কাহানি ২: দুর্গা রানি সিংহ

২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সুজয় ঘোষ পরিচালিত হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্র

কাহানি ২: দুর্গা রানি সিংহ (বা সাধারণভাবে শুধুই কাহানি ২) ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি-ভাষায় নির্মিত একটি ভারতীয় থ্রিলার চলচ্চিত্র। ছবিটি সুজয় ঘোষ পরিচালিত ২০১২ সালের চলচ্চিত্র কাহানিসিক্যুয়াল। ছবিটিতে প্রধান চরিত্রে রয়েছেন অর্জুন রামপাল এবং বিদ্যা বালান আর সহঅভিনেতার ভূমিকায় রয়েছেন জুগল হন্‌সরাজ এবং খরাজ মুখোপাধ্যায়।[] কাহানী ২ দুর্গা রানী সিংহের গল্প যাঁর বিরুদ্ধে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

কাহানি ২: দুর্গা রানি সিংহ
থিয়েটারে মুক্তির পোস্টার
পরিচালকসুজয় ঘোষ
প্রযোজকসুজয় ঘোষ
কুশল গাদা
রচয়িতাসুজয় ঘোষ
রিতেশ শাহ (সংলাপ)
চিত্রনাট্যকারসুজয় ঘোষ
কাহিনিকারসুজয় ঘোষ
সুরেশ নায়ার
শ্রেষ্ঠাংশেবিদ্যা বালান
অর্জুন রামপাল
সুরকারক্লিনটন সেরেজো
চিত্রগ্রাহকতপন বসু
সম্পাদকনম্রতা রায়
প্রযোজনা
কোম্পানি
বাউন্ডস্ক্রিপ্ট মোশন পিকচার্স
পেন ইন্ডিয়া লিমিটেড
পরিবেশকপেন ইন্ডিয়া লিমিটেড (ভারতে)
ইরোস ইন্টারন্যাশনাল (বিদেশের কিছু অঞ্চল)[][]
মুক্তি
  • ২ ডিসেম্বর ২০১৬ (2016-12-02)[]
স্থিতিকাল১২৮ মিনিট[]
দেশভারত
ভাষাহিন্দি
নির্মাণব্যয়১৭০ মিলিয়ন[]
আয়প্রা. ৫৪৭.৯ মিলিয়ন[]

মুখ্য ফটোগ্রাফি মার্চ ২০১৬ থেকে মে ২০১৬ পর্যন্ত গৃহীত হয়েছিল।[][] ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ২ ডিসেম্বর ২০১৬ সালে।[] ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬ সালে এটির প্রদর্শণ উত্তর প্রদেশ এ করমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল।[১০]৬২ তম ফিল্মফেয়ার পুরস্কার এ বালান তাঁর অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন পেয়েছিলেন।

পটভূমি

সম্পাদনা

বিদ্যা সিনহা (বিদ্যা বালান) একজন মধ্যবিত্ত কর্মজীবী মা। তিনি পশ্চিমবঙ্গ এর চন্দন নগর এ তাঁর কিশোরী মেয়ে মিনিকে (তুনিশা শর্মা) নিয়ে সাথে বাস করেন। মিনির কোমর থেকে নিচে অংশ পক্ষাঘাতগ্রস্থ। তাই সে একটি হুইলচেয়ার ব্যবহার করে। মিনি সুখী। তার মা একটু একটু করে অর্থ সঞ্চয় করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন। তাঁর আশা তিনি মিনিকে আমেরিকায় নিয়ে যেতে পারবেন এবং তখন মিনি আবার হাঁটতে পারবে।

