গেদিক আহমেদ পাশা

উসমানীয় সাম্রাজ্যের ১৬তম উজিরে আজম

গেদিক আহমেদ পাশা (সার্বীয়: Гедик Ахмед-паша; মৃত্যু: ১৮ নভেম্বর ১৪৮২) ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের একজন রাজনীতিবিদ এবং প্রধান অ্যাডমিরাল। তিনি সুলতান মুহাম্মাদ ফাতিহ এবং দ্বিতীয় বায়েজীদের শাসনামলে উজিরে আজম এবং কাপুদান পাশা (উসমানীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[][]

গেদিক
আহমেদ
পাশা
کدك احمد پاشا
উসমানীয় সাম্রাজ্যের ১৬তম উজিরে আজম
কাজের মেয়াদ
১৪৭৪ – ১৪৭৭
সার্বভৌম শাসকমুহাম্মাদ ফাতিহ
পূর্বসূরীমাহমুদ পাশা
উত্তরসূরীকারামানি মুহাম্মাদ পাশা
উসমানীয় নৌবাহিনীর কাপুদান পাশা
আভলোনিয়ার সানজাক-বে
কাজের মেয়াদ
১৪৭৮ – আনু.১৪৮১
সার্বভৌম শাসকমুহাম্মাদ ফাতিহ
পূর্বসূরীঅজানা
উত্তরসূরীমেসিহ পাশা
আনাতোলিয়ার বেইলারবে
কাজের মেয়াদ
আনু.১৪৬২ – ১৪৭০
সার্বভৌম শাসকমুহাম্মাদ ফাতিহ
পূর্বসূরীইসহাক পাশা
উত্তরসূরীদাউদ পাশা
রোমের বেইলারবে
কাজের মেয়াদ
আনু.১৪৫১-১৪৬২ – আনু.১৪৫১-১৪৬২
সার্বভৌম শাসকমুহাম্মাদ ফাতিহ
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মগর্নজে পুনোশেভস (সার্বীয় স্বৈরশাসক)
মৃত্যু১৮ নভেম্বর ১৪৮২
এদির্নে প্রাসাদ, এদির্নে, উসমানীয় সাম্রাজ্য
মৃত্যুর কারণশ্বাসরোধ করে হত্যা
নাগরিকত্বউসমানীয়
শিক্ষাএন্দেরুন মক্তব
জীবিকারাজনীতিবিদ
সামরিক পরিষেবা
আনুগত্যউসমানীয় সাম্রাজ্য
শাখাউসমানীয় সেনাবাহিনী (আনু.১৪৫০-১৪৭৭ এবং ১৪৮১-১৪৮২)
উসমানীয় নৌবাহিনী (১৪৭৮–১৪৮১)
পদসেনাপতি
প্রধান অ্যাডমিরাল
যুদ্ধউসমানীয়-কারামানি যুদ্ধ
উসমানীয়-আক কোয়ুনলু যুদ্ধ
 • কয়ুলহিসারের যুদ্ধ (১৪৬১)
 • ওটলুকবেলির যুদ্ধ
 • কিরেলির যুদ্ধ
উসমানীয়-জেনোস যুদ্ধ
উসমানীয় ওট্রান্টো বিজয়
থিওডোরোর রাজত্ব
নেগ্রোপন্টের অবরোধ (১৪৭০)

ইতিহাস রচনার শেষ অবধি পর্যন্ত প্রাথমিক সূত্রে গেদিক আহমেদ পাশা সম্পর্কে খুব কমই জানা ছিল।[][][]

উসমানীয় সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়ে তিনি কারামানিদের নিয়ে উসমানীয় সম্প্রসারণকে প্রতিহতকারী সর্বশেষ আনাতোলীয় বেয়লিককে পরাজিত করেছিল।[] প্রায় ২০০ বছর ধরে কারামানিদের আনাতোলিয়ায় সবচেয়ে শক্তিশালী রাজত্ব ছিল। এমনকি শুরুর দিকে উসমানীয়দের চেয়েও বেশি শক্তিশালী ছিল। তারা কার্যকরভাবে রুম সালতানাতের উত্তরসূরি হয়েছিল।

গেদিক আহমেদ পাশা ভূমধ্যসাগরে ভেনিসদের বিরুদ্ধেও লড়াই করেছিলেন এবং ১৪৭৫ সালে সুলতান তাকে জেনোস বাহিনীর বিরুদ্ধে ক্রিমীয় খানাতকে সহায়তা করার জন্য প্রেরণ করেছিলেন। ক্রিমিয়ায় তিনি কাফা, সুদাক, বালাক্লাভা এবং অন্যান্য জেনোস দুর্গের পাশাপাশি রাজধানী মাঙ্গুপ এবং ক্রিমিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলসহ থিওডোরো রাজ্য জয় করেছিলেন। তিনি ক্রিমিয়ার খান মেনি আই গিরায়কে জেনোস বাহিনী থেকে উদ্ধার করেছিলেন।[] এই অভিযানের ফলে ক্রিমিয়া এবং সার্কাসিয়া উসমানীয় প্রভাবের ক্ষেত্রে প্রবেশ করে।

