কেন ফার্নেস
কেনেথ ফার্নেস (ইংরেজি: Ken Farnes; জন্ম: ৮ জুলাই, ১৯১১ - মৃত্যু: ২০ অক্টোবর, ১৯৪১) এসেক্সের লেটনস্টোন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৩৪ থেকে ১৯৩৯ মেয়াদকালে ১৫ টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন কেন ফার্নেস। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী উপস্থাপন করতেন তিনি।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জন্ম | লেটনস্টোন, এসেক্স, ইংল্যান্ড | ৮ জুলাই ১৯১১|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২০ অক্টোবর ১৯৪১ চিপিং ওয়ার্ডেন, অক্সফোর্ডশায়ার, ইংল্যান্ড | (বয়স ৩০)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক | ৮ জুন ১৯৩৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৩ মার্চ ১৯৩৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৪ ডিসেম্বর ২০১৬ |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাগাইডিয়া পার্কের রয়্যাল লিবার্টি স্কুলে অধ্যয়ন করেন তিনি। ১৯৩০ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে এসেক্সের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। নিজস্ব দ্বিতীয় কাউন্টি খেলায় কেন্টের বিপক্ষে ৫/৩৬ লাভ করেন। বিদ্যালয় জীবন শেষে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাবস্থায় তিন বছর বিশ্ববিদ্যালয় দলে খেলেন। পাশাপাশি এসেক্স দলের পক্ষে খেলতে থাকেন। স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর ওয়ার্কশপ কলেজে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হবার ফলে এসেক্সের পক্ষে খেলার সুযোগ ক্রমশঃ স্তিমিত হতে থাকে।
১৯৩২ সালে স্কারবোরায় ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলায় দলের শোচনীয় পরাজয় প্রশমনে ভূমিকা রাখেন। ঐ বছরের শুরুতে লেটনে অনুষ্ঠিত খেলায় ইয়র্কশায়ার এসেক্সকে ইনিংস ও ৩১৩ রানে পরাজিত করে। ফার্নেস ফিরতি খেলায় এসেক্সকে খেলায় ফিরিয়ে আনার প্রাণান্তকর চেষ্টা চালান। যতটুকু সম্ভব দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলিং করতে থাকেন। ৭৫ রান প্রদান করলেও চার ওভারের ব্যবধানে হার্বার্ট সাটক্লিফ ও মরিস লেল্যান্ডকে প্যাভিলিয়নে ফেরৎ পাঠান। ১৯৩৩ সালে কেমব্রিজের সদস্য থাকাকালে ১৭.৩৯ গড়ে ৪১ উইকেট তুলে নেন। ঐ বছরে ১৮.৩৮ গড়ে ১১৩ উইকেট পান।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৩৪-৩৫ মৌসুম থেকে ১৯৩৮-৩৯ মৌসুম পর্যন্ত মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[১][২] এ সময়ে তিনি এমসিসি দলের সঙ্গে ১৯৩৪-৩৫ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড এবং ১৯৩৮-৩৯ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন।
১৯৩৪ সালে ট্রেন্ট ব্রিজে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ১ম টেস্টে তার অভিষেক ঘটে। উভয় ইনিংসে ৫/১০২ ও ৫/৭৭ লাভ করেন। তাস্বত্ত্বেও ইংল্যান্ড দল ২৩৮ রানে পরাজিত হয়েছিল।[৩] লর্ডসে অনুষ্ঠিত ২য় টেস্টে অংশ নেন। কিন্তু আঘাতপ্রাপ্তির ফলে পরবর্তী দুই টেস্টে অনুপস্থিত থাকেন। মৌসুমের শেষদিকে পুনরায় মাঠে ফিরে আসেন।
১৯৩৪-৩৫ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যান ও আরও দুই টেস্টে অংশ নেন। হাঁটুর আঘাতের কারণে ১৯৩৫ সালে খেলা থেকে দূরে থাকেন। জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে পরের মৌসুমে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে খেলেন। দ্রুতলয়ে গিম্বলেট, হ্যামন্ড ও হার্ডস্টাফ - এ তিনজনের উইকেট তুলে নেন ও প্লেয়ার্সকে ৩৩৪-এ নিয়ে যান। বৃষ্টি বাঁধার কারণ হলে খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হয়। ঐ শীতে গাবি অ্যালেন অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেন। সিরিজের ৪র্থ ও ৫ম টেস্টে অংশ নেন তিনি। তন্মধ্যে ৫ম টেস্টে ৬/৯৬ পেলেও এমসিজিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রখম ইনিংসে ৬০৪ রানের পাহাড়সম সংগ্রহে বাঁধার প্রাচীর হতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ার খেলায় ইনিংসে ও ২০০ রানে জয় পেয়ে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজের জিতে নেয়।
