গঙ্গেশ্বর শিবমন্দির
গঙ্গেশ্বর শিবমন্দির ভারতের ওড়িশা রাজ্যের ভুবনেশ্বরে অবস্থিত একটি শিবমন্দির।[১] এটা ভুবনেশ্বরের পুরাতন শহরে তালাবাজার চক থেকে গঙ্গা-যমুনা মন্দিরের দিকে যাওয়া গঙ্গা-যমুনা রাস্তার বামপাশে অবস্থিত। এটা লিঙ্গরাজ মন্দির থেকে ২০০ মিটার উত্তর-পূর্বে, লক্ষ্যেশ্বর মন্দির থেকে ৫০ মিটার উত্তরে, সুবর্ণেশ্বর মন্দির থেকে ২০০ মিটার দক্ষিণে এবং গৌরিশঙ্কর মন্দির থেকে ১০০ মিটার পূর্বে অবস্থিত। মন্দিরটি পূর্বমুখী এবং এখানকার অধিষ্ঠিত দেবতা বৃত্তাকার যোনিপীঠের উপর শিবলিঙ্গ। মন্দিরটি দেখাশোনার দায়িত্বে আছে গঙ্গা-যমুনা সংগঠন।
গঙ্গেশ্বর শিবমন্দির | |
---|---|
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
ঈশ্বর | শিবলিঙ্গ |
অবস্থান | |
অবস্থান | ভুবনেশ্বর |
রাজ্য | ওড়িশা |
দেশ | ভারত |
স্থানাঙ্ক | ২০°১৪′৩৩″ উত্তর ৮৫°৫১′১৭″ পূর্ব / ২০.২৪২৫০° উত্তর ৮৫.৮৫৪৭২° পূর্ব |
স্থাপত্য | |
ধরন | কলিঙ্গ স্থাপত্যশৈলী |
সম্পূর্ণ হয় | ১৩-১৪ শতক |
উচ্চতা | ১৮ মি (৫৯ ফু) |
কিংবদন্তি
সম্পাদনাস্থানীয়দের মধ্যে একটি বিশ্বাস প্রচলিত আছে যে দেবী পার্বতী একমারা ক্ষেত্রে কীর্তি ও বাসা দানবকে হত্যা করার পরে তৃষ্ণার্ত বোধ করলে দেবতা শিব তার ত্রিশূলের আঘাতে ভূমি থেকে একটি জলধারার সৃষ্টি করেন। এই জল ধারণের জন্য নদী দেবী গঙ্গা-যমুনাও ডাক পান। এই ঘটনার প্রেক্ষাপিটে গঙ্গা শাসনকালে গঙ্গেশ্বর ও যমুনেশ্বর নামে দুটি যমজ মন্দির ওড়িশাতে তৈরি হয়। বর্তমানে মন্দিরটি পূর্বের মন্দিরের উপর সংস্কারকৃত যেখানে প্রথমদিকে ব্যবহৃত নির্মাণ উপকরণই ব্যবহার করা হয়।
বর্ণনা
সম্পাদনামন্দিরটির পুরাতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য এবং বাইরের দেয়ালের ভাস্কর্য থেকে অনুমান করা হয় যে মন্দিরটি ১৩-১৪ শতকে গঙ্গা শাসনকালে নির্মিত। মন্দিরটি রেখা দেউল শৈলীতে নির্মিত। বর্তমানে মন্দিরটিতে পূজা অর্চনা হয়। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস মন্দিরটি গঙ্গা শাসকদের হাতে নির্মিত হয়েছে। এখানে শিবরাত্রি, চন্দন যাত্রা, কার্তিক পূর্নিমা এবং জলাভিষেক উৎসব পালিত হয়। এছাড়া এখানে পৈতা দান, বিবাহ, বাগদানসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
মন্দিরটির দক্ষিণে যমুনেশ্বর মন্দির, উত্তর পূর্বে গঙ্গা-যমুনা রাস্তা। মন্দিরটির পূর্বে, পশ্চিমে এবং উত্তরে মন্দির চত্ত্বরের দেয়ালের বাইরে ধানক্ষেত। মন্দিরটি পূর্বমুখী।
স্থাপত্যশৈলী
সম্পাদনামন্দিরটি পঞ্চরথ ধরনের যার বিমানটি বর্গাকার এবং পূর্বদিকে একটি সম্মুখ পোর্চ রয়েছে। বিমানের পরিমাপ ৩.৩৫ বর্গমিটার ও সম্মুখ পোর্চের পরিমাপ ০.২৫ মিটার। তিনপাশের পার্শ্বদেবতাদের কুলুঙ্গির উচ্চতা ০.৬৩ মিটার এবং ০.৩৩ মিটার। পশ্চিমের কুলুঙ্গিতে চারহাতযুক্ত বিষ্ণু ত্রিভঙ্গ অবস্থায় পূর্ণ প্রস্ফুটিত ফুলের উপর দাঁড়িয়ে আছে। মূর্তিটির উপরের ডান হাতে বারদা মুদ্রা এবং নিচের ডান হাত চাকা ধরে আছে। মাথার পিছে কিরীট মুকুট এবং মকর তোরণ আছে। উত্তরের কুলুঙ্গিতে চারহাতযুক্ত পার্বতীর মূর্তি আছে যা সাম্প্রতিক সময়ে যোগ হয়েছে। দক্ষিণের কুলুঙ্গি ফাঁকা।
মন্দিরের উভয় জঙ্ঘাতে বিভিন্ন নিরপেক্ষ চিত্র খোদাই করা আছে। পশ্চিমের দেয়ালে তলাজঙ্ঘায় একজন মহিলা দুই হাতে একটি শিশু ধরে আছে। মহিলাটি মণিবন্ধ পরে আছে। উপর জঙ্ঘাতে একজন নায়িকা দাঁড়িয়ে আছে। কণিকা প্যাগার তলাজঙ্ঘায় দর্পণ মূর্তি এবং উপরজঙ্ঘায় পুরুষ মূর্তি আয়তাকার পাতলা জিনিস ধরে আছে বাম হাতে এবং ডান হাত হাঁটুর উপরে রাখা।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Lesser Known Monuments of Bhubaneswar by Dr. Sadasiba Pradhan (আইএসবিএন ৮১-৭৩৭৫-১৬৪-১)