১৪৭৯ সালে যখন তিনি আভলোনার সানজাকের সানজাক-বে ছিলেন,[] তখন সুলতান মুহাম্মাদ ফাতিহ তাকে শকোদ্রা অবরোধের জন্য ১০ হাজার থেকে ৪০ হাজার সৈন্যের একটি বাহিনীকে নেতৃত্ব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।[] ১৪৭৯ সালের শেষের দিকে সুলতান তাকে নাপোলি এবং মিলানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ হিসাবে ভূমধ্যসাগরে উসমানীয় নৌবাহিনীর নেতৃত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেন। এ অভিযানের সময় গেদিক আহমেদ পাশা লেফকাদা, কেফালোনিয়া এবং জাকিনথোস দ্বীপ জয় করেছিলেন। যেহেতু ১৪৫৩ সালে মুহাম্মাদ ফাতিহ কনস্টান্টিনোপল জয় করেছিলেন, তাই মুহাম্মাদ ফাতিহ নিজেকে রোমান সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকারী হিসাবে দেখেছিলেন এবং তার রাজবংশের অধীনে রোমান ভূমিগুলিকে পুনরায় একত্রিত করার জন্য ইতালি বিজয়কে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেছিলেন। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গেদিক আহমেদ পাশাকে নৌবাহিনীসহ ইতালীয় উপদ্বীপে পাঠানো হয়।[]

নাইটস হস্পিটালারের কাছ থেকে রোডসকে জয় করার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পরে, আহমেদ ১৪৮০ সালে সফলভাবে ইতালীয় বন্দর শহর ওট্রান্টো দখল করেছিলেন।[] তবে খাদ্য ও সরবরাহের অভাবে তাকে একই বছর তার বেশিরভাগ সৈন্য নিয়ে আলবেনিয়ায় ফিরে আসতে হয়েছিল এবং ১৪৮১ সালে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

মুহাম্মাদ ফাতিহের মৃত্যু তা রোধ করেছিল। পরবর্তীতে সুলতানের উত্তরসূরি কে হবেন সেই সংগ্রামে আহমেদ দ্বিতীয় বায়েজীদের পক্ষ নিয়েছিলেন। তবে দ্বিতীয় বায়েজীদ আহমেদকে পুরোপুরি বিশ্বাস করেননি এবং তাকে বন্দী করেছিলেন। পরে ১৪৮২ সালের ১৮ নভেম্বর আহমেদ পাশাকে হত্যা করেন।[][১০]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Lewis, Bernard (২০০১)। The Muslim Discovery of Europe। W. W. Norton & Company। পৃষ্ঠা 31। আইএসবিএন 978-0-3932-4557-8 
  2. Kia, Mehrdad (২০১৭)। The Ottoman Empire: A Historical Encyclopedia [2 volumes]। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 78–79। আইএসবিএন 978-1-6106-9389-9 
  3. Stavrides, Théoharis (আগস্ট ২০০১)। The Sultan of Vezirs: The Life and Times of the Ottoman Grand Vezir Mahmud Pasha Angeloviu (1453–1474) (Ottoman Empire and Its Heritage Series, Volume 24)। Brill Academic Publishers, Inc.। পৃষ্ঠা 65–66। আইএসবিএন 90-04-12106-4 
  4. Reindl-Kiel, Hedda। "GEDİK AHMED PAŞA"TDV İslam Ansiklopedisi (তুর্কি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-২৫ 
  5. Heath W. Lowry (২০০৩)। The Nature of the Early Ottoman State। SUNY Press। পৃষ্ঠা 116। আইএসবিএন 978-0-7914-8726-6। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৩While little is known about the early years of Gedik Ahmed Pasa, the Turkish scholar Mükrimin Halil Yinanç has cited unnamed Western sources claiming that he was of Palaiologan origin. More recently, the 1985 study on the Serbian region of Vranje by Aleksandar Stojanovski, has established that Gedik Ahmed Pasa was a member of the minor Serbian aristocracy 
  6. Imber, Colin (২০১৯)। The Ottoman Empire, 1300–1650: The Structure of Power। Macmillan। পৃষ্ঠা 25। আইএসবিএন 978-1-3520-0414-4 
  7. Setton, Kenneth M. (১৯৭৮), The Papacy and the Levant (1204–1571), Volume II: The Fifteenth Century, DIANE Publishing, পৃষ্ঠা 340, আইএসবিএন 0-87169-127-2 
  8. Babinger, Franz (১৯৭৮)। Mehmed the Conqueror and His TimePrinceton University Press। পৃষ্ঠা 365। আইএসবিএন 978-0-691-01078-6 
  9. Ágoston, Gábor (২০১০)। Encyclopedia of the Ottoman Empire। Infobase Publishing। পৃষ্ঠা 427। আইএসবিএন 978-1-4381-1025-7 
  10. Lambton, Ann; Lewis, Bernard (১৯৮৪)। The Cambridge History of Islam, Volume 2। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 309। আইএসবিএন 978-0-5212-9135-4 

আরও পড়ুন

সম্পাদনা
  • E. Hamilton Currey, Sea-Wolves of the Mediterranean, London, 1910
  • Bono, Salvatore: Corsari nel Mediterraneo (Corsairs in the Mediterranean), Oscar Storia Mondadori. Perugia, 1993.

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
রাজনৈতিক দপ্তর
পূর্বসূরী
মাহমুদ পাশা
উসমানীয় সাম্রাজ্যের উজিরে আজম
১৪৭৪–১৪৭৭
উত্তরসূরী
কারামানি মুহাম্মাদ পাশা