১৯৩৮ সালে জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে জয়ে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। যা ১৯১৮ সালের পর প্রথম ছিল। খেলায় তিনি ৮/৪৩ ও ৩/৬০ লাভ করেন। ১৯৩৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চার টেস্টের সিরিজের অংশ নেন। ঐ বছরের শীতকালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেন ও ৫ টেস্টের সিরিজের হেডলি ভেরিটির সাথে বোলিং উদ্বোধনে নামেন।
মূল্যায়ন
সম্পাদনা৬ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী দীর্ঘদেহী ফার্নেস তার শারীরিক গঠনশৈলীর জন্য সর্বত্র পরিচিত ছিলেন। স্বল্প রানআপে বিবেচনাযোগ্য পেস দেয়ার অধিকারী ছিলেন তিনি। তার গুডলেন্থের বলগুলো বেশ লাফিয়ে উঠতো। এছাড়াও তার উচ্চতার কারণে স্ট্যাম্পের কাছাকাছি অবস্থান করে অনেকগুলো দর্শনীয় ক্যাচ নিয়ে স্বীয় সক্ষমতা দেখান। নিচেরসারিতে ব্যাটসম্যান হিসেবেও সফলতা পেয়েছেন। ১৯৩৬ সালে টনটনে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সমারসেটের বিপক্ষে অপরাজিত ৯৭ রান তোলেন। দশম উইকেটে ১৪৯ রান রান তুললেও মাত্র কয়েক রানের জন্য সেঞ্চুরি থেকে ব্যর্থ হন।
১৯৩৯ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন।[৪] ১৯৪০ সালে ‘ট্যুরস এন্ড টেস্ট’ শীর্ষক আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ প্রকাশ করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
সম্পাদনাদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন রয়্যাল এয়ারফোর্স ভলান্টিয়ার রিজার্ভে যোগদান করেন ও কানাডায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৪১ তারিখে পাইলট অফিসাররূপে কমিশনডপ্রাপ্ত হন। এরপর সার্জেন্ট পদবী ধারণ করেন।[৫] ইংল্যান্ডে ফিরে আসার অল্পকাল পরই তার জীবনাবসান ঘটে। অক্সফোর্ডশায়ারের চিপিং ওয়ার্ডেন এলাকার কাছাকাছি নৈশকালীন প্রশিক্ষণকালে বিমান দূর্ঘটনায় পতিত হন। সারের ব্রুকউড সামরিক সমাধিক্ষেত্রে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।[৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ACS (১৯৮২)। A Guide to First-Class Cricket Matches Played in the British Isles। Nottingham: ACS।
- ↑ "Marylebone Cricket Club Players"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "1st Test: England v Australia at Nottingham, Jun 8-12, 1934"। espncricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ Full List on Cricinfo, Retrieved 11 July, 2017.
- ↑ "নং. 35343"। দ্যা লন্ডন গেজেট (ইংরেজি ভাষায়): 6507। ১১ নভেম্বর ১৯৪১। সংগ্রহের তারিখ ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১০।
- ↑ Casualty details—Farnes, Kenneth, Commonwealth War Graves Commission
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে কেন ফার্নেস (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে কেন ফার্নেস (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- When Farnes was reduced to tears, Cricinfo, August 1981
- Fast Action Hero, Cricinfo, 14 March 2006