কৃষ্ণকালী মণ্ডল
কৃষ্ণকালী মণ্ডল ( আগস্ট ১৯৪০ - ২৮ জুলাই ২০২৩) ছিলেন একজন ভারতীয় বাঙালি পুরাতাত্ত্বিক, গবেষক-লেখক। তিনি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার ইতিহাস চর্চার ছিলেন পথ প্রদর্শক।[১]
কৃষ্ণকালী মণ্ডল | |
---|---|
জন্ম | চব্বিশ পরগনা বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ) | আগস্ট ১৯৪০
মৃত্যু | ২৮ জুলাই ২০২৩ | (বয়স ৮২)
পেশা | পুরাতাত্ত্বিক,গবেষক-লেখক |
ভাষা | বাংলা |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
জীবনী
সম্পাদনাকৃষ্ণকালী মণ্ডলের জন্ম ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের আগস্টে ব্রিটিশ ভারতের অধুনা পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে। তবে অসম সামাজিক পারিবারিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক লড়াইয়ের মধ্যে বড় হয়েছেন। তবে দৃঢ়চেতা, আপসবিমুখ পিতার ইস্পাত কঠিন উচ্চ মানসিকতা আর স্নেহময়ী, পরদুঃখে কাতর অথচ শৃঙ্খলায় কঠোর মায়ের প্রভাব আত্মস্থ করে লেখাপড়া ও সংস্কৃতি চর্চা করেছেন। [২] বিশ শতকের গোড়ায় অবিভক্ত বাংলার অবহেলিত চব্বিশ পরগনা জেলার প্রত্নতত্ত্ব ও ইতিহাস উদ্ধারে প্রথাগত প্রত্নতাত্ত্বিক শিক্ষিত না হয়েও ব্রতী হয়েছিলেন জেলার কৃতি সন্তান কালিদাস দত্ত। তার প্রয়াণের পর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস এমনকি প্রত্নতত্ত্বের আলোকে লোকসংস্কৃতির বিচার বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞ ও পাঠকমহলে তুলে ধরেছেন কৃষ্ণকালী মণ্ডল। [১] বেশ কয়েক দশক ধরে তিনি নিরন্তর চর্চা ও ব্যাপকভাবে ক্ষেত্রসমীক্ষায় নিয়োজিত থেকে যে চারখানি আকর গ্রন্থ রচনা করেছেন সেগুলি হল-
- দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা:আঞ্চলিক ইতিহাসের উপকরণ
- দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বিস্মৃত অধ্যায়
- দক্ষিণচব্বিশ পরগনার লৌকিক দেবদেবী ও মূর্তি ভাবনা এবং
- দক্ষিণ বাংলার নতুন প্রত্নস্থল[১][২]
- দক্ষিণ চব্বিশপরগনার পুরাকথা (২০০২), মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স, কলকাতা
তার রচিত অন্যান্য গ্রন্থ গুলি হল-
- সুন্দরবনের সংস্কৃতি ও প্রত্ন ভাবনা (২০২২) একুশ শতক, কলকাতা
- প্রাচীন সুন্দরবনের বৌদ্ধ ধর্ম ও সংস্কৃতির নিদর্শন (২০২৪), বাংলার পুরাতত্ত্ব প্রকাশনা আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৯৫৩৩-৮৮২-৫
- প্রাচীন সুন্দরবনের পদচিহ্নবেদী ও পুরাতাত্ত্বিক অনুসন্ধান (২০২৪), বাংলার পুরাতত্ত্ব প্রকাশনা, কলকাতা
- জানুস (২০২৪) বাংলার পুরাতত্ত্ব প্রকাশনা, কলকাতা আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৯৫৩৩-৮৮৩-২
- চতুশক্তি শিবলিঙ্গ (২০২৪) বাংলার পুরাতত্ত্ব প্রকাশনা, কলকাতা (রাজীব বনুর সম্পাদনায়)
সম্মাননা
সম্পাদনাদক্ষিণ চব্বিশ পরগনার প্রত্নতত্ত্ব, ইতিহাস তুলে ধরার স্বীকৃতি স্বরূপ কৃষ্ণকালী মণ্ডল বহু সম্মর্ধনা ও স্মারকে ভূষিত হয়েছেন। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা সংস্কৃতি পরিষদের 'ঋষি বঙ্কিম স্মারক'-এ সম্মানিত, ডায়মন্ড হারবারের শ্রীঅরবিন্দ আশ্রম তাকে ভাস্কর ভারতী উপাধিতে ভূষিত করে। ২০০৩ খ্রিস্টাব্দে কাকদ্বীপের 'গঙ্গারিডি গবেষণা কেন্দ্র' তাকে সম্মাননা ও পদক প্রদান করে। [২]
জীবনাবসান
সম্পাদনা২০২৩ খ্রিস্টাব্দের জুলাই দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার প্রত্ন-ইতিহাস ও লোকসংস্কৃতির গবেষক কৃষ্ণকালি মণ্ডল ৮৩ বৎসর বয়সে প্রয়াত হন।
২০২৪ খ্রিস্টাব্দের ২৮ জুলাই কলকাতার আশুতোষ মুখার্জি মেমোরিয়াল ইনস্টিটিউটে প্রথম প্রয়াণ দিবসে পুরাকীর্তির আলোকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মানবসংস্কৃতির ধারা বিষয়ে 'কৃষ্ণকালী মণ্ডল স্মারক বক্তৃতা' আয়োজন করে বাংলার পুরাতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র। প্রধান বক্তা ছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নশালা ও চিত্রবীথির প্রাক্তন অধ্যক্ষ ড.রঙ্গনকান্তি জানা। [১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ "কলকাতার কড়চা - দিশারি"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৩।
- ↑ ক খ গ মণ্ডল, কৃষ্ণকালী (২০০২)। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার পুরাকথা। মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স, কলকাতা। পৃষ্ঠা ১৭৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৮-০৩।