খন্দকার আবদুল হামিদ
খন্দকার আবদুল হামিদ (জন্মঃ ১ মার্চ ১৯১৮ ; মৃত্যু ২৩ অক্টোবর ১৯৮৩) বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ। তিনি একসময় দেশের মন্ত্রী হিসাবেও কিছু কাল দায়িত্ব পালন করেছেন। বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ধারণাটি তারই চিন্তাপ্রসূত যা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান পরবর্তীতে বাংলাদেশের সংবিধানে প্রবিষ্ট করেন। সাংবাদিকতায় অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৭৭ সালে সরকার তাকে একুশে পদক প্রদান করে।[১][২][৩]
সাংবাদিক জীবন
সম্পাদনাতার জন্ম ১ মার্চ, ১৯১৮ খ্রীস্টাব্দে বর্তমান শেরপুর জেলা শহরে। ১৯৪০ খ্রীস্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর কলকাতার পত্রিকায় সাংবাদিক হিসাবে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবনের শুরু। তিনি ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৮ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত আবুল মনসুর আহমদ সম্পাদিত)কলকাতা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেহাদ পত্রিকার সহকারী সম্পাদক এবং ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৬ খ্রীস্টাব্দ পর্যন্ত অধুনালুপ্ত দৈনিক মিল্লাত পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯ খ্রীস্টাব্দে তিনি মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁর প্রতিষ্ঠিত দৈনিক আজাদ পত্রিকার সম্পাদক নিয্ক্তু হন। এ ছাড়া তিনি ময়মনসিংহের চাষী পত্রিকার সাথেও জড়িত ছিলেন। ১৯৭৬ খ্রীস্টাব্দে লন্ডন থেকে বাংলা সাপ্তাহিক বাংলাদেশ প্রকাশ করেন। আশরি দশকের শেষভাগে প্রকাশিতদৈনিক দেশ পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ছিলেন। এতে "স্পষ্টভাষীর কলাম" শিরোনামে উপসম্পাদকীয় লিখতেন। "স্পষ্টভাষ"’ ছদ্মনামে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় সাপ্তাহিক উপসম্পাদকীয় "মঞ্চে-নেপথ্যে" ীরখ তিনি জনপ্রিয়তা অর্জ্জন করেছিলেন। এছাড়াও তিনি "মর্দেমুমীন" নামে দৈনিক আজাদ পত্রিকায় উপসম্পাদকীয় লিখতেন। প্রায় চল্লিশ বৎসর তিনি বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক ও "লিডার রাইটার" ছিলেন।
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনাভারত বিভাগের পর প্রথমে পূর্ব পাকিস্তান ও পরে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি পঞ্চাশের দশকে আওয়ামী লীগ; ষাটের দশকে মুসলিম লীগ (কাউন্সিল); সত্তর ও আশির দশকে যথাক্রমে ডেমোক্র্যাটিক লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) রাজনীতির সাথে তিনি সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ১৯৫৩ খ্রীস্টাব্দে রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফন্সন্টের মনোনয়নে এবং ১৯৬৫ সালে বিরোধী দলভুক্ত মুসলিম লীগের (কাউন্সিল) মনোনয়নে তদানীন্তন প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫৫ সালে তিনি তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব নিযুক্ত হলেও সেই পদে যোগ দেননি। ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত সাবেক পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদে কোয়ালিশন পার্লামেন্টারি পার্টির সেক্রেটারি ছিলেন। ১৯৫৪ সালে জেনারেল ইস্কান্দার মীর্জা সরকার ৯২-ক ধারার আওতায় জরুরি শাসন জারি করলে তিনি কারারুদ্ধ হন। ১৯৭৬ সালে ব্রিটিশ সরকারের আমন্ত্রণে ব্রিটেন সফর করেন। ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি’র প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন জামালপুর-৬ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় যোগ দেন। তিনি প্রথমে যুব উন্নয়ন মন্ত্রী, পরে বিচারপতি আবদুস সাত্তারের নেতৃত্বাধীন সরকারের স্বাস্খ্য ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং শ্রম, জনশক্তি ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "হামিদ, খন্দকার আবদুল"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-০৫।
- ↑ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। "একুশে পদকপ্রাপ্ত সুধীবৃন্দ" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ৫ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ জানু ২০২০।
- ↑ "স্ম র ণ : খন্দকার আবদুল হামিদ"। Daily Nayadiganta। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-০৫।