কৃষ্ণ কিশোর চাকমা
কৃষ্ণকিশোর চাকমা (১৪ জুলাই, ১৮৯৫ - ১৯৩৫) পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা বিস্তারে পথিকৃৎ ছিলেন। তিনি কেরেতকাবা মোনতলা,নানিয়ারচর উপজেলায় রাঙ্গামাটির জেলায় ১৪ জুলাই, ১৮৯৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
কৃষ্ণকিশোর চাকমা | |
---|---|
জন্ম | কৃষ্ণকিশোর চাকমা ১৪ জুলাই ১৮৯৫ |
মৃত্যু | ১৯৩৫ (বয়স ৩৯–৪০) |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
শিক্ষা | স্নাতক |
মাতৃশিক্ষায়তন | চট্টগ্রাম কলেজ |
পেশা | শিক্ষকতা |
পরিচিতির কারণ | পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা বিস্তারের পথিকৃৎ, অগ্রদূত |
আত্মীয় | চিত্তকিশোর চাকমা (ছোট ভাই) |
শিক্ষাজীবন
সম্পাদনাকৃষ্ণ কিশোর চাকমা ১৯১৯ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রামের চট্টগ্রাম কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।
কর্মজীবন
সম্পাদনাকৃষ্ণ কিশোর চাকমা ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দে সাব-ইন্সপেক্টর শিক্ষা দপ্তরের স্কুল পরিদর্শক পদে যোগদান করেন। তিনি এ পদে থেকে ক্ষান্ত থাকেননি পাহাড়ে শিক্ষা বিস্তার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার লক্ষ্যে স্থানীয়দের উদ্বুদ্ধ করেন। বাবা সুন্দরবি চাকমা ও মা চানমুনি চাকমার ঘরে তিন ছেলের মধ্যে কৃষ্ণকিশোর সবার বড়। অন্য দু’ভাই হরকিশোর চাকমা ও চিত্তকিশোর চাকমা। প্রথমদিকে তাদের পরিবার পাহাড়ের পাদদেশে মাওরুমমাওরুম ছড়ার উৎপত্তি যেখানে সেই সত্তা-ধুরুং নামের এলাকায় ছিল, পরবর্তীতে তারা মহাপ্রুম এলাকায় চলে যান। শিক্ষানুরাগী ও অধিকার সচেতন হিসেবে কৃষ্ণ কিশোর ছিলেন এক আদর্শিক মডেল। সামন্তীয় বেড়াজাল থেকে বের হতে তিনি কখনো সমাজের গোষ্ঠীপতিদের সাথে আপোষ করেন নি। বিচক্ষণ, দূরদর্শী, চিন্তাশীল, আপোষহীন ও প্রতিজ্ঞাব্ধ হয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা মশাল প্রজ্জ্বলন করেন।
তার মেজ ভাই হরকিশোর চাকমাও ছিলেন শিক্ষক। সমাজসেবক হিসাবে খ্যাত আরেক ছোট ভাই চিত্তকিশোর চাকমাও শিক্ষকতাকেই পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। ষাটের দশকে তিনি ছোট মহাপ্রুম মাধ্যমিক স্কুলসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় উদ্যোক্তার অগ্রনী ভূমিকা রাখেন। চিত্তকিশোর চাকমার ৩ ছেলে ও ১মেয়ে যথাক্রমে মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা(মঞ্জু),জ্যোতিপ্রভা লারমা, শুভেন্দু প্রভাস লারমা ও জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা(ওরফে) সন্তু লারমা। পাহাড়ে শিক্ষা বিস্তারে কখনো সাইকেল চালিয়ে কখনো পায়ে হেঁটে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ঘরে ঘরে গিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখায় উদ্বুদ্ধ করতেন। গ্রামের মুরুব্বী ও অভিভাবকদের সাথে নিয়ে স্কুলে সন্তান-সন্ততিদের পাঠাতে বৃত্তি প্রদান করতেন। তার ঐকান্তিক অবদান ১৯২২ সালে মগবান ইউপি স্কুল,সুবলং খাগড়াছড়ি ইউপি স্কুল, ১৯২৩ সালে মহাপ্রুম এমই স্কুল, রামগড় এমই স্কুল,পানছড়ি এমই স্কুল, দিঘীনালা এমই স্কুল এবং তুলাবান এমই স্কুল এই বিদ্যালয়গুলো প্রতিষ্ঠা পায়।[১]
পুরস্কার
সম্পাদনামরনোত্তর সম্মাননাঃ ২০০১ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা বিস্তারে বিশেষ অবদানের জন্য রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে বিশেষ সম্মাননা হিসেবে মরনোত্তর সম্মাননা প্রদান করা হয়।
মৃত্যু
সম্পাদনা১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে যক্ষ্মারোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোকগমণ করেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "সমাজে নারীরা পুরুষের সমান মর্যাদা পায় না: সন্তু লারমা"। বাংলা ট্রিবিউন। মার্চ ১১, ২০১৭।
‘১৯১৫ সালে চাকমা যুব সমিতি নামে একটি সংগঠন ছিল। তারা তখন শিক্ষা প্রসারে কাজ করেছেন। এরপর ১৯২০ সালে কৃষ্ণ কিশোর চাকমা শিক্ষা প্রসারের জন্য আন্দোলন শুরু করেন। তাদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে পার্বত্য আঞ্চলে বিদ্যালয় স্থাপন শুরু হয়। কিন্তু কাপ্তাই বাঁধের পর সব বিলীন হয়ে যায়।’
[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]