চীনা সুপার লিগ (চীনা: 中国足球协会超级联赛, ইংরেজি: Chinese Super League; পৃষ্ঠপোষকজনিত কারণে চীন পিং আন চীনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন সুপার লিগ নামের পাশাপাশি চীনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন সুপার লিগ এবং সংক্ষেপে সিএসএল নামে পরিচিত) হচ্ছে চীনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক চীনের পেশাদার ফুটবল ক্লাবগুলোর মধ্যকার আয়োজিত চীনা ফুটবল লিগ পদ্ধতির শীর্ষ স্তরের পেশাদার ফুটবল লিগ। এই লিগে চীনের সর্বমোট ১৬টি পেশাদার ফুটবল ক্লাব চীনা ক্লাব পর্যায়ের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।

চীনা সুপার লিগ
সংগঠকচীনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন
স্থাপিত২০০৪; ২০ বছর আগে (2004)
প্রথম মৌসুম২০০৪
দেশ চীন
কনফেডারেশনএএফসি
দলের সংখ্যা১৬
লিগের স্তর
অবনমিতচীন লিগ ওয়ান
ঘরোয়া কাপচীনা এফএ কাপ
চীনা এফএ সুপার কাপ
আন্তর্জাতিক কাপ
বর্তমান চ্যাম্পিয়নসাংহাই পোর্ট (২য়)
(২০২৩)
সর্বাধিক শিরোপাকুয়াংচৌ (৮)
সর্বাধিক ম্যাচচীন ওয়াং সং (৩৯৩)
শীর্ষ গোলদাতাচীন এলকেসন (১৩১)
সম্প্রচারকসম্প্রচারকের তালিকা
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট
২০২৪ চীনা সুপার লিগ

২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে চীনা সুপার লিগে এপর্যন্ত সর্বমোট ৩৯টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে, যার মধ্য হতে মাত্র ৯টি ক্লাব এই লিগের শিরোপা জয়লাভ করেছে এবং তিনটি ক্লাব একাধিকবার জয়লাভ করেছে। কুয়াংচৌ এই লিগের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ক্লাব, যারা সর্বমোট ৮টি শিরোপা জয়লাভ করার পাশাপাশি দুই বার রানার-আপ হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে শানতুং থাইশান, যারা এপর্যন্ত চার বার এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে ক্লাব সাংহাই পোর্ট, যারা এপর্যন্ত দুই বার শিরোপা জয়লাভ করেছে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সাংহাই পোর্ট ২০২৩ মৌসুমে ৬৩ পয়েন্ট অর্জন করে ক্লাবের ইতিহাসে ২য় বারের মতো চীনা সুপার লিগের শিরোপা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছিল; উক্ত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন সাংহাই পোর্ট হতে ৫ পয়েন্ট কম অর্জন করে শানতুং থাইশান রানার-আপ হয়েছিল।[]

ইতিহাস

সম্পাদনা

২০০৪ সালে এই লিগটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, অতঃপর ২০০৪ চীনা সুপার লিগ মৌসুমের মাধ্যমে এই লিগটি যাত্রা শুরু করেছে। চীনা সুপার লিগের উক্ত মৌসুমে সর্বমোট বারোটি ক্লাব দ্বৈত রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করেছিল। ২০০৪ সালের ১৫ই মে তারিখে শুরু হয়ে ৫ই ডিসেম্বর তারিখে সম্পন্ন হওয়া উক্ত মৌসুমে প্রতিটি ক্লাব সর্বমোট ২২টি ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছিল; যার মধ্যে ক্লাবগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে দুইটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল। ২২তম ম্যাচদিন শেষে ৪২ পয়েন্ট অর্জন করে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ স্থান অধিকারী ক্লাব হিসেবে শেনচেন প্রথম ক্লাব হিসেবে চীনা সুপার লিগের শিরোপা জয়লাভ করেছিল। ২০০৪ মৌসুমে বেইজিং চেংফেংয়ের ঘানায়ীয় আক্রমণভাগের খেলোয়াড় কুয়ামে আয়েউ ১৭ গোল করে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে চীনা সুপার লিগের শীর্ষ গোলদাতার পুরস্কার জয়লাভ করেছিলেন।[]

