খুদাদাদ খান
খুদাদাদ খান, ভিসি (২০শে অক্টোবর, ১৮৮৮- ৮ই মার্চ, ১৯৭১), দক্ষিণ এশিয়া থেকে প্রথম ভিক্টোরিয়া ক্রস খেতাব বিজয়ী। ব্রিটিশ সরকার এই খেতাব ব্রিটিশ ও কমনওয়েলথ সামরিক বাহিনীসমুহকে প্রদান করতো। তিনিই জন্মগত সূত্রে প্রথম ভারতীয় যিনি ভিক্টোরিয়া ক্রস লাভ করেন।
খুদাদাদ খান | |
---|---|
জন্ম | ২০শে অক্টোবর, ১৮৮৮ ডাব, চকওয়াল জেলা |
মৃত্যু | ৮ মার্চ ১৯৭১ | (বয়স ৮২)
আনুগত্য | ব্রিটিশ ভারত |
সেবা/ | ব্রিটিশ ভারত সেনা |
পদমর্যাদা | সুবেদার |
ইউনিট | ১২৯তম ডিউক অফ কন্নাট'স ওন বালুকিস |
যুদ্ধ/সংগ্রাম | প্রথম বিশ্বযুদ্ধ |
পুরস্কার | ভিক্টোরিয়া ক্রস |
৩১শে অক্টোবর ১৯১৪ সালে, হোলবেক, বেলজিয়ামে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ২৬ বছর বয়সী খান অসমসাহসিকতাপূর্ন কাজের জন্য তিনি এই ভিক্টোরিয়া ক্রশ লাভ করেন।
বিস্তারিত
সম্পাদনাখুদাদাদ খান ২০শে অক্টোবর ১৮৮৮ সালে ব্রিটিশ ভারতের (এখন পাকিস্তান), পাঞ্জাব প্রদেশের, চকওয়াল জেলার (তারপর ঝিলাম জেলার একটি তহশীল), দাদ গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১২৯তম ডিউক অফ কন্নাট'স ওন বালুকিস, ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মির (বর্তমানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১১তম ব্যাটালিয়ন বালুচ রেজিমেন্ট) একজন সিপাহী ছিলেন। ব্যাটেলিয়ন ভারতীয় কর্পসের অংশ দিয়ে গঠিত, যা ১৯১৪ সালে ফ্রান্সে পাঠানো হয়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সময়ে পশ্চিমা সীমান্তে ব্রিটিশ যুদ্ধ বাহিনীদের সহায়তার জন্য।
১৯১৪ সালের অক্টোবর মাসে, জার্মানরা উত্তর বেলজিয়ামে এক ভয়াবহ আক্রমণের সুচনা করে। উদ্দেশ্য ছিল ফ্রান্সের বাউলংনে এবং বেলজিয়ামের নিওপোর্ট বন্দর দখল করা। একথা শোনার পর, নতুন যোগদান করা ১২৯তম বালুচ ব্যাটালিয়ন সেখানকার চাপে থাকা ব্রিটিশ বাহিনীর সাহায্যার্থে রনাঙ্গনে ছুটে যায়। ৩১শে অক্টোবর দুই কোম্পানি বেলুচি জার্মান বাহিনীকে হোলবেক সেক্টরের গেলুভেল্ট গ্রামের কাছাকাছি জায়গায় ঠেকিয়ে দেয়। বহু সংখ্যক বেলুচি প্রাণপনে যুদ্ধ করলেও তারা ব্যাপক সংখ্যায় হতাহত হয়। মেশিনগান দলের সিপাহী খুদাদাদ খান, আর একজন সহযোগী নিয়ে তার মেশিনগান দিয়ে সারাদিন বুলেট বর্ষণ করে জার্মান বাহিনীকে ঠেকিয়ে রেখেছিল। অপর মেশিনগানটি গোলার আঘাতে অচল হয়ে পড়েছিল আর তার সঙ্গীসাথীরা পালিয়ে গিয়েছিল। খুদাদাদ খান ছাড়া বাকী যোদ্ধারা সবাই হয় বুলেটের আঘাতে বা বেয়নেটের খোঁচায় মারা যায়। গুরুতরভাবে আহত হওয়া সত্ত্বেও, তিনি ক্রমাগত তার বন্দুক দিয়ে কাজ চালিয়ে গিয়েছেন। শত্রুরা তাকে মৃত ভেবে ছেড়ে দেয়, কিন্তু রাত্রে সে চরম আহত অবস্থায়ও তিনি হামাগুড়ি দিয়ে তার রেজিমেন্টে ফিরে আসে। ধন্যবাদ তার সাহসীকতার, এবং তার সহকর্মী বেলুচীদের, তারা জার্মান বাহিনীকে ঠেকিয়ে রেখেছিল ভারতীয় ও ব্রিটিশ সৈন্য না আসা পর্যন্ত। তারা সীমাকে জোরদার করে রেখে ছিল এবং প্রতিরোধ করেছিল জার্মান সেনাবাহিনী অত্যাবশ্যক জায়গাগুলোতে পৌঁছনো থেকে। তার এই তার সাহসিকতা ও বীরত্ব অতুল কীর্তির জন্য সিপাহী খুদাদাদ খান ভিক্টোরিয়া ক্রশ পদকে ভুষিত হন।[১][২]
খুদাদাদ খান সুবেদার হিসেবে সামরিক বাহিনী থেকে অবসর নেন। তিনি ১৯৭১ সালে মারা যান এবং তাকে মান্ডি বাহাউদ্দিনের ২৫নং চাকে সমাহিত করা হয়েছে। তার ভিক্টোরিয়া ক্রশ প্রদর্শন করা হয়, তার পৈতৃক বাড়ি ডাব গ্রাম (চকওয়াল), পাকিস্তানে।
আরও দেখুন
সম্পাদনা- * আহমেদ, মেজর জেনারেল রাফিউদ্দিন। (১৯৯৮)। বালুচ রেজিমেন্টের ইতিহাস ১৮২০-১৯৩৯। এবোটাবাদঃ বালুচ রেজিমেন্টাল সেন্টার। আইএসবিএন ১-৮৪৭৩৪-১৩০-৬
- Thatcher, WS. (1932). The Fourth Battalion, Duke of Connaught's Own, Tenth Baluch Regiment in the Great War. Cambridge: The University Press. আইএসবিএন ১-৮৪৭৩৪-৭৫২-৫
- Qureshi, Lt Col IA. (1966). History of 11th Battalion, the Baluch Regiment. Lahore: The Allied Press.
- Monuments to Courage (David Harvey, 1999)
- The Register of the Victoria Cross (This England, 1997)
- VCs of the First World War - 1914 (Gerald Gliddon, 1994)
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Thatcher, WS. (1932). The Fourth Battalion, Duke of Connaught's Own, Tenth Baluch Regiment in the Great War. Cambridge: The University Press. pp. 13-17. আইএসবিএন ১-৮৪৭৩৪-৭৫২-৫
- ↑ Ahmed, Maj Gen Rafiuddin. (1998). History of the Baloch Regiment 1820-1939. Abbottabad: The Baloch Regimental Centre. pp. 173-78. আইএসবিএন ১-৮৪৭৩৪-১৩০-৬
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- খুদা দাদ খান, ইন্টারনেট আর্কাইভ থেকে।