চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ
চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ বাংলাদেশের একটি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি রাজশাহী বিভাগের নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলায় অবস্থিত।[১] এটি একটি স্বনামধন্য ও পুরাতন প্রতিষ্ঠান। এটি নাটোর জেলার মুষ্টিমেয় যে কয়েকটি পুরাতন বিদ্যালয় রয়েছে তার মধ্যে একটি। এখানে প্রায় ১৯১৩ সাল থেকে পাঠদান কার্যক্রম চালু রয়েছে ।
ধরন | নিম্ন মাধ্যমিক,মাধ্যমিক,ভোকেশনাল ও উচ্চ মাধ্যমিক |
---|---|
স্থাপিত | ১৯১৩ |
প্রতিষ্ঠাতা | রাজা রমনীকান্ত রায়বাহাদুর |
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি | মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী |
ইআইআইএন | ১২৪৩১৮ |
অধ্যক্ষ | অধ্যক্ষ মোঃ আবুল কালাম আজাদ |
ঠিকানা | , , |
শিক্ষাঙ্গন | মফস্বল |
ইতিহাস
সম্পাদনাচৌগ্রামের রাজবংশের পরিচিতি
সম্পাদনাবৃহত্তর রাজশাহী জেলা ১৮৭০-৭১ সালে যখন ৪৮ টি পরগনায় বিভক্ত হয় তখন চৌগ্রামের রাজবংশের জমিদারির পরগনার আয়তন ছিল ২৯,৪৮৭ একর বা ৪৬.০৯ বর্গ মাইল। এই পরগনায় প্রথম রাজা ছিলেন রাজা রসিক রায়,দ্বিতীয় রাজা তার পুত্র কৃষ্ণ কান্ত রায়,তৃতীয় রাজা ছিলেন তার পুত্র রুদ্র কান্ত রায়,চতুর্থ রাজা তার দত্তক পুত্র রোহিনী কান্ত রায় বাহাদুর,পঞ্চম রাজা তার দত্তক পুত্র রমনী কান্ত রায় বাহাদুর এবং ষষ্ঠ রাজা তার পুত্র রাজেশ কান্ত রায় বাহাদুর। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় রাজা রসিক রায় থেকে শুরু করে রোহিনী কান্ত রায় বাহাদুর পর্যন্ত অত্যাচারী রাজা ছিলেন। এই সকল রাজা প্রজাদের মঙ্গলের জন্য তেমন কিছুই করে যান নি। প্রজাদের লেখাপড়ার জন্য কখনই চিন্তা করেন নাই। [২]
নির্মাণ ও প্রতিষ্ঠালাভ
সম্পাদনাবিংশ শতকের প্রথম দিকে হাজী বাহার উদ্দিন,হাজী তমিজ উদ্দিন,হাজী শামছুদ্দিন,হাজী আজিম উদ্দিন,হাজী আলিফ উদ্দিন,তরিকুল্লাহ পণ্ডিত,মুকূলনাথ ঘোষ,সামছুদ্দিন পণ্ডিত সহ বিশিষ্ট কয়েকজন ব্যক্তি ইংরেজি শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়ে হাইস্কুল স্থাপনের দাবি জানান,তা না হলে কর না দেওয়ার হুমকি দেন। অবশেষে রাজা রমনীকান্ত রায়বাহাদুর বাধ্য হয়ে ১৯০৩-১৯১০ সালের মধ্যে চৌগ্রাম হাই স্কুল নির্মাণ করেন। ১৯১৩ সালে স্কুলটি তৎকালীন কলিকাতা বোর্ড হতে স্কুলটি স্বীকৃতি পায়। বর্তমানে সেটি চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। [৩]
শতবর্ষ ও পুর্নমিলনী
সম্পাদনা১৮ই মার্চ ২০১৬ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠানের মাঠে ১০৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে শতবর্ষ ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।[৪]
প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ বক্তব্য দেন সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল ও কলেজ এর সাবেক অধ্যক্ষ শরিরফুল ইসলাম তারা।
এ সময় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক আবু বক্করের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নাটোরের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার মুখ্যার্জী, জেলা পরিষদের প্রশাসক সাজেদুর রহমান খান, প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ নজু, সিংড়া পৌরসভার মেয়র মো. জান্নাতুল ফেরদৌস, স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলতাব হোসেন প্রমুখ।[৫]
শিক্ষক মহোদয় গণ
সম্পাদনাঅত্র প্রতিষ্ঠান এ স্কুল,ভোকেশনাল ও কলেজ শাখায় একাধিক শিক্ষক কর্মরত আছেন।
পাঠদান কর্মসূচি
সম্পাদনাএখানে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করান হয়। নবম ও দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগ সহ কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হয়। কারিগরি বা ভোকেশনাল বিভাগের শিক্ষকেরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন ঐ অঞ্চলে কারিগরি শিক্ষায় ছাত্রদেরকে শিক্ষিত করার জন্য। এছারাও এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ কলেজ বা উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগ চালু রয়েছে।
বিশিষ্ট প্রাক্তন শিক্ষার্থী
সম্পাদনা- মাদার বখশ - রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রতিষ্ঠাতা।
- ডাঃ মাওলা বখশ
- ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রহমতুল্লাহ
- মোঃ আব্দুল জব্বার
- মীর গোলাম সবুর
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ কলেজ ম্যাগাজিন ২০১৫
- ↑ দিশারী, এই সূত্রটি চৌগ্রাম ঊচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ; হতে, প্রকাশিত দিশারী পত্রিকা হতে নেওয়া হয়েছে (২০১৬)। দিশারী (প্রথম সংস্করণ)। চৌগ্রাম: চৌগ্রাম ঊচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। পৃষ্ঠা ২০।
- ↑ দিশারী, এই তথ্যটি দিশারী, চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ হতে প্রকাশিত পত্রিকা হতে নেওয়া হয়েছে (২০১৬)। চৌগ্রামের রাজবংশের পরিচিতি (প্রথম সংস্করণ)। চৌগ্রাম,সিংড়া,নাটোর: চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। পৃষ্ঠা ২০।
- ↑ Information., This is a Ittefaq official site.। "চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় এ শতবার্ষিকী ও পুনর্মিলন অনুষ্ঠান"। Aks Ahnaf Abid। সংগ্রহের তারিখ ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮।
- ↑ "সিংড়া চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান | সারাদেশ | The Daily Ittefaq"। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-২৫।
- ↑ দিশারী, তথ্যটি দিশারী পত্রিকা হতে সংগৃহীত (২০১৬)। কৃতি ছাত্রের নাম (প্রথম সংস্করণ)। চৌগ্রাম: চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। পৃষ্ঠা ২৪।