গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য

বাঙালি সাংবাদিক ও লেখক

গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য হলেন ব্রিটিশ শাসন কলে একজন বাঙালি সম্পাদক জিনি চাপাখানা বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। []

কৃতিত্ব

সম্পাদনা

গঙ্গাকিশোর হুগলী জেলার অন্তর্গত শ্রীরামপুরের কাছাকাছি জায়গার অধিবাসী ছিলেন। তার জন্ম আনুমানিক ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে হাওড়া-কাটোয়া রেলপথের অগ্রদ্বীপ স্টেশনের কাছে বহড়া গ্রামে। শ্রীরামপুরের খ্রিস্টান পাদ্রীদের পরিচালিত ছাপাখানায় তিনি কাজ শেখেন। কিছুদিন পরে তিনি কলকাতায় গিয়ে স্বাধীনভাবে বই প্রকাশ কার্যে নিযুক্ত হন। গঙ্গাকিশোর বাংলা বই মুদ্রিত করে বইয়ের ব্যবসা শুরু করেন। তার সম্পাদিত প্রথম বাংলা বইয়ের নামে 'অন্নদামঙ্গল'। এটি ১৮১৬ খ্রিষ্টাব্দে মুদ্রিত হয়েছিল। তিনি নিজের কাজের সুবিধার জন্য একটি মুদ্রাযন্ত্র স্থাপন করেন। এটি 'বাঙ্গাল গেজেট প্রেস' নামে পরিচিত ছিল। তৎকালীন অনেক প্রসিদ্ধ গ্রন্থকারের বই এই মুদ্রণযন্ত্রে মুদ্রিত হত। এছাড়া তিনি বাংলা ভাষায় একটি ইংরেজি ব্যাকরণ, ব্যাখ্যা ও টীকাসহ মূল ভগবদ্গীতা, চিকিৎসাশাস্ত্র সম্পর্কে কয়েকটি বই প্রভৃতি মুদ্রিত ও প্রকাশিত করেন। বইয়ের ব্যবসায় তিনি বিশেষ অর্থলাভ করেছিলেন। গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য সম্পাদিত বাঙ্গাল গেজেট নামের বাংলা ভাষায় মুদ্রিত সাপ্তাহিক পত্রিকাটি প্রথম বাংলা সংবাদপত্র বলে অনুমিত হয়। পত্রিকাটি ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই মে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।[] এই কাজে হরচন্দ্র রায় নামে আর এক ব্যক্তি তার সহযোগী ছিলেন। 'বাঙ্গালা গেজেট' অধিককাল প্রকাশিত হয়নি। পত্রিকাটির প্রকাশ বন্ধ হয়ে গেলে গঙ্গাকিশোর তার মুদ্রণযন্ত্রটি নিজের গ্রামে নিয়ে যান। তার মৃত্যুর পরেও এটি বর্তমান ছিল এবং অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির বই এতে মুদ্রিত হয়েছিল।[]


গঙ্গাকিশোর রচিত, সংকলিত ও প্রকাশিত গ্রন্থগুলি হল:

  • এ গ্রামার ইন ইংলিশ অ্যান্ড বেঙ্গলী (১৮১৬)
  • দায়ভাগ (১৮১৬-১৭)
  • দ্রব্যগুণ (১৮২৪)
  • চিকিৎসার্ণব
  • গঙ্গাভক্তি তরঙ্গিণী
  • লক্ষ্মীচরিত
  • বেতাল পঞ্চবিংশতি প্রভৃতি। []

মৃত্যু

সম্পাদনা

গঙ্গাকিশোর সম্ভবত ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দে মারা গিয়েছিলেন।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ১৭৫, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. "বাংলা সংবাদপত্র দিবস পালিত হল"। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৬-২৯ 
  3. জীবনীকোষ - শ্রীশশিভূষণ বিদ্যালঙ্কার - দ্বিতীয় খণ্ড