কুমারগঞ্জ
কুমারগঞ্জ হল একটি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক যা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট মহকুমার একটি প্রশাসনিক বিভাগ।
কুমারগঞ্জ | |
---|---|
সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°২৬′০২″ উত্তর ৮৮°৪৩′৩৬″ পূর্ব / ২৫.৪৩৩৭৯° উত্তর ৮৮.৭২৬৭১° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
জেলা | দক্ষিণ দিনাজপুর |
সরকার | |
• ধরন | সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক |
আয়তন | |
• মোট | ২৮৬.৯০ বর্গকিমি (১১০.৭৭ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১,৬৯,১০২ |
• জনঘনত্ব | ৫৯০/বর্গকিমি (১,৫০০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• আনুষ্ঠানিক | বাংলা, ইংরেজি, সান্তালী |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+5:30) |
বিধানসভা কেন্দ্র | বালুরঘাট বিধানসভা কেন্দ্র |
ওয়েবসাইট | ddinajpur |
ইতিহাস
সম্পাদনাদিনাজপুর জেলা গঠিত হয় ১৭৮৬ সালে। ১৯৪৭ সালে, র্যাডক্লিফ রেখা পূর্ব পাকিস্তানের দিনাজপুর জেলার সদর ও ঠাকুরগাঁও মহকুমাকে স্থাপন করে। দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট মহকুমা পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম দিনাজপুর জেলা হিসাবে পুনর্গঠিত হয়। ১৯৪৮ সালে নতুন রায়গঞ্জ মহকুমা গঠিত হয়। বঙ্গভঙ্গের সময় বিভক্ত হয়ে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে আঞ্চলিক সংযোগ পুনরুদ্ধার করার জন্য রাজ্য পুনর্গঠন কমিশনের সুপারিশে গোয়ালপোখর, ইসলামপুর এবং চোপড়া থানা (পুলিশ স্টেশন) নিয়ে গঠিত হয় তৎকালীন কিষাণগঞ্জ মহকুমার একটি অংশ। এছাড়া ঠাকুরগঞ্জ থানার কিছু অংশ এবং কাটিহার মহকুমার তৎকালীন গোপালপুর থানার সংলগ্ন অংশগুলিকে ১৯৫৬ সালে বিহারের পূর্ণিয়া জেলা থেকে পশ্চিমবঙ্গে স্থানান্তরিত করা হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিম দিনাজপুরের রায়গঞ্জ মহকুমায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিষাণগঞ্জ শহর এবং এর সমগ্র পৌর সীমানা বিহারের মধ্যেই ছিল। ১৯৬০-৬১ সালে সমষ্টি উন্নয়ন প্রোগ্রাম প্রবর্তনের সাথে সাথে পশ্চিম দিনাজপুর জেলায় সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক স্থাপন করা হয়। ১৯৯২ সালে পশ্চিম দিনাজপুর জেলাকে দ্বিখণ্ডিত করে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রতিষ্ঠিত হয়।[১]
ভূগোল
সম্পাদনাকুমারগঞ্জ ২৫°২৬′০২″ উত্তর ৮৮°৪৩′৩৬″ পূর্ব / ২৫.৪৩৩৭৯° উত্তর ৮৮.৭২৬৭১° পূর্ব স্থানাঙ্কে অবস্থিত।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা ভৌতগতভাবে বরেন্দ্রভূমির একটি অংশ। এলাকাটি সাধারণত সমতল এবং সামান্য অস্থির। জেলার উচ্চতা গড় সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৫ মিটার উপরে। তবে সেখানে মাটির তারতম্য রয়েছে। বালুরঘাট, হিলি এবং কুমারগঞ্জের মতো সিডি ব্লকে পলিমাটি রয়েছে, তপন সিডি ব্লকে ল্যাটেরাইট মাটি রয়েছে। জেলায় তিনটি প্রধান নদী আছে। আত্রেয়ী নদীর উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশে। নদীটি কুমারগঞ্জ ও বালুরঘাট সিডি ব্লকের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে ফিরে যায়। পুনর্ভবা নদী গঙ্গারামপুর এবং তপন সিডি ব্লকের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। টাঙ্গন নদী কুশমান্ডি এবং বনসিহারি সিডি ব্লকের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। হিলি সিডি ব্লকে যমুনা নামে একটি ছোট নদী আছে। উত্তর থেকে দক্ষিণে প্রবাহিত সমস্ত নদীর পানি বর্ষাকালে বেড়ে যায় এবং এ কারণে এখানে বন্যা হয়।[২][৩][৪]
