জন এম্বুরি

ইংরেজ ক্রিকেটার

জন আর্নেস্ট এম্বুরি (ইংরেজি: John Emburey; জন্ম: ২০ আগস্ট, ১৯৫২) লন্ডনের পেকহাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।[] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।

জন এম্বুরি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জন আর্নেস্ট এম্বুরি
জন্ম (1952-08-20) ২০ আগস্ট ১৯৫২ (বয়স ৭২)
পেকহাম, ইংল্যান্ড
ডাকনামএম্বার্স, এমি, নাকল
উচ্চতা৬ ফুট ২ ইঞ্চি (১.৮৮ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাবোলার, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৮০)
২৪ আগস্ট ১৯৭৮ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট৩০ জুলাই ১৯৯৫ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৫২)
১৪ জানুয়ারি ১৯৮০ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ ওডিআই২০ মার্চ ১৯৯৩ বনাম শ্রীলঙ্কা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৭৩–১৯৯৫মিডলসেক্স
১৯৮২/৮৩–১৯৮৩/৮৪ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স
১৯৯৬–৯৭নর্দাম্পটনশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৬৪ ৬১ ৫১৩ ৫৩৬
রানের সংখ্যা ১৭১৩ ৫০১ ১২০২১ ৩৮৬৫
ব্যাটিং গড় ২২.৫৩ ১৪.৩১ ২৩.৩৮ ১৫.৭৭
১০০/৫০ –/১০ –/– ৭/৫৫ –/২
সর্বোচ্চ রান ৭৫ ৩৪ ১৩৩ ৫০
বল করেছে ১৫৩৯১ ৩৪২৫ ১১২৮৬২ ২৬৩৯৯
উইকেট ১৪৭ ৭৬ ১৬০৮ ৬৪৭
বোলিং গড় ৩৮.৪০ ৩০.৮৬ ২৬.০৯ ২৫.৯৮
ইনিংসে ৫ উইকেট ৭২
ম্যাচে ১০ উইকেট - ১২ -
সেরা বোলিং ৭/৭৮ ৪/৩৭ ৮/৪০ ৫/২৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩৪/– ১৯/– ৪৫৮/– ১৮১/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৭ জুলাই ২০১৭

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্স, নর্দাম্পটনশায়ার, বার্কশায়ার ও দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ‘এম্বার্স’, ‘আর্নি’, ‘নাকল’ ডাকনামে পরিচিত জন এম্বুরি। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি অফ ব্রেক বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও ডানহাতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন তিনি।

কাউন্টি ক্রিকেট

সম্পাদনা

ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ফিল এডমন্ডসের সাথে তিনি ছিলেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। ডান ও বামহাতি স্পিন যুগল ১৯৮০-এর দশকে মিডলসেক্সের অগ্রযাত্রায় অসামান্য ভূমিকা রাখে। এছাড়াও তারা ইংল্যান্ড দলে খেলেছেন। তবে টেস্ট দলে উভয়কে খুব কমই একত্রে অংশ নিতে দেখা যায়।[] মিডলসেক্সে এম্বুরি’র উল্লেখযোগ্য কীর্তি ছিল একদিনে ১২ উইকেট লাভ যা ১৯৮০ সালে লর্ডসে চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় লাভ করেছিলেন।

খেলোয়াড়ী জীবন

সম্পাদনা

২৪ আগস্ট, ১৯৭৮ তারিখে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক হয়।

একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে ১৯৮১-৮২ ও ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে দুইবার ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে নিষিদ্ধঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যান। বর্ণবৈষম্যবাদের কারণে তৎকালীন সময়ে টেস্ট অঙ্গন থেকে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছিল।[] গ্রাহাম গুচের প্রকাশিত সফরকালীন দিনপঞ্জীতে এম্বুরিকে শুধুমাত্র কু ক্লাক্স ক্লানের সদস্যরূপে পোশাক পরিহিত অবস্থায় চিত্রিত করা হয় ও প্রথম বিদ্রোহী সফরের সংবাদ প্রকাশের ঠিক পূর্বক্ষণে তার অন্তর্ভূক্তির কথা জানানো হয়।[]

