভাব স্পষ্ট হওয়ার আগেই নেওয়া হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসিত অভিযোজননির্ভরতা বেশ ব্যয়বহুল হতে পারে। পরিকল্পিত অভিযোজন দিয়ে এই খরচের অনেকটাই এড়ানো সম্ভব।[৩০]:৯০৪
অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত কৌশল
সম্পাদনানির্মিত পরিবেশ
সম্পাদনাবন্যা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চরম তাপমাত্রার বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদানের জন্য অবকাঠামো স্থাপন বা উন্নত করা নির্মিত পরিবেশের বিকল্পগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও কৃষিক্ষেত্রে পরিবর্তিত বৃষ্টিপাতের ধরণের সাথে মানিয়ে নেওয়ার জন্য অবকাঠামো স্থাপন করাও এর অন্তর্ভুক্ত। এটি সেচ ব্যবস্থার জন্য অবকাঠামো হতে পারে। "জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অনুসারে" বিভাগে এগুলো আরও বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
নির্মিত পরিবেশের বিকল্পগুলির কিছু উদাহরণ:
- বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা: বন্যাপ্রবণ এলাকায় বাঁধ, তীরবর্তী দেয়াল, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা এবং জলাবদ্ধ এলাকা তৈরি করা।
- সমুদ্র স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা: সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় দেয়াল তৈরি করা, ভবনগুলিকে উঁচু করা এবং লবণাক্ত জলের অনুপ্রবেশ রোধ করা।
- তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চরম তাপমাত্রার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা: ভবনগুলিতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা স্থাপন করা, ছায়াযুক্ত এলাকা তৈরি করা এবং গাছপালা রোপণ করা।
- কৃষিক্ষেত্রে পরিবর্তিত বৃষ্টিপাতের ধরণের সাথে মানিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা: সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, জল সংরক্ষণ ব্যবস্থা স্থাপন করা এবং খরা-প্রতিরোধী ফসল চাষ করা।
নির্মিত পরিবেশের বিকল্পগুলি নির্বাচন করার সময় বিবেচনা করার কিছু বিষয়:
- বিকল্পটির কার্যকারিতা: এটি কি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় কার্যকর হবে?
- বিকল্পটির খরচ: এটি স্থাপন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কত খরচ হবে?
- বিকল্পটির পরিবেশগত প্রভাব: এটি কি পরিবেশের উপর কোন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে?
- বিকল্পটির সামাজিক প্রভাব: এটি কি স্থানীয় সম্প্রদায়ের উপর কোন প্রভাব ফেলবে?
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় নির্মিত পরিবেশের বিকল্পগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এই বিকল্পগুলি স্থাপন করার সময় সাবধানতার সাথে পরিকল্পনা এবং মূল্যায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায়
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরম আবহাওয়া এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন এবং জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার মূল উপাদান হিসেবে প্রাক-প্রতিকার ব্যবস্থা (Early Warning Systems) গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছে।[৩৬] বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং অন্যান্য দ্রুত পরিবর্তিত আবহাওয়ার ঘটনা উপকূলীয় এলাকা, বন্যাপ্রবণ অঞ্চল এবং কৃষিনির্ভর জনগোষ্ঠীকে চরম ঝুঁকির মুখে ফেলে।[৩৬] এই লক্ষ্যে, জাতিসংঘ "জলবায়ু ঝুঁকি ও প্রাক-প্রতিকার ব্যবস্থা (Climate Risk and Early Warning Systems)" নামের একটি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে অবহেলিত প্রাক-প্রতিকার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়তা করছে।[৩৬]
ইউরোপীয় দেশগুলোতেও খরা, তাপপ্রবাহ, রোগ, আগুন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে প্রাক-প্রতিকার ব্যবস্থা জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করেছে।[৩৭] একইভাবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) তাপপ্রবাহজনিত অসুস্থতা এবং রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি রোধে প্রাক-প্রতিকার ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে।[৩৮]
জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ। এর প্রভাব ইতিমধ্যেই বিশ্বজুড়ে অনুভূত হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে তীব্র খরা, বন্যা, ঝড়, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং জীববৈচিত্র্য হ্রাস। বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে অবস্থিত একটি দেশ। এর নিম্নভূমি অবস্থান, দীর্ঘ উপকূলরেখা এবং ঘনবসতিপূর্ণ জনসংখ্যা এটিকে বিশেষভাবে দুর্বল করে তোলে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে দুটি প্রধান পন্থা রয়েছে: প্রশমন এবং অভিযোজন। প্রশমন এর অর্থ হল গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করা। এটি নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস ব্যবহার, জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে আনা, বনায়ন এবং শক্তি-কার্যকর প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে করা যেতে পারে। অভিযোজন এর অর্থ হল জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সাথে খাপ খাওয়ানো। এটি বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি, কৃষি পদ্ধতি পরিবর্তন, লবণাক্ত পানিতে সহনশীল ফসল উৎপাদন এবং জরুরি প্রস্তুতি পরিকল্পনা তৈরির মাধ্যমে করা যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে সকল স্তরের সরকার, বেসরকারি সংস্থা এবং জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
জলবায়ু সেবা (ক্লাইমেট সার্ভিসেস)
সম্পাদনাজলবায়ু তথ্য সেবা (Climate Information Services বা CIS) হলো জলবায়ু সম্পর্কিত তথ্যগুলো এমনভাবে উপস্থাপন করা, যাতে মানুষ এবং বিভিন্ন সংস্থা তা সহজে ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। জলবায়ু সেবা (CIS) পরিবর্তনশীল ও অনিশ্চিত জলবায়ুর ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের আগে থেকে জানতে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে একটি জ্ঞানের চক্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যেখানে নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীদের প্রাসঙ্গিক, যথাযথ, এবং নির্ভরযোগ্য জলবায়ু তথ্যের ব্যবহারের সুযোগ, ব্যাখ্যা, যোগাযোগ অন্তর্ভুক্ত, সেইসাথে তাদের ব্যবহারের উপর প্রতিক্রিয়াও থাকে। জলবায়ু সম্পর্কিত সেবায় রয়েছে উপযোগী জলবায়ুগত তথ্য, তথ্য সরবরাহ এবং জ্ঞানের ভিত্তিতে সময়োপযোগী প্রতিবেদন তৈরি, অনুবাদ ও বিতরণ।[৩৯]
জলবায়ু সেবা হলো সহজলভ্য উপায়ের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর কাছে সবচেয়ে কার্যকর জলবায়ু তথ্য পৌঁছে দেওয়ার একটি ব্যবস্থা। এগুলোর লক্ষ্য হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া, এর নেতিবাচক প্রভাব হ্রাস এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্তগুলোতে সহায়তা করা। জলবায়ু তথ্যকে ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ এবং প্রচার করার জন্য তথ্য সরবরাহের বিভিন্ন পদ্ধতি ও উপায় রয়েছে। এগুলো প্রায়শই বিভিন্ন উৎস ও বিভিন্ন ধরণের জ্ঞানের সমন্বয়ে তৈরি করা হয় এবং লক্ষ্য থাকে একটি সুনির্দিষ্ট চাহিদা পূরণ করা।[৪০][৪১] এই ধরণের জলবায়ু সেবাগুলো বৈজ্ঞানিক গবেষণালব্ধ তথ্যের সরবরাহ-চালিত ধারণা থেকে সরে আসে। এর পরিবর্তে এগুলো চাহিদা-ভিত্তিক ও ব্যবহারকারীদের প্রয়োজন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে অধিক গুরুত্ব প্রদান করে। এজন্য সেবা উৎপাদক ও ব্যবহারকারীদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের মিথষ্ক্রিয়া দরকার হয়, যা সরবরাহ করা সেবার ধরণের উপর নির্ভর করে।[৪২][৪৩] সহযোগিতার এই পদ্ধতিটিকে বলা হয় যৌথ পরিকল্পনা (co-design).
জলবায়ু সেবা বিভিন্ন কাঠামো এবং লক্ষ্য নিয়ে আসে। এগুলো বর্তমান জলবায়ুর পরিবর্তনশীলতার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে ব্যবহারকারীকে সাহায্য করার জন্য গঠন করা হয়, এবং জলবায়ু-সম্পর্কিত দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি সীমিত করার জন্যও কাজ করে। এগুলো নির্দিষ্ট কোন খাতে ঝুঁকি কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করতে পারে। এরকম একটি উদাহরণ হলো কোপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (Copernicus Climate Change Service বা C3S), যা মুক্তভাবে বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত জলবায়ু তথ্য, সরঞ্জাম এবং তথ্যসহজলভ্য করে তোলে।[৪৪] আরেকটি উদাহরণ হলো কৃষিতে অংশগ্রহণমূলক সমন্বিত জলবায়ু সেবা (Participatory Integrated Climate Services for Agriculture বা PICSA)। এটি একটি অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি যাতে ঐতিহাসিক জলবায়ু তথ্য এবং পূর্বাভাসকে কৃষকদের স্থানীয় প্রাসঙ্গিক জ্ঞানের সাথে মিলিয়ে নেওয়া হয়।[৪৫]
প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপ
সম্পাদনাপ্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়ছে নির্দিষ্ট এলাকা বিন্যাস (zoning regulations), নতুন ভবন নির্মাণ নীতিমালা, নতুন বীমা প্রকল্প এবং সমন্বয় ব্যবস্থাপনা।[৪৬]
জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার বিষয়গুলোকে একীভূত করার জন্য নীতিমালা গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।[৪৭] জাতীয় স্তরে, অভিযোজন রণনীতি জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা (NAPS) এবং জাতীয় অভিযোজন কর্মসূচি (NAPA)-তে দেখা যায়। এগুলো জাতীয় জলবায়ু পরিবর্তন নীতিমালা এবং রণনীতিতেও দেখা যায়।[৪৮] এগুলো বিভিন্ন দেশে এবং শহরে বিভিন্ন উন্নয়ন স্তরে রয়েছে। "বাস্তবায়ন" বিভাগে এ বিষয় নিয়ে আরও আলোচনা করা হয়েছে।
শহর, রাজ্য এবং প্রদেশের অধিকাংশ সময় ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা, জনস্বাস্থ্য এবং দুর্য়োগ ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে যথেষ্ট দায়িত্ব থাকে। অন্যান্য খাতের তুলনায় শহরগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক অভিযোজন কার্যক্রম বেশি দেখা যায়।[২]:২৪৩৪ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আরও তীব্র হয়ে ওঠা ঝুঁকির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া শুরু করছে, যেমন বন্যা, দাবদাহ, তাপপ্রবাহ এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ বৃদ্ধি।[৪৯][৫০][৫১]
ভবন নির্মাণ বিধি
সম্পাদনাগরম ও শীতের চরম অবস্থার সময় মানুষকে সুস্থ ও আরামদায়ক রাখতে এবং বন্যা থেকে রক্ষা করতে ভবনগুলোকে যেসব নিয়ম বা বিধিমালা মেনে চলতে হয়, সেগুলোর ব্যবস্থাপনা গুরুত্বপূর্ণ।[৫২]:৯৫৩–৯৫৪ এটি করার অনেক উপায় আছে। তার মধ্যে আছে নির্দিষ্ট এলাকার তাপ নিরোধক ক্ষমতা (insulation value) বাড়ানো, সৌর-ছায়াপ্রদান (solar shading) যোগ করা, প্রাকৃতিক বায়ুচলাচল বা নিষ্ক্রিয় শীতলীকরণ (passive cooling) বৃদ্ধি, শহরের তাপদ্বীপ প্রভাব (urban heat island effect) কমানোর জন্য সবুজ ছাদের (green roofs) বিধি প্রণয়ন, অথবানদ্যাপ্রবণ এলাকার সম্পত্তিগুলিতে উঁচু ভিত্তি তৈরি করা বাধ্যতামূলক করা।[৫২]:৯৫৩–৯৫৪ জমি ব্যবহারের নির্দিষ্টীকরণ (Land use zoning control) শহুরে উন্নয়নে বিনিয়োগের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। এই বিধিমালা বন্যা ও ভূমিধসের ঝুঁকিতে থাকা এলাকার ঝুঁকি কমাতে পারে।[৫২]:৯৪২–৯৪৩
বীমা
সম্পাদনাবন্যা এবং অন্যান্য চরম আবহাওয়ার ঘটনার আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকি কমানোর মাধ্যমে বীমা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।[৫৩] বর্তমানে বীমার বিভিন্ন বিকল্প ক্রমশ সহজলভ্য হচ্ছে।[৪৩]:৮১৪ উদাহরণস্বরূপ, সূচক-ভিত্তিক বীমা (index-based insurance) একটি নতুন ধারণা যেখানে বৃষ্টিপাত বা তাপমাত্রার মতো আবহাওয়ার সূচক যখন একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করে তখন বীমার অর্থ পরিশোধ করা হয়। এর লক্ষ্য হলো কৃষকদের মতো খদ্দেরদের উৎপাদন ঝুঁকি মোকাবেলায় সাহায্য করা। পুনর্বীমা (reinsurance) পাওয়ার মাধ্যমে শহরগুলো আরও স্থিতিস্থাপক হতে পারে।[৫৪] যেসব ক্ষেত্রে বেসরকারী বীমা বাজার ব্যর্থ হয়, সেখানে সরকার প্রিমিয়ামে ভর্তুকি দিয়ে সহায়তা করতে পারে।[৫৫]
বীমা নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইক্যুইটি বিষয় বিবেচনা করা প্রয়োজন:[৫৫]
- সরকারী তহবিলে ঝুঁকি স্থানান্তর করলে সামগ্রিক ঝুঁকি কমে না;
- সরকার সময়ের সাথে সাথে ক্ষয়ক্ষতির খরচ বহন করতে পারে, স্থানের সাথে সাথে নয়;
- সরকার কম-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাড়ির মালিকদের উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বীমা প্রিমিয়ামে ভর্তুকি দিতে বাধ্য করতে পারে;
- প্রতিযোগিতামূলক বাজারে কাজ করা বেসরকারী বীমাকারীদের পক্ষে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে;
- সরকার ভবিষ্যতের দুর্যোগের খরচ বহনের জন্য জনগণের উপর কর আরোপ করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ফ্লাড ইন্স্যুরেন্স প্রোগ্রামের মতো সরকার-ভর্তুকিপ্রাপ্ত বীমা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সম্পত্তি গড়ে তোলার জন্য অনুপযুক্ত উৎসাহ প্রদানের জন্য সমালোচিত হয়েছে। এটি সামগ্রিক ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।[৫৬] বীমা অভিযোজন বৃদ্ধির জন্য সম্পত্তি পর্যায়ে সুরক্ষা এবং স্থিতিস্থাপকতার মতো অন্যান্য প্রচেষ্টাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।[৫৭] উপযুক্ত ভূমি ব্যবহার নীতি এই ধরণের আচরণগত প্রভাব প্রতিহত করতে পারে। এই নীতিমালা বর্তমান বা ভবিষ্যতের জলবায়ু ঝুঁকি আছে এমন এলাকায় নতুন নির্মাণ সীমাবদ্ধ করে। এগুলো সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সক্ষম ভবন নির্মাণ বিধি গ্রহণেও উৎসাহিত করে।[৫৮]
সমন্বয় ব্যবস্থা
সম্পাদনাসমন্বয় বিভিন্ন জনগোষ্ঠী বা সংগঠনের মধ্যেকার যৌথ লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করে। এর উদাহরণ হলো তথ্য বিনিময় অথবা যৌথভাবে অভিযোজন পদক্ষেপসমূহ বাস্তবায়ন করা। সমন্বয় সম্পদকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে সহায়তা করে। এটি কাজের পুনরাবৃত্তি এড়ায়, সরকারের সকল স্তরে মধ্যে কাজের সামঞ্জস্য উৎসাহিত করে, এবং এর সাথে জড়িত সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজকে বোঝা সহজ করে।[৫৯]:৫ খাদ্য উৎপাদন খাতে, UNFCCC এর মাধ্যমে অর্থায়নকৃত অভিযোজন প্রকল্পসমূহ প্রায়ই জাতীয় সরকার এবং রাজ্য, প্রাদেশিক বা শহর পর্যায়ের প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়সাধন করে। তৃণমূল পর্যায় ও জাতীয় সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের উদাহরণ তুলনামূলকভাবে কম।[৬০]
আচরণগত ও সাংস্কৃতিক কৌশল
সম্পাদনাঅভিযোজনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষ এবং পরিবারসমূহ মূল ভূমিকা পালন করে। বিশ্বব্যাপী, বিশেষত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে, এর অনেক উদাহরণ আছে। আচরণগত অভিযোজন বলতে কৌশল, অভ্যাস এবং কর্মকাণ্ডের পরিবর্তনকে বোঝায়, যা ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে বাড়িকে বন্যা থেকে রক্ষা করা, ফসলকে খরা থেকে রক্ষা করা এবং আয়ের বিভিন্ন উৎস গ্রহণ করা। আচরণের পরিবর্তন অভিযোজনের সবচেয়ে সাধারণ পন্থা।[২]:২৪৩৩
খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন ও খাদ্য অপচয়
সম্পাদনাউচ্চ তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার সংস্পর্শে আসলে খাদ্য নষ্টের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। বন্যা এবং দূষণের মতো চরম ঘটনার কারণেও এটি বৃদ্ধি পায়।[২৪]:৭৮৭ এটি খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থার বিভিন্ন স্তরে ঘটতে পারে, ফলে খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টির জন্য ঝুঁকি তৈরি করে। অভিযোজন ব্যবস্থাগুলির মধ্যে সরবরাহকারীদের উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং অন্যান্য পরিচালনার পদ্ধতি পর্যালোচনা করা অন্তর্ভুক্ত। এর উদাহরণগুলির মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্য আলাদা করা, ভালোভাবে সংরক্ষণের জন্য পণ্য শুকানো অথবা প্যাকেজিং উন্নত করা অন্তর্ভুক্ত।[২৪]:৭৮৭ খুচরা বিক্রেতা এবং ভোক্তাদের জন্য অন্যান্য আচরণগত পরিবর্তনের বিকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে কম আকর্ষণীয় দেখতে হলেও ফল ও সবজি গ্রহণ করা, উদ্বৃত্ত খাদ্য বিতরণ করা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ খাবারের দাম কমানো।[৬১]
যেসব অঞ্চলে অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ করা হয় সেখানে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের বিকল্পগুলির মধ্যে মাংস এবং দুগ্ধজাত খাবারের পরিবর্তে উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাবারের অনুপাত বৃদ্ধি করা অন্তর্ভুক্ত। এটি জলবায়ু পরিবর্তন রোধ এবং এর সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া উভয় ক্ষেত্রেই উপকারী। উদ্ভিদ-ভিত্তিক খাবার উৎপাদনে অনেক কম শক্তি এবং পানি প্রয়োজন। অভিযোজন বিকল্পগুলো এমন খাদ্যাভ্যাস খুঁজে বের করতে পারে যা আঞ্চলিক, আর্থ-সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের সাথে আরও ভালভাবে মানানসই। সামাজিক-সাংস্কৃতিক রীতিনীতি খাদ্যের পছন্দকে দৃঢ়ভাবে প্রভাবিত করে। ভর্তুকি, কর এবং বিপণনের মতো নীতিগুলিও এমন খাদ্যাভ্যাসের পছন্দগুলিকে সমর্থন করতে পারে যা অভিযোজনে সহায়তা করে।[২৪]:৭৯৯
জীবিকার ধরনে পরিবর্তন