কুমারগঞ্জের সীমানা বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার দিনাজপুর সদর ও চিরিরবন্দর উপজেলা, উত্তরে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী ও বিরামপুর উপজেলা, পূর্বে বালুরঘাট সিডি ব্লক এবং পশ্চিমে তপন ও গঙ্গারামপুর সিডি ব্লক পর্যন্ত বিস্তৃত।[৫][৬][৭][৮][৯]
জেলার আটটি সিডি ব্লকের মধ্যে ছয়টি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে রয়েছে যা একটি ছিদ্রযুক্ত সীমান্ত হিসাবে পরিচিত। দক্ষিণ দিনাজপুরে শূন্যরেখার কাছাকাছি ১১,০০০-এর বেশি লোক বাস করে।[১০] আন্তর্জাতিক সীমান্তের প্রায় ২৫২ কিলোমিটার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় অবস্থিত।[১১]
কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকের আয়তন ২৮৬.৬২ কিমি২।এটিতে ১টি পঞ্চায়েত সমিতি, ৮ টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ১১৮টি গ্রাম সংসদ (গ্রাম পরিষদ), ২১৮টি মৌজা এবং ২০৮টি অধ্যুষিত গ্রাম রয়েছে। ব্লকটি কুমারগঞ্জ থানার অধীনস্থ।[১২] এই সিডি ব্লকের সদর দপ্তর কুমারগঞ্জে।[১৩][১৪]
কুমারগঞ্জ ব্লক/পঞ্চায়েত সমিতির গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি হল: বাতুন, ভৌর, দেওর, জাকিরপুর, মোহনা, রামকৃষ্ণপুর, সাফানগর এবং সমঝিয়া।[১৫]
জনসংখ্যা
সম্পাদনামোট জনসংখ্যা
সম্পাদনা২০১১ ভারতের জনগণনা অনুসারে, কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৬৯,১০২ জন, যার সবকটিই ছিল গ্রামীণ। যার মধ্যে ৮৭,০৯৮ জন (৫২%) পুরুষ এবং ৮২,০০৪ জন (৪৮%) মহিলা। ৬ বছরের কম বয়সীদের সংখ্যা ছিল ১৮,৭৭৩ জন। তফসিলি জাতি ৪৩,৮৪০ (২৫.৯৩%) এবং তফসিলি উপজাতির সংখ্যা ২৮,৭৬৯ জন (১৭.০১%)।[১৬]
২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে কুমারগঞ্জ ব্লকের জনসংখ্যা ছিল ১৫৩,০৪২ জন যার মধ্যে ৭৮,৬৪৬ জন পুরুষ এবং ৭৪,৩৯৬ জন মহিলা৷[১৭]
গ্রাম অনুযায়ী জনসংখ্যা (২০১১): ভৌর ২,৪৫৬, দিওর ৩,৫০৪, মোহনা ১,১২২, বাতুন ৩,২৫৫, সাফা নগর ৩,২৪২, জাখিরপুর ৩,০০৪, সামজিয়া ১,৮৬১ এবং কুমারগঞ্জ ৩,৯২০ জন।[১৬]
২০০১-২০১১ সময়ের জন্য কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকে জনসংখ্যার বৃদ্ধি ছিল ১০.৪৯%।[১৮] একই সময়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার জনসংখ্যার বৃদ্ধি ছিল ১১.৫২% যা আগের দশকে ২২.১৫% থেকে কম ছিল।[১২] পশ্চিমবঙ্গে সংশ্লিষ্ট সময়ের জন্য জনসংখ্যার দশকীয় বৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ১৩.৯৩% এবং ১৭.৭৭%।[১৯]
১৯৪৭ সালে বঙ্গভঙ্গের সাথে সাথে পূর্ব বাঙ্গালী উদ্বাস্তুদের (উপজাতীয় সহ) বৃহৎ পরিসরে অভিবাসন শুরু হয়। প্রায় ১৯৫১ সাল পর্যন্ত, শরণার্থীদের দুই-পঞ্চমাংশ দক্ষিণবঙ্গে বসতি স্থাপন করেছিল। পূর্ব পাকিস্তান এবং পরবর্তীকালে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ দিনাজপুরে মানুষের অবিরাম প্রবাহ বছরের পর বছর ধরে অব্যাহত ছিল।[২০]
স্বাক্ষরতা
