গ্রিফিথের পরীক্ষা
গ্রিফিথের পরীক্ষা[১] হল স্যার ফ্রেডরিক গ্রিফিথ[২] কর্তৃক করা ব্যাকটেরিয়ার রূপান্তরভবন[৩][৪] পরীক্ষা বা ব্যাকটেরিয়াল ট্রান্সফরমেশন পরীক্ষা (১৯২৮)। এটি ছিল বংশগতির বাহক হিসেবে ডিএনএ-কে উপস্থাপিত করার প্রথম ধাপ। এই পরীক্ষায় গ্রিফিথ ডিপ্লোকক্কাস নিউমোনি নামক ব্যাকটেরিয়ার সাহায্য নেন যা ফুসফুসের সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম। এই ব্যাকটেরিয়ার দুটি স্ট্রেন তিনি চয়ন করেন—
- অসংক্রামক বা অ্যাভিরুলেন্ট স্ট্রেন: R-II স্ট্রেন ব্যাকটেরিয়ার কোশপ্রাচীরে ক্যাপসুল না থাকায় এটির কলোনিটি অমসৃণ (Rough) দেখায়। এটি রোগ সৃষ্টিতে অক্ষম।
- সংক্রামক বা ভিরুলেন্ট স্ট্রেন: S-III স্ট্রেন ব্যাকটেরিয়ার কোশপ্রাচীরে ক্যাপসুল থাকায় এটির কলোনিটি মসৃণ (Smooth) দেখায়। এটি রোগ সৃষ্টিতে সক্ষম।
পরীক্ষাটি গ্রিফিথ কিছু ইঁদুর নেন ও চারটি ধাপে সম্পন্ন করেন:
- প্রথম পরীক্ষায় একটি ইঁদুরের দেহে অসংক্রামক R-II ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করালে দেখা গেল সেটি জীবিত আছে।
- দ্বিতীয় পরীক্ষায় একটি ইঁদুরের দেহে সংক্রামক S-III ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করালে দেখা গেল সেটির মৃত্যু হয়েছে।
- তৃতীয় পরীক্ষায় একটি ইঁদুরের দেহে তাপ প্রয়োগে মৃত সংক্রামক S-III ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করালে দেখা গেল সেটি জীবিত আছে।
- চতুর্থ পরীক্ষায় একটি ইঁদুরের দেহে তাপ প্রয়োগে মৃত সংক্রামক S-III ব্যাকটেরিয়া ও জীবিত অসংক্রামক R-II ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করালে দেখা গেল সেটির মৃত্যু হয়েছে।
চতুর্থ পরীক্ষায় মৃত ইঁদুরটির হৃৎপিন্ড থেকে রক্ত নিয়ে গ্রিফিথ পরীক্ষা করে জীবিত সংক্রামক S-III ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি দেখতে পান, অথচ তিনি মৃত সংক্রামক S-III ব্যাকটেরিয়া ইঁদুরের দেহে প্রবেশ করেছিলেন।
শেষ ফলাফল সম্পর্কে গ্রিফিথ মন্তব্য করেন যে, কোনো অজানা উপাদান মৃত সংক্রামক S-III ব্যাকটেরিয়া থেকে জীবিত অসংক্রামক R-II ব্যাকটেরিয়াতে প্রবেশ করেছে যা তাকে S-III তে রূপান্তরভবন ঘটিয়েছে। এটিকে তিনি রূপান্তরকারী বস্তু বলে অভিহিত করেন। যদিও তিনি এর জিনগত ব্যাখ্যা দিতে পারেননি।
এভারি-ম্যাকলয়েড-ম্যাককার্টি পরীক্ষা দ্বারা এই রহস্যের সমাধান করার চেষ্টা করা হয়েছিল।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Experiment। PubPub। ডিওআই:10.21428/cdd5dd5a।
- ↑ Griffith, Fred. (জানুয়ারি ১৯২৮)। "The Significance of Pneumococcal Types"। Journal of Hygiene। Cambridge University Press। 27 (2): 113–159। জেস্টোর 4626734। ডিওআই:10.1017/S0022172400031879। পিএমআইডি 20474956। পিএমসি 2167760 ।
- ↑ Lorenz, M. G.; Wackernagel, W. (১৯৯৪-০৯-০১)। "Bacterial gene transfer by natural genetic transformation in the environment"। Microbiological Reviews। 58 (3): 563–602। ডিওআই:10.1128/MMBR.58.3.563-602.1994। পিএমআইডি 7968924। পিএমসি 372978 ।
- ↑ Downie, A. W. (১৯৭২)। "Pneumococcal transformation — a backward view: Fourth Griffith Memorial Lecture" (পিডিএফ)। Journal of General Microbiology। 73 (1): 1–11। ডিওআই:10.1099/00221287-73-1-1 । পিএমআইডি 4143929। ২০১২-০৩-০২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১১-৩০।
আরও পড়ুন
সম্পাদনা- Daniel Hartl; Elizabeth Jones (২০০৫)। Genetics: Analysis of Genes and Genomes, 6th edition। Jones & Bartlett। 854 pages. আইএসবিএন ০-৭৬৩৭-১৫১১-৫
- Lehrer, Steven (২০০৬)। Explorers of the Body (2nd সংস্করণ)। United States: iUniverse, Inc। আইএসবিএন 0-595-40731-5।
- Avery, MacLeod, and McCarty (১৯৪৪)। "Studies on the Chemical Nature of the Substance Inducing Transformation of Pneumococcal Types: Induction of Transformation by a Desoxyribonucleic Acid Fraction Isolated from Pneumococcus Type III"। Journal of Experimental Medicine। 79 (1): 137–158। ডিওআই:10.1084/jem.79.2.137। পিএমআইডি 19871359। পিএমসি 2135445 ।
- (References the original experiment by Griffith. Original article ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৯ জুন ২০০৮ তারিখে and 35th anniversary reprint available.)