সম্পাদনাকৃষিখাতে অভিযোজনের জন্য প্রচুর সুযোগ রয়েছে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে রোপনের সময় পরিবর্তন করা, অথবা এমন ফসল ও পশুপালন করা যেগুলো জলবায়ু পরিস্থিতি এবং কীটপতঙ্গের উপস্থিতির সাথে আরও ভালভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। অন্যান্য উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে আরও স্থিতিস্থাপক ফসল উৎপাদন করা এবং জিনগতভাবে পরিবর্তিত ফসল নির্বাচন করা।[২৪]:৭৮৭ এসবের লক্ষ্য হলো খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির উন্নতি করা। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় কৃষিক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অভিযোজন পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো জীবিকার ধরনে পরিবর্তন আনা। পরিবর্তনশীল জলবায়ুর সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য কৃষকরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারেন:
- রোপণের সময় পরিবর্তন করা: ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের ধরণের পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য কৃষকরা তাদের ফসল রোপণের সময় পরিবর্তন করতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোন এলাকায় বর্ষাকাল দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে কৃষকরা দ্রুত বর্ধনশীল ধানের জাতের চাষ করতে পারেন।
- ফসল ও পশুপালনের পরিবর্তন: কৃষকরা এমন ফসল ও পশুপালন করতে পারেন যেগুলো তাদের এলাকার পরিবর্তনশীল জলবায়ুর সাথে আরও ভালভাবে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, খরার প্রবণ এলাকায় কৃষকরা খরার জন্য সহনশীল ফসল, যেমন জোয়ার, বাজরা, বা রাগি চাষ করতে পারেন।
- স্থিতিস্থাপক ফসল উৎপাদন: কৃষকরা বন্যা, খরা, লবণাক্ততা, এবং রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণের বিরুদ্ধে স্থিতিস্থাপক ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে ঝুঁকি কমাতে পারেন।
- জিনগতভাবে পরিবর্তিত ফসল (GMO) নির্বাচন: GMOs উন্নত পুষ্টি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, এবং খরা সহনশীলতার মতো বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য তৈরি করা হতে পারে।
- কৃষি পদ্ধতিতে পরিবর্তন: কৃষকরা জৈব কৃষি, জল সংরক্ষণ ব্যবস্থা, এবং কৃষি-বনায়নের মতো টেকসই কৃষি পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারেন।
- জীবিকার বৈচিত্র্যায়ন: কৃষকরা কৃষিকাজের বাইরেও আয়ের উৎস তৈরি করতে পারেন, যেমন মৎস্য চাষ, হস্তশিল্প, বা পর্যটন।
জন-অভিবাসন এবং ব্যবস্থাপিত প্রত্যাবর্তন
সম্পাদনাকিছু লোক জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার একটি উপায় হিসেবে জন-অভিবাসন (Migration) কে দেখে, তবে অনেকে এটিকে পরিবর্তনের প্রতি মানুষের প্রতিক্রিয়া হিসেবে বর্ণনা করে। আইপিসিসি ষষ্ঠ মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে: "অভিবাসন, স্থানান্তর এবং পুনর্বাসনের মতো কিছু পদক্ষেপকে অভিযোজন বলা যেতে পারে, আবার নাও বলা যেতে পারে।"[৬২]:২৭
অভিবাসনের সিদ্ধান্তের পেছনে অনেক কারণ থাকে। জলবায়ু পরিবর্তন কতটা অভিবাসনকে প্রভাবিত করে তা স্পষ্ট করে বলা কঠিন।[৪৬]:২৪২৮ পরিবেশ অভিবাসনের কারণগুলোর মধ্যে একটি, তবে অর্থনীতি, জনসংখ্যা এবং রাজনীতিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জলবায়ু পরিবর্তন হয়তো একটি পরোক্ষ বা কম গুরুত্বপূর্ণ কারণ।[৬৩]:১০৭৯–১০৮০
মৌসুমি অভিবাসন বা গতিশীলতার মধ্যে রয়েছে গবাদিপশু পালন বা শহুরে এলাকায় মৌসুমি কাজের সন্ধানের মতো ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতি। এগুলি সাধারণত স্বেচ্ছায় এবং অর্থনৈতিক কারণে করা হয়। আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং চরম আবহাওয়ার ঘটনা অভিবাসনকে প্রভাবিত করতে পারে।[৪৬]:২৪২৮ আবহাওয়ার পরিবর্তনশীলতা কৃষি আয় এবং কর্মসংস্থান হ্রাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ, এবং জলবায়ু পরিবর্তন এই প্রভাবগুলিকে আরও সম্ভাব্য করে তুলেছে। এর ফলে অভিবাসন বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে গ্রাম থেকে শহরে।[৪৬]:২৪২৮
অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধির পদক্ষেপ, যেমন সামাজিক সুরক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়ন, অভিবাসনের সিদ্ধান্তে কম ক্ষমতাধর লোকদের সাহায্য করতে পারে।[৭]:২৫ কখনও কখনও লোকেরা অভিবাসন করতে অনিচ্ছুক বা অক্ষম হয়।[৬৩]:১০৭৯–১০৮১ সেক্ষেত্রে মানুষকে নিরাপদ রাখার জন্য সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হতে পারে, যাকে ব্যবস্থাপিত প্রত্যাবর্তন (managed retreat) বলা হয়।
প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান
সম্পাদনাপ্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান (Nature-based solutions - NBS) প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে কাজ করে সমাজ এবং জীববৈচিত্র্য উভয়ের জন্যই সুবিধা প্রদান করে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে, NBS অভিযোজন এবং প্রশমন উভয় ক্ষেত্রেই বিকল্প সমাধান প্রদান করে যা বন্যপ্রাণী এবং তাদের আবাসস্থলকে রক্ষা করে। এছাড়াও, NBS টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও অবদান রাখে।[৬৪]:৩০৩
NBS-এর ধারণাটি ব্যাপক এবং এর মধ্যে পরিবেশ-ভিত্তিক অভিযোজন (ecosystem-based adaptation) নামে পরিচিত কার্যক্রমগুলিও অন্তর্ভুক্ত। তবে NBS কেবল জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায়ও প্রয়োগ করা হয়। তাই এটি একটি কম নির্দিষ্ট ধারণা। উভয় পদ্ধতিতেই মানুষ এবং প্রকৃতির জন্য একইসাথে উপকারিতা নিশ্চিত করা জরুরি।
পরিবেশ ব্যবস্থা এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভূমিকা
সম্পাদনাপৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন পরিবেশ ব্যবস্থা জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। এই খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতা নির্ভর করে তাদের স্থিতিস্থাপকতার উপর। মানুষ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশ ব্যবস্থার স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে, যা জীববৈচিত্র্যকে শক্তিশালী করবে। এরকম একটি পদক্ষেপ হলো বিভিন্ন পরিবেশ ব্যবস্থার মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি করা। এর ফলে বিভিন্ন প্রজাতি আরও অনুকূল জলবায়ু পরিস্থিতিতে স্ব-প্রণোদিতভাবে স্থানান্তরিত হতে পারবে। আরেকটি পদক্ষেপ হলো গাছপালা এবং প্রাণীদের মানুষের মাধ্যমে পরিবহন করে এই স্থানান্তরকে সহায়তা করা। বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে প্রবাল প্রাচীরগুলিকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টিকে থাকতে সাহায্য করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অবশেষে, প্রাকৃতিক এবং আধা-প্রাকৃতিক এলাকার সুরক্ষা ও পুনরুদ্ধার পরিবেশ ব্যবস্থার স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এর ফলে পরিবেশ ব্যবস্থার অভিযোজন সহজতর হয়।[৬৫]
মানুষ এবং সমাজকে সহায়তা করা
সম্পাদনাপরিবেশ ব্যবস্থার অভিযোজনকে উৎসাহিত করে এমন অনেক পদক্ষেপ আছে যা মানুষকেও খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে। এই পদক্ষেপগুলো পরিবেশ-ভিত্তিক অভিযোজন (ecosystem-based adaptation) এবং প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান (nature-based solutions) নামে পরিচিত। উদাহরণস্বরূপ, প্রাকৃতিক অগ্নিকাণ্ডের পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে আমরা ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাবনা কমাতে পারি। এর ফলে মানুষ এই বিপদ থেকে রক্ষা পাবে। নদীগুলিকে আরও বেশি করে প্রবাহিত হওয়ার সুযোগ দিলে প্রাকৃতিক পদ্ধতি আরও বেশি পানি ধারণ করতে পারবে। এর ফলে জনবহুল এলাকায় বন্যার সম্ভাবনা কমে যাবে। সবুজায়ন এবং বনাঞ্চল তৈরি করে আমরা পশুপালকদের গবাদিপশুর জন্য ছায়া প্রদান করতে পারি। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কৃষি উৎপাদন এবং পরিবেশ ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারের মধ্যে একটি ভারসাম্যহীনতা দেখা যায়। এই ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।[৬৫]
প্রভাবের ধরন অনুসারে কৌশল
সম্পাদনাকিছু অভিযোজন নির্দিষ্ট জলবায়ু বিপর্যয় যেমন বন্যা বা খরা মোকাবেলা করার জন্য তৈরি করা হয়। অন্যদিকে, অন্যান্য বিকল্প অভিযোজনগুলো তখন প্রয়োজন হয় যখন একই সাথে একাধিক বিপদের পাশাপাশি অন্যান্য বিষয়গুলোও ঝুঁকির কারণ হিসেবে যুক্ত হয়, যেমন জন-অভিবাসন (migration)।
বন্যা
সম্পাদনাশহর ও গ্রামীণ এলাকায় যে বন্যার সৃষ্টি হয়, তাকে বলা হয় শহুরে বন্যা (urban flooding)। এছাড়া সমুদ্র উপকূলে যে বন্যা হয়, তাকে উপকূলীয় বন্যা (coastal flooding) বলে। সার্বিকভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠ বৃদ্ধির কারণে উপকূলীয় বন্যার তীব্রতা বহুগুণে বেড়ে যায়। এছাড়াও, কিছু এলাকায় বরফগলা পানি দ্বারা হিমবাহ হ্রদ উপচে পড়ার (glacial lake outburst flood) ঝুঁকিও বিদ্যমান থাকে।
বন্যা প্রতিরোধের জন্য বেশ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:[৬৬]
- উন্নত বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা: উন্নত বন্যা প্রতিরোধী দেয়াল, সমুদ্র প্রাচীর এবং পানি সরানোর জন্য বর্ধিত পাম্প স্থাপন করা।[৬৭]
- সমুদ্রের পানির অনুপ্রবেশ রোধ: ড্রেনেজ বা নর্দমা ব্যবস্থায় এমন যন্ত্র স্থাপন করা যাতে সমুদ্রের পানি প্রবেশ করতে না পারে।[৬৮]
- বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ: অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করা, যেমন: রাস্তায় কংক্রিটের পরিমাণ কমিয়ে পানি শোষণকারী রাস্তা তৈরি করা, পানি শোষণক্ষম গাছপালা লাগানো, মাটির নিচে পানি সংরক্ষণাগার তৈরি করা এবং বাসাবাড়িতে ছোট ছোট ট্যাঙ্কে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য অনুদানের ব্যবস্থা করা।[৬৯][৭০]
- বর্জ্য পানি পরিশোধন কেন্দ্রগুলোতে পাম্প স্থাপন: বর্জ্য পানি পরিশোধন কেন্দ্রগুলোতে পাম্পের উচ্চতা বৃদ্ধি যাতে বন্যার পানি সেখানে প্রবেশ করতে না পারে ।[৬৮]
- বন্যা-প্রবণ এলাকার বাড়িগুলো কিনে নেওয়া: সরকারি উদ্যোগে বন্যা-প্রবণ এলাকার বাড়িগুলো কিনে নিয়ে সেখানকার অধিবাসীদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের মাধ্যমে তাদের ক্ষয়ক্ষতি রোধ করা ।[৭১]
- রাস্তার উচ্চতা বাড়িয়ে দেওয়া: রাস্তার উচ্চতা বাড়িয়ে বন্যা প্রতিরোধ করা ।[৬৭]
- ম্যানগ্রোভ বনের ব্যবহার ও সংরক্ষণ: প্রাকৃতিক বন্যা প্রতিরোধক হিসেবে ম্যানগ্রোভ বনের ব্যবহার করা ও সংরক্ষণ করা জরুরি।[৭২]
- হিমবাহ হ্রদের ঝুঁকি রোধ: হিমবাহ হ্রদের ফেটে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে এগুলোর পাড় (moraines) কংক্রিটের বাঁধ দিয়ে শক্তিশালী করা, যা হতে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগও সৃষ্টি হয়।[৭৩]
- বৃষ্টির পানি নিয়ন্ত্রণ: অতিরিক্ত বর্ষণপাতের কারণে বৃষ্টির পানি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির (stormwater) ক্ষমতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এটি বৃষ্টির পানিকে সাধারণ পানি (blackwater) থেকে পৃথক করতে সহায়তা করাতে পারে, ফলে অতিরিক্ত বৃষ্টির সময় নদীগুলো দূষিত হওয়া থেকে রক্ষা পায়। এর একটি উদাহরণ হলো কুয়ালালামপুরের SMART টানেল।
হারিকেন স্যান্ডির পরে নিউ ইয়র্ক সিটি তাদের পুনর্গঠন এবং স্থিতিস্থাপকতা উদ্যোগের জন্য একটি বিস্তৃত প্রতিবেদন তৈরি করেছিল। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল এমন সব ভবন নির্মাণ করা যেগুলো বন্যায় কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও, ঝড়ের সময় এবং পরে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল, সেগুলোর পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সেই লক্ষ্য সামনে রাখা হয়েছিল। এই দুর্যোগের ফলে কয়েক সপ্তাহের জ্বালানি সংকটও সৃষ্টি হয়েছিল যদিও তা বন্যার কারণে হয়নি। আইনি ও বিতরণ সমস্যার কারণে এই সংকট ঘটেছিল। এছাড়া, হাসপাতালগুলোয় বন্যা, বিমা প্রিমিয়াম বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ও বাষ্প উৎপাদন এবং বিতরণ নেটওয়ার্কের ক্ষতি, এবং ভূগর্ভস্থ মেট্রো এবং রাস্তার সুড়ঙ্গগুলোতে বন্যা - এসব সমস্যা দূরীকরণের প্রচেষ্টা ছিল ঐ প্রতিবেদনের অংশ।[৭৪]
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ক্রমশ তীব্র হচ্ছে, যার মধ্যে বন্যার তীব্রতা ও ঘনত্ব বৃদ্ধি অন্যতম। বন্যার ঝুঁকিতে অবস্থিত বাংলাদেশের জন্য জলবায়ু অভিযোজন ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। জলবায়ু অভিযোজন বন্যার ঝুঁকি কমাতে এবং এর প্রভাব মোকাবেলা করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে রয়েছে বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা, বন্যার প্রস্তুতি এবং বন্যার পরবর্তী পুনর্বাসন। বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থার মধ্যে বাঁধ, তীরবর্তী দেয়াল, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, জলাবদ্ধ এলাকা তৈরি, নদী খনন, ভূমিধ্বস রোধ, বনায়ন এবং জলাভূমি সংরক্ষণ অন্তর্ভুক্ত। বন্যার প্রস্তুতিতে বন্যা পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নয়ন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, জরুরী প্রস্তুতি পরিকল্পনা তৈরি এবং বন্যার ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য আশ্রয়কেন্দ্র এবং অন্যান্য সহায়তা প্রদান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বন্যার পরবর্তী পুনর্বাসনে ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো পুনর্নির্মাণ, কৃষি এবং জীবিকা পুনরুদ্ধার, মানসিক স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে পুনর্গঠিত করা সম্ভব। জলবায়ু অভিযোজন একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া এবং এটি বাস্তবায়নের জন্য সকল স্তরের সরকার, বেসরকারি সংস্থা এবং জনগণের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। বন্যার ঝুঁকি কমাতে জলবায়ু অভিযোজন ছাড়াও ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা, জল সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মতো পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। বন্যা একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও জলবায়ু অভিযোজন এবং অন্যান্য প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এর প্রভাব কমিয়ে আনা সম্ভব। সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা বন্যার ঝুঁকিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশকে আরও সুরক্ষিত করে তুলতে পারি।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও অভিযোজন
সম্পাদনাগ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমিয়ে আনা ২০৫০ সালের পরে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার বৃদ্ধির হারকে কমিয়ে স্থিতিশীল করতে পারে। এতে সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধিজনিত খরচ এবং ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমে যাবে, কিন্তু একে সম্পূর্ণরূপে থামানো সম্ভব হবে না। তাই সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে অভিযোজন করা অপরিহার্য।[৭৫](p3–127) সবচেয়ে সহজ উপায়টি হলো ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় উন্নয়নের কাজ বন্ধ করা এবং শেষ পর্যন্ত সেসব জায়গা থেকে মানুষ এবং অবকাঠামো সরিয়ে নেওয়া। কিন্তু এভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে প্রায়ই মানুষ তাদের জীবিকা হারায়। এসব নতুনভাবে গরীব হওয়া মানুষের বাস্তুচ্যুতি তাদের নতুন বাসস্থানের উপর বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে এবং সামাজিক উত্তেজনা ত্বরান্বিত করতে পারে।[৭৬]
উন্নত সুরক্ষা ব্যবস্থা যেমন বাঁধ, নদীতীরের বাঁধ, বা আরও ভাল প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষার মাধ্যমে সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে পিছু হটাকে এড়ানো বা অন্তত বিলম্ব করা সম্ভব।[৭৭] অন্যান্য বিকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কমাতে বিল্ডিং কোড সংশোধন করা, উচ্চ জোয়ারের সময়ে আরও অধিক ঘন ঘন এবং তীব্র বন্যার সাথে মানিয়ে নিতে বৃষ্টির পানির ভালভ যুক্ত করা[৭৮] বা মাটিতে লবণাক্ত পানি সহ্য করতে পারে এমন ফসলের চাষ করা, এমনকি যদি খরচ আগের চেয়ে বেড়ে যায়।[৭৭][৭৯][৮০] এই বিকল্পগুলো দুই ভাগে বিভক্ত: কঠোর (হার্ড) এবং নমনীয় (সফট) অভিযোজন। কঠোর অভিযোজনের সাথে সাধারণত মানব সমাজ এবং বাস্তুতন্ত্রের বড় ধরণের পরিবর্তন জড়িত থাকে। এর মধ্যে প্রায়শই মূলধন-নিবিড় অবকাঠামো নির্মাণ অন্তর্ভুক্ত থাকে। নমনীয় অভিযোজন জড়িত থাকে প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং স্থানীয়ভাবে কমিউনিটিকে মানিয়ে নেওয়া। এর সাথে সাধারণত সরল, মডুলার এবং স্থানীয়ভাবে মালিকানাধীন প্রযুক্তির ব্যবহার জড়িত থাকে। এই দুই ধরনের অভিযোজন একে অপরের পরিপূরক হতে পারে বা পারস্পরিকভাবে স্বাতন্ত্র্যপূর্ণ হতে পারে।[৮০][৮১] অভিযোজন বিকল্পগুলোর জন্য প্রায়শই উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। কিন্তু কিছু না করার ব্যয় অনেক বেশি। এর একটি উদাহরণ হল বন্যার বিরুদ্ধে অভিযোজন। কার্যকর অভিযোজন ব্যবস্থাগুলি ২০৫০ সালের মধ্যে অভিযোজন ব্যতিরেকে বিশ্বের ১৩৬টি বৃহত্তম উপকূলীয় শহরে বন্যার ভবিষ্যত বার্ষিক ব্যয় ১ ট্রিলিয়ন ডলার থেকে কমিয়ে প্রায় ৬০ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি করতে পারে। এর ব্যয় হবে প্রতি বছর ৫০ বিলিয়ন ডলার।[৮২][৮৩] কিছু বিশেষজ্ঞ যুক্তি দেখান যে, অত্যধিক সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রতিটি উপকূলরেখা রক্ষার চেষ্টা না করে উপকূল থেকে পিছু হটলে ভারত এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জিডিপি-তে কম প্রভাব পড়বে।[৮৪]