সম্পাদনা২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকের মোট সাক্ষর মানুষের সংখ্যা ছিল ১১২,০৯৫ জন (৬ বছরের বেশি জনসংখ্যার ৭৪.৫৭%) যার মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৬৩,৬৪৩ জন (৬ বছরের বেশি পুরুষ জনসংখ্যার ৮১.৭৬%) এবং মহিলার সংখ্যা ৫১,৪৫২ (৬ বছরের বেশি মহিলা জনসংখ্যার ৭০.৬৩%)। লিঙ্গ বৈষম্য (নারী এবং পুরুষ সাক্ষরতার হারের মধ্যে পার্থক্য) ছিল ১১.১৪%।[১৬]
আরও দেখুন – সাক্ষরতার হার অনুসারে পশ্চিমবঙ্গের জেলার তালিকা
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সিডি ব্লকে স্বাক্ষরতার হার |
---|
বালুরঘাট মহকুমা |
বালুরঘাট – ৭৩.৯৬% |
হিলি – ৭৬.০৪% |
কুমারগঞ্জ – ৭৪.৫৭% |
তপন – ৬৮.৬২% |
গঙ্গারামপুর মহকুমা |
বানসিহারী – ৬৮.৭৯% |
গঙ্গারামপুর – ৭১.৪৫% |
হরিরামপুর – ৬৪.৬৭% |
কুশমন্ডি – ৬৫.৪৩% |
সূত্র:২০১১ ভারতের জনগণনা |
ভাষা ও ধর্ম
সম্পাদনা২০০১ সালে, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ৮২.২% জনসংখ্যার মাতৃভাষা ছিল বাংলা, তারপরে সাঁওতালি (১০.৩%), হিন্দি (১.৮%), কুরুখ/ওরাওঁ (১.৭%), মুন্ডা (০.৫%), সদন/ সাদ্রি (০.৫%), কুরমালি থার (০.৪%), তেলুগু (০.৩%), মুন্ডারি ০.৩%), ভোজপুরি (০.১%), কোর্থা/খোট্টা (০.১%) এবং কোদা/কোরা (০.১%)। বাংলা ভাষাভাষীদের অনুপাত ১৯৬১ সালে ৭২.২% থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ৮২.২% এবং সাঁওতালি ১৯৬১ সালে ৯.৩% থেকে ২০০১ সালে ১০.৩% বেড়েছে, কিন্তু হিন্দি ভাষাভাষীদের অনুপাত ১৯৬১ সালে ৫.৪% থেকে কমে ২০০১ সালে ১.৮% হয়েছে।[২১]
২০১৪ জেলা পরিসংখ্যান হ্যান্ডবুক অনুসারে: ২০০১ সালের আদমশুমারিতে, কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকে, হিন্দুদের সংখ্যা ছিল ৯৯,৩০৮ (মোট জনসংখ্যার ৬৪.৮৯%)। মুসলমানদের সংখ্যা ৪৯,৯৮২ (জনসংখ্যার ৩২.৬৬%)। খ্রিস্টানদের সংখ্যা ছিল ২,১২৭ (জনসংখ্যার ১.৩৯%)। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ছিল ১,৬২৫ (জনসংখ্যার ০.৭০%)।[২২]
২০১১ সালের আদমশুমারি চলাকালীন, জেলার ৭৩.৫% মানুষ ছিল হিন্দু এবং ২৪.৬% ছিল মুসলিম। জেলার হিন্দু জনসংখ্যার অনুপাত ১৯৬১ সালে ৫৯.৯% থেকে বেড়ে ২০০১ সালে ৭৪.০% এবং তারপর ২০১১ সালে ৭৩.৫% এ নেমে আসে। জেলায় মুসলিম জনসংখ্যার অনুপাত ১৯৬১ সালে ৩৯.৪%, ২০০১ সালে ২৪.০% এবং ২০১১ সালে ২৪.৬%-এ উন্নীত হয়[২৩]
গ্রামীণ দারিদ্রতা
সম্পাদনাপশ্চিমবঙ্গের মানব উন্নয়ন রিপোর্ট ২০০৪ অনুসারে, পূর্ববর্তী পশ্চিম দিনাজপুর জেলায় গ্রামীণ দারিদ্র্যের অনুপাত ছিল ২৭.৬১%। পশ্চিম দিনাজপুর জেলার দক্ষিণে মালদা জেলায় গ্রামীণ দারিদ্র্যের অনুপাত ছিল ৩৫.৪% এবং উত্তরে জলপাইগুড়ি জেলার গ্রামীণ দারিদ্র্যের অনুপাত ছিল ৩৫.৭৩%। এই অনুমানগুলি এনএসএস ৫৫ তম রাউন্ড ১৯৯৯-২০০০ এর কেন্দ্রীয় নমুনা তথ্যের উপর ভিত্তি করে করা হয়েছিল।[২৪]
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিপিএল সমীক্ষা অনুসারে, ৩০ অক্টোবর ২০০২ তারিখে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় দরিদ্র পরিবারের অনুপাত ছিল ৪৩.৫৪%[২৫]
অর্থনীতি
সম্পাদনাজীবিকা
সম্পাদনা২০১১ সালের তথ্য অনুযায়ী কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকে, শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে, চাষীদের সংখ্যা ২২,২৯৫ (৩০.৬৮%), কৃষি শ্রমিকের সংখ্যা ২৩,২৭২ (৪৮.৬৬%), গৃহস্থালীর শ্রমিকদের সংখ্যা ৩,৫৮৪ (৪.৯৩%) এবং অন্যান্য পেশাজীবির সংখ্যা ১১,৪৩৬ জন (৪.৯৩%)।[২৬] জেলায় মোট শ্রমিকের সংখ্যা ৭২,৬৭৬ জন যা মোট জনসংখ্যার ৪২.৯৮% এবং অ-শ্রমিকদের সংখ্যা ৯৬,৪২৬ জন যা মোট জনসংখ্যার ৫৭.০২%।[২৭][টীকা ১]
