গোলাম সারোয়ার হুসেইনী

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

শাহ সৈয়দ গোলাম সারোয়ার হুসেইনী তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির লক্ষ্মীপুরের একজন রাজনীতিবিদ ও ধর্মীয় নেতা ছিলেন। তিনি তৎকালীন বঙ্গীয় আইনসভার একজন সদস্য ছিলেন।[] ১৯৩৭ সালে তিনি কৃষক প্রজা পার্টির টিকিটে আইনপ্রণেতা হিসেবে নির্বাচিত হলেও ১৯৪৬ সালে তিনি পরাজিত হন।[][]


গোলাম সারোয়ার হোসেনী
শ্যামপুর দায়রা শরীফ ছিল গোলাম সারোয়ার হোসেনীর বাসস্থান
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম
ধর্মইসলাম
আখ্যাসুন্নি
ব্যবহারশাস্ত্রহানাফি
রাজনৈতিক দলকৃষক শ্রমিক পার্টি
বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৩৮ – ১৯৪৫
সংসদীয় এলাকানোয়াখালী

জন্ম ও বংশ

সম্পাদনা

শাহ সৈয়দ গোলাম সারোয়ার হুসেইনী অবিভক্ত নোয়াখালী জেলার লক্ষ্মীপুর মহকুমার রামগঞ্জ থানার শ্যামপুর গাঁয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর বাপ-দাদারা শ্যামপুর দায়রা শরীফের পীর সাহেবান হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তাঁর পূর্বপুরুষরা দিল্লী হতে এ অঞ্চলের রায়পুরে এসেছিলেন।[]

সমালোচনা

সম্পাদনা

কলকাতা দাঙ্গার পর লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে হিন্দু জমিদার কতৃক মুসলমানদের বলি দেবার একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এই বিষয়টি নিয়ে সুরাহা হওয়ার জন্য গোলাম সারোয়ার হুসেইনী চৌকিদারের মারফৎ জমিদারের কাছে একটি চিঠি পাঠান, কিন্ত জমিদার এতে কোন রকম প্রতিউত্তর বা সাড়া দেয়নি। যার ফলে গোলাম সারোয়ার হুসেইনী সকালে শাহ্‌পুর বাজারে তার অনুগত ভক্ত এবং মুসলমানদের এক সমাবেশ ডাকেন। সেখানে গোলাম সারোয়ার হুসেইনী মুসলমানদের সেই সময়কার অবস্থান তুলে ধরেন এবং হিন্দু জমিদারকে উৎখাত করার ডাক দেন। নোয়াখালী দাঙ্গা সংঘটনের ক্ষেত্রে এই সমাবেশটি ভূমিকা পালন করার অভিযোগ আছে।[][]

মিয়ার ফৌজ

সম্পাদনা

গোলাম সারোয়ার হুসেইনী পীর ছাড়াও তিনি ছিলেন নোয়াখালী কৃষক সমিতির অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা। কৃষকের খাজনা মওকুফ, ঋণ সালিশি বোর্ড থেকে সুদ ব্যবসায়ীদের উৎখাত করা এবং জমিদারি বাজার বয়কট করার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি তৎকালীন নোয়াখালীর ক্ষমতাধর হিন্দু জমিদার এবং মহাজনদের চক্ষুশূল হয়েছিলেন।[]

রায়পুরের জমিদার চিত্তরঞ্জন রায় চৌধুরী নোয়াখালীতে তৎকালীন মুসলমানদের ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক শক্তিকে মেনে নিতে পারছিলেন না। ফলে এই নিয়ে তার সাথে গোলাম সারোয়ার হুসেইনীর দ্বন্দ্ব শুরু হয়। গোলাম সারোয়ার হুসেইনী এই বিষয়ে কংগ্রেসের বিভিন্ন নেতা এমনকি মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর কাছেও চিঠি পাঠিয়ে জমিদারের অত্যাচারের কথা জানান এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু কোন সাড়া না পেয়ে তিনি নিজেই চিত্তরঞ্জন রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধের ডাক দেন। ফলে তার অধীনে এক আধাসামরিক বাহিনী মিয়ার ফৌজ গড়ে উঠে।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Batabyal, Rakesh (২০০৫)। Communalism in Bengal: From Famine to Noakhali, 1943–47। New Delhi: Sage Publications। পৃষ্ঠা 305আইএসবিএন 0-7619-3335-2 
  2. "নোয়াখালীতে গান্ধী: সাম্প্রদায়িক হত্যাযজ্ঞের রক্তাক্ত অধ্যায়"বিবিসি বাংলা। ২ অক্টোবর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৯ 
  3. "হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা থামাতেই নোয়াখালী আসেন মহাত্মা গান্ধী"সময় টিভি। ২ অক্টোবর ২০১৯। ৮ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ অক্টোবর ২০১৯ 
  4. দিনেশচন্দ্র সিংহ (১৯৯৩)। নোয়াখালীর মাটি ও মানুষ। পৃষ্ঠা ২০। 
  5. "নোয়াখালীতে গান্ধী: সাম্প্রদায়িক হত্যাযজ্ঞের রক্তাক্ত অধ্যায়"। Archived from the original on ২০১৯-১১-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০৮ 
  6. "নোয়াখালীতে গান্ধী: সাম্প্রদায়িক হত্যাযজ্ঞের রক্তাক্ত অধ্যায়"। Archived from the original on ২০১৯-১১-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-০৮