অভিযোজন সফল হতে হলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার বৃদ্ধিকে অবশ্যই আগে থেকেই মোকাবেলা করতে হবে। ২০২৩ সালের হিসাবে, অভিযোজন পরিকল্পনার বৈশ্বিক অবস্থা মিশ্র। ৪৯টি দেশের ২৫৩জন পরিকল্পনাকারীর জরিপে দেখা গেছে যে, ৯৮% সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রক্ষেপণ সম্পর্কে সচেতন, কিন্তু ২৬% এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের নীতি নথিতে তা অন্তর্ভুক্ত করেনি। এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মাত্র প্রায় এক তৃতীয়াংশ উত্তরদাতারা তা করেছেন। এর তুলনায় আফ্রিকায় ৫০%, এবং ইউরোপ, অস্ট্রেলেশিয়া এবং উত্তর আমেরিকায় ৭৫% এর বেশি এটা করেছে। জরিপ করা পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে ৫৬% এর এমন পরিকল্পনা রয়েছে যা ২০৫০ এবং ২১০০ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি বিবেচনায় নেয়। তবে ৫৩% দুই বা তিনটি প্রক্ষেপণের পরিবর্তে কেবল একটি প্রক্ষেপণ ব্যবহার করে। মাত্র ১৪% চারটি প্রক্ষেপণ ব্যবহার করে, যার মধ্যে রয়েছে "চরম" বা "উচ্চ-স্তরের" সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রক্ষেপণ।[৮৬] আরেকটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে পশ্চিম এবং উত্তর-পূর্ব যুক্তরাষ্ট্র থেকে আঞ্চলিক সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির মূল্যায়নের ৭৫% এরও বেশি অন্তত তিনটি অনুমান অন্তর্ভুক্ত করেছে। এগুলি সাধারণত আরসিপি২.৬, আরসিপি৪.৫ এবং আরসিপি৮.৫, এবং কখনও কখনও চরম পরিস্থিতি অন্তর্ভুক্ত থাকে। কিন্তু আমেরিকান সাউথ থেকে ৮৮% অনুমানের মাত্র একটি অনুমান ছিল। একইভাবে, দক্ষিণ থেকে কোনও মূল্যায়ন ২১০০ এর পরে যায়নি। এর বিপরীতে পশ্চিম থেকে ১৪টি মূল্যায়ন ২১৫০ পর্যন্ত গেছে, এবং উত্তর-পূর্ব থেকে তিনটি ২২০০ পর্যন্ত গেছে। এছাড়া দেখা গেছে যে সমস্ত এলাকার ৫৬% আইপিসিসি ষষ্ঠ মূল্যায়ন প্রতিবেদনের তুলনায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতার বৃদ্ধির মাত্রাকে অবমূল্যায়ন করেছে।[৮৭]
তাপপ্রবাহ
সম্পাদনা২০২০ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে, বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ মানুষের বাসস্থান ৫০ বছরের মধ্যে সাহারার মরুভূমির সবচেয়ে গরম অংশের মতো উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে। জনসংখ্যার বৃদ্ধির ধরণে কোনও পরিবর্তন না হলে এবং অভিবাসন না ঘটলে, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন না কমালে, উষ্ণায়ন ১.৫° সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ না রাখলে এটি ঘটবে। ২০২০ সালের তুলনায় এই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা খুবই কম।[৮৮][৮৯][৯০]
শহরগুলো বিশেষভাবে "আরবান হিট আইল্যান্ড ইফেক্ট"-এর কারণে তাপপ্রবাহের দ্বারা প্রভাবিত হয়। জলবায়ু পরিবর্তন এই প্রভাব তৈরি করে না, বরং তাপপ্রবাহকে আরও ঘন ঘন এবং তীব্র করে তোলে। এর ফলে শহরগুলোতে আরবান হিট আইল্যান্ড প্রভাব আরও বেড়ে যায়।[৯১]:৯৯৩ কম্প্যাক্ট, ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলো এই প্রভাবকে আরও তীব্র করে তোলে। এর ফলে তাপমাত্রা আরও বেড়ে যায় এবং তাপপ্রবাহের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।[৯২]
গাছপালা এবং সবুজ জায়গা শহরের তাপমাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এগুলি ছায়ার উৎস হিসেবে কাজ করে এবং বাষ্পীভবনের মাধ্যমে তাপমাত্রা কমায়।[৯৩] অন্যান্য বিকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে সবুজ ছাদ, প্যাসিভ ডেটাইম রেডিয়েটিভ কুলিং ব্যবস্থার ব্যবহার, এবং শহরের এলাকায় হালকা রঙের পদার্থ ব্যবহার করা এবং কম শোষণকারী দ্রব্য দিয়ে বাড়িঘর নির্মাণ করা। এগুলি অধিক সূর্যালোক প্রতিফলিত করে এবং কম তাপ শোষণ করে।[৯৪][৯৫][৯৬] শহরের গাছগুলোকে আরও তাপ-সহনশীল জাতে পরিবর্তন করা প্রয়োজন হতে পারে।[৬৯][৯৭]
বাড়তি তাপের সাথে অভিযোজিত হওয়ার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে:
- শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ব্যবস্থার ব্যবহার এবং উন্নয়ন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যোগ করার ফলে স্কুল এবং কর্মক্ষেত্র শীতল হতে পারে। তবে এটি অতিরিক্ত গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন ঘটায় যদি না নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করা হয়।
- সৌরশক্তি চালিত প্যাসিভ কুলিং ব্যবস্থা এবং/অথবা রেফ্রিজারেশন।
কৃষি ক্ষেত্রে বৃষ্টিপাতের পরিবর্তন
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী বৃষ্টিপাতের ধরন বদলে যাচ্ছে। এর ফলে কৃষিক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব পড়ছে।[৯৮] বিশ্বব্যাপী কৃষিকাজের প্রায় ৮০% বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল।[৯৯] বিশ্বের ৮৫২ মিলিয়ন দরিদ্র মানুষ এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন অংশে বাস করে যেখানে খাদ্যশস্য চাষের জন্য বৃষ্টির উপর নির্ভর করতে হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টিপাত, বাষ্পীভবন, পৃষ্ঠগড়ানো পানি এবং মাটির আর্দ্রতা কমে যাচ্ছে। দীর্ঘস্থায়ী খরা খাদ্যশস্য চাষে ব্যর্থতার কারণ হতে পারে। এর ফলে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়।
পানির প্রাপ্যতা সকল প্রকার কৃষিকাজকেই প্রভাবিত করে। মৌসুমী বৃষ্টিপাতের মোট পরিমাণের পরিবর্তন বা তার ধরনের পরিবর্তন - দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। ফুল ফোটা, পরাগায়ন এবং শস্যপূর্ণতার সময় আর্দ্রতার অভাব বেশিরভাগ শস্যের জন্যই ক্ষতিকর - বিশেষভাবে ভুট্টা, সয়াবিন এবং গমের জন্য। মাটি থেকে বেশি বাষ্পীভবন এবং গাছ থেকে বেশি পানি নির্গমনের ফলে আর্দ্রতাজনিত সমস্যা দেখা দেয়।
এই সমস্যা মোকাবেলার জন্য অনেক উপায় আছে। এর মধ্যে একটি হলো বেশি খরা-সহিষ্ণু শস্যের জাত তৈরি করা[১০০] এবং আরেকটি হলো স্থানীয়ভাবে বৃষ্টির পানি সংগ্রহের ব্যবস্থা করা। জিম্বাবুয়েতে ছোট চাষের জায়গায় পানি জমানোর ব্যবস্থা চালু করে, ফলস্বরূপ প্রচুর বৃষ্টি হোক বা খরা, ভুট্টার উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। নাইজারেও দুই থেকে চার গুণ বেশি বাজরার উৎপাদন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাদ্য নিরাপত্তা ও পানির নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে। ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত না হয়ে বরং আরও বৃদ্ধি পায়; এজন্য খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় বদল আনা আবশ্যক।[১০১]
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাদ্য নিরাপত্তা ও পানির নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে। ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত না হয়ে বরং আরও বৃদ্ধি পায়; এজন্য খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা আবশ্যক।[১০২]
সেঁচ সেক্ষেত্রে বেশি ব্যয়বহুল
সম্পাদনাতাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সেঁচের জন্য পানির চাহিদাও বাড়বে। এতে করে কৃষি, শহর ও শিল্পক্ষেত্রে পানির ব্যবহারের মধ্যে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। অর্ধ-শুষ্ক জরায়ুতে ইতিমধ্যেই পানির সবচেয়ে বড় ব্যবহারকারী হচ্ছে কৃষিক্ষেত্র। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ার ফলে পানি তোলার জন্য বেশি বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রয়োজন হবে, যার ফলে সেঁচের খরচ বৃদ্ধি পাবে। বিশেষভাবে শুষ্ক পরিস্থিতিতে প্রতি একর জমির সেঁচের জন্য বেশি পানির প্রয়োজন হবে। অন্যান্য পদ্ধতি অবলম্বন করে পানির সবচেয়ে দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিত করা যেতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের আলোকে এশিয়ার ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করার জন্য আন্তর্জাতিক পানি ব্যবস্থাপনা সংস্থা (International Water Management Institute) পাঁচটি নীতির প্রস্তাব করছে।[১০৩] এগুলো হলো:
- বিদ্যমান সেঁচ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ যাতে আধুনিক চাষের ক্ষেতে এটি ব্যবহার করা যায়।
- টেকসই উপদ্ধতিতে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার করে চাষিদের নিজেদের পানির ব্যবস্থাা করার প্রচষ্টাকে সমর্থন করা।
- বেসরকারি খাতের সাথে কাজ করে প্রচলিত অংশগ্রহণমূলক সেঁচ ব্যবস্থাপনার বাইরে নতুন পদ্ধতির অনুসন্ধান করা।
- কর্মক্ষমতা এবং জ্ঞানের বিকাশ
- সেঁচ খাতের বাইরেও বিনিয়োগ বৃদ্ধি
খরা এবং মরুকরণ
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তন এবং অটেকসই ভূমি ব্যবহারের ফলে সৃষ্ট মরুকরণ প্রক্রিয়া রোধে বনায়ন একটি কার্যকরী পদক্ষেপ। "গ্রেট গ্রিন ওয়াল" এর মতো বৃহৎ আকারের প্রকল্পগুলো সাহারা মরুভূমির দক্ষিণমুখী বিস্তার রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এই প্রকল্পটি ১৯৮০ সালে শুরু হয়েছিল এবং ২০৩০ সালের মধ্যে ৮,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১৫ কিলোমিটার চওড়া একটি বনভূমি তৈরি করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যে, এর মাত্র ১৫% অংশ সম্পন্ন হয়েছে। নাইজেরিয়ায় ১২ মিলিয়নের বেশি একর অবনত জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। সেনেগালে প্রায় ৩০ মিলিয়ন একর জমিতে খরা-প্রতিরোধী গাছ লাগানো হয়েছে। ইথিওপিয়ায় ৩৭ মিলিয়ন একর জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। ভূগর্ভস্থ পানির কূপগুলিতে পানি পুনরায় জমা হচ্ছে। গ্রামীণ এলাকায় অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রামবাসীদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান ও আয়ের উৎস তৈরি হয়েছে। প্রকল্পটি সম্পন্ন করতে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। তীব্র খরা এবং উচ্চ তাপমাত্রা বনায়নের প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সমর্থন প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদী সাফল্যের জন্য অপরিহার্য। "গ্রেট গ্রিন ওয়াল" প্রকল্পটি মরুকরণ রোধে এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রকল্পটি সম্পন্ন করতে এবং এর সুফল স্থায়ী করতে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। প্রকল্পটিতে ১১টি দেশ অংশগ্রহণ করছে: সেনেগাল, মৌরিতানিয়া, মালি, বুর্কিনা ফাসো, নাইজেরিয়া, চাদ, সুদান, ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া, জিবুতি এবং সোমালিয়া। বিভিন্ন ধরণের গাছ লাগানো হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে অ্যাকাসিয়া, বাবুল, নীম এবং ইউক্যালিপটাস। প্রকল্পটি কেবল বনায়ন নয়, বরং কৃষি, পানি ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষার মতো অন্যান্য ক্ষেত্রগুলিতেও মনোযোগ দেয়।[১০৪][১০৫][১০৬]
ক্ষেত্রভিত্তিক সম্ভাব্য পদক্ষেপ
সম্পাদনাএই অধ্যায়ে জলবায়ু পরিবর্তনের দ্বারা প্রভাবিত প্রধান ক্ষেত্র এবং ব্যবস্থাগুলো পর্যালোচনা করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এসব ক্ষেত্রের জন্য ঝুঁকি এবং সেগুলোর সাথে মানিয়ে নেওয়ার পন্থাগুলো মূল্যায়ন করেছেন।[১০৭]:ix
বাস্তুতন্ত্র ও তাদের সেবা
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুতন্ত্রের প্রধান ঝুঁকিগুলো হলো জীববৈচিত্র্য হ্রাস, বাস্তুতন্ত্রের গঠনে পরিবর্তন, গাছপালার মৃত্যু বৃদ্ধি, দাবানল বৃদ্ধি এবং বাস্তুতন্ত্রের কার্বন হ্রাস। এই ঝুঁকিগুলো একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। প্রজাতির ক্ষতি হলে বাস্তুতন্ত্রের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।[৬৪]:২৭৯ বিশ্বের অনেক অংশে দাবানল মানুষের পাশাপাশি বাস্তুতন্ত্রের জন্য ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির কারণ।[৬৪]:২৯০ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দাবানল এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ বৃদ্ধির ফলে সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর আমেরিকায় ব্যাপকভাবে গাছপালার মৃত্যু হয়েছে।[৬৪] :২৮০
সমুদ্র এবং উপকূলীয় এলাকার ঝুঁকির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সামুদ্রিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সম্পর্কিত প্রবাল শৈবালের ক্ষতি। এর ফলে বাস্তুতন্ত্রের গঠনে পরিবর্তন ঘটতে পারে। প্রবাল শৈবাল ক্ষতি ও মৃত্যু নিকটবর্তী উপকূল এবং দ্বীপগুলিতে বন্যার ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের জলের অম্লীকরণ প্রবালপ্রাচীর এবং অন্যান্য বাস্তুতন্ত্র যেমন পাথুরে তীর এবং কেল্পের বনে পরিবর্তন ঘটায়।[১০৮]:১৪২
বাস্তুতন্ত্র বিভিন্নভাবে জলবায়ুসংক্রান্ত ও পরিবেশগত চাপের সাড়া দিতে পারে। পৃথক জীবেরা তাদের বৃদ্ধি, চলাফেরা এবং অন্যান্য বিকাশগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এর সাড়া দেয়। প্রজাতি এবং জনসংখ্যা স্থানান্তরিত হতে পারে বা জিনগতভাবে অভিযোজিত হতে পারে। মানুষের হস্তক্ষেপ বাস্তুতন্ত্রকে আরও স্থিতিস্থাপক করে তুলতে পারে এবং বিভিন্ন প্রজাতিকে অভিযোজিত হতে সাহায্য করতে পারে। এইরকম উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে বিশাল আধা-প্রাকৃতিক আবাসস্থল সুরক্ষিত করা বা বিভিন্ন প্রজাতিকে চলাচলে সাহায্য করার জন্য প্রাকৃতিক ভূমির বিভিন্ন অংশের মধ্যে সংযোগ তৈরি করা।[৬৪]:২৮৩
বাস্তুতন্ত্র-ভিত্তিক অভিযোজন ব্যবস্থা বাস্তুতন্ত্র ও মানুষ উভয়ের জন্যই উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে বন্যার ঝুঁকি কমানো এবং জলের গুণমান উন্নত করার জন্য উপকূলীয় এবং নদী ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার, তাপমাত্রা কমাতে শহরে আরও সবুজ এলাকা তৈরি এবং মারাত্মক দাবানলের ঝুঁকি কমাতে প্রাকৃতিক অগ্নিকান্ডের ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। রোগের প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকি কমানোর অনেক উপায় রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মানুষ, বন্যপ্রাণী এবং খামারের প্রাণীদের আক্রমণকারী রোগজীবাণুগুলির জন্য নজরদারি ব্যবস্থা গড়ে তোলা।[৬৪]:২৮৮,২৯৫
উদ্ভিদ বা প্রাণীর সহায়ক স্থানান্তর
সম্পাদনাসহায়ক স্থানান্তর (Assisted migration) বলতে উদ্ভিদ বা প্রাণীকে একটি ভিন্ন আবাসস্থলে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। গন্তব্যের আবাসস্থলে পূর্বে সেই প্রজাতিটি ছিল বা নাও থাকতে পারে। একমাত্র প্রয়োজন হলো গন্তব্যস্থলটি অবশ্যই সেই প্রজাতির বেঁচে থাকার জন্য উপযুক্ত জৈব-জলবায়ু সংক্রান্ত শর্তাদি সরবরাহ করতে সক্ষম হবে। সহায়ক স্থানান্তরের মাধ্যমে কোনো প্রজাতিকে একটি হুমকিপূর্ণ পরিবেশ থেকে অপসারণ করা হয়। এর লক্ষ্য হল প্রজাতিটিকে একটি এমন পরিবেশে বেঁচে থাকা ও বংশবিস্তারের সুযোগ করে দেওয়া যেখানে তাদের অস্তিত্বের জন্য কোনও বড় ধরনের হুমকি নেই।[১০৯]
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে যে গতিতে অভিযোজন ঘটে তার থেকে অনেক দ্রুত গতিতে পরিবেশের পরিবর্তন ঘটলে সহায়ক স্থানান্তর হতে পারে এর একটি সম্ভাব্য সমাধান।[১১০][১১১] বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতে এই পদ্ধতি প্রাকৃতিকভাবে ছড়িয়ে পড়ার সক্ষমতা কম এমন প্রজাতিগুলোকে সাহায্য করতে পারে। তবে, সহায়ক স্থানান্তরের মাধ্যমে আগে থেকেই সুস্থ বাস্তুতন্ত্রে আক্রমণাত্মক প্রজাতি ও রোগের সংক্রমণের সম্ভাবনা নিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।[১১২] এসব বিতর্ক সত্ত্বেও, বিজ্ঞানী এবং ভূমি ব্যবস্থাপকরা ইতিমধ্যেই নির্দিষ্ট কিছু প্রজাতির জন্য সহায়ক স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। প্রজাপতিদের জলবায়ুগত অভিযোজন ক্ষমতা নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে।[৬৪]
স্বাস্থ্য
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছে প্রচন্ড শৈত্যপ্রবাহ, ঝড়, বা দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ তাপমাত্রার মতো চরম আবহাওয়ার ঘটনা থেকে সরাসরি ঝুঁকি। এর পাশাপাশি রয়েছে পরোক্ষ ঝুঁকি, যার মধ্যে চরম আবহাওয়ার কারণে অপুষ্টি বা বাস্তুচ্যুতির ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব অন্তর্ভুক্ত হয়।[৬৩]:১০৭৬ একইভাবে, সবুজ এলাকায় যাতায়াতের সুযোগ হারানো, বায়ুর মান হ্রাস, বা জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে উদ্বেগ থেকেও মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।[৬৩]:১০৭৬,১০৭৮ এর সাথে রয়েছে সংক্রামক রোগের সংক্রমণের শর্ত পরিবর্তন থেকে আসা আরও ঝুঁকি। ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু বিশেষভাবে জলবায়ু-সংবেদনশীল রোগ।[৬৩]:১০৬২
নতুন বা বাড়তি সংক্রামক রোগের ঝুঁকির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি উপায় আছে। এর মধ্যে রয়েছে বাসস্থানের উন্নতির মাধ্যমে ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ, WASH পরিষেবার মাধ্যমে উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা, পোকামাকড় নিধনের মশারি এবং বাড়ির দেয়াল ও আসবাবপত্রে স্প্রে ব্যবহার করা। খাদ্যবাহিত রোগের ক্ষেত্রে এটির মধ্যে রয়েছে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং সংরক্ষণের উন্নতি।[৬৩]:১১০৭
তাপমাত্রার ক্ষেত্রে অভিযোজনের বিকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে এয়ার কন্ডিশনিং-এর সুযোগ বৃদ্ধি এবং তাপপ্রবাহের জন্য প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা সহ তাপ কর্ম পরিকল্পনা (heat action plan) প্রতিষ্ঠা করা। অন্যান্য বিকল্পগুলি হল প্যাসিভ কুলিং সিস্টেম যার মধ্যে ছায়া এবং বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত। এগুলি উন্নত ভবন নির্মাণ, শহর নকশা এবং পরিকল্পনা, সবুজ অবকাঠামো (green infrastructure) বা সর্বসাধারণের জন্য শীতলীকরণ কেন্দ্রের অংশ হতে পারে।[৬৩]:১১০৮–১১০৯
মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব মোকাবেলায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবার তহবিল ও সুযোগ বৃদ্ধি; জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা এবং দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলায় মানসিক স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্ত করা; এবং দুর্যোগ-পরবর্তী সহায়তা উন্নত করা অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।[৬৩]:১১১২ স্বাস্থ্যকর প্রাকৃতিক জায়গার নকশা, শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মতো ব্যাপক কর্মকাণ্ড থেকেও মানসিক স্বাস্থ্য উপকৃত হয়। এছাড়া এর সাথে খাদ্য নিরাপত্তা এবং পুষ্টিও ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
শহর
সম্পাদনাতাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং তাপপ্রবাহ শহরগুলির জন্য প্রধান ঝুঁকি। উষ্ণতর তাপমাত্রার সাথে আরবান হিট আইল্যান্ড এফেক্ট (Urban Heat Island Effect) আরও খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন শহরগুলিতে মানুষের স্বাস্থ্য এবং উৎপাদনশীলতার ঝুঁকিকে প্রভাবিত করবে।[৫২]:৯৯৩ শহরাঞ্চলে বন্যা আরেকটি প্রধান ঝুঁকি। উপকূলীয় বসতিগুলিতে বন্যার ঝুঁকি সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং ঝড়ের তীব্রতার কারণে আরও বাড়ছে। কমে যাওয়া পানির প্রাপ্যতা থেকে আরও ঝুঁকি দেখা দেয়। ক্রমবর্ধমান বসতিগুলির চাহিদা পূরণ করার জন্য যখন পানির সরবরাহ যথেষ্ট না হয়, তখন শহরবাসীরা পানির অনিশ্চয়তা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের মুখে পড়ে। বিশেষ করে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার সময় এটি আরও বেশি দেখা যায়। এইসব প্রধান ঝুঁকি শহর থেকে শহরে, এবং একই শহরে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যেও অনেক পার্থক্য থাকে।[৫২]:৯৯৩
শহরের জন্য অভিযোজন বিকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, বাড়ির ভিতরে এবং বাইরে নগর নিষ্কাশন প্রকল্পসমূহ। অন্যান্য উদাহরণগুলি হল প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান যেমন বায়োসোয়েলস (bioswales) বা উদ্ভিজ্জ অবকাঠামো (vegetated infrastructure), এবং উপকূলীয় অঞ্চলে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের সংস্কার এবং/অথবা সুরক্ষা। উদ্ভিজ্জ অঞ্চল, সবুজ জায়গা, জলাভূমি এবং অন্যান্য সবুজ অবকাঠামো তাপজনিত ঝুঁকিও কমাতে পারে। এয়ার কন্ডিশনিং, উচ্চ প্রতিফলনক্ষম উপাদান যুক্ত ‘কুল রুফ’ অথবা ‘সোলার চিমনি’ এর মত ভবনের নকশাগুলিও সাহায্য করতে পারে। বিল্ডিং কোড এর আইন প্রণয়ন, আঞ্চলিক ব্যবস্থা এবং ভূমি ব্যবহারের দিকনির্দেশনা প্রভৃতি কিছু প্রাতিষ্ঠানিক অভিযোজন শহরগুলির জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।[৫২]:৯৫২
অনেক শহরে নগর-ব্যাপী অভিযোজন কৌশল বা পরিকল্পনা রয়েছে যা সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, বেসামরিক কর্তৃপক্ষ এবং অবকাঠামোগত পরিষেবাগুলিকে একীভূত করে। এ ধরনের পদক্ষেপগুলি স্থানীয় সম্প্রদায়, জাতীয় সরকার, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি ও তৃতীয় খাতের সাথে অংশীদারিত্বে বাস্তবায়িত হলে আরও কার্যকর হয়।[৫২]:৯৯৪
পানি
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তন সারা বিশ্বব্যাপী ভূ-ভাগের বিভিন্ন এলাকায় পানির সামগ্রিক এবং মৌসুমী প্রাপ্যতাকে প্রভাবিত করছে। জলবায়ু পরিবর্তন বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনশীলতা বৃদ্ধি করতে পারে বলে অভিক্ষিপ্ত হয়েছে। এর ফলে পানির গুণমান এবং পরিমাণ দুটিই প্রভাবিত হবে। বন্যা দূষিত পদার্থকে জলাশয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে এবং পানির অবকাঠামোর ক্ষতি করতে পারে। অনেক জায়গায়, বিশেষ করে ক্রান্তীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলে, দীর্ঘস্থায়ী শুষ্ক মৌসুম এবং অনাবৃষ্টি হচ্ছে, কখনও কখনও টানা কয়েক বছর ধরে। এগুলো শুষ্ক মাটি, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর হ্রাস, এবং নদীর প্রবাহ হ্রাস বা পরিবর্তনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে বাস্তুতন্ত্র এবং পানি-নির্ভর অর্থনৈতিক ক্ষেত্রসমূহে ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।[১১৩]:৬৬০ পানির প্রাপ্যতার এই পরিবর্তনগুলোর দ্বারা কৃষিজমির উৎপাদন প্রভাবিত হতে পারে, যা খাদ্য নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়। কৃষিতে সেচ প্রায়শই ভূগর্ভস্থ পানির স্তর হ্রাস এবং পানিচক্রের পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। তা মাঝে মাঝে খরা আরও খারাপ করে তুলতে পারে।[১১৪]:১১৫৭
কৃষিতে কিছু জনপ্রিয় অভিযোজন-ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে কম পানি-নির্ভর ফসল বা খরা এবং বন্যারোধী জাত বেছে নেওয়া। এগুলির মধ্যে বর্ষাকালের শুরুর সাথে সাথে বপন এবং ফসল কাটার সময়ে পরিবর্তন আনা অন্তর্ভুক্ত। পানি বাঁচানোর জন্য অন্যান্য প্রযুক্তিগত বিকল্পও রয়েছে।[১১৩]:৫৮৪ পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শীতলীকরণ এবং খনি শিল্পের মতো অন্যান্য শিল্পেও পানি ব্যবহার হয়। জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নকশা এবং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার অভিযোজন যাতে কম পানি দিয়ে চালানো যায়, অথবা অন্যান্য পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎসের সাথে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনা কার্যকরী সমাধান।[১১৩]:৬২৬
জীবিকা ও সম্প্রদায়
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তন জীবিকা এবং জীবনযাত্রার উপর উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাব ফেলে। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদ ও বাস্তুতন্ত্র, জমিজমা এবং অন্যান্য সম্পদের প্রাপ্যতা। জল ও স্যানিটেশন, বিদ্যুৎ, সড়ক, টেলিযোগাযোগের মতো মৌলিক অবকাঠামো পরিষেবার প্রাপ্যতা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা বিভিন্ন সম্প্রদায় ও জীবিকার আরেকটি দিক।[১১৫]:১১১৯
জীবিকা-সম্পর্কিত সবচেয়ে বড় ঝুঁকিগুলি কৃষিজমির উৎপাদন ক্ষতি, মানবস্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তার উপর বিরূপ প্রভাব, বাড়িঘরের ধ্বংস এবং আয়ের ক্ষতি থেকে আসে। জীবিকার উপর নির্ভরশীল মাছ এবং গবাদি পশুদের জন্যও ঝুঁকি রয়েছে।[১১৫] :১১৭৮ কিছু সম্প্রদায় এবং জীবিকা অপরিবর্তনীয় ক্ষতি ও উন্নয়ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়, পাশাপাশি আরও জটিল দুর্যোগের ঝুঁকিতেও পড়ে যায়।[১১৫]:১২১৪
জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতি সবচেয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য সবচেয়ে মারাত্মক। এরা তাপমাত্রার চরম অবস্থা এবং খরার মতো বিপদের ঝুঁকিতে বেশি থাকে। তাদের সাধারণত কম সম্পদ এবং অর্থায়নের সুযোগ কম থাকে, সহায়তা ও রাজনৈতিক প্রভাবও তাদের থাকে কম। বৈষম্য, লিঙ্গ বৈষম্য, জলবায়ু সংক্রান্ত বিপদের প্রভাব মোকাবেলার সম্পদে প্রবেশাধিকারে ঘাটতির কারণে আরও নানা ধরণের অসুবিধা তৈরি হয়। এতে প্রতিবন্ধী মানুষ বা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীও অন্তর্ভুক্ত।[১১৫]:১২৫১
পরিবার ও সম্প্রদায়সমূহের জীবিকা অর্জনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ অভিযোজন প্রতিক্রিয়াগুলি প্রকৌশল ও প্রযুক্তিগত সমাধান। এর মধ্যে রয়েছে কোনো একটি নির্দিষ্ট ভূমি ব্যবহারকে সুরক্ষিত রাখার জন্য প্রথাগত অবকাঠামো, জলবিভাজিকা সংস্কারের মতো বাস্তুতন্ত্রভিত্তিক পন্থা বা জলবায়ু-সহিষ্ণু কৃষি প্রযুক্তি। অভিযোজনের জন্য বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন। এছাড়া দরকার এমন প্রতিষ্ঠানের, যেখানে সবচেয়ে দরিদ্র সম্প্রদায়সহ সব সম্প্রদায়ের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করা হয়।[১১৫]:১২৫৩
আন্তর্জাতিক প্রভাব এবং ধারাবাহিক ঝুঁকি
সম্পাদনাআন্তর্জাতিক জলবায়ু ঝুঁকি হল এমন জলবায়ু ঝুঁকি যা জাতীয় সীমানা অতিক্রম করে। কখনও কখনও একটি দেশ বা অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব অন্য দেশের মানুষের জন্য আরও খারাপ পরিণতির সৃষ্টি করতে পারে। ঝুঁকি একটি দেশ থেকে একটি প্রতিবেশী দেশে বা একটি দেশ থেকে দূরবর্তী অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়া, ঝুঁকি পরপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং একাধিক সীমানা ও খাত জুড়ে তা প্রভাব ফেলতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, ২০১১ সালে থাইল্যান্ডের বন্যার একটি প্রভাব হল জাপান, ইউরোপ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোটরগাড়ি খাত ও ইলেকট্রনিক্স শিল্পকে প্রভাবিত করে এমন উৎপাদন সরবরাহ শৃঙ্খলে বিঘ্ন ঘটানো।[২]:২৪৪১–২৪৪৪[১১৬]
এইসব ঝুঁকি মোকাবেলায় অভিযোজনের বিকল্পগুলি ততটা উন্নত নয়। এগুলির মধ্যে রয়েছে মূল দেশে স্থিতিস্থাপক অবকাঠামো তৈরি করা, গ্রহণকারী দেশে আরও বাফার তৈরির জন্য স্টোরেজ সুবিধা বৃদ্ধি করা, অথবা বাণিজ্য বৈচিত্র্যকরণ এবং পুনঃরাউটিং করা।[২]:২৪৪১–২৪৪৪
খরচ ও অর্থায়ন
সম্পাদনাআর্থিক খরচ
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার আর্থিক খরচ নির্ভর করবে জলবায়ু কতটা পরিবর্তিত হয় তার উপর। তাপমাত্রার উচ্চতর মাত্রার কারণে খরচও অনেক বেশি হবে। বিশ্বব্যাপী, পরবর্তী কয়েক দশক ধরে অভিযোজনের খরচ সম্ভবত বছরে কয়েক হাজার কোটি ডলার হবে। আইপিসিসি-এর সাম্প্রতিকতম সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে যে ২০৩০ সাল পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় অভিযোজনের খরচ বছরে ১৫ থেকে ৪১১ বিলিয়ন ডলার হবে। বেশিরভাগ অনুমান ১০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।[১১৭]:Cross-Chapter Box FINANCE যেহেতু এই খরচগুলি উপলব্ধ অর্থের তুলনায় অনেক বেশি, তাই এখানে রয়েছে একটি অভিযোজনের ব্যবধান (adaptation gap)।[১১৭]:SPM C১.২ এটি বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে জরুরি। এই ব্যবধান বাড়ছে[১১৭]:ch ১৭[১১৮] এবং অভিযোজনে একটি প্রধান বাধা তৈরি করছে।[১১৯] এই ব্যবধান বাড়ার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে কারণ বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংক্রান্ত অর্থায়নের বিপুল অংশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় (mitigation) ব্যয় হয়। অভিযোজনে (adaptation) খুব কম অংশই ব্যয় হয়।[৬২]
আরও আঞ্চলিক অনুমানও পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের অর্থনীতি সম্পর্কিত একগুচ্ছ গবেষণা রয়েছে।[১২০] এই গবেষণাগুলি অভিযোজন এবং মিটিগেশন ব্যবস্থা উভয়েরই খরচ বিশ্লেষণ প্রদান করে। WEAP (জল মূল্যায়ন ও পরিকল্পনা ব্যবস্থা) জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং অভিযোজন মূল্যায়নের ক্ষেত্রে জল সম্পদ গবেষক এবং পরিকল্পনাবিদদের সহায়তা করে। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন পোর্টালে আফ্রিকা, ইউরোপ ও মধ্য এশিয়া এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনের উপর গবেষণা সন্নিবেশিত আছে।[১২১]
খরচ-সুবিধা বিশ্লেষণ
সম্পাদনা২০০৭ সাল পর্যন্ত, অভিযোজনের জন্য ব্যাপক, বিশ্বব্যাপী খরচ এবং সুবিধা অনুমানের অভাব ছিল।[১২২]:৭১৯ তখন থেকে, একটি ব্যাপক গবেষণা সাহিত্য তৈরি হয়েছে। গবেষণাগুলি সাধারণত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে অভিযোজন বা একটি খাতের মধ্যে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপটে অনেক অভিযোজন বিকল্পের জন্য, বিনিয়োগ এড়ানো ক্ষতির চেয়ে কম হবে। তবে বৈশ্বিক অনুমানে উল্লেখযোগ্য অনিশ্চয়তা রয়েছে।[১২৩]:ch ১৫[১১৭]:Cross-Chapter Box FINANCE
- অভিযোজনের খরচ: অভিযোজনের খরচ বিভিন্ন বিষয়ের উপর নির্ভর করে, যার মধ্যে রয়েছে অভিযোজনের ব্যবস্থা, দেশের আয়ের স্তর এবং জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্রতা।
- অভিযোজনের সুবিধা: অভিযোজনের সুবিধাগুলির মধ্যে রয়েছে জীবন ও জীবিকা রক্ষা, সম্পত্তির ক্ষতি হ্রাস এবং অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রতিরোধ।
- অনিশ্চয়তা: অভিযোজনের খরচ এবং সুবিধা উভয়ের জন্য উল্লেখযোগ্য অনিশ্চয়তা রয়েছে। এটি ভবিষ্যতের জলবায়ু পরিবর্তনের অনিশ্চয়তা এবং অভিযোজনের ব্যবস্থার কার্যকারিতা সম্পর্কে জ্ঞানের অভাবের কারণে।
অভিযোজনের খরচ এবং সুবিধা বিশ্লেষণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের নির্দিষ্ট প্রেক্ষাপটে খরচ এবং সুবিধাগুলির সাবধানে বিবেচনা করা উচিত।
আন্তর্জাতিক অর্থায়ন
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন (UNFCCC) এর অন্তর্গত একটি আর্থিক প্রক্রিয়া রয়েছে যা উন্নয়নশীল দেশগুলিকে অভিযোজনের কাজে সহায়তা করে।[১২৪] কনভেনশনের অনুচ্ছেদ ১১-তে এটির উল্লেখ আছে। ২০০৯ সাল পর্যন্ত, UNFCCC আর্থিক প্রক্রিয়ার অধীনে তিনটি তহবিল ছিল। গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (GEF) স্পেশাল ক্লাইমেট চেঞ্জ ফান্ড (SCCF)[১২৫] এবং লীস্ট ডেভেলপড কান্ট্রিজ ফান্ড (LDCF) পরিচালনা করে।[১২৬] অ্যাডাপটেশন ফান্ড ২০০৯ এবং ২০১০ সালে COP15 এবং COP16-এর সময় আলোচনার ফলাফল। এর নিজস্ব সচিবালয় রয়েছে। প্রাথমিকভাবে, যখন কিয়োটো প্রোটোকল কার্যকর ছিল, তখন অ্যাডাপ্টেশন ফান্ড ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজম (CDM)-এর উপর একটি ২% লেবি দ্বারা অর্থায়ন করা হত।
২০০৯ সালের কোপেনহেগেন সম্মেলনে, জাতিসংঘ ২০২০ সালের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা এবং অভিযোজনের জন্য প্রতি বছর উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রেরণের লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিল।[১২৭] গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড ২০১০ সালে এই জলবায়ু অর্থায়ন সংগ্রহের একটি চ্যানেল হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের প্যারিস সম্মেলন COP21 এ স্পষ্ট করা হয়েছিল যে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন (mitigation) এবং অভিযোজনের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণভাবে বিভক্ত করা উচিত। ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত প্রতি বছর প্রতিশ্রুত ১০০ বিলিয়ন ডলার সম্পূর্ণভাবে বিতরণ করা হয়নি। বেশিরভাগ উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থায়ন এখনও জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন এর দিকে লক্ষ্য করা হয়েছিল। ২০২০ সালে প্রদত্ত পাবলিক অর্থায়নের মাত্র ২১% অভিযোজনে গ্রহণ করা হয়েছে।[১২৮][১২৯][১৩০]
বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংক থেকে বৈশ্বিক অভিযোজন অর্থায়ন ২০২১ সালে ১৯ বিলিয়ন ইউরো ছাড়িয়ে গেছে। এটি অভিযোজনের অর্থায়নে একটি ঊর্ধ্বগতি প্রবণতাকে নির্দেশ করে।[১৩১][১৩২] বহুপাক্ষিক ব্যাংক সমূহ COP27 এ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে একটি যৌথ ঘোষণায় অভিযোজন অর্থায়ন বৃদ্ধি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।[১৩৩] এটি বিশেষভাবে স্বল্প-আয়ের দেশ, ছোট দ্বীপরাষ্ট্র এবং বিপন্ন মানুষদের লক্ষ্য করে। ইউরোপীয় ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক বলেছে যে এটি জলবায়ু অভিযোজনের উপর কেন্দ্রীভূত প্রকল্পগুলির জন্য তার অবদান ৭৫% পর্যন্ত বাড়াবে।[১৩১][১৩৪] এতে অংশগ্রহণ করা প্রজেক্টে ব্যাংক সাধারণত ৫০% পর্যন্ত অবদান রাখে।
এছাড়াও ২০২২ সালে, অনেক জাতি অভিযোজন অপর্যাপ্ত হওয়া বা খুব দেরিতে আসবার ফলে যেসব ক্ষতি ও ঝুঁকি এড়ানো, কমানো বা মোকাবেলা করার জন্য সম্প্রদায়গুলিকে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি লস এন্ড ড্যামেজ ফান্ড (loss and damage fund) স্থাপনের প্রস্তাবে একমত হয়েছে।[১৩৫]:৬৩
অতিরিক্ত কার্যকারিতা (Additionality)
সম্পাদনাআন্তর্জাতিক অভিযোজন অর্থায়নের একটি মূল বৈশিষ্ট্য হল অতিরিক্ত কার্যকারিতার (additionality) ধারণা। এটি অভিযোজন অর্থায়ন এবং উন্নয়ন সহায়তার অন্যান্য স্তরের মধ্যে সংযোগকে চিত্রিত করে।[১৩৬] অনেক উন্নত দেশ ইতোমধ্যেই উন্নয়নশীল দেশগুলিকে আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রদান করে। এটি দারিদ্র্য, অপুষ্টি, খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা, পানীয় জলের প্রাপ্যতা, ঋণগ্রস্ততা, নিরক্ষরতা, বেকারত্ব, স্থানীয় সম্পদ সংকট এবং নিম্ন প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এর মতো সমস্যাগুলিকে নিরসনের লক্ষ্যে সম্বোধন করে।[১৩৭] জলবায়ু পরিবর্তন এই সমস্যাগুলির কিছু সমাধানের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করতে পারে বা একেবারে থামিয়ে দিতে পারে, এবং নতুন নতুন সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। অতিরিক্ত কার্যকারিতা বলতে বোঝায় বিদ্যমান সাহায্যের পরিবর্তন এড়ানোর জন্য অভিযোজনের অতিরিক্ত খরচ।
অতিরিক্ত কার্যকারিতার চারটি প্রধান সংজ্ঞা হল:[১৩৬]
১. জলবায়ু অর্থায়নে সহায়তারূপে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে, তবে মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোলসের অতিরিক্ত;
২. পূর্ববর্তী বছরের জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ব্যয়কৃত অফিশিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্স (ODA) বৃদ্ধি;
৩. উদীয়মান ODA স্তর যাতে জলবায়ু পরিবর্তন অর্থায়ন অন্তর্ভুক্ত হয় কিন্তু যেখানে এটি একটি নির্দিষ্ট শতাংশে সীমিত; এবং
৪. জলবায়ু অর্থায়ন বৃদ্ধি যা ODA- এর সাথে সংযুক্ত নয়।
অতিরিক্ত কার্যকারিতার একটি সমালোচনা হল যে এটি স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখতে উৎসাহিত করে। এর কারণ হল এটি জলবায়ু পরিবর্তনের ভবিষ্যতের ঝুঁকি বিবেচনা করে না। কিছু সংগঠন দারিদ্র্য হ্রাস কর্মসূচিতে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার কথা বলে থাকেন।[১৩৮]
২০১০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে, ডেনমার্ক তার বৈশ্বিক উষ্ণায়ন অভিযোজন সহায়তা জিডিপির ০.০৯% থেকে ০.১২% এ উন্নীত করেছে, যা এক তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি। কিন্তু এতে অতিরিক্ত তহবিল জড়িত ছিল না। পরিবর্তে, এই সহায়তা অন্যান্য বিদেশী সহায়তা তহবিল থেকে নেওয়া হয়েছিল। পলিটিকেন পত্রিকা লিখেছে: "সবচেয়ে দরিদ্রদের কাছ থেকে জলবায়ু সহায়তা নেওয়া হয়।"[১৩৯]
প্রতিবন্ধকতা
সম্পাদনাসময়ের ভিন্নতা
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তনের দিকে তাকিয়ে আগে থেকে অভিযোজন সম্ভব। আবার কখনও জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিক্রিয়া হিসেবে অভিযোজন করতে হয়।[১৪০] উদাহরণ স্বরূপ, ইউরোপীয় আল্পস পর্বতমালায় কৃত্রিম তুষার তৈরি করা বর্তমান জলবায়ু প্রবণতার প্রতিক্রিয়া। কানাডায় কনফেডারেশন ব্রিজ উঁচু জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে যাতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ভবিষ্যতে ব্রিজের তল দিয়ে জাহাজ চলাচলে কোন অসুবিধা না হয়।[১৪১]
কার্যকরী অভিযোজন নীতি প্রয়োগ করা কঠিন হতে পারে কারণ স্বল্পমেয়াদী পরিবর্তন ঘটাতেই নীতিনির্ধারকরা বেশি সফলতা পান, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় ততটা নয়।[১৪২] যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলি সাধারণত স্বল্প সময়ের মধ্যে দৃশ্যমান হয়না, সেজন্য নীতিনির্ধারকদের কাজ করার প্রেরণাও কম থাকে। তাছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী ঘটছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া এবং এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এর জন্য একটি বৈশ্বিক কাঠামোর প্রয়োজন।[১৪৩] জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে অভিযোজন এবং প্রশমন নীতিগুলির বিশাল অংশ স্থানীয় পর্যায়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর কারণ বিভিন্ন অঞ্চলের অভিযোজনের পদ্ধতি আলাদা আলাদা হতে হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নীতি প্রণয়ন করা প্রায়শই বেশি চ্যালেঞ্জিং।[১৪৪]
ভুল অভিযোজন (Maladaptation)
সম্পাদনাঅধিকাংশ সময় জলবায়ু পরিবর্তনের স্বল্পমেয়াদী প্রভাবের প্রতিক্রিয়ায় অভিযোজন ঘটে। তবে এই পদ্ধতি দীর্ঘমেয়াদী জলবায়ু প্রবণতার সাথে মিল নাও থাকতে পারে, ফলে তা ভুল অভিযোজন ঘটাতে পারে (maladaptation)। কিছু সময় ধরে নদীর স্রোত বৃদ্ধির কারণে মিশরে পশ্চিম সিনাই মরুভূমিতে সেচের সম্প্রসারণ একটি ভুল অভিযোজন, বিশেষ করে যখন সেই অঞ্চলের দীর্ঘমেয়াদী আবহাওয়া পূর্বাভাস শুষ্কতার দিকে ইঙ্গিত দেয়।[১৪৫] কোনো একটি স্কেল বা পরিসরে করা একটি অভিযোজন অন্য কোনো স্কেলে প্রভাব ফেলতে পারে। তা সেখানে মানুষ বা সংস্থার অভিযোজনের ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। যখন অভিযোজনের ব্যয় এবং সুবিধার বিস্তৃত মূল্যায়নের উপর ছোট পরিসরে পর্যালোচনা করা হয় তখন প্রায়শই এমনটি ঘটে। একটি অভিযোজন কয়েকজন মানুষের জন্য উপকারী হতে পারে, তবে অন্যদের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।[১৪০] স্থানীয় মানুষের অভিযোজন ক্ষমতা বাড়াতে উন্নয়নের হস্তক্ষেপ সাধারণত তাদের ক্ষমতায়ন বা স্বাধীনতা (agency) বৃদ্ধি করতে পারে না।[১৪৬] তবে যেহেতু স্বাধীনতা অভিযোজন ক্ষমতার অন্যান্য সমস্ত দিকের একটি কেন্দ্রীয় বিষয়, পরিকল্পনাকারীদের এই ফ্যাক্টরের উপর আরও মনোযোগ দেওয়া উচিত।
অভিযোজনের সীমাবদ্ধতা
সম্পাদনামানুষ সর্বদা জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে সচেষ্ট থেকেছে। কিছু সম্প্রদায়গত প্রতিরোধ কৌশল ইতিমধ্যেই আছে। এর মধ্যে রয়েছে বপনের সময় পরিবর্তন করা বা নতুন জল সংরক্ষণ কৌশল অবলম্বন করা।[১৪৫] ঐতিহ্যগত জ্ঞান এবং প্রতিরোধের কৌশলগুলি বজায় রাখা এবং শক্তিশালী করা আবশ্যক। তা না হলে পরিবেশ সম্পর্কে স্থানীয় জ্ঞান হারিয়ে যাওয়ায় অভিযোজন ক্ষমতা দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এইসব স্থানীয় কৌশলগুলিকে শক্তিশালী করা এবং সেই ভিত্তিতে উন্নয়ন কাজ এটিকে গ্রহণের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি করে। এটি সেই প্রক্রিয়ায় আরও সম্প্রদায়ের মালিকানা এবং জড়িত হওয়া সৃষ্টি করে।[১৪১] অনেক ক্ষেত্রে নতুন অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে এগুলি পর্যাপ্ত হবে না। হয়ত সেগুলি আগের অভিজ্ঞতার বাইরে হতে পারে, এবং নতুন কৌশলের প্রয়োজন হবে।[২৭]
জলবায়ু পরিবর্তনের দুর্বলতা এবং ঝুঁকি বাড়ার সাথে সাথে ক্রমবর্ধমান অভিযোজন পর্যাপ্ত না হয়ে যাচ্ছে। এটি অনেক বড় এবং ব্যয়বহুল রূপান্তরকারী অভিযোজনের প্রয়োজন তৈরি করে।[১৪৭] বর্তমান উন্নয়নের প্রচেষ্টা ক্রমবর্ধমানভাবে সম্প্রদায়-ভিত্তিক জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজনের উপর ফোকাস করছে। তারা অভিযোজন কৌশলগুলির স্থানীয় জ্ঞান, অংশগ্রহণ এবং মালিকানা বাড়ানোর চেষ্টা করে।[১৪৮]
২০২২ সালে IPCC-এর ষষ্ঠ মূল্যায়ন প্রতিবেদন অভিযোজন সীমার উপর যথেষ্ট জোর দিয়েছে।[৭]:২৬ এটি সফট এবং হার্ড অভিযোজন সীমাগুলির মধ্যে একটি পার্থক্য করে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে অস্ট্রেলিয়া, ছোট দ্বীপ, আমেরিকা, আফ্রিকা এবং ইউরোপের মানব ব্যবস্থাগুলিসহ কিছু মানব ও প্রাকৃতিক ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই "সফট অভিযোজন সীমায়" পৌঁছে গেছে। এমনকি কিছু প্রাকৃতিক ব্যবস্থা "হার্ড অভিযোজন সীমায়" পৌঁছে গেছে যেমন - প্রবালপ্রাচীর, জলাভূমি, রেইনফরেস্ট, মেরু ও পর্বত অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র এর কিছু অংশ। যদি তাপমাত্রার উত্থান ১.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসে (২.৭ ফারেনহাইট) পৌঁছায়, অতিরিক্ত বাস্তুতন্ত্র এবং মানবসমাজ কঠিন অভিযোজনের সীমায় পৌঁছে যাবে। এর মধ্যে রয়েছে সেসব অঞ্চল যেসব অঞ্চল হিমবাহ এবং বরফ পানির উপর নির্ভরশীল, এবং ছোট দ্বীপগুলিও। ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস (৩.৬ ফারেনহাইট) তাপমাত্রা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে, অনেক অঞ্চলে অনেক প্রধান ফসলের ক্ষেত্রে সফট সীমায় পৌঁছে যাবে। কিন্তু ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস (৫.৪ ফারেনহাইট) তাপমাত্রা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ইউরোপের অংশ বিশেষ কঠিন সীমায় পৌঁছে যাবে।[৭]:২৬
অভিযোজনে বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তন রোধের তুলনায় জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া (অভিযোজন) বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসেবে আরো বেশি জটিল। প্রধানত এর কারণ প্রকল্পসমূহে বিনিয়োগের উপর আকর্ষণীয় লভ্যাংশ বা সুনির্দিষ্ট আয় না থাকা, যার ফলে একটি ভালো ব্যবসায়িক কেস তৈরি হয় না। বেসরকারী খাতের বিনিয়োগে বেশ কিছু নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ রয়েছে:[১৪৯][১৫০]
- অভিযোজন প্রায়শই বাজারের বাইরের খাত বা জনসাধারণের উপকারের জন্য জনস্বার্থ নির্ভর (public goods) প্রকল্পে প্রয়োজন হয়। সুতরাং এখানে বেসরকারি খাতের আগ্রহী করে তোলা যায় এমন প্রকল্পসমূহের অভাব রয়েছে।
- স্বল্পমেয়াদে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের সময় এবং মাঝারি বা দীর্ঘমেয়াদে যে উপকার পাওয়া যেতে পারে তার মধ্যে একটি অমিল রয়েছে। স্বল্পমেয়াদী রিটার্নের তুলনায় ভবিষ্যতের রিটার্ন বিনিয়োগকারীদের কাছে কম আকর্ষণীয়।
- বিনিয়োগের সুযোগ সম্পর্কে তথ্যের অভাব রয়েছে। বিশেষ করে ভবিষ্যতের প্রভাব এবং সুবিধাগুলির সাথে যুক্ত অনিশ্চয়তা রয়েছে। যখন দীর্ঘ সময়ে রিটার্ন জমা হয় তখন এগুলি মূল বিবেচনার বিষয়।
- অভিযোজন প্রকল্পসমূহ ডিজাইন করার এবং আইনি, অর্থনৈতিক ও নিয়ন্ত্রক কাঠামোর আর্থিক প্রভাবগুলি বোঝার জন্য মানবসম্পদ এবং দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে।
তবে এই জায়গাটিতে উল্লেখযোগ্য উদ্ভাবন হচ্ছে। অভিযোজন সংক্রান্ত অর্থায়নের ব্যবধান পূরণে এই উদ্ভাবনসমূহ বেসরকারী খাতকে আরও বড় ভূমিকা রাখতে সহায়তা করছে।[৬] অর্থনীতিবিদরা বলেন যে জলবায়ু অভিযোজন উদ্যোগগুলি ব্যবসায়িক বিনিয়োগের জন্য জরুরী অগ্রাধিকার হওয়া উচিত।[১৫১][১৫২]
প্রশমন (Mitigation) এর সাথে আপস (Trade-offs)
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রশমন (Mitigation) এবং অভিযোজন (Adaptation) দুটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল। প্রশমন বলতে বোঝায় গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যেমন নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার বৃদ্ধি, জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমানো এবং বনায়ন। অভিযোজন বলতে বোঝায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যেমন সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে উপকূলীয় এলাকাকে রক্ষা করা, খরা-প্রতিরোধী ফসল উৎপাদন করা এবং তীব্র আবহাওয়ার ঘটনার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া।[১৫৩]
কিছু ক্ষেত্রে, প্রশমন এবং অভিযোজনের মধ্যে আপস (Trade-offs) হতে পারে। এর মানে হল যে একটি কৌশল গ্রহণ করলে অন্য কৌশলটির কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ:
- ঘন শহুরে উন্নয়ন (Compact urban development) পরিবহন এবং ভবন থেকে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন (Greenhouse gas emissions) কমাতে পারে। অন্যদিকে, এটি শহুরে তাপ দ্বীপ (Urban heat island) প্রভাব বৃদ্ধি করতে পারে, যার ফলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং মানুষের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়, যা অভিযোজনকে আরও চ্যালেঞ্জিং করে তোলে।
- বায়ু বিদ্যুৎ (Wind power) ব্যবহার বৃদ্ধি জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমাতে পারে এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে পারে। অন্যদিকে, বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি পাখির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
- জৈব জ্বালানি (Biofuels) ব্যবহার জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমাতে পারে। অন্যদিকে, জৈব জ্বালানি উৎপাদনের জন্য বন উজাড় করা হলে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন বৃদ্ধি পেতে পারে এবং জীববৈচিত্র্য হ্রাস পেতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে কার্যকর কৌশল তৈরি করার জন্য প্রশমন এবং অভিযোজনের মধ্যে সম্ভাব্য আপসগুলি বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। নীতিনির্ধারকদের উচিত এমন নীতি তৈরি করা উচিত যা দুটি কৌশলকে সমন্বিত করে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সর্বোচ্চ সুবিধা প্রদান করে।
পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের মনিটরিং (পর্যবেক্ষণ)
সম্পাদনাজলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনার লক্ষ্য নেতিবাচক প্রভাবের ঝুঁকির মাত্রা ব্যবস্থাপনা করা। অভিযোজন পরিকল্পনা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার (risk management) মতো। এটি সিদ্ধান্তের একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ের বদলে মূল্যায়ন, কর্মপরিকল্পনা, শিক্ষা এবং সংশোধনের একটি চলমান প্রক্রিয়া। এভাবে অভিযোজনের বিষয়টি পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন - উভয়ের সাথেই নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত।[৮]:১৩৩
অভিযোজন পরিকল্পনা একটি কার্যকলাপ। কিন্তু এটি একটি নির্দিষ্ট ধরণের অভিযোজনের সাথেও যুক্ত। পরিকল্পিত অভিযোজনকে কখনও কখনও স্বতঃস্ফূর্ত (autonomous) অভিযোজন থেকে আলাদা করা হয়।[১]
অভিযোজন পরিকল্পনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা হলো মূলস্রোতায়ন (mainstreaming)। মূলস্রোতায়নের অর্থ হল জলবায়ু পরিবর্তনের কথা বিদ্যমান কৌশল, নীতি বা পরিকল্পনায় যুক্ত করা। আলাদা আলাদা জলবায়ু অভিযোজন কার্যক্রম তৈরি করার চেয়ে এটি আরও কার্যকর হতে পারে এবং সাফল্য পাওয়ার সম্ভাবনাও বেশি।[৬]:১৫[৮]:২৮ এটি আরও টেকসইও হতে পারে। এর জন্য নীতিনির্ধারকদের মানসিকতা এবং অনুশীলন পরিবর্তন করা জড়িত, যাতে নতুন বিষয়গুলি গ্রহণ করা যায় এবং সেগুলি ব্যাপকভাবে স্বীকৃত হয়।[৫২]:৯৬৮
এই ধরনের মূলস্রোতায়নের একটি মূল প্রবেশদ্বার হল জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা। এখানে নতুন এবং বিদ্যমান জাতীয় নীতি, সেক্টর ভিত্তিক নীতি এবং বাজেট বিবেচনায় নেওয়া দরকার। একইভাবে, শহুরে অভিযোজনের মূলস্রোতায়নে বিদ্যমান শহর পরিকল্পনা, যেমন ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনা বিবেচনা করা উচিত।[৮]:১৬৬ এই পদ্ধতিরও কিছু ত্রুটি আছে। একটি সমালোচনা হল যে এটি আলাদা অভিযোজন কর্মসূচির দৃশ্যমানতা কমিয়ে দিয়েছে।[৮]:১৬৬
অভিযোজন পরিকল্পনা সাধারণত জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি এবং দুর্বলতার মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। এতে এই ঝুঁকি কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপের আপেক্ষিক সুবিধা এবং ব্যয় মূল্যায়ন থাকে। পরিকল্পনার পর, পরবর্তী স্তরটি হচ্ছে বাস্তবায়ন। এমনকিছু নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে যেগুলো একটি অভিযোজন প্রক্রিয়ার সাধারণ পর্যায়গুলির রূপরেখা দেয়, যেমন EU Adaptation Support Tool.[১৫৪]
- অভিযোজনের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা
- জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি এবং দুর্বলতা মূল্যায়ন
- অভিযোজন বিকল্প নির্ধারণ করা
- অভিযোজন বিকল্পগুলির মূল্যায়ন করা
- অভিযোজন বাস্তবায়ন
- অভিযোজনের মনিটরিং (পর্যবেক্ষণ) এবং মূল্যায়ন করা
২০২২ সাল পর্যন্ত, অভিযোজনের প্রচেষ্টা বাস্তবায়নের চেয়ে অভিযোজন পরিকল্পনায় বেশি মনোনিবেশ করেছে। সমস্ত অঞ্চল এবং সেক্টরে অগ্রগতি হয়েছে। যাইহোক, বর্তমান চাহিদা এবং বর্তমান বাস্তবায়নের মধ্যে ব্যবধান বাড়তেই থাকে।[৭]:২০[৮]:১৩০
অভিযোজন কর্মকাণ্ড পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে চলছে কিনা তা নিশ্চিত করতে অভিযোজনের মনিটরিং (পর্যবেক্ষণ) এবং মূল্যায়ন গুরুত্বপূর্ণ। এটি সেগুলো উন্নত করতে এবং কোন অতিরিক্ত পদক্ষেপ প্রয়োজন তা বুঝতে শিক্ষাও প্রদান করে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে মনিটরিং (পর্যবেক্ষণ) এবং মূল্যায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং ব্যবহার বাড়ছে। ২০২০ সাল পর্যন্ত, প্রায় এক চতুর্থাংশ দেশে একটি মনিটরিং (পর্যবেক্ষণ) এবং মূল্যায়ন কাঠামো ছিল।[৬]:২০[৭]:২৮
দেশ এবং শহর ভিত্তিক কর্মসূচি
সম্পাদনাজলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার (অভিযোজন) নীতি নির্ধারণ, পরিকল্পনা, সমন্বয় এবং অর্থায়ন বিতরণে জাতীয় সরকারগুলি সাধারণত মূখ্য ভূমিকা পালন করে। আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে তারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে।[১৫৫] অনেক দেশ প্যারিস চুক্তির আওতায় জমা দেওয়া তাদের NDC-তে (Nationally Determined Contributions) এবং / অথবা জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনায় তাদের অভিযোজন পরিকল্পনাগুলি নথিভুক্ত করে। উন্নয়নশীল দেশগুলি তাদের জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা তৈরিতে সহায়তা করার জন্য আন্তর্জাতিক তহবিল থেকে সহায়তা পেতে পারে।[১৫৬]
২০২০ সাল পর্যন্ত, ৭২% দেশের কাছে উচ্চ পর্যায়ের একটি অভিযোজন বিষয়ক নথিপত্র ছিল – যেমন একটি পরিকল্পনা, নীতি বা কৌশল। তুলনামূলকভাবে কম দেশই প্রকল্পগুলির বাস্তব রূপায়নে অগ্রসর হয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে তাদের জনগণ যেসব জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলা করছে তা কমানোর লক্ষ্যে প্রকল্পগুলো তেমন অগ্রগতি সাধন করতে পারেনি।[৬]
দেশীয় সরকার কর্তৃপক্ষের জন্য পরিকল্পনা তৈরিতেও দেশগুলি অগ্রগতি করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কাউন্টি/প্রাদেশিক স্তর, সেক্টর ভিত্তিক পরিকল্পনা এবং শহর পরিকল্পনা। ২০২০ সালে, প্রায় ২১% দেশের উপ-জাতীয় পরিকল্পনা এবং ৫৮% দেশের সেক্টর ভিত্তিক পরিকল্পনা ছিল।[৬]
২০২২ সালের হিসেবে, অন্যান্য জাতীয় পরিকল্পনা এবং পরিকল্পনা পদ্ধতিতে অভিযোজন অগ্রাধিকারের আরও ভাল সংহতি রয়েছে। পরিকল্পনা তৈরিতে আরও বেশী মানুষের অংশগ্রহণ আছে। এর অর্থ হল জলবায়ু আইন এবং নীতিগুলিতে ক্রমবর্ধমানভাবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, শিশু, তরুণ এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের মতো বিভিন্ন সম্প্রদায়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।[১৫৭]
অনেক শহরে তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপ, নাগরিক কর্তৃপক্ষ এবং অবকাঠামো সেবাগুলিকে একত্রিত করে এমন একটি শহরব্যাপী অভিযোজন কৌশল বা পরিকল্পনা তৈরি করা হয়।[৫২]:৯৯৪ বিশ্বব্যাপী ৮১২টি শহরের একটি জরিপে দেখা গেছে যে ৯৩% শহর জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে আছে, ৪৩% এ ২০২১ সালে অভিযোজন পরিকল্পনা ছিলনা, এবং ৪১% শহরে জলবায়ু সংক্রান্ত ঝুঁকি এবং দুর্বলতার মূল্যায়ন করা হয়নি।[১৫৮]
বৈশ্বিক লক্ষ্যসমূহ
