ক্লাউদিয়া কার্দিনালে
ক্লাউদিয়া কার্দিনালে (লাতিন: Claudia Cardinale; জন্ম: ১৫ই এপ্রিল, ১৯৩৮) হলেন একজন ইতালীয় তিউনিসীয় অভিনেত্রী। তিনি ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকের বেশ কয়েকটি সমাদৃত ইউরোপীয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করে, বিশেষ করে ইতালীয়, ফরাসি এবং কিছু ইংরেজি চলচ্চিত্রে। তিনি সে সময়ে যৌন আবেদনের প্রতীক স্বীকৃতি লাভ করেন এবং
ক্লাউদিয়া কার্দিনালে | |
---|---|
Claudia Cardinale | |
জন্ম | ক্লাউদ জোসেফিন রোজ কার্দিনালে ১৫ এপ্রিল ১৯৩৮ তিউনিস, তিউনিসিয়া |
জাতীয়তা | ইতালীয় তিউনিসীয় |
পেশা | অভিনেত্রী |
কর্মজীবন | ১৯৫৮-বর্তমান |
দাম্পত্য সঙ্গী | ফ্রাঙ্কো ক্রিস্তালদি (বি. ১৯৬৬; বিচ্ছেদ. ১৯৭৫) পাস্কেল স্কুইরিয়েরি (বি. ১৯৭৫; মৃ. ২০১৭) |
তিউনিসিয়ার লা গোলেত্তে জন্মগ্রহণকারী কার্দিনালে ১৯৫৭ সালে "তিউনিসিয়ার সুন্দরতম ইতালীয় নারী" উপাধি লাভ করেন। এই পুরস্কার জয়ের ফলে তিনি ইতালি সফরের সুযোগ পান এবং চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পান। মূলত ফ্রাঙ্কো ক্রিস্তালদির সাথে তার সম্পৃক্ততার কারণে তিনি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হন। ক্রিস্তালদি বেশ কয়েক বছর তার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন এবং পরে তারা বিয়ে করেন। ওমর শরিফের বিপরীতে গোহা (১৯৫৮) চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্র দিয়ে তার বড় পর্দায় অভিষেক হয়। পরবর্তীতে রকো অ্যান্ড হিজ ব্রাদার্স (১৯৬০), গার্ল উইথ আ সুটকেস (১৯৬১), দ্য লিওপার্ড (১৯৬৩), কার্তুজ (১৯৬৩), ফেদেরিকো ফেল্লিনির অত্তো এ মেজ্জো (১৯৬৩) ছবিতে অভিনয় করে ইতালির অন্যতম সেরা অভিনেত্রী হয়ে ওঠেন। ১৯৬৩ সাল থেকে কার্দিনালে ডেভিড নিভেনের বিপরীতে দ্য পিংক প্যান্থার ছবিতে অভিনয় করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে পরিচিতি লাভ করেন। পরবর্তী কয়েক বছর তিনি হলিউডের চলচ্চিত্রে কাজ করেন, যার মধ্যে রয়েছে রক হাডসনের বিপরীতে ব্লাইন্ডফোল্ড (১৯৬৫), লস্ট কমান্ড (১৯৬৬), দ্য প্রফেশনালস্ (১৯৬৬), দ্য হেল উইথ হিরোস (১৯৬৮), এবং মার্কিন-ইতালীয় যৌথ প্রযোজনায় সের্জিও লেওনে পরিচালিত মহাকাব্যিক পশ্চিমা ধাঁচের ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন দ্য ওয়েস্ট (১৯৬৮) ছবিতে জেসন রবার্ডস, চার্লস ব্রনসন ও হেনরি ফন্ডার সাথে অভিনয় করে প্রশংসিত হন।
হলিউড চলচ্চিত্র শিল্পে একই ধাঁচের অভিনয় করতে না চেয়ে তিনি ইতালীয় ও ফরাসি চলচ্চিত্র শিল্পে ফিরে আসেন এবং ইল জোর্নো দেল্লা সিভেত্তা (১৯৬৮) এবং আলবের্তো সর্দির আ গার্ল ইন অস্ট্রেলিয়া (১৯৭১) ছবিতে তার কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে দাভিদ দি দোনাতেল্লো পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি পরিচালক পাস্কেল স্কুইরিয়েরির সাথে পরিচিত হন, যাকে তিনি পরবর্তীতে বিয়ে করেন। তিনি স্কুইরিয়েরির পরিচালনায় ই গুপ্পি (১৯৭৪), করলেওনে (১৯৭৮) এবং ক্লারেত্তা (১৯৮৪) ছবিতে অভিনয় করেন। ক্লারেত্তা ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে নাস্ত্রো দারজেন্তো পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮২ সালে তিনি ভের্নার হেরজগ পরিচালিত ফিৎজকারাল্ডো ছবিতে ক্লাউস কিন্স্কির বিপরীতে অভিনয় করেন। ২০১০ সালে কার্দিনালে সিনোরা এনরিকা ছবিতে বৃদ্ধা ইতালীয় নারী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য আন্তালিয়া "গোল্ডেন অরেঞ্জ" আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার লাভ করেন।
কার্দিনালে ২০০০ সালের মার্চ থেকে ইউনেস্কোর নারী অধিকার প্রতিরক্ষার শুভেচ্ছা দূত। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে লস আঞ্জেলস টাইমস ম্যাগাজিন তাকে চলচ্চিত্রের ইতিহাসের ৫০ জন সুন্দরতম নারী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাকার্দিনালে ১৯৩৮ সালের ১৫ই এপ্রিল তিউনিসের পার্শ্ববর্তী লা গুলেত শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম ক্লাউদ জোসেফিন রোজ কার্দিনালে।[১][২] তার মাতা ইয়োলান্দে গ্রেকো তিউনিসিয়া জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ত্রাপানির সিসিলীয় অভিবাসী ছিলেন।[৩] কার্দিনালের মাতামহ-মাতামহীর ত্রাপানিতে ছোট জাহাজ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে তারা লা গুলেতে চলে যান। সেখানে বৃহৎ ইতালীয় সম্প্রদায় বাস করতো। কার্দিনালের পিতা ফ্রান্সেস্কো কার্দিনালে ছিলেন সিসিলির গেলায় জন্মগ্রহণকারী রেলওয়ে কর্মী।[৩] কার্দিনালের ফরাসি, তিউনিসীয় আরবি ও সিসিলীয় ভাষায় দক্ষ ছিলেন। তিনি ইতালীয় চলচ্চিত্রে আগমনের পূর্ব পর্যন্ত ইতালীয় ভাষা শিখেননি।[৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক্ল্যান্সি-স্মিথ ২০১১, পৃ. ৭১২।
- ↑ স্লিম্যান ২০০১, পৃ. ৯০।
- ↑ ক খ কার্দিনালে ও মোরি ১৯৯৫, পৃ. ৫।
- ↑ কার্দিনালে ও মোরি ১৯৯৫।