চিন্দোড়ি লীলা
চিন্দোড়ি লীলা (১৯৪৩ - ২১শে জানুয়ারী ২০১০) ছিলেন একজন ভারতীয় মঞ্চ এবং চলচ্চিত্র অভিনেত্রী, রাজনীতিবিদ এবং সাহিত্যিক। ভারতীয় শিল্পকলায় তাঁর অবদানের জন্যে ভারত সরকার তাঁকে ১৯৮৮ দেশের চতুর্থ সর্ব্বোচ্চ পুরস্কার পদ্মশ্রী দ্বারা ভূষিত করেছিল।
চিন্দোড়ি লীলা | |
---|---|
জন্ম | চিন্দোড়ী লীলা ১৯৪৩ |
মৃত্যু | ২১ জানুয়ারি ২০১০ | (বয়স ৭২–৭৩)
পেশা | অভিনেত্রী, সাহিত্যিক |
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাচিন্দোড়ি লীলা ১৯৪৩ সালে কর্ণাটকের দেবাঙ্গেরেতে পেশাদার থিয়েটার শিল্পীদের এক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাবা চিন্দোড়ি বীরাপ্পা ১৯২৮ সালে কে.বি.আর. নট্ট কোম্পানী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। লীলা মাত্র আট বছর বয়সে প্রথম মঞ্চে অভিনয় করেছিলেন, শিবযোগী সিদ্ধারাম (১৯৫১) নাটকে শিশু সিদ্ধরামের ভূমিকায়। লীলা হার্ট অ্যাটাকের শিকার হন এবং ২০১০ সালের ১৮ই জানুয়ারী করোনারি আর্টারি বাইপাস সার্জারি অপারেশন হয় তাঁর[১]। তিন দিন পরে ২১ জানুয়ারী তাঁর মৃত্যু হয়[২]। দেবাঙ্গেরেতে পারিবারিক বাসভবনে শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় লীলার।
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৬০ থেকে ১৯৭৫-এর মধ্যে, কর্ণাটকের প্রায় প্রতিটি শহরে হাজার হাজার বার মঞ্চস্থ হওয়া 'হলি হুগুডি' নাটকের নামভূমিকায় এক গ্রাম্য বালিকার চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে লীলা জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওঠেন। পরবর্তী বছরগুলিতে শকুন্তলা, লঙ্কাদহন, মাতঙ্গা কন্যা, হেমারেডি মালাম্মা, গুণসাগরী, বীর বভ্রূবাহন,বেলী বাঙ্গারা ইত্যাদি থিয়েটারে তাঁর অভিনয় কন্নড় দর্শকদের মোহিত করে রাখে। আরও পরে, লীলার অভিনীত আরও দুটি মঞ্চসফল নাটক হল পোলিশানা মাগালু এবং ধর্মদা দৌর্জন্য। পোলিশানা মাগালু নাটকটি ৪৫০০ বার অভিনীত ও প্রদর্শিত হয়ে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে নথিভুক্ত রয়েছে।
লীলা ২০০০ সালে কর্ণাটক সরকারের সহায়তায় তাঁর কিত্তুরু চেন্নামা, টিপু সুলতান এবং জগজ্যোতি বাসবেশ্বর নাটক উপস্থাপনের জন্য যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেছিলেন। ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি তাঁর পারিবারিক নাটক সংস্থা কে.বি.আর. কোম্পানির হাল ধরেন এবং তিন দশক ধরে এই দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর নিজের শহর দেবাঙ্গেরেতে তিনি চিন্দোড়ি লীলা কলাক্ষেত্র স্থাপন করেছেন এবং বেলাগাভিতে তিনি চিন্দোড়ি লীলা রঙ্গমন্দির এবং কন্নাড সংস্কৃতকলা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ অবধি লীলা কর্ণাটক নাটক অকাদেমির সভাপতি ছিলেন। এছাড়া তিনি একটি মেয়াদে বা ৬ বছরের জন্যে কর্ণাটক বিধানসভার সদস্যও ছিলেন[২]। তিনি কিত্তুর চেন্নামা, গালী গোপুরা, কৃষ্ণদেবরায় এবং শরণপঞ্জার মতো ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তিনি অন্ধ সংগীতশিল্পী পঞ্চাশরী গাওয়াইয়ের বিষয়ে হংসলেখা নামে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেছিলেন, যেটি অসংখ্য কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য পুরস্কার জিতেছিল। তিনি আরজেএসের রবীন্দ্রকলাক্ষেত্রের শিশুদের "হাস্য কালাহ" নাটকে অভিনয়ের জন্যে প্রশিক্ষণও দিয়েছেন।
সম্মাননা ও স্বীকৃতি
সম্পাদনাথিয়েটার এবং মঞ্চাভিনয়ে তাঁর অবদানের জন্যে লীলা বহু পুরস্কার লাভ করেছেন। উল্লেখযোগ্য কিছু পুরস্কার হলঃ
- কর্ণাটক সরকার দ্বারা প্রদত্ত রাজ্যোতসব পুরস্কার, ১৯৮৫
- কর্ণাটক নাটক অকাদেমি পুরস্কার, ১৯৯৪
- কর্ণাটক সরকার দ্বারা প্রদত্ত গুবি বীর্ণা পুরস্কার, ২০০৩
- সংগীত নাটক অকাদেমি পুরস্কার
- পদ্মশ্রী পুরস্কার, ১৯৮৮
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Prakash Upadhyaya, Chindodi Leela's condition is critical আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ৮ জুলাই ২০১২ তারিখে One India. Retrieved on 22 January 2010.
- ↑ ক খ "Karnataka theatre personality Chindodi Leela dead"। India Times। ২২ জানুয়ারি ২০১০। ২৭ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১০।