সম্পাদনাটেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ১৩ (Sustainable Development Goal 13) এর উদ্দেশ্য হল জলবায়ু-সম্পর্কিত সমস্যাগুলির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে দেশগুলির স্থিতিস্থাপকতা এবং অভিযোজন ক্ষমতা জোরদার করা।[১৫৯] এই অভিযোজনের মধ্যে অবকাঠামো,[১৬০] কৃষি[১৬১] ও শিক্ষা সহ অনেক ক্ষেত্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্যারিস চুক্তিতে অভিযোজনের জন্য বেশ কয়েকটি বিধান রয়েছে । এটি বৈশ্বিক দায়িত্বের ধারণাকে উন্নীত করতে চায়, জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান(Nationally Determined Contributions) এর অভিযোজন পদ্ধতির মাধ্যমে ভালো যোগাযোগ গড়ে তুলতে চায় এবং এতে একটি চুক্তি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যে উন্নত দেশগুলিকে আরও দুর্বল দেশগুলিতে অভিযোজনকে উৎসাহিত করতে কিছু আর্থিক সহায়তা এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা উচিত।[১৬২]
জনসংখ্যা বৃদ্ধি বিবেচনা করে, আফ্রিকায় টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (Sustainable Development Goals) অর্জন করতে $১.৩ ট্রিলিয়ন বার্ষিক তহবিলের প্রয়োজন হবে বলে জাতিসংঘের মতে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (International Monetary Fund) আরও অনুমান করে যে শুধুমাত্র জলবায়ু অভিযোজনের ব্যয় মেটাতেই ৫০ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হতে পারে।[১৬৩][১৬৪][১৬৫]
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে যখন জলবায়ু পরিবর্তন প্রথম আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক এজেন্ডায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তখন অভিযোজন সম্পর্কে আলোচনা কার্যকরী শোষণ বিরোধী ব্যবস্থাগুলির উপর চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রয়োজন থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মনে করা হত। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে শোষণ প্রক্রিয়া (mitigation) মূলত গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করাকে বুঝায়। বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এবং একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকেও কিছু মানুষ অভিযোজনের পক্ষে কথা বলেছেন।[১৬৬] ২০০৯ এবং ২০১০ সালে, আন্তর্জাতিক জলবায়ু আলোচনার সময় অভিযোজন আরও বেশি মনোযোগ পেতে শুরু করে। এই সময় কোপেনহেগেন সম্মেলনে সীমিত অগ্রগতির পরে এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে নির্গমন হ্রাসের জন্য আন্তর্জাতিক ঐক্যমত অর্জন আশা করার চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে। ২০০৯ সালে, বিশ্বের ধনী দেশগুলি উন্নয়নশীল দেশগুলিকে তাদের জলবায়ু অভিযোজন প্রকল্পগুলিতে অর্থায়ন করাতে সহায়তা করার জন্য প্রতি বছর মোট ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রদান করার প্রতিশ্রুতি দেয়। এই প্রতিশ্রুতি ২০২০ সালের কানকুন সম্মেলনে এবং ২০১৫ সালের প্যারিস সম্মেলনে আবারও জোর দেওয়া হয়েছে। প্রতিশ্রুতিটি পূরণ হয়নি, তবে ২০১০-২০২০ সময়কালে অভিযোজনকল্পে ধনী দেশগুলির তহবিল প্রদানের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।[১৬৭][১৬৮][১৬৯]
জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের জন্য আরো বেশি গুরুত্বপূর্ন; জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি শোষণ প্রক্রিয়া (mitigation) এর উপর বেশি মনোযোগ দিয়ে এসেছে। এরও ব্যতিক্রম আছে - যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের প্রতি বিশেষভাবে স্পর্শকাতর বলে মনে করে, সেসব দেশ কখনও জাতীয় পর্যায়েও অভিযোজন নীতির উপর বেশি মনোযোগ দিয়েছে।[১৭০]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ IPCC, 2022: Annex II: Glossary [Möller, V., R. van Diemen, J.B.R. Matthews, C. Méndez, S. Semenov, J.S. Fuglestvedt, A. Reisinger (eds.)]. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 2897–2930, ডিওআই:10.1017/9781009325844.029
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ O'Neill, B., M. van Aalst, Z. Zaiton Ibrahim, L. Berrang Ford, S. Bhadwal, H. Buhaug, D. Diaz, K. Frieler, M. Garschagen, A. Magnan, G. Midgley, A. Mirzabaev, A. Thomas, and R.Warren, 2022: Chapter 16: Key Risks Across Sectors and Regions. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 2411–2538, ডিওআই:10.1017/9781009325844.025
- ↑ Kasotia, Paritosh (২০০৭)। "The Health Effects Of Global Warming: Developing Countries Are The Most Vulnerable"। United Nations (ইংরেজি ভাষায়)।
- ↑ "Unprecedented Impacts of Climate Change Disproportionately Burdening Developing Countries, Delegate Stresses, as Second Committee Concludes General Debate"। United Nations। ৮ অক্টোবর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-১২।
- ↑ Sarkodie, Samuel Asumadu; Ahmed, Maruf Yakubu; Owusu, Phebe Asantewaa (২০২২-০৪-০৫)। "Global adaptation readiness and income mitigate sectoral climate change vulnerabilities"। Humanities and Social Sciences Communications (ইংরেজি ভাষায়)। 9 (1): 1–17। hdl:11250/2999578 । আইএসএসএন 2662-9992। এসটুসিআইডি 247956525 Check
|s2cid=
value (সাহায্য)। ডিওআই:10.1057/s41599-022-01130-7 । - ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ UNEP (২০২১-০১-০৯)। "Adaptation Gap Report 2020"। UNEP – UN Environment Programme (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২৬।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ IPCC, 2022: Summary for Policymakers [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, M. Tignor, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem (eds.)]. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 3–33, ডিওআই:10.1017/9781009325844.001
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ ত থ দ Ara Begum, R., R. Lempert, E. Ali, T.A. Benjaminsen, T. Bernauer, W. Cramer, X. Cui, K. Mach, G. Nagy, N.C. Stenseth, R. Sukumar, and P. Wester, 2022: Chapter 1: Point of Departure and Key Concepts. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 121–196, ডিওআই:10.1017/9781009325844.003
- ↑ ক খ Noble, I.R., S. Huq, Y.A. Anokhin, J. Carmin, D. Goudou, F.P. Lansigan, B. Osman-Elasha, and A. Villamizar, 2014: "Chapter 14: Adaptation needs and options". In: Climate Change 2014: Impacts, Adaptation, and Vulnerability. Part A: Global and Sectoral Aspects. Contribution of Working Group II to the Fifth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [Field, C.B., V.R. Barros, D.J. Dokken, K.J. Mach, M.D. Mastrandrea, T.E. Bilir, M. Chatterjee, K.L. Ebi, Y.O. Estrada, R.C. Genova, B. Girma, E.S. Kissel, A.N. Levy, S. MacCracken, P.R. Mastrandrea, and L.L.White (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, NY, USA, pp. 833–868.
- ↑ Klein, R.J.T., Adams, K.M., Dzebo, A., and Siebert, C.K. (2017). Advancing climate adaptation practices and solutions: emerging research priorities. SEI Working Paper 2017-07. Stockholm, Sweden.
- ↑ IPCC, 2021: Annex VII: Glossary [Matthews, J.B.R., V. Möller, R. van Diemen, J.S. Fuglestvedt, V. Masson-Delmotte, C. Méndez, S. Semenov, A. Reisinger (eds.)]. In Climate Change 2021: The Physical Science Basis. Contribution of Working Group I to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [Masson-Delmotte, V., P. Zhai, A. Pirani, S.L. Connors, C. Péan, S. Berger, N. Caud, Y. Chen, L. Goldfarb, M.I. Gomis, M. Huang, K. Leitzell, E. Lonnoy, J.B.R. Matthews, T.K. Maycock, T. Waterfield, O. Yelekçi, R. Yu, and B. Zhou (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, NY, USA, pp. 2215–2256, ডিওআই:10.1017/9781009157896.022
- ↑ "Temperatures"। climateactiontracker (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৩।
- ↑ "Effects of climate change"। Met Office (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৪-২৩।
- ↑ "Climate Change 2001: Impacts, Adaptation and Vulnerability"। Grida.no। ৭ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১০।
- ↑ "Climate change impacts | National Oceanic and Atmospheric Administration"। noaa Government। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ Kelman, Ilan; Gaillard, J C; Mercer, Jessica (মার্চ ২০১৫)। "Climate Change's Role in Disaster Risk Reduction's Future: Beyond Vulnerability and Resilience"। International Journal of Disaster Risk Science (ইংরেজি ভাষায়)। 6 (1): 21–27। আইএসএসএন 2095-0055। ডিওআই:10.1007/s13753-015-0038-5 । বিবকোড:2015IJDRS...6...21K।
- ↑ "Managing the Risks of Extreme Events and Disasters to Advance Climate Change Adaptation — IPCC"। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-১৬।
- ↑ Global Assessment Report on Disaster Risk Reduction 2022. Our world at risk transforming governance for a resilient future। Geneva: United Nations Office for Disaster Risk Reduction। ২০২২। আইএসবিএন 978-92-1-232028-1। ওসিএলসি 1337569431।
- ↑ "The Paris Agreement"। unfccc international। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-২৪।
- ↑ Farber, Daniel A. (২০০৭)। "Adapting to Climate Change: Who Should Pay?"। Journal of Land Use & Environmental Law। 23: 1। আইএসএসএন 1556-5068। এসটুসিআইডি 153945185। ডিওআই:10.2139/ssrn.980361। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ Adaptation Committee, 2021, Approaches to reviewing the overall progress made in achieving the global goal on adaptation
- ↑ ক খ Abram, N.; Gattuso, J.-P.; Prakash, A.; Cheng, L.; ও অন্যান্য (২০১৯)। "Chapter 1: Framing and Context of the Report" (পিডিএফ)। The Ocean and Cryosphere in a Changing Climate। IPCC।
- ↑ Adger, W. Neil, Nigel W. Arnell, and Emma L. Tompkins. "Successful adaptation to climate change across scales." Global environmental change 15, no. 2 (2005): 77–86.
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Bezner Kerr, R., T. Hasegawa, R. Lasco, I. Bhatt, D. Deryng, A. Farrell, H. Gurney-Smith, H. Ju, S. Lluch-Cota, F. Meza, G. Nelson, H. Neufeldt, and P. Thornton, 2022: Chapter 5: Food, Fibre, and Other Ecosystem Products. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 713–906, ডিওআই:10.1017/9781009325844.007
- ↑ Gupta, Joyeeta; Termeer, Catrien; Klostermann, Judith; Meijerink, Sander; van den Brink, Margo; Jong, Pieter; Nooteboom, Sibout; Bergsma, Emmy (১ অক্টোবর ২০১০)। "The Adaptive Capacity Wheel: a method to assess the inherent characteristics of institutions to enable the adaptive capacity of society"। Environmental Science & Policy। 13 (6): 459–471। hdl:1765/20798 । আইএসএসএন 1462-9011। ডিওআই:10.1016/j.envsci.2010.05.006।
- ↑ Brooks, N and Adger, WN (2005) Assessing and enhancing adaptive capacity. In: Adaptation Policy Frameworks for Climate Change: Developing Strategies, Policies and Measures. Cambridge University Press, Cambridge, pp. 165–181.
- ↑ ক খ Smit, Barry; Wandel, Johanna (২০০৬)। "Adaptation, adaptive capacity and vulnerability" (পিডিএফ)। Global Environmental Change। 16 (3): 282–292। এসটুসিআইডি 14884089। ডিওআই:10.1016/j.gloenvcha.2006.03.008। ২৪ জুন ২০১০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১০।
- ↑ Juhola, Sirkku; Peltonen, Lasse; Niemi, Petteri (২০১৩), "Assessing Adaptive Capacity to Climate Change in European Regions", European Climate Vulnerabilities and Adaptation, John Wiley & Sons, Ltd, পৃষ্ঠা 113–130, আইএসবিএন 9781118474822, ডিওআই:10.1002/9781118474822.ch7
- ↑ Lea Berrang-Ford, James D. Ford, Jaclyn Paterson. (2011). Are we adapting to climate change? 2011. Science Direct.
- ↑ ক খ গ Smit, B.; ও অন্যান্য (২০০১)। "18. Adaptation to Climate Change in the Context of Sustainable Development and Equity" (পিডিএফ)। McCarthy, J. J.; ও অন্যান্য। Climate Change 2001: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Third Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change (পিডিএফ)। Cambridge, UK, and New York, N.Y.: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 877–912। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-১৯।
- ↑ IPCC (২০০৭)। 4. Adaptation and mitigation options. In (book section): Summary for Policymakers. In: Climate Change 2007: Synthesis Report. Contribution of Working Groups I, II and III to the Fourth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change (Core Writing Team, Pachauri, R.K and Reisinger, A. (eds.))। Print version: IPCC, Geneva, Switzerland. This version: IPCC website। আইএসবিএন 978-92-9169-122-7। ১ মে ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১০।
- ↑ Neufeldt, H., Sanchez Martinez, G., Olhoff, A., Knudsen, C. M. S., & Dorkenoo, K. E. J. (Eds.) (2018). The Adaptation Gap Report 2018. United Nations Environment Programme (UNEP), Nairobi, Kenya. United Nations Environment Programme.
- ↑ Shukoor, Kamran (অক্টোবর ৫, ২০২৩)। "Temperature's Impact on Cognitive Capabilities"। Medium। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১১, ২০২৩।
- ↑ Watkiss, P. and Cimato, F. (eds) (2020). What Does Transformational Adaptation Look Like? Literature review synthesis paper. Deliverable 10 of the Resilient Regions: Clyde Rebuilt project. Published by Clyde Rebuilt, Glasgow, Scotland Copyright: Resilient Regions: Clyde Rebuilt, 2020
- ↑ Sharifi, Ayyoob (২০২১-০১-০১)। "Co-benefits and synergies between urban climate change mitigation and adaptation measures: A literature review"। Science of the Total Environment (ইংরেজি ভাষায়)। 750: 141642। আইএসএসএন 0048-9697। এসটুসিআইডি 221365818। ডিওআই:10.1016/j.scitotenv.2020.141642। পিএমআইডি 32858298
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। বিবকোড:2021ScTEn.750n1642S। - ↑ ক খ গ Nations, United। "Early Warning Systems"। United Nations (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০২১।
- ↑ "Establishment of early warning systems — Climate-ADAPT"। climate-adapt.eea.europa.eu। ১৯ এপ্রিল ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০২১।
- ↑ "Early warning systems"। www.who.int (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১৯ এপ্রিল ২০২১।
- ↑ Machingura, Fortunate; Nyamwanza, Admire; Hulme, David; Stuart, Elizabeth (২০১৮)। "Climate information services, integrated knowledge systems and the 2030 Agenda for Sustainable Development"। Sustainable Earth। 1 (1): 1। আইএসএসএন 2520-8748। এসটুসিআইডি 169424138। ডিওআই:10.1186/s42055-018-0003-4 । বিবকোড:2018SuEa....1....1M।টেমপ্লেট:Creative Commons text attribution notice
- ↑ Makondo, Cuthbert Casey; Thomas, David S.G. (অক্টোবর ২০১৮)। "Climate change adaptation: Linking indigenous knowledge with western science for effective adaptation"। Environmental Science & Policy। 88: 83–91। এসটুসিআইডি 158092034। ডিওআই:10.1016/j.envsci.2018.06.014।
- ↑ Jellason, Nugun P.; Salite, Daniela; Conway, John S.; Ogbaga, Chukwuma C. (সেপ্টেম্বর ২০২২)। "A systematic review of smallholder farmers' climate change adaptation and enabling conditions for knowledge integration in Sub-Saharan African (SSA) drylands"। Environmental Development। 43: 100733। এসটুসিআইডি 250251074 Check
|s2cid=
value (সাহায্য)। ডিওআই:10.1016/j.envdev.2022.100733 । - ↑ Arias, P.A., N. Bellouin, E. Coppola, R.G. Jones, G. Krinner, J. Marotzke, V. Naik, M.D. Palmer, G.-K. Plattner, J. Rogelj, M. Rojas, J. Sillmann, T. Storelvmo, P.W. Thorne, B. Trewin, K. Achuta Rao, B. Adhikary, R.P. Allan, K. Armour, G. Bala, R. Barimalala, S. Berger, J.G. Canadell, C. Cassou, A. Cherchi, W. Collins, W.D. Collins, S.L. Connors, S. Corti, F. Cruz, F.J. Dentener, C. Dereczynski, A. Di Luca, A. Diongue Niang, F.J. Doblas-Reyes, A. Dosio, H. Douville, F. Engelbrecht, V. Eyring, E. Fischer, P. Forster, B. Fox-Kemper, J.S. Fuglestvedt, J.C. Fyfe, et al., 2021: Technical Summary ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২১ জুলাই ২০২২ তারিখে. In Climate Change 2021: The Physical Science Basis. Contribution of Working Group I to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৯ আগস্ট ২০২১ তারিখে [Masson-Delmotte, V., P. Zhai, A. Pirani, S.L. Connors, C. Péan, S. Berger, N. Caud, Y. Chen, L. Goldfarb, M.I. Gomis, M. Huang, K. Leitzell, E. Lonnoy, J.B.R. Matthews, T.K. Maycock, T. Waterfield, O. Yelekçi, R. Yu, and B. Zhou (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, NY, USA, pp. 33−144.