অবকাঠামো
সম্পাদনাকুমারগঞ্জ সিডি ব্লকে ২০৮ টি বসতি গ্রাম রয়েছে। সকল গ্রামেই বিদ্যুৎ সরবরাহ ও পানীয় জলের সরবরাহ রয়েছে। ২৪টি গ্রামে পোস্ট অফিস রয়েছে। ২০৪টি গ্রামে টেলিফোন রয়েছে (ল্যান্ডলাইন, পাবলিক কল অফিস এবং মোবাইল ফোন সহ)। ১০২টি গ্রামে পাকা সড়ক রয়েছে এবং ৮৩টি গ্রামে পরিবহন যোগাযোগ রয়েছে (বাস পরিষেবা, রেল সুবিধা এবং নৌ চলাচলযোগ্য জলপথ সহ)। ৪টি গ্রামে কৃষি ঋণ সমিতি রয়েছে। ১১টি গ্রামে ব্যাংক রয়েছে।
কৃষি
সম্পাদনাএখানকার জমি কৃষি উৎপাদনের জন্য উর্বর, বিশেষ করে জেলার দক্ষিণাঞ্চল। কুমারগঞ্জের নদীগুলো বন্যাপ্রবণ কিন্তু মাঝে মাঝে এখানে খরাও দেখা দেয়। এখানে রয়েছে অসংখ্য ট্যাঙ্ক এবং কিছু জলাভূমি ও বিল । কিছু বন আছে যার বেশিরভাগই বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায়।[২৮]
কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকে ২০১৩-১৪ সালে ১৯২টি সার ডিপো, ১৮টি বীজের দোকান এবং ৩২টি ন্যায্যমূল্যের দোকান ছিল।[২৯]
২০১৩-১৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকে ৪,১৭৮ টন আমন ধান, ১,৭৪১ হেক্টর জমিতে প্রধান শীতকালীন ফসল, ১,৭৯৪ হেক্টর জমিতে ৫,৫৭৯ টন বোরো ধান (বসন্ত ফসল), ৮১৮ টন আউশ ধান, ৮০৭ হেক্টর জমিতে ২,০৫৩ টন গম, ৩,৩০৫ হেক্টর জমিতে ৪৯,৭৭৩ টন পাট এবং ২৭৫ হেক্টর জমিতে ৬,০৩৬ টন আলু উৎপাদিত হয়। এখানে ডাল এবং তৈলবীজও উৎপাদিত হয়েছিল।[২৯]
২০১৩-১৪ সালে, কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকের মোট সেচের জমির পরিমাণ ছিল ৯,৬২০ হেক্টর, যার মধ্যে ৮৪১ হেক্টর ট্যাঙ্ক সেচ দ্বারা, ৬,৪৪০ হেক্টর নদী উত্তোলন সেচ দ্বারা এবং ৬০৩ হেক্টর গভীর নলকূপ দ্বারা।[২৯]
ব্যাংকিং
সম্পাদনা২০১৩-১৪ সালে, কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকে ৪টি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং ২টি গ্রামীণ ব্যাঙ্কের অফিস ছিল।[২৯]
অনগ্রসর অঞ্চল অনুদান তহবিল
সম্পাদনাদক্ষিণ দিনাজপুর জেলা একটি অনগ্রসর অঞ্চল হিসাবে তালিকাভুক্ত। এ অঞ্চলটি অনগ্রসর অঞ্চল অনুদান তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা পায়। ভারত সরকার দ্বারা তৈরি এই তহবিলটি উন্নয়নে আঞ্চলিক ভারসাম্যহীনতা দূর করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ২০১২ সাল পর্যন্ত, সারা ভারতের ২৭২টি জেলা এই প্রকল্পের অধীনে তালিকাভুক্ত ছিল। তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের ১১টি জেলা রয়েছে।[৩০][৩১]
পরিবহন
সম্পাদনাকুমারগঞ্জ সিডি ব্লকে ৭টি ফেরি সার্ভিস এবং ৮টি দূরপাল্লার বাস রুট রয়েছে। কুমারগঞ্জের নিকটতম রেলওয়ে স্টেশনটি সিডি ব্লক সদর দপ্তর থেকে ২৭ কিমি দূরে।[২৯]
শিক্ষা
সম্পাদনা২০১৩-১৪ সালে, কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকে ৯,৮৯৯ জন শিক্ষার্থীবিশিষ্ট ১৩৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫,৪৪৪ জন শিক্ষার্থীবিশিষ্ট ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৫,৩৫০ জন শিক্ষার্থীবিশিষ্ট ১৭টি উচ্চ বিদ্যালয় এবং ১২,৮০৪ জন শিক্ষার্থীবিশিষ্ট ১২ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল। কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকে ১০,৯০৭ জন শিক্ষার্থীবিশিষ্ট বিশেষ ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার জন্য ৩৩১টি প্রতিষ্ঠান ছিল।[২৯]
কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকের ২০৮টি অধ্যুষিত গ্রামের মধ্যে, ৫২টি গ্রামে কোনো স্কুল নেই, ৩৮টি গ্রামে ১টির বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, ৩২ গ্রামে কমপক্ষে ১টি প্রাথমিক ও ১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ২৪টি গ্রামে কমপক্ষে ১টি মাধ্যমিক এবং ১টি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে।[৩২]
স্বাস্থ্যসেবা
সম্পাদনা২০১৪ সালে, কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকে ১টি গ্রামীণ হাসপাতাল এবং ৩টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছিল যেখানে মোট ৪৮টি শয্যা এবং ৬ জন ডাক্তার ছিলেন (ব্যক্তিগত সংস্থা বাদে)। এগুলোর ৩৪টি পরিবার কল্যাণ উপকেন্দ্র ছিল। ৫,২৩৮ জন রোগীকে ইনডোরে এবং ২৭৫,১৫০ জন রোগীকে আউটডোর হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছিল।[২৯]
কুমারগঞ্জের কুমারগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল (৩০ শয্যা বিশিষ্ট) কুমারগঞ্জ সিডি ব্লকের প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "District Human Development Report"। Uttar Dinajpur. Pages 2-5: Administrative History of Uttar Dinajpur। Department of Planning, Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "District Census Handbook Dakshin Dinajpur, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Census of India 2011, Page 13: Physiography। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Brief Industrial Profile of Dakshin Dinajpur district" (পিডিএফ)। Pages 3-4: Topography। MSME Development Institute Kolkata। ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Dakshin Dinajpur dsitrict"। Rivers। District Administration। ৬ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "District Census Handbook 2011 Dakshin Dinajpur" (পিডিএফ)। Map of Dakshin Dinajpur। Directorate of Census Operations। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ জুবায়েরুর রহমান (২০১২)। "দিনাজপুর সদর উপজেলা"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ রেজাউল করিম (২০১২)। "চিরিরবন্দর উপজেলা"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ রেজাউল করিম (২০১২)। "ফুলবাড়ী উপজেলা (দিনাজপুর)"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ শামসুজ্জামান (২০১২)। "বিরামপুর উপজেলা"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ "Living on the Edge"। The Telegraph, 14 June 2015। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Chapter:Background"। District authorities। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ "District Statistical Handbook 2014 Dakshin Dinajpur"। Tables 2.1, 2.2। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "District Census Handbook: Dakshin Dinajpur, Series 20 Part XII A" (পিডিএফ)। Map of Dakshin Dinajpur with CD Block HQs and Police Stations (on the fourth page)। Directorate of Census Operations, West Bengal, 2011। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "BDO Offices under Dakshin Dinajpur District"। Department of Mass Education Extension & Library Services, Government of West Bengal। West Bengal Public Library Network। ২ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Directory of District, Subdivision, Panchayat Samiti/ Block and Gram Panchayats in West Bengal"। Dakshin Dinajpur district - Revised in March 2008। Panchayats and Rural Development Department, Government of West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ গ "C.D. Block Wise Primary Census Abstract Data(PCA)"। West Bengal – District-wise CD Blocks। Registrar General and Census Commissioner, India। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Provisional Population Totals, West Bengal, Table 4"। Census of India 2001, Dakshin Dinajpur district (05)। Census Commissioner of India। ২০১১-০৭-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "District Census Handbook: Dakshin Dinajpur, Series 20 Part XII A" (পিডিএফ)। page 46: Brief Analysis of Inset Tables based on Primary Census Abstract, 2011 (Inset Tables 1-35) Table 1 : Decadal change in population of Tahsils (Sub-Districts) by Residence, 2001-2011। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Provisional population totals Paper I: West Bengal"। Registrar General and Census Commissioner of India। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "District Human Development Report"। Uttar Dinajpur. Pages 294-302 Migration and Long-term Population Growth, including box item Partition Migrants in West Bengal। Department of Planning, Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "District Census Handbook Dakshin Dinajpur, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Census of India 2011, Pages 43: Mother tongue। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "District Statistical Handbook Dakshin Dinajpur 2014"। Table 2.10 (a)। Department of Planning and Statistics, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "District Census Handbook Dakshin Dinajpur, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Census of India 2011, Page 43: Religion। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "West Bengal Human Development Report 2004" (পিডিএফ)। Page 80: Table 4.5 Per capita consumption in rural and urban areas by district। Development and Planning Department, Government of West Bengal। ১ মে ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Report of BPL survey as on 30.10.02"। Department of Panchayats and Rural Development। ৭ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "District Census Handbook Dakshin Dinajpur, Census of India 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Page 64, Table 33: Distribution of Workers by Sex in Four Categories of Economic Activity in Sub-district 2011। