চেচা ডেভিস (প্রায়শই মিসেস ই. ভি. ডেভিস নামে পরিচিত; ১৮৯৮–১৯৭৯) একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সিঙ্গাপুরের সমাজসেবী এবং নারী অধিকারকর্মী ছিলেন। তার কৈশোরে, তিনি একজন শিক্ষিকা ছিলেন, তবে সিঙ্গাপুরে পাড়ি দেওয়ার পরে তিনি চার্চের কাজ এবং সমাজসেবা সংস্থাগুলোতে সক্রিয় ছিলেন এবং দুটি পৃথক অনুষ্ঠানে ওয়াইডব্লিউসিএ-এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সিঙ্গাপুর মহিলা কাউন্সিলের জন্য বিধি তৈরি করেছিল যে কমিটি, ডেভিস সেই কমিটিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং এর কার্যনির্বাহী কমিটিতে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ডেভিস ১৯৭০ সালে পাবলিক সার্ভিস স্টার পেয়েছিলেন এবং ২০১৪ সালের উদ্বোধনী বছরে সিঙ্গাপুর উইমেন হল অফ ফেমে অন্তর্ভুক্ত হন।

চেচা ডেভিস
জন্ম
চেচা জর্জ

১৮৯৮
মৃত্যু২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৯
কর্মজীবন১৯১৬–৭৯

প্রারম্ভিক জীবন

সম্পাদনা

চেচা জর্জ ১৮৯৮ সালে ভারতের কেরালায় টি. ডি জর্জের (যিনি একজন মেথোডিস্ট প্রচারক ছিলেন) ঘরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[] ভারতবর্ষের ব্রিটিশ শাসনামলে তাঁর পড়াশোনা শেষে তিনি মাদ্রাজের স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন,[] অর্থনীতি ও ইংরেজি ইতিহাস বিভাগে পড়াশোনা করে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।[] [] জর্জ টেনিস খেলার জন্য একটি পদকও অর্জন করেছিলেন এবং তাঁর বিয়ের পরেও খেলতে থাকেন। পরবর্তীতে তিনি সিঙ্গাপুরে চলে যান এবং যেখানে গিয়ে খেলার কোর্টে শাড়ি পরেছিলেন।[]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

তিনি ১৯১৬ সালে ওয়াইডব্লিউসিএ অ্যাসোসিয়েশনে যোগদান করেছিলেন, নারী ও মেয়েদের শিক্ষা উন্নয়নের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।[] তিনি মেথোডিস্ট গীর্জার একজন প্রচারক হিসাবেও কাজ করেছিলেন।[] জর্জ স্কুল শিক্ষক হিসেবেও কাজ করেছেন এবং মাদ্রাজের মহিলা ক্রিশ্চিয়ান কলেজে নিযুক্ত ছিলেন। ১৯২৫ সালের ৩রা এপ্রিল তারিখে মাদ্রাজে তিনি সিঙ্গাপুরের আউটরাম রোড স্কুলের ই. ভি ডেভিসের (এডওয়ার্ড ভেথানাগম) সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন এবং তাঁর সাথে সিঙ্গাপুরে ফিরে আসেন।[][][]

সম্প্রদায়ভিত্তিক কাজকর্ম

সম্পাদনা

সিঙ্গাপুরে পৌঁছে, চেচা ডেভিস তামিল মেথোডিস্ট চার্চে যোগ দিয়েছিলেন এবং যেখানে তিনি প্রচারক এবং প্রভাষক উভয়েরই দায়িত্ব পালন করেছিলেন। খ্রিস্টান সেবার মহিলা সমিতির সভাপতি হিসাবে তিনি এশিয়া, আমেরিকা, ইউরোপ এবং মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করেছিলেন [][] ১৯৩০-এর দশকে একাকী ভারতীয় মহিলার ভ্রমণ যদিও শোনা যায় নি, তবুও তিনি ওয়াইডব্লিউসিএ-এর পক্ষে সভাপতি হিসাবে ভ্রমণ করেছিলেন।[][] ১৯৩১ সালে ডেভিস ইন্ডিয়ান সিলোনিস ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, পরে এটির নাম হয়েছিল লোটাস ক্লাব। এটি সিঙ্গাপুরে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহিলাদের জন্য প্রথম মহিলা সংগঠন ছিল।[] জওহরলাল নেহেরুর সাথে একটি নৈশভোজের পরে, তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে লোটাস ক্লাবটি লেডিস ইউনিয়ন নামে একটি অন্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযুক্ত করা হোক; পরবর্তীতে দুটি ক্লাব মিলে কমলা ক্লাব নামে একটি ক্লাব গড়ে উঠেছিল। এই ক্লাবটি সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক উভয় সংগঠন হিসাবেই কাজ করেছে এবং দাতব্য কাজেও সহায়তা প্রদান করেছিল।[] তিনি আন্তর্জাতিক মহিলা ক্লাবের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন, যার লক্ষ্য সম্প্রদায়ের উন্নতিতে প্রকল্পগুলো সম্পন্ন করতে বিভিন্ন জাতীয়তার মহিলাদের একত্রিত করা।[] ডেভিস এই ধারণা দ্বারা চালিত হয়েছিলেন যে "কথা বলার চেয়ে কাজ করা বড়"।[]

মৃত্যু

সম্পাদনা

চেচা ডেভিস বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ থাকার পরে ট্যান টক সেন্ট হাসপাতালে ১৯৭৯ সালের ২রা সেপ্টেম্বর তারিখে মারা যান।[] ২০১৪ সালে তাঁকে মরণোত্তরভাবে সিঙ্গাপুর উইমেন হল অফ ফেমে উদ্বোধনী দলের মহিলাদের মধ্যে যুক্ত করা হয়েছিল।[১০][১১]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা