গাইবান্ধা জেলা
গাইবান্ধা জেলা বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগ এর একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। প্রশাসন গাইবান্ধা জেলা ১৮৫৮ সালের ২৭ আগস্ট বৃহত্তর রংপুর জেলার অধীনে ভবানীগঞ্জ নামে একটি মহকুমা গঠিত হয়। ১৮৭৫ সালে ভবানীগঞ্জ নদীগর্ভে বিলীন হলে মহকুমা সদর দপ্তর গাইবান্ধায় স্থানান্তরিত হয়। এ এলাকা এক সময় বাহরবন্দ পরগনার অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯২৩ সালে গাইবান্ধা শহরটি মিউনিসিপ্যালিটিতে রূপান্তর হয়। ১৯৬০ সালে মিউনিসিপ্যালিটি বিলুপ্ত হয়ে গাইবান্ধা টাউন কমিটি গঠিত হয়। ১৯৭৩ সালে শহর এলাকা গাইবান্ধা পৌরসভায় রূপান্তরিত হয়। গাইবান্ধা জেলা গঠিত হয় ১৯৮৪ সালে।
গাইবান্ধা | |
---|---|
জেলা | |
গাইবান্ধা জেলা | |
বাংলাদেশে গাইবান্ধা জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°১৫′ উত্তর ৮৯°৩০′ পূর্ব / ২৫.২৫০° উত্তর ৮৯.৫০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রংপুর বিভাগ |
গাইবান্ধা জেলা | ১৯৮৪ |
সরকার | |
• জেলা প্রশাসক | চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ |
আয়তন | |
• মোট | ২,১৭৯.২৭ বর্গকিমি (৮৪১.৪২ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০২২)[১] | |
• মোট | ২৫,৫৬,৭৬০ |
• জনঘনত্ব | ১,২০০/বর্গকিমি (৩,০০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৪.০৩% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৫৭০০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫৫ ৩২ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
ইতিহাস
সম্পাদনাকথিত আছে আজ থেকে প্রায় ৫২০০ বছর আগে গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় বিরাট রাজার রাজধানী ছিল। বিরাট রাজার প্রায় ৬০ (ষাট) হাজার গাভী ছিল। সেই গাভী বাধার স্থান হিসাবে গাইবান্ধা নামটি এসেছে বলে কিংবদন্তি রয়েছে। ১৯৮৪ ইং সালের ১৫ আগস্ট, বুধবা্র, ২রা ফাল্গুন ১৩৯০ বাংলা, ১২ ই জমাদিউল আউয়াল ১৪০৪ হিজরী সনে গাইবান্ধা জেলা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।[২]
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনাগাইবান্ধা জেলার উত্তরে কুড়িগ্রাম জেলা ও রংপুর জেলা, দক্ষিণে বগুড়া জেলা, পূর্বে জামালপুর জেলা ও কুড়িগ্রাম জেলা ও ব্রহ্মপুত্র নদ, পশ্চিমে দিনাজপুর জেলা, জয়পুরহাট জেলা ও রংপুর জেলা।
প্রশাসনিক এলাকাসমূহ
সম্পাদনাগাইবান্ধা জেলা সংসদীয় আসনঃ ৫টি; ইউনিয়নের সংখ্যাঃ ৮১ টি; মৌজাঃ ১০৮২টি; গ্রামের সংখ্যাঃ ১২৫০ টি; এছাড়াও ৪টি পৌরসভা ( গাইবান্ধা, গোবিন্দগঞ্জ, সুন্দরগঞ্জ, ও পলাশবাড়ী) নিয়ে গঠিত।
গাইবান্ধা জেলা সাতটি উপজেলায় বিভক্ত। এগুলো হচ্ছে:
জনসংখ্যা
সম্পাদনা২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গাইবান্ধা জেলার মোট জনসংখ্যা ২৫,৬২,২৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১২,৩৮,৬২১ জন এবং মহিলা ১৩,১৭,৯৪৪ জন।[৩]
মুসলিম ২২০৫৫৩৯, হিন্দু ১৬৭৮৯৭, বৌদ্ধ ৫০, খ্রিস্টান ২৯২০ এবং অন্যান্য ২৮৪৯। এ উপজেলায় সাঁওতাল, ওরাও প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
শিক্ষা
সম্পাদনাশিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ৫৪.০৩%
প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৬৬টি, নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪৪টি, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৯টি, বেসরকারি মাধ্যমিক ৩৬১টি বেসরকারি কলেজ ৪৮টি, সরকারি কলেজ ৮টি, কমিউনিটি স্কুল ৯০টি, কিন্ডার গার্টেন ১৯৬টি, দাখিল ও তদুর্ধ্ব মাদ্রাসার ২১৩টি, এবতেদায়ী মাদ্রাসা ২৪১টি, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (ভিটিআই) ১টি, প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (পিটিআই) ১টি, এগ্রিকালচার ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (এটিআই) ১টি, ইন্সটিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি (আইএলএসটি) ১টি, বিপিএড কলেজ ১টি, বিএড কলেজ ১টি, আইন কলেজ ১টি, হোমিও কলেজ ১টি, যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ১টি।
উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৮৫), জুমার বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৩), সাঘাটা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯০৪), পলাশবাড়ী এস এম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১১), গোবিন্দগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১২), গাইবান্ধা ইসলামিয়া হাই স্কুল (১৯১৪), হরিপুর বিএসএম বালিকা বিদ্যালয় (১৯১৪), খোর্দ কোমরপুর হাই স্কুল (১৯১৫), শিবরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৯১৬), গাইবান্ধা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৬), বামনডাঙ্গা এম এন হাই স্কুল (১৯১৭), তুলশীঘাট কাশীনাথ হাই স্কুল (১৯১৭), বাসুদেবপুর চন্দ্র কিশোর স্কুল এন্ড কলেজ (১৯১৭), পিয়ারাপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৭), বেলকা এম.সি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), সাদুল্লাপুর বহুমূখী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৮), কামদিয়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১), চাপাদহ বি. এল উচ্চ বিদ্যালয়(১৯১৯), কাজী আজহার আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০), রওশনবাগ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৬), কাটগড়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭), ভরতখালী হাই স্কুল (১৯২৯), নয়াবন্দর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৭২)।
অর্থনীতি
সম্পাদনাগাইবান্ধা জেলায় কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান ১,৬৩,৫২৯টি, ক্ষুদ্র শিল্প ২,১২৩ টি, মাঝারি শিল্প ৫টি, বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান ১ টি।[৪]
এই জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা কোচাশহর ইউনিয়ন কুটির শিল্পে খুবই উন্নত। এখানে ১৯৬০-এর দশক থেকে সুয়েটার, মুজা, মাফলার ইত্যাদি তৈরী করা হয়। তবে গাইবান্ধা অঞ্চলের মানুষের গড় আয় দৈনিক মাএ ৩৭৫ টাকা।
স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
সম্পাদনা১. জেনারেল হাসপাতাল: ০১টি
২. উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: ০৬টি
৩. বেসরকারি হাসপাতাল/ক্লিনিক: ৪৬টি
৪. পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র সংখ্যা: ৫৪টি
৫. ইপিআই কভারেজ: ৯৯%
৬. স্যানিটেশন কাভারেজ: ৮৯%
৭. মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র: ০৩ টি
৮. টিবিক্লিনিক: ০১ টি
৯. নার্সিং কলেজ: ০৩টি
১০. পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র: ০১টি
নদ ও নদী
সম্পাদনাপত্র-পত্রিকা
সম্পাদনা- দৈনিক পত্রিকা:
৫টি (দৈনিক ঘাঘট, মাধুকর, আজকের জনগণ, জনসংকেত ও গাইবান্ধার দর্পন)
- সাপ্তাহিক পত্রিকা:
১০টি (অবিরাম, গণমানুষের খবর, গাইবান্ধার কথা, জনসেনা, পলাশবাড়ী, নুরজাহান, গণ উত্তোরণ, গাইবান্ধার বুকে, চলমান জবাব ও আমাদের গাইবান্ধা)
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনা- কামারের হাট (গোবিন্দোগঞ্জ) [৫]
- বালাসী ঘাট, (ফুলছড়ি)[৬]
- পেরিমাধব জমিদার বাড়ি, (সাদুল্লাপুর)
- প্রাচীন মাস্তা মসজিদ, (গোবিন্দগঞ্জ)
- ফুলপুকুরিয়া পার্ক ( গোবিন্দগঞ্জ)
- নলডাঙ্গার জমিদার বাড়ি, (সাদুল্লাপুর)
- ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার, (ফুলছড়ি)
- রংপুর সুগার মিলস্ লিমিটেড, (মহিমাগঞ্জ, গোবিন্দগঞ্জ)
- ঘেগার বাজার মাজার, (সাদুল্লাপুর)
- ড্রীম সিটি পার্ক,(সাঘাটা)
- আলিবাবা থিম পার্ক (সুন্দরগঞ্জ)[৭]
- গাইবান্ধা পৌর পার্ক,(গাইবান্ধা সদর)
- ড্রীমল্যান্ড, (পলাশবাড়ী সদর)
- হযরত শাহ জামাল মাজার শরীফ, (সাদুল্লাপুর)
- জামালপুর শাহী মসজিদ, (সাদুল্লাপুর)
- এসকেএস ইন, (গাইবান্ধা সদর)
- রাজাবিরাট প্রসাদ, (গোবিন্দগঞ্জ)
- পাকড়িয়া বিল, (সাদুল্লাপুর)
- বামনডাঙ্গা জমিদার বাড়ি, (সুন্দরগঞ্জ)
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
সম্পাদনা- আবু হোসেন সরকার, পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
- শাহ্ আব্দুল হামিদ, গণপরিষদের প্রথম স্পীকার।
- আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, সাহিত্যিক
- মকবুলার রহমান সরকার, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
- মোহাম্মদ হাসান আলী খান: সাবেক নৌ প্রধান।
- ফজলে রাব্বী মিয়া, ডেপুটি স্পিকার।
- রুবেল মিয়া (ফুটবলার)
- আহমেদ হোসেইন, অবিভক্ত বাংলার কৃষিমন্ত্রী।
- ফজলে রাব্বি চৌধুরী, ভূমি সংস্কার ও পুনর্বাসন মন্ত্রী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান
- বদিউল আলম, বীর উত্তম
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে জেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ২৫ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১৬।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Gaibandha.gov.bd
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩১ মে ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ গোবিন্দোগঞ্জ
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১৩।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ অক্টোবর ২০১৩।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাএই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |