জঙ্গবাহাদুর রাণা
মহারাজা জঙ্গবাহাদুর কুঁবর রাণাজি, জিসিএসআই (জন্মের নাম বীর নরসিং কুঁবর, ১৮ জুন ১৮১৭ - ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৭৫ ; জঙ্গবাহাদুর রাণা নামে পরিচিত) নেপালের ৮ম প্রধানমন্ত্রী এবং প্রথম শ্রী ৩ মহারাজা ছিলেন। ১৮৪৬ সালের কোত হত্যাকাণ্ড এবং ভণ্ডারখাল হত্যাকাণ্ড-এর পর জঙ্গবাহাদুর হঠাৎ করে নেপালের রাজনীতি ও প্রশাসনে শক্তিশালী হয়ে ওঠেন।[২] রাজা রাজেন্দ্র যখন নেপালের শাসন ব্যবস্থায় শক্তিশালী ছিলেন, তখন জঙ্গবাহাদুর দামোদর পাঁডে, ভীমসেন থাপা, রণজঙ্গ পাঁডে এবং মাথবর সিং থাপার নীতি গ্রহণ করে যুবরাজ সুরেন্দ্র রাজপ্রাসাদের অভ্যন্তরে অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের মাধ্যমে সিংহাসনে আরোহণ করে নিজেকে অত্যন্ত শক্তিশালী করে তোলেন। তিনি নেপালের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।[৩][৪][৫] নেপালে ১০৪ বছর ধরে স্থায়ী একটি নিপীড়নমূলক একনায়কতন্ত্রের কারণে কিছু আধুনিক ঐতিহাসিক জঙ্গবাহাদুরকে নেপালের ইতিহাসের একটি অন্ধকার যুগ প্রতিষ্ঠার জন্য দোষারোপ করেন৷ অন্যান্য ঐতিহাসিকরা অন্ধকার সময়ের জন্য তার ছেলে, নাতিদেরকে দায়ী করেন। রাণার শাসন অত্যাচার, অশ্লীলতা, অর্থনৈতিক শোষণ এবং ধর্মীয় নিপীড়নের সাথে জড়িত৷[৬] [১]
জেনারেল অফিসার শ্রী তীন মহারাজ জঙ্গবাহাদুর রাণা রাণা | |
---|---|
নেপালের ৮ম প্রধানমন্ত্রী | |
কাস্কী এবং লমজুঙে মহারাজা | |
কাজের মেয়াদ ১৫ সেপ্টেম্বর ১৮৪৬ – ১ অগস্ট ১৭৪৬ | |
সার্বভৌম শাসক | রাজা রাজেন্দ্র রাজা সুরেন্দ্র |
পূর্বসূরী | ফত্তেজঙ্গ শাহ |
উত্তরসূরী | বমবাহাদুর কুঁবর |
কাজের মেয়াদ ২৮ জুন ১৮৫৭ – ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৭৭ | |
সার্বভৌম শাসক | রাজা সুরেন্দ্র |
পূর্বসূরী | বমবাহাদুর কুঁবর |
উত্তরসূরী | রণোদীপ সিংহ কুঁবর |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৮ জুন ১৮১৭ বালকোট, অর্ঘাখাঁচী, নেপাল অধিরাজ্য[১] |
মৃত্যু | ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৮৭৭ পত্থরঘঢ্ঢা, রৌতহট, নেপাল অধিরাজ্য | (বয়স ৫৯)
দাম্পত্য সঙ্গী | নন্দ কুমারী (দ্বীতিয় স্ত্রী); হিরণ্যগর্ভ কুমারী দেবি (নবম স্ত্রী) |
সন্তান | জগতজঙ্গ রাণা, ললিত রাজেশ্বরি রাজ্য লক্ষ্মী দেবি, দিব্য়েশ্বরি রাজ্য লক্ষ্মী শাহ, পদ্ম জঙ্গবাহাদুর রাণা, বদন কুমারী, জীতজঙ্গ রাণা |
আত্মীয়স্বজন | দেখেন; কুঁবর পরিবার; থাপা বংশ; রাণা বংশ |
জঙ্গবাহাদুর ১৮৫৬ সালের ৩১ জুলাই-এর দিন মুখতিয়ারের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং ৬ অগস্টে রাজা সুরেন্দ্র থেকে কাস্কি ও লমজুঙয়ের শ্রী ৩ মহারাজার পদ গ্রহণ করেন। মহারাজের পদ লাভের পরেই তাঁকে শ্রী ৩ জঙ্গবাহাদুর কুঁবর রাণাজি বলা হয়। জং বাহাদুর প্রথম ব্যক্তি যিনি শ্রী ৩ মহারাজের জন্য শ্রীপেচ তৈরি করেছিলেন এবং জনপুত্রের দ্বারা নির্মিত শ্রীপেচ পরিধান করেছিলেন।[৭][৮][৯]
