চুপাৎফা
গদাধর সিংহ বা চুপাৎফা(ইংরেজি: Supaatphaa)[১](শাসনকাল: ১৬৮১-১৬৯৬) আহোম সাম্রাজ্যের রাজা ছিলেন। তিনি চুহুংমুংয়ের উত্তর পুরুষ গোবর রাজার পুত্র ছিলেন। গোবর রাজা মাত্র ২০ দিনের জন্য রাজসিহাংসনে বসেছিলেন। গদাধরের পুর্বের নাম ছিল গদাপানি। তিনি শরাইঘাট যুদ্ধে জয়ী হয়ে আহোম সাম্রাজ্যের অস্থিরতা দুর করে সুস্থির রাজ্য স্থাপন করিতে সক্ষম হয়েছিলেন। তার শাসনের পুর্বে চুলিকফা, ডেবেরা বরফুকন ও লালুকসোলা বরফুকনের অত্যাচারী শাসনের সময় গুয়াহাটি আহোমের দখলে ছিল। কিন্তু গদাধর সিংহ সিংহাসনের বসার পর গুয়াহাটি পুনরায় নিজের অধীনে এনেছিলেন। তারপর থেকে গুয়াহাটি ব্রিটিশ শাসনের আগ পর্যন্ত আহোমের অধীনে ছিল। বৈষ্ণব সত্র সমুহের সঙ্গে মতভেদ হওয়ার জন্য তিনি সিংহাসন ত্যাগ করে রাজারপদে নিজ পুত্র রুদ্র সিংহকে নিযুক্ত করেছিলেন। রুদ্র সিংহকে আহোম সাম্রাজ্যের শ্রেষ্ঠ রাজা হিসেবে অভিহিত করা হয়। গদাধর সিংহের রাজত্বকালে আহোম সাম্রাজ্যের রাজধানী বরকলা ছিল।[১]
শাসনকাল
সম্পাদনাগদাধর সিংহের পিতার নাম ছিল গোবর গোহাই। ডেবেরা বরবরুয়া ১৬৭৫ সনে গোবর গোহাইকে আহোম সাম্রাজ্যের স্বর্গদেউ(রাজা) পদে নিযুক্ত করেন। তিনি মাত্র ২০ দিনের জন্য রাজসিহাংসনে বসেছিলেন।[১] ডেবেরা বরবরুয়া যুদ্ধে আতন বুরাগোহাইয়ের হাতে পরাস্ত হন ও গোবর রাজাকে মৃত্যুদন্দ দেওয়া হয়। লালুকসোলা বরফুকন ১৬৭৯ সালে আতন বুঢ়াগোহাইকে হত্যা করে চুলিকফাকে সিহাংসনে বসান ও দেশের শাসনভার নিজের হাতে ন্যাস্ত করেন। অঙ্গে ক্ষত থাকা ব্যক্তিকে আহোম সাম্রাজ্যে রাজা হওয়ার অধিকার দেওয়া হত না। এই নিয়মের সুযোগ বুঝে লালুকসোলা বরফুকন রাজা পদের দাবিদার সকল রাজকুমারের অঙ্গে ক্ষত করার পরিকল্পনা নেন। গদাধর সিংহ গোবর রাজার পুত্র ও আহোম রাজপুত্র ছিলেন। তিনি লালুকসোলার অঙ্গে ক্ষত করার অত্যাচার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নাগা পাহাড়ে আত্মগোপন করে ছিলেন। স্থানটি বর্তমান নাগাল্যান্ড রাজ্যের মোন জেলার অন্তর্গত। গদাধর সিংহকে খুঁজে না পেয়ে রাজার সৈন্য গদাধর সিংহের পত্নী জয়মতীকে বন্দি করেন। স্বামীর আত্মগোপনের ঠিকানা না বলায় চুলিকফা ও লালুকসোলা বরফুকন জয়মতীকে শাস্তি দিতে থাকে। শাস্তি চরম মাত্রায় পৌছে জয়মতীর মৃত্যু হয়। গদাধর সিংহ প্রায় ২বছর পর চুলিকফাকে হত্যা করে নিজে আহোম সাম্রাজ্যে রাজার ক্ষমতায় আসে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- অসমের ইতিহাস, assamtourism.org
- Encyclopaedia Of North-east India Vol# 1, Col Ved Prakash (1 January 2007). Atlantic Publishers & Dist., পৃষ্ঠা. 167–. আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-২৬৯-০৭০৩-৮