কল্যাণী সরকারি প্রকৌশল মহাবিদ্যালয়
কল্যাণী সরকারি প্রকৌশল মহাবিদ্যালয় (কেজিইসি) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় চত্ত্বরে অবস্থিত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে মওলানা আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (এমএকেএইউটি)-এর অধীনে প্রাক-স্নাতক বিটেক এবং স্নাতকোত্তর এমটেক, এমসিএ প্রকৌশল ডিগ্রি দেওয়ার শিক্ষাক্রম চালু আছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ, পরিচালনা এবং ব্যয়ভার বহন করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।[২] ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে সারা ভারতের ১০০ উচ্চস্তরের প্রকৌশল মহাবিদ্যালয়ের মধ্যে কল্যাণী সরকারি প্রকৌশল মহাবিদ্যালয় দশম স্থান করেছে।[৩] দ্য টেলিগ্রাফ সংবাদপত্রের সমীক্ষা অনুযায়ী, ডব্লুবিজেই[৪] বোর্ডের মাধ্যমে ভর্তির মহাবিদ্যালয়ের মধ্যে এটা পঞ্চম শ্রেষ্ঠ স্থান দখল করে। কিন্তু ডব্লুবিজেইই শুরু ও শেষ স্থানের মধ্যে এটা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়-এর ঠিক পরে আসে।
ধরন | সরকারি প্রকৌশল মহাবিদ্যালয় (টিইকিউআইপি কর্মসূচির অধীনে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায়) |
---|---|
স্থাপিত | ১৯৯৫ |
অধ্যক্ষ | ডাঃ সৌরভ কুমার দাস |
শিক্ষার্থী | ১,২৬৭[১] |
স্নাতক | ১,১৬৩[১] |
স্নাতকোত্তর | ১০৪[১] |
অবস্থান | , , ভারত |
শিক্ষাঙ্গন | ৭৫ একর (০.৩ বর্গকিলোমিটার) |
ওয়েবসাইট | kgec |
অবস্থান
সম্পাদনাকল্যাণী সরকারি প্রকৌশল মহাবিদ্যালয় ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার কল্যাণী শহরে অবস্থিত। ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্বারা এই মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই এই মহাবিদ্যালয়ের অবস্থান; ঠিকানা: কল্যাণী টাউনশিপ, জেলা নদিয়া, পশ্চিমবঙ্গ। কলকাতার শিয়ালদহ রেলওয়ে স্টেশন (পূর্ব রেলওয়ে), থেকে কল্যাণী ৫৩ কিলোমিটার দূরে এবং এই শহরেরই নামের সঙ্গে যুক্ত কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমেও সংযুক্ত আছে। মহাবিদ্যালয়ের কাছাকাছি রেলওয়ে স্টেশন হল কল্যাণী ঘোষপাড়া, যেটা অকুস্থল থেকে প্রায় ২ কিলোমিটারের পথ।
অন্তর্ভুক্তি এবং স্বীকৃতিসমূহ
সম্পাদনা- সারা ভারত কারিগরি শিক্ষা পর্ষদ
- বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ভারত) [ইউজিসি], ভারত সরকার
- মানব সম্পদ সংস্থান মন্ত্রক, ভারত সরকার
- উচ্চ শিক্ষা বিভাগীয় মন্ত্রক, পশ্চিমবঙ্গ
অধিবিদ্যাসমূহ
সম্পাদনাকল্যাণী সরকারি প্রকৌশল মহাবিদ্যালয়ে নিম্নলিখিত চার বছরের প্রাক-স্নাতক শিক্ষাক্রমে পাঁচটা বিভাগে পড়ানো হয়।
- ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক
- মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক
- ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক
- কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিটেক
- ইনফর্মেশন টেকনোলজিতে বিটেক
- এমসিএ - মাস্টার অফ কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন
- প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এমটেক
- কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এমটেক
- ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এমটেক
- ইনফর্মেশন টেকনোলজিতে এমটেক
- ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এমটেক
ভরতির প্রক্রিয়া