বিন্যাস

সম্পাদনা

চীনা সুপার লিগের প্রতিটি মৌসুমে সর্বমোট ১৬টি ক্লাব দ্বৈত রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী ক্লাবগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে দুইটি ম্যাচে মুখোমুখি হয়; যার মধ্যে একটি নিজেদের মাঠে এবং অপরটি প্রতিপক্ষ দলের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়; ক্লাবগুলো এক মৌসুমে সর্বমোট ৩০টি ম্যাচে অংশগ্রহণ করে। চীনা সুপার লিগের প্রতিটি মৌসুম বছরের মার্চ মাস হতে পরবর্তী বছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাবগুলো প্রতিটি জয়ের জন্য তিন পয়েন্ট এবং ড্রয়ের জন্য এক পয়েন্ট করে অর্জন করে থাকে, হারের জন্য কোন পয়েন্ট অর্জন করে না। পয়েন্ট তালিকায় ক্লাবগুলোর অর্জিত পয়েন্টের ভিত্তিতে তাদের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। প্রতিটি মৌসুম শেষে পয়েন্ট তালিকায় সর্বাধিক পয়েন্ট অর্জনকারী ক্লাবটি চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শিরোপা জয়লাভ করে। যদি দুই বা ততোধিক ক্লাব সমান পয়েন্ট অর্জন করে থাকে, তবে হেড-টু-হেড পয়েন্টের মাধ্যমে পয়েন্ট তালিকায় তাদের অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। সমতা ভঙ্গের সকল নিয়ম প্রয়োগ করার পরও যদি দুই বা ততোধিক ক্লাব পয়েন্ট তালিকায় সমতায় থাকে, তবে উক্ত ক্লাবগুলো পয়েন্ট তালিকার একই অবস্থানে আছে বলে মনে করা হয়। তবে, চ্যাম্পিয়ন ক্লাব, অবনমিত ক্লাব অথবা অন্যান্য প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ ক্লাব নির্ধারণের ক্ষেত্রে যদি সমতায় থাকে, তবে একটি নিরপেক্ষ মাঠে একটি প্লে-অফ ম্যাচের মাধ্যমে ক্লাবগুলোর অবস্থান নির্ধারণ করা হয়।

চীনা সুপার লিগের প্রতিটি মৌসুমের বিজয়ী ক্লাব পরবর্তী মৌসুমের এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ এলিটের জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে উত্তীর্ণ হয়; এছাড়াও পয়েন্ট তালিকায় নিজেদের অবস্থানের ভিত্তিতে এক বা একাধিক ক্লাব এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এলিট এবং এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এর জন্য উত্তীর্ণ হয়। চীনা সুপার লিগে অংশগ্রহণ করার পাশাপাশি ক্লাবগুলো চীনা ঘরোয়া ফুটবল কাপ চীনা এফএ কাপেও অংশগ্রহণ করে।

ফুটবল লিগ পদ্ধতির মাধ্যমে চীনা ফুটবল লিগ পদ্ধতির শীর্ষ স্তরের লিগ চীনা সুপার লিগ এবং দ্বিতীয় স্তরের লিগ চীন লিগ ওয়ান উন্নয়ন ও অবনমনের মাধ্যমে একে অপরের সাথে সম্পর্কিত। প্রতিটি মৌসুম শেষে, চীনা সুপার লিগের পয়েন্ট তালিকায় সর্বনিম্ন পয়েন্ট অর্জনকারী দুইটি ক্লাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে চীন লিগ ওয়ানে অবনমিত হয়; পক্ষান্তরে, উক্ত মৌসুমে চীন লিগ ওয়ানের চ্যাম্পিয়ন এবং রানার-আপ ক্লাব স্বয়ংক্রিয়ভাবে চীনা সুপার লিগে উন্নীত হয়।

পরিসংখ্যান

সম্পাদনা

চ্যাম্পিয়ন

সম্পাদনা

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এপর্যন্ত সর্বমোট ৯টি ক্লাব চীনা সুপার লিগে শিরোপা জয়লাভ করেছে; যার মধ্যে ৩টি ক্লাব একাধিকবার জয়লাভ করেছে। চীনা সুপার লিগের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ক্লাব হচ্ছে কুয়াংচৌ, যারা এপর্যন্ত ৮টি শিরোপা জয়লাভ করেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে শানতুং থাইশান, যারা এপর্যন্ত ৪ বার এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে ক্লাব সাংহাই পোর্ট, যারা এপর্যন্ত ২ বার শিরোপা জয়লাভ করেছে।

মৌসুম চ্যাম্পিয়ন
২০০৪ শেনচেন
২০০৫ তালিয়েন শিতো
২০০৬ শানতুং থাইশান
২০০৭ ছাংছুন ইয়াথাই
২০০৮ শানতুং থাইশান (২)
২০০৯ বেইজিং কুওয়ান
২০১০ শানতুং থাইশান (৩)
মৌসুম চ্যাম্পিয়ন
২০১১ কুয়াংচৌ
২০১২ কুয়াংচৌ (২)
২০১৩ কুয়াংচৌ (৩)
২০১৪ কুয়াংচৌ (৪)
২০১৫ কুয়াংচৌ (৫)
২০১৬ কুয়াংচৌ (৬)
২০১৭ কুয়াংচৌ (৭)
মৌসুম চ্যাম্পিয়ন
২০১৮ সাংহাই পোর্ট
২০১৯ কুয়াংচৌ (৮)
২০২০ চিয়াংসু সুনিং
২০২১ শানতুং থাইশান (৪)
২০২২ উহান থ্রি টাউনস
২০২৩ সাংহাই পোর্ট (২)
২০২৪

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

টেমপ্লেট:চীনা সুপার লিগ টেমপ্লেট:চীনে ফুটবল টেমপ্লেট:এএফসির লিগ