১৯৮৮ সালে এম্বুরি স্বল্পসময়ের জন্য ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়কত্ব করেছিলেন যা অ-প্রসিদ্ধ চার অধিনায়কের গ্রীষ্মকাল নামে পরিচিত ছিল।[] ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের পর মাইক গ্যাটিংকে অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হলে এম্বুরি পরবর্তী দুই টেস্টে অধিনায়কত্ব করেন। তবে উভয়ক্ষেত্রেই দল পরাজিত হয়েছিল। এম্বুরিকেও অব্যহতি দেয়া হয় ও ক্রিস কাউড্রে তার স্থলাভিষিক্ত হন। কাউড্রে মাত্র এক টেস্টে অধিনায়কত্ব করার পর গ্রাহাম গুচকে এ দায়িত্বভার প্রদান করা হয়েছিল।

টেস্ট জীবনের শেষদিকে এম্বুরিকে ইংল্যান্ডের পক্ষে সিরিজের একটি টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়। ১৯৯৩ সালে অস্ট্রেলিয়া ও ১৯৯৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামেন তিনি।

একদিনের আন্তর্জাতিক

সম্পাদনা

১৪ জানুয়ারি, ১৯৮০ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক হয় তার। ১৯৮৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ভারত-পাকিস্তানে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত ঐ প্রতিযোগিতায় তার দল রানার্স-আপ হয়েছিল।

মূল্যায়ন

সম্পাদনা

ক্রিকেট লেখক কলিন বেটম্যানের মতে, দুইবার দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্রোহী দলের সফরে অংশ নেয়ায় তাকে টেস্ট ক্রিকেট থেকে ছয় বছর দূরে পিছিয়ে রাখে। এছাড়াও, ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কত্ব থেকেও তাকে অধিক সময় দূরে রাখে। মাইক ব্রিয়ারলি’র পর ইংল্যান্ড দলের অধিনায়কের দাবীদার হিসেবে অনেকের চেয়েই বেশ এগিয়ে ছিলেন তিনি।[]

এম্বুরি ডানহাতি স্পিন বোলার ছিলেন এবং কিছুটা ঘাটতি থাকলেও কার্যকরী নিচেরসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। প্রভাববিস্তারকারী স্পিন বোলারের তুলনায় মিতব্যয়ী বোলার হিসেবেই তার সুনাম ছিল। কিন্তু, তার সেরা দিনগুলোয় অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলগুলোকে সেরা ব্যাটসম্যানদেরকেও মোকাবেলা করতে কষ্টসাধ্য ছিল। আর্ম বল আউট সুইঙ্গারই তার সর্বাপেক্ষা বিপজ্জ্বনক বল হিসেবে পরিচিতি পায়।

ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্টে বিশালসংখ্যক রান করা স্বত্ত্বেও কোনটিকেই সেঞ্চুরির পর্যায়ে উপনীত করতে পারেননি। এছাড়াও সর্বোচ্চ ইনিংসগুলোর পুরোটাই কেবলমাত্র বাউন্ডারী থেকে করেছেন যা অনন্য রেকর্ডরূপে বিবেচিত। পায়ের কারুকাজে ত্রুটি থাকা স্বত্ত্বেও ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে হোবার্টে তাসমানিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ড একাদশের সদস্যরূপে ৪৬ রান তুলেন যাতে দশটি চার ও একটি ছক্কা ছিল।

১৯৮৪ সালে তাকে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত করা হয়।

ভারতের জাতীয় কোচ হিসেবে গ্রাহাম ফোর্ড প্রত্যাখ্যান করলে তিনিই দ্বিতীয় পছন্দের কোচ ছিলেন। তবে তিনি এ দায়িত্ব পালনে অনাগ্রহতা প্রকাশ করেন। নর্দাম্পটনশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব ও মিডলসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের কোচ ছিলেন তিনি। পাশাপাশি ধারাভাষ্যকারের ভূমিকায়ও অবর্তীণ হতে দেখা যায়। ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সালে ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগের দ্বিতীয় আসরে আহমেদাবাদ রকেটসের কোচ হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 62–63। আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. Gooch, Graham; Alan Lee (১৯৮২)। Cricket Diary '81: The West Indies, Australia, India.। Stanley Paul। আইএসবিএন 0-09-147750-6 
  3. Crininfo.com[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
মাইক গ্যাটিং
ইংরেজ ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৮৮
উত্তরসূরী
গ্রাহাম গুচ