একদিন বিদ্যা সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখেন তাঁর মেয়ে নিখোঁজ। তারপরে বিদ্যা অচেনা একজনের কাছ থেকে ফোন কল পান। সেই ব্যক্তি জানায় যে মিনিকে মৃত দেখতে না চাইলে বিদ্যাকে তখনই একটি ঠিকানায় আসতে হবে। উদ্বিগ্ন বিদ্যা রাস্তা পার হতে গিয়ে ট্যাক্সি চাপা পড়েন এবং কোমায় চলে যান। ট্যাক্সি ড্রাইভার তখন তাঁকে ডাঃ মাইতির (প্রদীপ মুখার্জি) নার্সিংহোমে নিয়ে যান। পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর ইন্দারজিত সিং (অর্জুন রামপাল) কে বিদ্যার মামলার দায়িত্বে রাখা হয়। তিনি বিদ্যার বাড়িতে গিয়ে তাঁর একটি ডায়েরি খুঁজে পান। সেটি তিনি প্রমাণ হিসাবে সঙ্গে নিয়ে যান। ইন্দ্রজিতের সিনিয়র প্রণব হালদার (খরাজ মুখার্জি) তাঁকে জানান যে দুর্গা রানী সিংহ নামে এক মহিলা অপহরণ ও হত্যার মামলায় অভিযুক্ত।

ইন্দারজিত বিদ্যার ডায়েরি পড়ার সাথে সাথে তাঁর অতীত প্রকাশিত হয়। তাঁর নাম দুর্গা রানী সিংহ। তিনি কালিম্পং এর একটি স্কুলে ক্লার্ক হিসাবে কাজ করতেন। সেখানে অরুণের (টোটা রায়চৌধুরী) এর সাথে তাঁর একটি বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। স্কুলে দুর্গা লক্ষ্য করেন যে মিনি দেওয়ান (নাইশা খান্না) নামে এক ছাত্রী সর্বদা ক্লাস চলাকালীন ঘুমের জন্য শাস্তি পায়। মিনির সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ হওয়ার বারবার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর দুর্গা নিজেকে শিক্ষিকা পরিচয় দিয়ে মিনির ঠাকুমার (আম্বা সান্যাল) সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন। দুর্গার সবচেয়ে খারাপ আশঙ্কাটিই সত্য হয় যখন মিনি স্বীকার করে যে তার কাকা মোহিত দেওয়ান (যুগল হন্‌সরাজ) তার উপর যৌন নির্যাতন করে। দুর্গার ডায়েরি থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে তিনি শিশু যৌন নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচাতে মিনির ঠাকুমাকে পরামর্শ দিতে গিয়েছিলেন। দুর্গা পুলিশে মামলা দায়ের করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এক পুলিশ অফিসার (কৌশিক সেন) তদন্তের পরে মোহিত দেওয়ানকে (যুগল হন্‌সরাজ) নির্দোষ সাব্যস্ত করেন এবং দুর্গাকে বিশ্বাস করেন না। মিনি হতাশায় টেরেস থেকে লাফিয়ে নীচে পড়লে কোমর থেকে সে পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে পড়ে। এক মহিলা পুলিশ (গার্গী ভরদ্বাজ) মিনির ঠাকুমার পক্ষ নিয়ে দুর্গাকে হুমকি দিয়ে এই বিষয়টি নিয়ে আর অনুসরণ করতে নিষেধ করে। দুর্গা মিনিকে তার পরিবার থেকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং তার ঠাকুমার সাথে লড়াই হয়। দুর্ঘটনাক্রমে ঠাকুমার মৃত্যু হয়। দুর্গা মিনির সাথে পালিয়ে এসে চন্দন নগর নাম লেখান বিদ্যা সিনহা নামে। কিন্তু মোহিত হণ্যে হয়ে তাদের খোঁজ করত থাকে এবং মহিলা পুলিশটির সহায়তায় মিনিকে অপহরণ করে।