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "District Census Handbook Dakshin Dinajpur, Census of India 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Pages 60-61, Table 30: Number and percentage of Main workers, Marginal workers and Non workers by Sex, in Sub-districts, 2011। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "District Census Handbook Dakshin Dinajpur, Census of India 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Pages 15 - 18। Directorate of Census Operations, West Bengal। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "District Statistical Handbook 2014 Dakshin Dinajpur"। Tables 16.1, 18.1, 18.2, 20.1, 21.2, 4.4, 3.1, 3.3 – arranged as per use। Department of Statistics and Programme Implementation, Government of West Bengal। ২১ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Backward Regions Grant Funds: Programme Guidelines" (পিডিএফ)। Ministry of Panchayati Raj, Government of India। ৩০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Backward Regions Grant Fund"। Press Release, 14 June 2012। Press Information Bureau, Government of India। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "District Census Handbook, Dakshin Dinajpur, 2011, Series 20, Part XII A" (পিডিএফ)। Page 595, Appendix I A: Villages by number of Primary Schools and Appendix I B: Villages by Primary, Middle and Secondary Schools, 2011। Directorate of Census Operations, West Bengal.। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Kumarganj College"। On line admission 2018-19। KC। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Kumarganj College"। CareerN.in। ৫ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০১৮।
পাদটীকা
সম্পাদনা- ↑ আদমশুমারির রেকর্ডে একজন ব্যক্তিকে একজন চাষী হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যদি ব্যক্তিটি স্ব/সরকার/প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন জমি চাষ/তত্ত্বাবধানে নিযুক্ত থাকে। যখন একজন ব্যক্তি অন্য ব্যক্তির জমিতে নগদ অর্থ বা ভাগে মজুরির জন্য কাজ করেন, তখন তাকে কৃষি শ্রমিক হিসাবে গণ্য করা হয়। গৃহস্থালী শিল্পকে পরিবার বা গ্রামের মধ্যে পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য দ্বারা পরিচালিত একটি শিল্প হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় এবং যেটি কারখানা আইনের অধীনে একটি কারখানা হিসাবে নিবন্ধনের জন্য যোগ্য নয়। অন্যান্য শ্রমিকরা হল চাষী, কৃষি শ্রমিক এবং গৃহকর্মী ছাড়া অন্য কিছু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত ব্যক্তি। এতে রয়েছে কারখানা, খনি, বৃক্ষরোপণ, পরিবহন ও অফিসের কর্মী, ব্যবসা-বাণিজ্যে নিযুক্ত ব্যক্তি, শিক্ষক, বিনোদন শিল্পী ইত্যাদি।