জঙ্গবাহাদুর রাণার শাসনকালে ব্রিটিশদের সাথে যুদ্ধে নেপাল যে অঞ্চলগুলি হারিয়েছিল তার মধ্যে তারা বর্তমান তরাইয়ে বাঁকে, বর্দিয়া, কৈলালী এবং কঞ্চনপুর সহ রাপ্তি থেকে মহাকালী পর্যন্ত অঞ্চলটি নেপালের সাথে পুনরায় একীভূত করতে সক্ষম হয়েছিল।[১০] বর্তমানে, এই অঞ্চলটি নয়াঁ মুলুক নামেও পরিচিত।[১১] তিনিই নেপালে রাণা শাসনের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন এবং ১০৪ বছর ধরে পারিবারিক শাসন শুরু করেছিলেন। তাঁর শাসনকালে, ব্রিটিশ শাসকদের প্রিয়পাত্র জঙ্গবাহাদুর, দরবারের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের সমান করে স্বৈরাচারী শাসন করেছিলেন।[১২] ব্রিটেন ও ফ্রান্স সফর থেকে ফিরে আসার পর তিনি নেপালি শিল্পকলা, সংস্কৃতি, জীবন ও আইনে পশ্চিমা প্রভাবের ছাপ রেখে যান।[১৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ Rana, Purushottam S.J.B. (১৯৯৮)। Jung Bahadur Rana: the story of his rise and glory। Book Faith India। পৃষ্ঠা 150। আইএসবিএন 81-7303-087-1।
- ↑ "यी हुन् नेपालमा सत्ता परिवर्तन गराउने प्रमुख हत्याकाण्ड"। बिबिसी न्युज नेपाली (নেপালি ভাষায়)। ২০১৯-০৬-০২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১২।
- ↑ नेपालको तथ्य इतिहास राजाराम सुवेदी पृष्ठ २३५
- ↑ प्रा. डा. राजाराम सुवेदी (২০০৫)। नेपालको तथ्य इतिहास। साझा प्रकाशन। পৃষ্ঠা २३५। আইএসবিএন 99933-2-406-X।
- ↑ "कुँवरबाट कसरी राणा बने जङ्गबहादुर?"। हिमाल खबर (নেপালি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১২।
- ↑ Gartoula, Gopal। "Jung Bahadur's destitute descendants" (ইংরেজি ভাষায়)। ৪ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০১-০৪।
- ↑ ""नेपालको इतिहासमा जङ्गबहादुर" एक चर्चा"। अनलाइन मजदुर (নেপালি ভাষায়)। ২০২০-১১-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১২।
- ↑ पन्त, प्रा दिनेशराज। "रसिक जङ्गबहादुर"। सम्पूर्ण साप्ताहिक (নেপালি ভাষায়)। ২০২০-১১-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১২।
- ↑ "जङ्गबहादुर राणाका अक्षर"। हिमाल खबर (নেপালি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১২।
- ↑ "एकीकरणका अर्का नायक जङ्गबहादुर राणा"। अन्नपूर्ण पोस्ट (নেপালি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-১৪।
- ↑ "जङ्गबहादुरः जस्ले नेपालको नक्शा बदले"। रिपोर्टर्स नेपाल (নেপালি ভাষায়)। ২০১৯-০৮-১০। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১১-১৩।
- ↑ "यी हुन् जङ्गबहादुर राणाका १० चर्चिकला"। नयाँ पेज (नेपाली ভাষায়)। ২০১৮-০৪-১৭। ২০২১-০৬-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-১৪।
- ↑ "काे हुन् जङ्गबहादुर राणा?"। शुभदिन (নেপালি ভাষায়)। ২০১৭-০৭-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-১৪।