কেবল জ্ঞান
জৈনধর্মে কেবল জ্ঞান বলতে সর্বজ্ঞতা বোঝায়। শব্দটির আভিধানিক অর্থ সম্পূর্ণ উপলব্ধি[১] বা সর্বোচ্চ প্রজ্ঞা।[২] জৈনরা মনে করেন, কেবল জ্ঞান সকল আত্মার এক অন্তর্নিহিত গুণ। এই গুণটি আত্মাকে ঘিরে থাকা কর্ম কণিকাগুলি দ্বারা আবৃত থাকে। কর্ম কণিকাগুলির ক্ষয়ের মাধ্যমে প্রতিটি আত্মাই কেবল জ্ঞান অর্জনে সক্ষম হতে পারে। জৈন ধর্মগ্রন্থগুলিতে আত্মার এই লক্ষ্য পূরণে বারোটি স্তর পার হওয়ার কথা বলা হয়েছে। কেবল জ্ঞান অর্জনকারী আত্মাকে বলা হয় "কেবলিন" (केवलिन्)।[৩] জৈনদের মতে, শুধুমাত্র কেবলিনরাই সকল দিক থেকে ও সকল রূপে বস্তুকে উপলব্ধি করতে পারেন; অন্যরা কেবল আংশিক জ্ঞানের অধিকারী হন।[৪]
কেবলিনদের বিষয়ে জৈনধর্মের দিগম্বর ও শ্বেতাম্বর দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু মতভেদ রয়েছে। দিগম্বরদের মতে, কেবলিনগণ ক্ষুধা বা তৃষ্ণা অনুভব করেন না; কিন্তু শ্বেতাম্বরেরা মনে করেন, কেবলিনদের স্বাভাবিক মানবিক চাহিদাগুলি বিদ্যমান এবং তাঁরা দেশভ্রমণ করে ধর্মপ্রচারও করেন। দিগম্বর জৈনদের মতে, তাঁরা শব্দের স্বাভাবিক অর্থ অনুযায়ী কার্য সম্পাদন করেন না, পদ্মাসনে স্থির হয়ে বসে থাকেন এবং তাঁদের শরীর থেকে "দিব্যধ্বনি" বিচ্ছুরিত হয়। এই দিব্যধ্বনি হল এক প্রকার পবিত্র শব্দ যেটিকে তাঁদের অনুগামীরা মৌলিক সত্য বলে বর্ণনা করেন।[৫][৬] তবে উভয় সম্প্রদায়ই মনে করেন যে শেষ কেবলিন ছিলেন সর্বশেষ তীর্থংকর মহাবীরের এগারো শিষ্যের একজনের শিষ্য এবং তাঁর নাম জম্বুস্বামী হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে।[৭] এও মনে করা হয় যে, জম্বুস্বামীর পর আর কেউ কেবল জ্ঞান অর্জন করতে পারেননি।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Sharma 1991, পৃ. 49
- ↑ Kumar 2001, পৃ. 3
- ↑ Jaini 2000, পৃ. 51
- ↑ Jaini 1998, পৃ. 91
- ↑ Dundas 2002, পৃ. 45 45
- ↑ Kabay, Paul (২০১৩-০৫-০৯)। "Interpreting the Divyadhvani: On Why the Digambara Sect Is Right about the Nature of the Kevalin"। Philosophy East and West। 63 (2): 176–193। আইএসএসএন 1529-1898। ডিওআই:10.1353/pew.2013.0020।
- ↑ Shah 2004, পৃ. 39
সূত্র নির্দেশ
সম্পাদনা- Jain, Vijay K (২০১৬-০১-০১)। Ācārya Samantabhadra's Aptamimamsa (Devāgamastotra)। Vikalp printers। আইএসবিএন 9788190363983।
- Dundas, Paul (২০০২), The Jains, Routledge, আইএসবিএন 978-0-415-26605-5
- Flügel, Peter (২০০৬), Studies in Jaina History and Culture: Disputes and Dialogues, Taylor & Francis, আইএসবিএন 978-0-203-00853-9
- Glasenapp, Helmuth Von (১৯৯৯), Jainism: An Indian Religion of Salvation, Delhi: Motilal Banarsidass, আইএসবিএন 81-208-1376-6
- Jaini, Padmanabh (১৯৯৮), The Jaina Path of Purification, New Delhi: Motilal Banarsidass, পৃষ্ঠা 91, আইএসবিএন 81-208-1578-5
- Jaini, Padmanabh S (২০০০), Collected Papers On Jaina Studies, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন 978-81-208-1691-6
- Jaini, Padmanabh S. (২০০১), Collected Papers On Buddhist Studies, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন 978-81-208-1776-0
- Kumar, Sehdev (২০০১), Jain Temples of Rajasthan, Abhinav Publications, আইএসবিএন 978-81-7017-348-9
- Shah, Natubhai (২০০৪), Jainism: The World of Conquerors, 1, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন 978-1-898723-30-1
- Sharma, Candradhar (১৯৯১), A critical survey of Indian philosophy, Motilal Banarsidass, আইএসবিএন 978-81-208-0365-7