কাউন
কাউন বা কাওন (বৈজ্ঞানিক নাম: Setaria italica, ইংরেজি নাম: Foxtail millet) হচ্ছে পোয়াসি পরিবারের সেটারিয়া গণের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। প্রায় ৫,০০০ বছর আগে একে পূত ও পবিত্র উদ্ভিদ হিসেবে জানত। গাছের দৈর্ঘ্য ৯০-১২০ সে.মি.। পুষ্পবিন্যাস স্পাইক ধরনের।ফল কেরিওপসিস। বীজ মসৃণ।
কাউন Foxtail millet | |
---|---|
Immature seedhead | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | সপুষ্পক উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | Monocots |
শ্রেণীবিহীন: | Commelinids |
বর্গ: | Poales |
পরিবার: | Poaceae |
উপপরিবার: | Panicoideae |
গণ: | Setaria |
প্রজাতি: | S. italica |
দ্বিপদী নাম | |
Setaria italica (L.) P. Beauvois | |
প্রতিশব্দ[১] | |
|
কাউন চাল ছিলো গরীবের খাবার। ছোট দানা বিশিষ্ট শস্যটির দাম এখন গরীবদের হাতের নাগালের বাইরে। কাউন এখন বিলাসী চাল। চাল বা গমের মতো এই দানায় শর্করা নেই। পুষ্টিবিদরা কাউন চালকে সুপারফুড হিসেবে পরামর্শ দেন। যার জন্য স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ খুব সহজেই কাউন চালকে বেছে নেন।
আঞ্চলিক নাম
সম্পাদনাকাউনের অন্য বাংলা নামগুলো হচ্ছে কাঙ্গুই বা কাঙ্গু, কোরা, কান্তি, দানা, কাকন, দ্যোনদা ও শ্যামধাত।
জাত ও গঠন
সম্পাদনাকাউনের স্থানীয় জাত ছাড়া বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কর্তৃক উদ্ভাবিত ‘তিতাস’ নামের একটি জাত আছে। কাউনের এ জাতটি শিবনগর নামে ১৯৮০ সালে কুমিল্লা জেলা থেকে সংগ্রহ করা হয় এবং দেশী বিদেশী জাতের সাথে তুলনামূলক মূল্যায়ণের পর ১৯৮৯ সালে তিতাস নামে অনুমোদন করা হয়। তিতাস জাত উচ্চ ফলনশীল, আগাম রোগ ও পোকা প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। তিতাস জাতের গাছ মাঝারি লম্বা, পাতা সবুজ, কাণ্ড শক্ত। গাছ সহজে নুয়ে পড়ে না। শীষ বেশ লম্বা, মোটা এবং রেশমী। বীজ মাঝারি আকারের এবং ঘিয়ে রংয়ের। হাজার বীজের ওজন ২.৩-২.৫ গ্রাম। স্থানীয় জাতের চেয়ে ফলন প্রায় ৩০-৩৫% বেশী। জাতটি রবি মৌসুমে ১০৫-১১৫ দিনে এবং খরিফ মৌসুমে ৮৫-৯৫ দিনে পাকে। তিতাস জাতটি গোড়া পচা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। রবি মৌসুমে তিতাসের ফলন হেক্টর প্রতি ২.০-২.৫ টন। খরিফ মৌসুমে এর ফলন একটু কম হয়।
কাউন চালের চাষ
সম্পাদনাপ্রতি গ্রামেই চাষ হতো কাউন ধানের। সাধারণত দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে এর চাষ হয়ে থাকে। তবে উত্তর বঙ্গের প্রায় সব জেলায় কাউনের চাষ হয়। [২]
কাউন চাল হতে প্রস্তুত খাদ্য
সম্পাদনামিষ্টান্ন পায়েস, ক্ষীর ও ঝাল খাবার হিসাবে খিচুরি, পোলাও রান্নায় কাউন চাল এখন ধনীদের প্রিয় খাবার। এছাড়া সাদা ভাতও রান্না করা যায় এ চাল দিয়ে। আর এই খাবারগুলো খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। পাহাড় ও সমতলের মানুষের কাছে কাউন চাল একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাবার। অতিথি আপ্যায়নে, উৎসব-পার্বণে কাউনের পায়েসের বেশ প্রচলন আছে। বিস্কুট তৈরিতেও কাউন চাল ব্যবহৃত হয়। [২]
কাউন চালের উপকারিতা
সম্পাদনা- ছোট দানাবিশিষ্ট কাউনের চালে আছে প্রোটিন, ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ আরো অনেক পুষ্টি উপাদান।
- যেকোনো দানাদার খাদ্য উপাদানের চাইতে কাউনের চালে আঁশ অনেক বেশি থাকে। তাই কাউনের চালের যেকোনো খাবার বানিয়ে খেলে পাকস্থলী ভালো থাকে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক ও আয়রন থাকায় কাউনের চাল নারীদের জন্য বিশেষ উপকারী খাদ্য।
- কাউনের চালে থাকা কিছু উপকারী উপাদান আমাদের রক্তে মিশে থাকা এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
- কাউনের চালে থাকা পটাশিয়াম আমাদের শরীরে লবণের ভারসাম্য বজায় রেখে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- কাউনের চালে পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশ থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- এতে ভিটামিন সি রয়েছে। তাই নানা উপকারি খনিজ উপাদান দেহ গঠনে সাহায্য করে।
- আঁশযুক্ত খাবার খেলে পেট অনেক লম্বা সময় পর্যন্ত ভরা থাকে। ফলে ঘনঘন ক্ষুধাভাব দেখা দেয় না। এতে সহজেই ওজন কমানো সম্ভব হয়।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "The Plant List: A Working List of All Plant Species"। ১৮ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ ক খ গ "সুপারফুড কাউন চাল"। News24। ২০১৭-১২-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৪-০৯।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |