ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য

একুশে পদক প্রাপ্ত ব্যক্তি

ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য (জন্ম ২৩ মে ১৯৫২) একজন বাংলাদেশী দূরপাল্লার সাঁতারু এবং মুক্তিযোদ্ধা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারে তাকে ২০১৯ সালে মুক্তিযুদ্ধে একুশে পদক প্রদান করে।[][] ওয়ার্ল্ড ওপেন ওয়াটার সুইমিং এসোসিয়েশন তাকে ২০১৯ সালে বিশ্বের ৫০জন সর্বাধিক অ্যাডভান্সারস ওপেন ওয়াটার সাঁতারুর মধ্যে একজন হিসেবে ঘোষণা করে।

ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য
জন্ম (1952-05-23) ২৩ মে ১৯৫২ (বয়স ৭২)
জাতীয়তাবাংলাদেশি
পরিচিতির কারণদূরপাল্লার সাঁতারু, মুক্তিযোদ্ধা
পুরস্কারএকুশে পদক (২০১৯)

প্রারম্ভিক জীবন

সম্পাদনা

ক্ষিতীন্দ্র ১৯৫২ সালের ২৩ মে নেত্রকোণা জেলার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ক্ষিতীশ চন্দ্র বৈশ্য ও মাতার নাম সুপ্রভা রাণী বৈশ্য।[] তিনি সিলেটের এমসি কলেজ থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।[]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

১৯৮০ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরে দুই বছর ফেলোশিপ করেন।[] ১৯৮২ সালে বিমান নিয়ন্ত্রক হিসেবে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষে যোগদান করেন। ২০১১ সালে তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।[] পরবর্তীতে একই সংস্থায় অ্যাভিয়েশন নেভিগ্যাশন সার্ভিস পরামর্শক হিসেবে যোগ দেন।

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

ক্ষিতীন্দ্র ব্যক্তিগত জীবনে অনুপমা বৈশ্যের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[] এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। পরিবার নিয়ে তিনি ঢাকায় বসবাস করেন।[]

সাঁতার

সম্পাদনা

ক্ষিতীন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের আবাসিক ছাত্র থাকাবস্থায় ১৯৭৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর হলের পুকুরে ৯৩ ঘণ্টা ১১ মিনিট সাঁতার কেটে জাতীয় রেকর্ড গড়েন। ১৯৭৬ সালের ১৯ অক্টোবর তিনি নিজের এই রেকর্ডটি ভেঙ্গে ফেলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের আয়োজনে ১৪ অক্টোবর অপরাহ্ন ৪ ঘটিকা থেকে ১৯ অক্টোবর ভোর ৪টা ৫ মিনিট পর্যন্ত ১০৮ ঘণ্টা ৫ মিনিট একই পুকুরে সাঁতার কাটেন। ১৯৮০ সালে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার ভাগীরথী নদীতে ১২ ঘণ্টা ২৮ মিনিটে ৭৪ কিলোমিটার সাঁতার কেটে পার হন। তিনি ২০১৭ সালের ৪ আগস্ট ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলা থেকে শুরু করে নেত্রকোণার মদন উপজেলা পর্যন্ত কংস নদী দিয়ে ৪৩ ঘণ্টা ১২ মিনিটে বিরামহীন ১৪৬ কিলোমিটার সাঁতার কেটে জাতীয় রেকর্ড গড়েন।

২০১৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টায় তিনি নালিতাবাড়ীর ভোগাই নদী থেকে সাঁতার শুরু করে ৬০ ঘণ্টা ৫৫ মিনিটে নেত্রকোণা জেলার কংস ও মগড়া নদী হয়ে ১৮৬ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মদন উপজেলার দেওয়ান বাজার ঘাট পৌঁছান ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটে। এর মাধ্যমে তিনি তার নিজের রেকর্ড ভাঙ্গার পাশাপাশি বিশ্ব রেকর্ডও গড়েন।[] ওয়ার্ল্ড ওপেন ওয়াটার সুইমিং এসোসিয়েশন তাকে ২০১৯ সালে বিশ্বের ৫০জন সর্বাধিক অ্যাডভান্সারস ওপেন ওয়াটার সাঁতারুর মধ্যে একজন হিসেবে ঘোষণা করে।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "একুশে পদক ২০১৯ প্রদান - সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়" (পিডিএফ)সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  2. "একুশে পদক পেলেন যারা" (এইচটিএমএল)। ঢাকা: দৈনিক ইত্তেফাক। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  3. "৬৬ বছরের তরুণ সাতারু ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্যের অভিযান"বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০১৯ 
  4. "ক্ষিতীন্দ্রের সাঁতারনামা"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০১৯ 
  5. "গিনেস বুকের রেকর্ডে বাংলাদেশি সাঁতারু! [ভিডিও]"যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০১৯ 
  6. মোহাটোনস, স্টিভেন। "২০১৯ সালে বিশ্বের ৫০জন সর্বাধিক অ্যাডভান্সারস ওপেন ওয়াটার সাঁতারু"। ৯ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০১৯