সম্পাদনাপ্রাক-স্নাতক ছাত্রছাত্রীরা (বিটেক) পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় (ডব্লুবিজেইই) উত্তীর্ণ হলে এই মহাবিদ্যালয়ে ভরতি হতে পারে, যেটা প্রকৃতিগতভাবে বেশ প্রতিযোগিতামূলক। বিটেক শিক্ষাক্রমে পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে থেকে ২০ শতাংশ দ্বিতীয় বর্ষে পার্শ্বিক ভরতির ব্যবস্থা আছে, যে ব্যবস্থাকে বলা হয় জেইএলইটি (জিলেট)। একইভাবে, পশ্চিমবঙ্গ এমসিএ জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় (জেইসিএ/জেকা) উত্তীর্ণদের মধ্যে থেকে ছাত্রছাত্রীরা এমসিএ শিক্ষাক্রমে ভরতি হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত জিএটিই এবং পিজিইটি পরীক্ষার মাধ্যমে এই শিক্ষাঙ্গন এমটেক শিক্ষাক্রমে ভরতি করে।
ছাত্রছাত্রীদের আবাসন
সম্পাদনামহাবিদ্যালয়ের পাঁচটা ছাত্রাবাস
- বিস্যাসাগর ছাত্রাবাস (ভিসি)
- ঋষি বঙ্কমচন্দ্র ভবন (আরবিসি)
- রাজা রামমোহন রায় ভবন (নতুন ভবন)
- আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ভবন (এপিসি)
- টাইপ VI ছাত্রাবাস (এমটেক)
একমাত্র ছাত্রীনিবাস
- প্রীতিলতা ছাত্রীনিবাস (পিসি)
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ভবন প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্যে সংরক্ষিত। বিদ্যাসাগর ছাত্রাবাস ছাড়া সব ছাত্রছাত্রী-আবাসই মহাবিদ্যালয় চত্বরে অবস্থিত। বিদ্যাসাগর ছাত্রাবাসে (ভিসি) এমসিএ ছাত্রদের থাকার ব্যবস্থা আছে।
ছাত্র ইউনিয়ন, কেজিইসি
সম্পাদনাছাত্রছাত্রীরা কেজিইসি ছাত্র ইউনিয়ন দ্বারা ঐক্যবদ্ধ। ছাত্র ইউনিয়নের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সংগঠিত করে; যেমন, রক্তদান শিবির, বার্ষিক উৎসব, নবীন বরণ উৎসব, শিক্ষক দিবস, এবং প্রাক্তনী সম্মেলন।
ছাত্র ইউনিয়ন ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে তাদের প্রথম বার্ষিক পত্রিকা ভোর প্রকাশ করেছে। মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়ন একটা পাঠাগার পরিচালনা করে। ছাত্র ইউনিয়ন বিভিন্ন বার্ষিক খেলাধুলো পরিচালনা করে: বার্ষিক ক্রিকেট প্রতিযোগিতা, বার্ষিক ফুটবল প্রতিযোগিতা।
কল্যাণী সরকারি প্রকৌশল মহাবিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের নানা কর্মসূচির মধ্যে আছে সেমিনার, ডাটাবেস, ক্যুইজ, কর্মশালা এবং প্রদর্শনীসমূহ। ইউনিয়নের একটা বিজ্ঞান সঙ্ঘ, একটা ক্রীড়া সঙ্ঘ, একটা জ্যোতির্বিদ্যা সঙ্ঘ, একটা রোবোটিক্স সঙ্ঘ এবং একটা সংগীত সঙ্ঘ আছে।
ছাত্র ইউনিয়নের মধ্যে এগারোটা পদ আছে - সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহকারী সাধারণ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক, ক্রীড়া সম্পাদক, পত্রিকা ও পাঠাগার সম্পাদক, খাজাঞ্চি, সহ-খাজাঞ্চি, কার্যালয় সম্পাদক এবং হিসাব পরীক্ষক।
উল্লেখযোগ্য প্রাক্তনী
সম্পাদনা- সুবর্ণা ত্রিপাঠি
- তমোজিৎ চ্যাটার্জি
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "Submitted Institute Data for NIRF'2023'" (পিডিএফ)। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০২৩।
- ↑ http://www.inspirenignite.com/top-engineering-colleges-in-west-bengal/
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১১ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৮।
- ↑ "10 Top TECH Schools"। The Telegraph। Calcutta, India। ২০০৯-০৬-১১। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০০৯।