- ↑ ক খ Ranasinghe, R., A.C. Ruane, R. Vautard, N. Arnell, E. Coppola, F.A. Cruz, S. Dessai, A.S. Islam, M. Rahimi, D. Ruiz Carrascal, J. Sillmann, M.B. Sylla, C. Tebaldi, W. Wang, and R. Zaaboul, 2021: Chapter 12: Climate Change Information for Regional Impact and for Risk Assessment. In Climate Change 2021: The Physical Science Basis. Contribution of Working Group I to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [Masson-Delmotte, V., P. Zhai, A. Pirani, S.L. Connors, C. Péan, S. Berger, N. Caud, Y. Chen, L. Goldfarb, M.I. Gomis, M. Huang, K. Leitzell, E. Lonnoy, J.B.R. Matthews, T.K. Maycock, T. Waterfield, O. Yelekçi, R. Yu, and B. Zhou (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, NY, USA, pp. 1767–1926, ডিওআই:10.1017/9781009157896.014
- ↑ Thepaut, Jean-Noel; Dee, Dick; Engelen, Richard; Pinty, Bernard (২০১৮)। "The Copernicus Programme and its Climate Change Service"। IGARSS 2018 - 2018 IEEE International Geoscience and Remote Sensing Symposium। Valencia, Spain: IEEE। পৃষ্ঠা 1591–1593। আইএসবিএন 978-1-5386-7150-4। এসটুসিআইডি 53230179। ডিওআই:10.1109/IGARSS.2018.8518067।
- ↑ Dorward, Peter; Clarkson, Graham; Stern, Roger (২০১৫)। Participatory Integrated Climate Services for Agriculture (PICSA): field manual. A step-by-step guide to using PICSA with farmers (ইংরেজি ভাষায়)। Walker Institute, University of Reading। আইএসবিএন 978-0-7049-1563-3।
- ↑ ক খ গ ঘ New, M., D. Reckien, D. Viner, C. Adler, S.-M. Cheong, C. Conde, A. Constable, E. Coughlan de Perez, A. Lammel, R. Mechler, B. Orlove, and W. Solecki, 2022: Chapter 17: Decision-Making Options for Managing Risk. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 2539–2654, ডিওআই:10.1017/9781009325844.026
- ↑ "The politics of climate change: national responses to the challenge of global warming (Library resource)"। European Institute for Gender Equality। ৮ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "National Adaptation Plans"। United Nations Climate Change (UNFCCC)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৪।
- ↑ Preston, B.L.; Brooke, C.; Measham, T.G.; Smith, T.F.; Gorddard, R. (২০০৯)। "Igniting change in local government: Lessons learned from a bushfire vulnerability assessment"। Mitigation and Adaptation Strategies for Global Change। 14 (3): 251–283। এসটুসিআইডি 154962315। ডিওআই:10.1007/s11027-008-9163-4। বিবকোড:2009MASGC..14..251P।
- ↑ Kuhl, Laura; Rahman, M. Feisal; McCraine, Samantha; Krause, Dunja; Hossain, Md Fahad; Bahadur, Aditya Vansh; Huq, Saleemul (১৮ অক্টোবর ২০২১)। "Transformational Adaptation in the Context of Coastal Cities"। Annual Review of Environment and Resources (ইংরেজি ভাষায়)। 46 (1): 449–479। আইএসএসএন 1543-5938। ডিওআই:10.1146/annurev-environ-012420-045211 ।
- ↑ Solecki, William; Friedman, Erin (১ এপ্রিল ২০২১)। "At the Water's Edge: Coastal Settlement, Transformative Adaptation, and Well-Being in an Era of Dynamic Climate Risk"। Annual Review of Public Health (ইংরেজি ভাষায়)। 42 (1): 211–232। আইএসএসএন 0163-7525। এসটুসিআইডি 231583918 Check
|s2cid=
value (সাহায্য)। ডিওআই:10.1146/annurev-publhealth-090419-102302 । পিএমআইডি 33428464|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। - ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ Dodman, D., B. Hayward, M. Pelling, V. Castan Broto, W. Chow, E. Chu, R. Dawson, L. Khirfan, T. McPhearson, A. Prakash, Y. Zheng, and G. Ziervogel, 2022: Chapter 6: Cities, Settlements and Key Infrastructure. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 907–1040, ডিওআই:10.1017/9781009325844.008
- ↑ Kousky, Carolyn (৫ অক্টোবর ২০১৯)। "The Role of Natural Disaster Insurance in Recovery and Risk Reduction"। Annual Review of Resource Economics (ইংরেজি ভাষায়)। 11 (1): 399–418। আইএসএসএন 1941-1340। এসটুসিআইডি 159178389। ডিওআই:10.1146/annurev-resource-100518-094028 ।
- ↑ "Mind the risk: cities under threat from natural disasters"। SwissRe। ৬ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৪।
- ↑ ক খ McAneney, J, Crompton, R, McAneney, D, Musulin, R, Walker, G & Pielke Jr, R 2013, "Market-based mechanisms for climate change adaptation: Assessing the potential for and limits to insurance and market based mechanisms for encouraging climate change adaptation." National Climate Change Adaptation Research Facility, Gold Coast, p. 99
- ↑ Holloway, J.M.; Burby, R.J. (১৯৯০)। "The effects of floodplain development controls on residential land values"। Land Economics। 66 (3): 259–271। জেস্টোর 3146728। ডিওআই:10.2307/3146728।
- ↑ O'Hare, Paul; White, Iain; Connelly, Angela (১ সেপ্টেম্বর ২০১৫)। "Insurance as maladaptation: Resilience and the 'business as usual' paradox" (পিডিএফ)। Environment and Planning C: Government and Policy। 34 (6): 1175–1193। আইএসএসএন 0263-774X। এসটুসিআইডি 155016786। ডিওআই:10.1177/0263774X15602022।
- ↑ Bagstad, Kenneth J.; Stapleton, K.; D'Agostino, J.R. (২০০৭)। "Taxes, subsidies, and insurance as drivers of United States coastal development"। Ecological Economics। 63 (2–3): 285–298। ডিওআই:10.1016/j.ecolecon.2006.09.019।
- ↑ Coordination Challenges in Climate Finance। Erik Lundsgaarde, Kendra Dupuy, Åsa Persson, Danish Institute for International Studies। Copenhagen: DIIS। ২০১৮। আইএসবিএন 978-87-7605-924-8। ওসিএলসি 1099681274।
- ↑ Conevska, Aleksandra; Ford, James; Lesnikowski, Alexandra; Harper, Sherilee (২০১৯-০১-০২)। "Adaptation financing for projects focused on food systems through the UNFCCC"। Climate Policy। 19 (1): 43–58। আইএসএসএন 1469-3062। এসটুসিআইডি 159007875। ডিওআই:10.1080/14693062.2018.1466682। বিবকোড:2019CliPo..19...43C।
- ↑ Rosenzweig, Cynthia; Mbow, Cheikh; Barioni, Luis G.; Benton, Tim G.; Herrero, Mario; Krishnapillai, Murukesan; Liwenga, Emma T.; Pradhan, Prajal; Rivera-Ferre, Marta G.; Sapkota, Tek; Tubiello, Francesco N.; Xu, Yinlong; Mencos Contreras, Erik; Portugal-Pereira, Joana (২০২০)। "Climate change responses benefit from a global food system approach"। Nature Food (ইংরেজি ভাষায়)। 1 (2): 94–97। আইএসএসএন 2662-1355। এসটুসিআইডি 212894930। ডিওআই:10.1038/s43016-020-0031-z। পিএমআইডি 37128000
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। - ↑ ক খ IPCC, 2023: Climate Change 2023: Synthesis Report. Contribution of Working Groups I, II and III to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [Core Writing Team, H. Lee and J. Romero (eds.)]. IPCC, Geneva, Switzerland, 184 pp., ডিওআই:10.59327/IPCC/AR6-9789291691647
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ Cissé, G., R. McLeman, H. Adams, P. Aldunce, K. Bowen, D. Campbell-Lendrum, S. Clayton, K.L. Ebi, J. Hess, C. Huang, Q. Liu, G. McGregor, J. Semenza, and M.C. Tirado, 2022: Health, Wellbeing, and the Changing Structure of Communities. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 1041–1170, ডিওআই:10.1017/9781009325844.009
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ Parmesan, C., M.D. Morecroft, Y. Trisurat, R. Adrian, G.Z. Anshari, A. Arneth, Q. Gao, P. Gonzalez, R. Harris, J. Price, N. Stevens, and G.H. Talukdarr, 2022: Terrestrial and Freshwater Ecosystems and Their Services. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 197–377, doi:10.1017/9781009325844.004
- ↑ ক খ Morecroft, Michael D.; Duffield, Simon; Harley, Mike; Pearce-Higgins, James W.; Stevens, Nicola; Watts, Olly; Whitaker, Jeanette (২০১৯)। "Measuring the success of climate change adaptation and mitigation in terrestrial ecosystems"। Science (ইংরেজি ভাষায়)। 366 (6471): eaaw9256। আইএসএসএন 0036-8075। এসটুসিআইডি 209339286। ডিওআই:10.1126/science.aaw9256 । পিএমআইডি 31831643।
- ↑ Rosenzweig, Cynthia। "All Climate Is Local: How Mayors Fight Global Warming" । Scientific American (ইংরেজি ভাষায়)। নং September 2011। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৮।
- ↑ ক খ As Waters Rise, Miami Beach Builds Higher Streets And Political Willpower ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে
- ↑ ক খ Koch, Wendy (১৫ আগস্ট ২০১১)। "Cities combat climate change"। USA Today।
- ↑ ক খ Kaufman, Leslie (২০১১-০৫-২৩)। "A City Prepares for a Warm Long-Term Forecast"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৮।
- ↑ Revkin, Andrew C. (২৩ মে ২০১১)। "Cities Embrace the Adaptation Imperative"। The New York Times।
- ↑ Hillary Russ (২০১৩-০৭-০৩)। "New Jersey homeowners to get buyout offers after Superstorm Sandy"। Reuters (ইংরেজি ভাষায়)। Reuters। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৮।
- ↑ Menéndez, Pelayo; Losada, Iñigo J.; Torres-Ortega, Saul; Narayan, Siddharth; Beck, Michael W. (১০ মার্চ ২০২০)। "The Global Flood Protection Benefits of Mangroves"। Scientific Reports (ইংরেজি ভাষায়)। 10 (1): 4404। আইএসএসএন 2045-2322। ডিওআই:10.1038/s41598-020-61136-6। পিএমআইডি 32157114
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি 7064529|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। বিবকোড:2020NatSR..10.4404M। - ↑ Kate Ravilious (২০১৬)। "Many hydroelectric plants in Himalayas are at risk from glacial lakes"। environmentalresearchweb.। ৭ মার্চ ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৮।
Schwanghart, Wolfgang; Worni, Raphael; Huggel, Christian; Stoffel, Markus; Korup, Oliver (২০১৬-০৭-০১)। "Uncertainty in the Himalayan energy–water nexus: estimating regional exposure to glacial lake outburst floods"। Environmental Research Letters। 11 (7): 074005। আইএসএসএন 1748-9326। এসটুসিআইডি 133059262। ডিওআই:10.1088/1748-9326/11/7/074005 । বিবকোড:2016ERL....11g4005S। 074005।
- ↑ NYC Special Initiative for Rebuilding and Resiliency (২০১৩)। "A Stronger, More Resilient New York"। nyc Government। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৮।
- ↑ Cooley, S., D. Schoeman, L. Bopp, P. Boyd, S. Donner, D.Y. Ghebrehiwet, S.-I. Ito, W. Kiessling, P. Martinetto, E. Ojea, M.-F. Racault, B. Rost, and M. Skern-Mauritzen, 2022: Ocean and Coastal Ecosystems and their Services (Chapter 3). In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation, and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press. In Press. - Cross-Chapter Box SLR: Sea Level Rise
- ↑ Dasgupta, Susmita; Wheeler, David; Bandyopadhyay, Sunando; Ghosh, Santadas; Roy, Utpal (ফেব্রুয়ারি ২০২২)। "Coastal dilemma: Climate change, public assistance and population displacement"। World Development (ইংরেজি ভাষায়)। 150: 105707। আইএসএসএন 0305-750X। এসটুসিআইডি 244585347 Check
|s2cid=
value (সাহায্য)। ডিওআই:10.1016/j.worlddev.2021.105707। - ↑ ক খ Thomsen, Dana C.; Smith, Timothy F.; Keys, Noni (২০১২)। "Adaptation or Manipulation? Unpacking Climate Change Response Strategies"। Ecology and Society। 17 (3)। জেস্টোর 26269087। ডিওআই:10.5751/es-04953-170320 ।
- ↑ "Climate Adaptation and Sea Level Rise"। US EPA, Climate Change Adaptation Resource Center (ARC-X) (ইংরেজি ভাষায়)। ২ মে ২০১৬।
- ↑ Nagothu, Udaya Sekhar (২০১৭-০১-১৮)। "Food security threatened by sea-level rise"। Nibio। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-২১।
- ↑ ক খ Fletcher, Cameron (২০১৩)। "Costs and coasts: an empirical assessment of physical and institutional climate adaptation pathways"। Apo।
- ↑ Sovacool, Benjamin K. (২০১১)। "Hard and soft paths for climate change adaptation" (পিডিএফ)। Climate Policy। 11 (4): 1177–1183। এসটুসিআইডি 153384574। ডিওআই:10.1080/14693062.2011.579315। বিবকোড:2011CliPo..11.1177S। ১০ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪।
- ↑ "Coastal cities face rising risk of flood losses, study says"। Phys.org। ১৮ আগস্ট ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ১৭ এপ্রিল ২০২৩।
- ↑ Hallegatte, Stephane; Green, Colin; Nicholls, Robert J.; Corfee-Morlot, Jan (১৮ আগস্ট ২০১৩)। "Future flood losses in major coastal cities"। Nature Climate Change (ইংরেজি ভাষায়)। 3 (9): 802–806। ডিওআই:10.1038/nclimate1979। বিবকোড:2013NatCC...3..802H।
- ↑ Bachner, Gabriel; Lincke, Daniel; Hinkel, Jochen (২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২)। "The macroeconomic effects of adapting to high-end sea-level rise via protection and migration"। Nature Communications (ইংরেজি ভাষায়)। 13 (1): 5705। ডিওআই:10.1038/s41467-022-33043-z। পিএমআইডি 36175422
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি 9522673|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। বিবকোড:2022NatCo..13.5705B। - ↑ van der Hurk, Bart; Bisaro, Alexander; Haasnoot, Marjolijn; Nicholls, Robert J.; Rehdanz, Katrin; Stuparu, Dana (২৮ জানুয়ারি ২০২২)। "Living with sea-level rise in North-West Europe: Science-policy challenges across scales"। Climate Risk Management। 35: 100403। এসটুসিআইডি 246354121 Check
|s2cid=
value (সাহায্য)। ডিওআই:10.1016/j.crm.2022.100403। বিবকোড:2022CliRM..3500403V। - ↑ Hirschfeld, Daniella; Behar, David; Nicholls, Robert J.; Cahill, Niamh; James, Thomas; Horton, Benjamin P.; Portman, Michelle E.; Bell, Rob; Campo, Matthew; Esteban, Miguel; Goble, Bronwyn; Rahman, Munsur; Appeaning Addo, Kwasi; Chundeli, Faiz Ahmed; Aunger, Monique; Babitsky, Orly; Beal, Anders; Boyle, Ray; Fang, Jiayi; Gohar, Amir; Hanson, Susan; Karamesines, Saul; Kim, M. J.; Lohmann, Hilary; McInnes, Kathy; Mimura, Nobuo; Ramsay, Doug; Wenger, Landis; Yokoki, Hiromune (৩ এপ্রিল ২০২৩)। "Global survey shows planners use widely varying sea-level rise projections for coastal adaptation"। Communications Earth & Environment (ইংরেজি ভাষায়)। 4 (1): 102। ডিওআই:10.1038/s43247-023-00703-x । বিবকোড:2023ComEE...4..102H। Text and images are available under a Creative Commons Attribution 4.0 International License.
