কিসি সে না কেহনা
কিসি সে না কেহনা (অনু. কাউকে বলো না) ১৯৮৩ সালে হৃষিকেশ মুখার্জি পরিচালিত ভারতীয় হিন্দি-ভাষার প্রণয়ধর্মী হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র। এতে অভিনয় করেছেন ফারুক শেখ, দীপ্তি নাভাল এবং উৎপল দত্ত।[১][২]
কিসি সে না কেহনা | |
---|---|
পরিচালক | হৃষিকেশ মুখার্জী |
প্রযোজক | জয়বন্ত পাঠারে, অশোক রাউত |
রচয়িতা | শচীন ভৌমিক (চিত্রনাট্য), ডি.এ. মুখার্জী (কাহিনী), রাহি মাসুম রেজা (সংলাপ) |
শ্রেষ্ঠাংশে | ফারুক শেখ, দীপ্তি নাভাল, উৎপল দত্ত |
সুরকার | বাপ্পী লাহিড়ী |
মুক্তি |
|
দেশ | ভারত |
ভাষা | হিন্দি |
সারসংক্ষেপ
সম্পাদনাকৈলাশ পতি, এক অত্যন্ত ভক্তিপরায়ণ বিপত্নীক, নতুন প্রজন্মের চালচলন সম্পর্কে অভিযোগ করে অবসর জীবন কাটান। তার একমাত্র ছেলেকে নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচাতে সে তাকে বিয়ে করানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই প্রচেষ্টায়, তিনি পশ্চিমা ধাঁচের মেয়েদের সাথে দেখা করেন। তাতে হতাশ হয়ে, সিদ্ধান্ত নেন তিনি তার ছেলেকে সেই মেয়ের সাথে বিয়ে দেবেন যে ইংরেজি বলতে পারে না এবং সব চালচলনে ঐতিহ্যবাহী।
অন্যদিকে তার ছেলে রমেশ এক সুশিক্ষিত মেয়ে ডা. রমলা শর্মার প্রেমে পড়ে। বাবা এবং তার ভালবাসার মধ্যে টানাপোড়েণে, রমেশ সাহায্যের জন্য তার বাবার বন্ধু লালাজীর কাছে যায়। লালাজি কৈলাশ পতিকে প্রতারণা করার পরামর্শ দেন, রমলাকে গ্রামের পণ্ডিতের মেয়ে হিসাবে দেখানোর পায়তারা করে।
এই ত্রয়ী কৈলাশপতিকে বিশ্বাস করতে চেষ্টা করে যে রমলা প্রকৃতপক্ষে এক অবলা মেয়ে যে ইংরেজি জানে না। তারা বিবাহিত হয় এবং তারপর মিথ্যা জীবনযাপনের ঘটনার ঝড় শুরু।
রমলা হলেন একজন কর্তব্যপরায়ণ স্ত্রী এবং পুত্রবধূ কৈলাশ পতির এতে প্রবল আনন্দ হয়, যিনি বিশ্বাস করেন যে গ্রামের পরিবেশে তার লালন-পালনের কারণেই এটি হয়েছে। রমলা বিরামহীনভাবেই চাপের উপর থাকে আর তার ছদ্মবেশের জন্য দোষী বোধ করে।
কৈলাশ পতির জীবন বাঁচাবার জন্য যখন তাকে ডাক্তার হিসাবে তার প্রশিক্ষণের ব্যবহার করতে হয় তখন অবশেষে তার ছদ্মবেশ খুলে যায়। কৈলাশ পতি বুঝতে পারে যে সে তার দ্বারা প্রতারিত হয়েছে এবং রমলা বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
শেষে কৈলাশ পতির বন্ধু লালাজি এবং ছেলে তাকে পুরো পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলে এবং তাকে শিক্ষিত মেয়েদের সম্পর্কে ভুল ধারণা ভাঙায় যা সে এতদিন ধরে লালন করে আসছিল।
ব্যাপারগুলো অবশেষে মিলিত হয় এবং তারা একসাথে সুখে জীবনযাপন শুরু করে।
কুশীলব
সম্পাদনা- রমেশ ত্রিবেদী — ফারুক শেখ
- ডক্টর রামোলা শর্মা/রামা — দীপ্তি নেভাল
- কৈলাশ পতি — উৎপল দত্ত
- লালাজি (অরুণ লাল) — সাইদ জাফরি
- ওম প্রকাশ — এসএন ব্যানার্জি
- বৈজয়ন্তী আইয়ার — প্রেমা নারায়ণ
- মনসুখলাল — দেবেন ভার্মা
- শ্যামলী — কেতকি ডেভ
- মিসেস লালাজি — ললিতা কুমারী
- ডলির মা — আশা শর্মা
সঙ্গীত
সম্পাদনাসমস্ত গানের কথা লিখেছেন যোগেশ। সঙ্গীত বাপ্পি লাহিড়ী।
গান | গায়ক |
---|---|
"ধুন্ধে যশোদা" | আশা ভোঁসলে |
"কাহে ঝাটকে ইতনে মারে নাগিন" | আশা ভোঁসলে, বাপ্পি লাহিড়ী |
"কিসি সে না কেহনা" | আশা ভোঁসলে |
"ফুলন তুমে পাতা হ্যায়" | আশা ভোঁসলে |
"তুম যাব সে জীবন মে" | আশা ভোঁসলে |
বিতর্ক
সম্পাদনা২০২২ সালে সাংবাদিক মোহাম্মদ জুবায়েরকে কেন্দ্র করে এই চলচ্চিত্রের দৃশ্যগুলো ভারতে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিতর্কের বিষয়ে পরিণত হয়।
২০১৮ সালে, জুবায়ের হৃষিকেশ মুখার্জির ১৯৮৩ সালের ভারতীয় কমেডি চলচ্চিত্র কিসি সে না কেহনার একটি স্ক্রিনশট সহ একটি ব্যঙ্গাত্মক টুইট শেয়ার করেছেন।[৩][৪] ফিল্মটির স্ক্রিনশট [ক] "হানিমুন হোটেল" নামের একটি সাইনবোর্ড দেখিয়েছে যেটি " হনুমান হোটেল" হিসেবে পুনরায় রং করা হয়েছে।[৫][৬]