বর্তমানে অপহরণকারী মহিলা পুলিশ নার্সিংহোমে এসে বিদ্যাকে হুমকি দেয় যে মোহিত ও তাকে অপহরণ করা মিনিকে বাঁচাতে মুক্তিপণ দিতে হবে। আতঙ্কিত বিদ্যা কোমা থেকে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে এসে অপহরণকারী তাকে যে ঠিকানায় আসতে বলেছিল তার সন্ধানে বাড়ি ফিরে আসে। কিন্তু সেখানে তাঁর নিজের বাড়িতে হালদার ও ইন্দারজিত তাঁকে ধরে ফেলেন। তবে ইন্দিরজিতের হাতে গুলি করে বিদ্যা সেখান থেকে পালাতে সফল হন। তারপরে বিদ্যা কলকাতায় পৌঁছে মোহিতের নির্দেশ অনুসারে জাহাজ ঘাটায় যান। বিদ্যা অপহরণকারী মহিলা পুলিশটিকে মুক্তিপণ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। মুক্তিপণের অর্থের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠলে মোহিত পুলিশ মহিলাটিকে গুলি করে। তারপরে সে বিদ্যাকে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। কিন্তু তার পতনশীল রিভলবারটি তুলতে গিয়ে মিনি দুর্ঘটনাক্রমে সেটির গুলিতে প্রাণ হারায়। তারপরে বিদ্যা ইন্দারজিতকে তাঁর সাহায্য চেয়ে ডাকেন। কিন্তু হালদার ও অন্যান্য পুলিশ অফিসার ইন্দারজিতকে দিয়ে বিদ্যাকে এমন একটি জায়গায় ডেকে আনতে বলেন যেখান থেকে তাঁরা তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারবেন। ইন্দারজিত বিদ্যাকে তাঁর পৈতৃক বাড়িতে আসতে বলেন। সেখানে পুলিশ বাহিনী চারপাশে অপেক্ষায় থাকে। হালদার বিদ্যার কাছে আসার চেষ্টা করলেে বিদ্যা তাঁর পায়ে গুলি করেন এবং তারপরেই তিনি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেন।

অবশেষে জানা যায় যে বিদ্যার আসল নাম দুর্গা রানী সিংহ এবং খুব অল্প বয়সেই ইন্দারজিত সিংয়ের সাথে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু পরে তিনি আলাদা হয়ে যান। কোমা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পরে দুর্গা ইন্দারজিতের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন এবং তাঁরা তাঁর পালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। ইন্দারজিতই দুর্গাকে বিদ্যা এবং তাঁর দত্ত কন্যার আসল পাসপোর্টের ব্যবস্থা করতে সহায়তা করেছিলেন। তিনিই তাঁকে পুলিশের অ্যাম্বাসেডার গাড়িতে কলকাতা পালাতে সাহায্য করেছিলেন এবং পোড়া বাড়ি থেকে তাঁকে পালাতেও সহায়তা করেছিলেন।

দেখা যায় যে দুর্গা বেঁচে আছেন (অবশ্য পুলিশের বিশ্বাস তিনি মৃত) এবং মিনির অপারেশনের জন্য নিউ ইয়র্ক সিটি ভ্রমণ করছেন। আর ইন্দারজিতকে দেখা যায় পরিবারের সাথে সুখে গাড়ি চালাচ্ছেন।

চরিত্র

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Kahaani 2 – Box Office Mojo"Box Office Mojo। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ 
  2. "Kahaani 2 – International Box Office Results"Box Office Mojo। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ 
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১২ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০২০ 
  4. "Kahaani 2 (15)"British Board of Film Classification। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৭ 
  5. "Box office report: 'Kahaani 2' defeats 'Kahaani' on opening day; but is it enough?"। Indiatvnews.com। ৩ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  6. "Box Office: Worldwide Collections and Day wise breakup of Kahaani 2"। Bollywood Hungama। ৩ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  7. Sen, Zinia (১৭ মার্চ ২০১৬)। "Vidya Balan, Arjun Rampal begin shooting for the 'Kahaani' 2"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০১৬ 
  8. Ghosh Choudhury, Soumodeep (১৬ মার্চ ২০১৬)। "Kahaani 2 begins in Kalimpong"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০১৬ 
  9. "Vidya Balan wraps up 'Kahaani 2' shoot"The Times of India। ১৬ মে ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ মে ২০১৬ 
  10. "Amar Ujala – Hindi EPaper Lucknow city| Hindi News – News in Hindi | अमर उजाला हिंदी न्यूज़ | Amar Ujala"। Epaper.amarujala.com। ১৩ জানুয়ারি ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  11. "Kahaani 2 Has An 'Independent Story' to Avoid Comparison, Says Director – NDTV Movies"। Movies.ndtv.com। ২৫ অক্টোবর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  12. "Trailer Watch: Kahaani 2 looks intriguing! – Rediff.com Movies"Rediff.com। ২৫ অক্টোবর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  13. "Vidya Balan breaks down while filming 'Kahaani 2'"The Times of India। ২২ নভেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৬ 
  14. "Check out: Arjun Rampal posts pictures from Kahaani 2 set"। Bollywood Hungama। ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ ডিসেম্বর ২০১৬