- ↑ Garner, Andra J.; Sosa, Sarah E.; Tan, Fangyi; Tan, Christabel Wan Jie; Garner, Gregory G.; Horton, Benjamin P. (২৩ জানুয়ারি ২০২৩)। "Evaluating Knowledge Gaps in Sea-Level Rise Assessments From the United States"। Earth's Future। 11 (2): e2022EF003187। এসটুসিআইডি 256227421 Check
|s2cid=
value (সাহায্য)। ডিওআই:10.1029/2022EF003187। বিবকোড:2023EaFut..1103187G। - ↑ "Climate change: More than 3bn could live in extreme heat by 2070"। BBC News। ৫ মে ২০২০। ৫ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মে ২০২০।
- ↑ Xu, Chi; Kohler, Timothy A.; Lenton, Timothy M.; Svenning, Jens-Christian; Scheffer, Marten (২৬ মে ২০২০)। "Future of the human climate niche – Supplementary Materials"। Proceedings of the National Academy of Sciences। 117 (21): 11350–11355। আইএসএসএন 0027-8424। ডিওআই:10.1073/pnas.1910114117 । পিএমআইডি 32366654
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। পিএমসি 7260949|pmc=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। বিবকোড:2020PNAS..11711350X। - ↑ "Future of the human climate niche" (পিডিএফ)। ১৪ মে ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জুন ২০২০।
- ↑ Dodman, D., B. Hayward, M. Pelling, V. Castan Broto, W. Chow, E. Chu, R. Dawson, L. Khirfan, T. McPhearson, A. Prakash, Y. Zheng, and G. Ziervogel, 2022: Chapter 6: Cities, Settlements and Key Infrastructure. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 907–1040, ডিওআই:10.1017/9781009325844.008
- ↑ Sharifi, Ayyoob (২০২০)। "Trade-offs and conflicts between urban climate change mitigation and adaptation measures: A literature review"। Journal of Cleaner Production। 276: 122813। আইএসএসএন 0959-6526। এসটুসিআইডি 225638176। ডিওআই:10.1016/j.jclepro.2020.122813।
- ↑ Waldrop, M. Mitchell (১৯ অক্টোবর ২০২২)। "What can cities do to survive extreme heat?"। Knowable Magazine। ডিওআই:10.1146/knowable-101922-2 । সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০২২।
- ↑ "Nature of Cities"। Regeneration। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-১৬।
- ↑ Younes, Jaafar; Ghali, Kamel; Ghaddar, Nesreen (আগস্ট ২০২২)। "Diurnal Selective Radiative Cooling Impact in Mitigating Urban Heat Island Effect"। Sustainable Cities and Society। 83: 103932। এসটুসিআইডি 248588547 Check
|s2cid=
value (সাহায্য)। ডিওআই:10.1016/j.scs.2022.103932 – Elsevier Science Direct-এর মাধ্যমে। - ↑ Khan, Ansar; Carlosena, Laura; Feng, Jie; Khorat, Samiran; Khatun, Rupali; Doan, Quang-Van; Santamouris, Mattheos (জানুয়ারি ২০২২)। "Optically Modulated Passive Broadband Daytime Radiative Cooling Materials Can Cool Cities in Summer and Heat Cities in Winter"। Sustainability। 14 – MDPI-এর মাধ্যমে।
- ↑ Simire, Michael (১৬ জুলাই ২০১৯)। "Climate change: Farm embarks on planting heat-resistant trees"। EnviroNews Nigeria -। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ Jennings, Paul A. (ফেব্রুয়ারি ২০০৮)। "Dealing with Climate Change at the Local Level" (পিডিএফ)। Chemical Engineering Progress। American Institute of Chemical Engineers। 104 (2): 40–44। ১ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৮।
- ↑ Falkenmark, Malin; Rockstrom, Johan; Rockström, Johan (২০০৪)। Balancing Water for Humans and Nature: The New Approach in Ecohydrology। Earthscan। পৃষ্ঠা 67–68। আইএসবিএন 978-1-85383-926-9।
- ↑ Berthouly-Salazar, Cécile; Vigouroux, Yves; Billot, Claire; Scarcelli, Nora; Jankowski, Frédérique; Kane, Ndjido Ardo; Barnaud, Adeline; Burgarella, Concetta (২০১৯)। "Adaptive Introgression: An Untapped Evolutionary Mechanism for Crop Adaptation"। Frontiers in Plant Science (ইংরেজি ভাষায়)। 10: 4। আইএসএসএন 1664-462X। ডিওআই:10.3389/fpls.2019.00004 । পিএমআইডি 30774638। পিএমসি 6367218 ।
- ↑ "Diverse water sources key to food security: report"। Reuters (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১০-০৯-০৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০২-০৮।
- ↑ "Adapting to climate change to sustain food security"। International Livestock Research Institute (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ নভেম্বর ২০২০।
- ↑ Mukherji, Aditi; Facon, Thierry; ও অন্যান্য (২০০৯)। Revitalising Asia's Irrigation: To sustainably meet tomorrow's food needs (পিডিএফ)। IWMI and FAO। আইএসবিএন 9789290907091।
- ↑ Corbley, McKinley (৩১ মার্চ ২০১৯)। "Dozens of Countries Have Been Working to Plant 'Great Green Wall' – and It's Holding Back Poverty"। Good News Network।
- ↑ Puiu, Tibi (৩ এপ্রিল ২০১৯)। "More than 20 African countries are planting an 8,000-km-long 'Great Green Wall'"। ZME Science। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ Goyal, Nidhi (২৯ অক্টোবর ২০১৭)। "Great Green Wall to Combat Climate Change in Africa"। Industry Tap। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১৯।
- ↑ Intergovernmental Panel On Climate Change (Ipcc) (২০২৩)। Climate Change 2022 – Impacts, Adaptation and Vulnerability (পিডিএফ) (ইংরেজি ভাষায়)। Intergovernmental Panel on Climate Change। আইএসবিএন 9781009325844। এসটুসিআইডি 259568239 Check
|s2cid=
value (সাহায্য)। ডিওআই:10.1017/9781009325844।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] - ↑ Cooley, S., D. Schoeman, L. Bopp, P. Boyd, S. Donner, D.Y. Ghebrehiwet, S.-I. Ito, W. Kiessling, P. Martinetto, E. Ojea, M.-F. Racault, B. Rost, and M. Skern-Mauritzen, 2022: Oceans and Coastal Ecosystems and Their Services. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 379–550, ডিওআই:10.1017/9781009325844.005
- ↑ McLachlan, J. S.; Hellmann, J. J.; Schwartz, M. W. (২০০৭)। "A Framework for Debate of Assisted Migration in an Era of Climate Change"। Conservation Biology। 21 (2): 297–302। ডিওআই:10.1111/j.1523-1739.2007.00676.x । পিএমআইডি 17391179। বিবকোড:2007ConBi..21..297M।
- ↑ Allen, C. D.; MacAlady, A. K.; Chenchouni, H.; Bachelet, D.; McDowell, N.; Vennetier, M.; Kitzberger, T.; Rigling, A.; Breshears, D. D.; Hogg, E. H. T.; Gonzalez, P.; Fensham, R.; Zhang, Z.; Castro, J.; Demidova, N.; Lim, J. H.; Allard, G.; Running, S. W.; Semerci, A.; Cobb, N. (২০১০)। "A global overview of drought and heat-induced tree mortality reveals emerging climate change risks for forests" (পিডিএফ)। Forest Ecology and Management। 259 (4): 660। এসটুসিআইডি 4144174। ডিওআই:10.1016/j.foreco.2009.09.001।
- ↑ Zhu, K.; Woodall, C. W.; Clark, J. S. (২০১২)। "Failure to migrate: Lack of tree range expansion in response to climate change"। Global Change Biology। 18 (3): 1042। এসটুসিআইডি 31248474। ডিওআই:10.1111/j.1365-2486.2011.02571.x। বিবকোড:2012GCBio..18.1042Z।
- ↑ Heller, N. E.; Zavaleta, E. S. (২০০৯)। "Biodiversity management in the face of climate change: A review of 22 years of recommendations"। Biological Conservation। 142 (1): 14–32। এসটুসিআইডি 3797951। ডিওআই:10.1016/j.biocon.2008.10.006। বিবকোড:2009BCons.142...14H।
- ↑ ক খ গ Caretta, M.A., A. Mukherji, M. Arfanuzzaman, R.A. Betts, A. Gelfan, Y. Hirabayashi, T.K. Lissner, J. Liu, E. Lopez Gunn, R. Morgan, S. Mwanga, and S. Supratid, 2022: Water. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 551–712, ডিওআই:10.1017/9781009325844.006
- ↑ Douville, H., K. Raghavan, J. Renwick, R.P. Allan, P.A. Arias, M. Barlow, R. Cerezo-Mota, A. Cherchi, T.Y. Gan, J. Gergis, D. Jiang, A. Khan, W. Pokam Mba, D. Rosenfeld, J. Tierney, and O. Zolina, 2021: Water Cycle Changes. In Climate Change 2021: The Physical Science Basis. Contribution of Working Group I to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [Masson-Delmotte, V., P. Zhai, A. Pirani, S.L. Connors, C. Péan, S. Berger, N. Caud, Y. Chen, L. Goldfarb, M.I. Gomis, M. Huang, K. Leitzell, E. Lonnoy, J.B.R. Matthews, T.K. Maycock, T. Waterfield, O. Yelekçi, R. Yu, and B. Zhou (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, United Kingdom and New York, NY, USA, pp. 1055–1210, ডিওআই:10.1017/9781009157896.010
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Birkmann, J., E. Liwenga, R. Pandey, E. Boyd, R. Djalante, F. Gemenne, W. Leal Filho, P.F. Pinho, L. Stringer, and D. Wrathall, 2022: Poverty, Livelihoods and Sustainable Development. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 1171–1274, ডিওআই:10.1017/9781009325844.010
- ↑ Adaptation Without Borders (2017), Transboundary climate risks An overview
- ↑ ক খ গ ঘ "Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability" (ইংরেজি ভাষায়)। Intergovernmental Panel on Climate Change। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ d Nations Environment Programme (৩১ অক্টোবর ২০২১)। "Adaptation Gap Report 2021: The gathering storm – Adapting to climate change in a post-pandemic world – Executive Summary"। Nairobi, Kenya: United Nations Environment Programme। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ Eisenack, Klaus (২০১৪)। "Explaining and overcoming barriers to climate change adaptation"। Nature Climate Change। 4 (10): 867–872। ডিওআই:10.1038/nclimate2350। বিবকোড:2014NatCC...4..867E। সংগ্রহের তারিখ ২০ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ Westphal, Michael; Hughes, Gordon; Brömmelhörster, Jörn (২০১৩-১০-০১)। Economics of Climate Change in East Asia (ইংরেজি ভাষায়)। Asian Development Bank। আইএসবিএন 978-92-9254-288-7।
- ↑ "Home | UNDP Climate Change Adaptation"। www.adaptation-undp.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-২৩।
- ↑ Adger, W. N.; ও অন্যান্য (২০০৭)। "17. Assessment of adaptation practices, options, constraints and capacity" (পিডিএফ)। Parry, M. L.; ও অন্যান্য। Climate Change 2007: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Fourth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change (পিডিএফ)। Cambridge, UK, and New York, N.Y.: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 717–744। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-১৯।
- ↑ "Climate Change 2022: Mitigation of Climate Change" (ইংরেজি ভাষায়)। Intergovernmental Panel on Climate Change। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০২২।
- ↑ "Climate finance"। Climate finance।
- ↑ "The Special Climate Change Fund"। UNFCCC। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-২০।
- ↑ "Funding"। Global Environment Facility (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৪-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-২০।
- ↑ Conference of the Parties to the Framework Convention on Climate Change। Copenhagen। ৭–১৮ ডিসেম্বর ২০০৯। un document= FCCC/CP/2009/L.7। ১৮ অক্টোবর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১০।
- ↑ Cui, Lianbiao; Sun, Yi; Song, Malin; Zhu, Lei (২০২০)। "Co-financing in the green climate fund: lessons from the global environment facility"। Climate Policy। 20 (1): 95–108। আইএসএসএন 1469-3062। এসটুসিআইডি 213694904। ডিওআই:10.1080/14693062.2019.1690968। বিবকোড:2020CliPo..20...95C।
- ↑ "António Guterres on the climate crisis: 'We are coming to a point of no return'"। The Guardian। ১১ জুন ২০২১।
- ↑ "DELIVERING ON THE $100 BILLIONCLIMATE FINANCE COMMITMENTAND TRANSFORMING CLIMATE FINANCE" (পিডিএফ)। www.UN.org (ইংরেজি ভাষায়)। ডিসেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-১৯।
- ↑ ক খ "How to finance adaptation to climate change"। European Investment Bank (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৩।
- ↑ "Multilateral development banks' climate finance in low and middle-income countries reaches $51 billion in 2021"। www.isdb.org (ইংরেজি ভাষায়)। ১৪ অক্টোবর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৭।
- ↑ "COP27 Reaches Breakthrough Agreement on New "Loss and Damage" Fund for Vulnerable Countries"। unfccc.int। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৭।
- ↑ "EIB sets 15% climate adaptation target by 2025"। ৩ নভেম্বর ২০২১।
- ↑ United Nations Environment Programme (2023). Adaptation Gap Report 2023: Underfinanced.Underprepared. Inadequate investment and planning on climate adaptation leaves world exposed. Nairobi. ডিওআই:10.59117/20.500.11822/43796
- ↑ ক খ Jessica Brown, Neil Bird and Liane Schalatek (2010) Climate finance additionality: emerging definitions and their implications ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ আগস্ট ২০১২ তারিখে Overseas Development Institute
- ↑ "Chapter 2. Food security: concepts and measurement[21]"। Fao.org। ২৬ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১০।
- ↑ Poverty in a Changing Climate ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৩ মে ২০১২ তারিখে Institute of Development Studies Bulletin 39(4), September 2008
- ↑ "Klimabistand bliver taget fra de fattigste"। ১২ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ ক খ Neil Adger, W.; Arnell, Nigel W.; Tompkins, Emma L. (২০০৫)। "Successful adaptation to climate change across scales" (পিডিএফ)। Global Environmental Change। 15 (2): 77–86। ডিওআই:10.1016/j.gloenvcha.2004.12.005। ২ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১০।
- ↑ ক খ "Assessment of adaptation practices, options, constraints and capacity" (পিডিএফ)। ২৭ আগস্ট ২০১০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১০।
- ↑ Rosenbaum, Walter A. (২০১৭)। Environmental Politics and Policy। Thousand Oaks, CA: CQ Press। আইএসবিএন 978-1-4522-3996-5।
- ↑ "Climate Change"। United Nations। ১১ জানুয়ারি ২০১৬। ২৪ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ Wood, Robert; Hultquist, Andy; Romsdahl, Rebecca (১ নভেম্বর ২০১৪)। "An Examination of Local Climate Change Policies in the Great Plains"। Review of Policy Research। 31 (6): 529–554। ডিওআই:10.1111/ropr.12103।
- ↑ ক খ "Adaptation to Climate Change in the Developing World" (পিডিএফ)। Iied.org। ১৬ জুন ২০১০। ২২ সেপ্টেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ আগস্ট ২০১০।
- ↑ "Changing focus? How to take adaptive capacity seriously. Evidence from Africa shows that development interventions could do more" (পিডিএফ)। Overseas Development Institute। Briefing paper 71। জানুয়ারি ২০১২। ২১ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২৩।
- ↑ Kates, Robert W.; Travis, William R.; Wilbanks, Thomas J. (১৪ মার্চ ২০১২)। "Transformational adaptation when incremental adaptations to climate change are insufficient"। PNAS। 109 (19): 7156–7161। ডিওআই:10.1073/pnas.1115521109 । পিএমআইডি 22509036। পিএমসি 3358899 । বিবকোড:2012PNAS..109.7156K।
- ↑ McNamara, Karen Elizabeth; Buggy, Lisa (৫ আগস্ট ২০১৬)। "Community-based climate change adaptation: a review of academic literature"। Local Environment। 22 (4): 443–460। এসটুসিআইডি 156119057। ডিওআই:10.1080/13549839.2016.1216954।
- ↑ OECD (২০১৫-০৭-০৭)। Climate Change Risks and Adaptation: Linking Policy and Economics (ইংরেজি ভাষায়)। OECD। আইএসবিএন 978-92-64-23460-4। ডিওআই:10.1787/9789264234611-en।
- ↑ UNEP (২০১৮)। The Adaptation Gap Report 2018.। United Nations Environment Programme (UNEP), Nairobi, Kenya।
- ↑ Chidambaram, Ravi; Khanna, Parag (১ আগস্ট ২০২২)। "It's Time to Invest in Climate Adaptation"। Harvard Business Review। আইএসএসএন 0017-8012। সংগ্রহের তারিখ ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২।
- ↑ Dolšak, Nives; Prakash, Aseem (১৭ অক্টোবর ২০১৮)। "The Politics of Climate Change Adaptation"। Annual Review of Environment and Resources (ইংরেজি ভাষায়)। 43 (1): 317–341। আইএসএসএন 1543-5938। ডিওআই:10.1146/annurev-environ-102017-025739 ।
- ↑ Sharifi, Ayyoob (২০২০-১২-১০)। "Trade-offs and conflicts between urban climate change mitigation and adaptation measures: A literature review"। Journal of Cleaner Production (ইংরেজি ভাষায়)। 276: 122813। আইএসএসএন 0959-6526। এসটুসিআইডি 225638176। ডিওআই:10.1016/j.jclepro.2020.122813।
- ↑ EC–European Commission. (2013). Guidelines on developing adaptation strategies. Staff working document, 134.
- ↑ Schipper, E.L.F., A. Revi, B.L. Preston, E.R. Carr, S.H. Eriksen, L.R. Fernandez-Carril, B.C. Glavovic, N.J.M. Hilmi, D. Ley, R. Mukerji, M.S. Muylaert de Araujo, R. Perez, S.K. Rose, and P.K. Singh, 2022: Climate Resilient Development Pathways. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 2655–2807, ডিওআই:10.1017/9781009325844.027
- ↑ Trisos, C.H., I.O. Adelekan, E. Totin, A. Ayanlade, J. Efitre, A. Gemeda, K. Kalaba, C. Lennard, C. Masao, Y. Mgaya, G. Ngaruiya, D. Olago, N.P. Simpson, and S. Zakieldeen, 2022: Africa. In: Climate Change 2022: Impacts, Adaptation and Vulnerability. Contribution of Working Group II to the Sixth Assessment Report of the Intergovernmental Panel on Climate Change [H.-O. Pörtner, D.C. Roberts, M. Tignor, E.S. Poloczanska, K. Mintenbeck, A. Alegría, M. Craig, S. Langsdorf, S. Löschke, V. Möller, A. Okem, B. Rama (eds.)]. Cambridge University Press, Cambridge, UK and New York, NY, USA, pp. 1285–1455, ডিওআই:10.1017/9781009325844.011
- ↑ United Nations Environment Programme (2022). Adaptation Gap Report 2022: Too Little, Too Slow – Climate adaptation failure puts world at risk. Nairobi. https://www.unep.org/adaptation-gap-report-2022
- ↑ "Nearly half of cities lack plans to keep populations safe from climate threats"। Carbon Disclosure Project। ১২ মে ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ২১ মে ২০২১।
- ↑ Campbell, Bruce M.; Hansen, James; Rioux, Janie; Stirling, Clare M.; Twomlow, Stephen; (Lini) Wollenberg, Eva (২০১৮)। "Urgent action to combat climate change and its impacts (SDG 13): transforming agriculture and food systems"। Current Opinion in Environmental Sustainability। 34: 13–20। এসটুসিআইডি 158757940। ডিওআই:10.1016/j.cosust.2018.06.005 । বিবকোড:2018COES...34...13C।
- ↑ "The Varsity: Quantifying the climate crisis: how changes could impact road maintenance"। ১০ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "The Guardian: Benefits to farmers of global heating outweighed by losses, says report"। The Guardian। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
- ↑ Ngwadla, X; El-Bakri, S. (২০১৬)। The Global Goal for Adaptation under the Paris Agreement: Putting ideas into action. (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। London, UK: Climate and Development Knowledge Network.। পৃষ্ঠা 11–17।
- ↑ Bank, European Investment (২০২২-১০-১৯)। Finance in Africa – Navigating the financial landscape in turbulent times (ইংরেজি ভাষায়)। European Investment Bank। আইএসবিএন 978-92-861-5382-2।
- ↑ Inter-agency Task Force on Financing for Development। "Financing for Sustainable Development Report 2021" (পিডিএফ)। UN।
- ↑ Nations, United। "Population growth, environmental degradation and climate change"। United Nations (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-২৮।
- ↑ Ford, James (২০০৭)। "Emerging trends in climate change policy: the role of adaptation"। Journal of Climate। 3: 5–14।
- ↑ "Climate adaptation policies are needed more than ever"। The Economist। মে ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ২ মে ২০২৩।
In the early days of political action on climate change adaptation was seen as, at best, a poor relation to cutting greenhouse-gas emissions—at worst as a distraction. In his first book on the subject, Earth in the Balance (1992) Al Gore, who became America's vice-president the following year, described it as 'a kind of laziness'.
- ↑ "Why tackling global warming is a challenge without precedent"। The Economist। এপ্রিল ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৫ এপ্রিল ২০২১।
To talk of such adaptation was equated with capitulating on emission cuts.
- ↑ Jocelyn Timperley (২০২১)। "The broken $100-billion promise of climate finance — and how to fix it"। Nature। 598 (7881): 400–402। ডিওআই:10.1038/d41586-021-02846-3 । পিএমআইডি 34671142
|pmid=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। বিবকোড:2021Natur.598..400T। - ↑ Di Gregorio, Monica; Fatorelli, Leandra; Paavola, Jouni; Locatelli, Bruno; Pramova, Emilia; Nurrochmat, Dodik Ridho; May, Peter H.; Brockhaus, Maria; Sari, Intan Maya; Kusumadewi, Sonya Dyah (২০১৯)। "Multi-level governance and power in climate change policy networks"। Global Environmental Change। 54: 64–77। ডিওআই:10.1016/j.gloenvcha.2018.10.003 ।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকার প্যানেল (IPCC) এর ওয়ার্কিং গ্রুপ II অভিযোজন সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্রগুলির সমালোচনামূলক মূল্যায়ন করে: ওয়ার্কিং গ্রুপ II — IPCC
- weADAPT প্ল্যাটফর্ম শিক্ষা গ্রহণের গতি বৃদ্ধি এবং জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করার জন্য অভিযোজন প্রকল্প থেকে অভিজ্ঞতা আদান-প্রদানকে উৎসাহিত করে।