১৯ জুন ২০২২-এ, "হনুমান ভক্ত @balajikijaiin" নামে একজন বেনামী টুইটার ব্যবহারকারী চার বছর আগে করা জুবায়েরের টুইটটি উদ্ধৃত করেছেন এবং দিল্লি পুলিশকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন, এটিকে হিন্দুদের "সরাসরি অপমান" বলে অভিহিত করেছেন।[৭][৮]
২৭ জুন, জুবায়েরকে "ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত" করার অভিযোগে দিল্লি পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল।[৯] ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫A ধারা এবং আইটি আইনের ৬৭ ধারার অধীনে জুবায়েরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এরপর তাকে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হয়, যিনি পুলিশকে একদিনের রিমান্ড দেন। জুবায়েরের আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার জোর দিয়ে বলেছেন, যখন অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী একই বার্তা টুইট করেছেন, পুলিশ কেবল জুবায়েরকেই টার্গেট করেছে। গ্রোভার আরও অভিযোগ করেছেন যে জুবায়ের তার মুসলিম বিশ্বাস, নাম এবং পেশার কারণে পুলিশের টার্গেট ছিলেন।[১০] ২৮ জুন, জুবায়েরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার দিনের পুলিশ রিমান্ডে রাখা হয়।[১১] পুলিশ তার (জুবায়েরের) ইলেকট্রনিক ডিভাইস জব্দ করেছে।[৬]
টীকা
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Kissise Na Kehna Feature Film"। youtube। ২০১৩-০৯-০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৫-২৯।
- ↑ "A funny, layered entertainer, why Kissi Se Na Kehna deserves all the love but no hate"। ২৯ জুন ২০২২।
- ↑ "Kissi Se Na Kehna! Mohammed Zubair Arrested for Tweeting Photo from 1983 Hindi Film"। The Wire। ২৮ জুন ২০২২। ৮ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০২২।
- ↑ "Alt News Co-founder Mohammed Zubair Moves SC For Bail, Claims Threat To His Life"। outlookindia.com/ (ইংরেজি ভাষায়)। ৭ জুলাই ২০২২। ৮ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০২২।
- ↑ Jafri, Alishan; Barton, Naomi (২৮ জুন ২০২২)। "Kissi Se Na Kehna! Mohammed Zubair Arrested for Tweeting Photo from 1983 Hindi Film"। The Wire (India)। ১৫ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২২।
- ↑ ক খ Scroll Staff (৫ জুলাই ২০২২)। "Questions arise when police arrest Mohammed Zubair, but not Nupur Sharma, says retired SC judge"। Scroll.in। ২০ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০২২।
- ↑ "Mohammed Zubair: Indian police arrest journalist over tweets"। BBC News। ২৮ জুন ২০২২। ১১ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুলাই ২০২২।
- ↑ "Explained: Why Alt News co-founder Mohammed Zubair has been arrested"। Deccan Herald। ২৮ জুন ২০২২। ১৬ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২২।
- ↑ "Alt News co-founder Mohammed Zubair arrested for 'hurting religious sentiments'"। Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৬-২৭। ২১ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৭-০২।
- ↑ "Patiala House court grants bail to Alt News co-founder Mohammed Zubair in Delhi Police FIR"। Bar and Bench। ১৫ জুলাই ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২২।
- ↑ Lakshman, Abhinay (২৮ জুন ২০২২)। "Alt News co-founder Mohammed Zubair's police custody extended by four days"। The Hindu। ১৬ জুলাই ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০২২।