ঔপনিবেশিক ভারত

ইউরোপীয়দের দ্বারা ভারতে শাসন

ঔপনিবেশিক ভারত বলতে আবিষ্কারের যুগের সময় ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকদের দ্বারা ভারতীয় উপমহাদেশে শাসনকে বোঝায়। এলাকা দখল ও বাণিজ্য, বিশেষ করে মশলা বাণিজ্যের মাধ্যমে ইউরোপীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করা হয়েছিল।[][] ভারতের ধনসম্পত্তির অনুসন্ধানের জন্য ১৪৯২ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের আমেরিকা ভ্রমণ করেছিলেন এবং এরপর আমেরিকার উপনিবেশায়ন হয়েছিল। মাত্র কয়েক বছর পর পঞ্চদশ শতাব্দীতে পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো দা গামা জলপথে আফ্রিকা প্রদক্ষিণ করে ভারতের সঙ্গে পুনরায় প্রত্যক্ষ বাণিজ্যিক সংযোগ স্থাপন করেছিলেন (আনু. ১৪৯৭–১৪৯৯)। তিনি মালাবার উপকূলের কালিকট শহরে পৌঁছেছিলেন, যা তখন প্রাচ্যের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক বন্দর ছিল।[] সেখানে তিনি জামোরিম রাজার কাছ থেকে কালিকট শহরে বাণিজ্য করার অনুমতি পেয়েছিলেন। এরপর এল ওলন্দাজ, যারা সিংহলে প্রধান ঘাঁটি স্থাপন করেছিল। কিন্তু ত্রিবাঙ্কুর–ওলন্দাজ যুদ্ধে ত্রিবাঙ্কুর রাজ্যের কাছ থেকে পরাজিত হওয়ার ফলে ভারতে তাদের বিস্তার স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল।

ঔপনিবেশিক ভারত
British Indian Empire
ঔপনিবেশিক ভারত
ওলন্দাজ ভারত১৬০৫–১৮২৫
দিনেমার ভারত১৬২০–১৮৬৯
ফরাসি ভারত১৭৬৯-১৯৫৪
পর্তুগিজ ভারত
(১৫০৫–১৯৬১)
কাসা দা ইন্দিয়া১৪৩৪–১৮৩৩
পর্তুগিজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি১৬২৮–১৬৩৩
ব্রিটিশ ভারত
(১৬১২–১৯৪৭)
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি১৬১২–১৭৫৭
কোম্পানি রাজ১৭৫৭–১৮৫৮
ব্রিটিশ রাজ১৮৫৮–১৯৪৭
বার্মায় ব্রিটিশ শাসন১৮২৪–১৯৪৮
দেশীয় রাজ্য১৭২১–১৯৪৯
ভারত বিভাজন
১৯৪৭
ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাস

দক্ষিণ এশিয়া
প্রস্তর যুগ ৭০,০০০-৩৩০০ খ্রীষ্টপূর্ব
মেহেরগড় ৭০০০-৩৩০০ খ্রীষ্টপূর্ব
হরপ্পা ও মহেঞ্জদর সভ্যতা ৩৩০০-১৭০০খ্রীষ্টপূর্ব
হরপ্পা সংস্কৃতি ১৭০০-১৩০০ খ্রীষ্টপূর্ব
বৈদিক যুগ ১৫০০-৫০০ খ্রীষ্টপূর্ব
লৌহ যুগ ১২০০-৩০০ খ্রীষ্টপূর্ব
ষোড়শ মহাজনপদ ৭০০-৩০০ খ্রীষ্টপূর্ব
মগধ সাম্রাজ্য ৫৪৫খ্রীষ্টপূর্ব
মৌর্য সাম্রাজ্য ৩২১-১৮৪খ্রীষ্টপূর্ব
মধ্যকালীন রাজ্যসমূহ ২৫০ খ্রীষ্টপূর্ব
চোল সাম্রাজ্য • ২৫০খ্রীষ্টপূর্ব
সাতবাহন সাম্রাজ্য • ২৩০খ্রীষ্টপূর্ব
কুষাণ সাম্রাজ্য ৬০-২৪০ খ্রীষ্টাব্দ
বাকাটক সাম্রাজ্য ২৫০-৫০০ খ্রীষ্টাব্দ
গুপ্ত সাম্রাজ্য ২৮০-৫৫০ খ্রীষ্টাব্দ
পাল সাম্রাজ্য ৭৫০-১১৭৪ খ্রীষ্টাব্দ
রাষ্ট্রকুট ৭৫৩-৯৮২
ইসলামের ভারত বিজয় ৭১২
সুলতানী আমল ১২০৬-১৫৯৬
দিল্লি সালতানাত ১২০৬-১৫২৬
দক্ষিণাত্য সালতানাত ১৪৯০-১৫৯৬
হৈসল সাম্রাজ্য ১০৪০-১৩৪৬
কাকতীয় সাম্রাজ্য ১০৮৩-১৩২৩
আহমন সাম্রাজ্য ১২২৮-১৮২৬
বিজয়নগর সাম্রাজ্য ১৩৩৬-১৬৪৬
মুঘল সাম্রাজ্য ১৫২৬-১৮৫৮
মারাঠা সাম্রাজ্য ১৬৭৪-১৮১৮
শিখ রাষ্ট্র ১৭১৬-১৮৪৯
শিখ সাম্রাজ্য ১৭৯৯-১৮৪৯
ব্রিটিশ ভারত ১৮৫৮–১৯৪৭
ভারত ভাগ ১৯৪৭
স্বাধীন ভারত ১৯৪৭–বর্তমান
জাতীয় ইতিহাস
বাংলাদেশভুটানভারত
মালদ্বীপনেপালপাকিস্তানশ্রীলঙ্কা
আঞ্চলিক ইতিহাস
আসামবেলুচিস্তানবঙ্গ
হিমাচল প্রদেশউড়িষ্যাপাকিস্তানের অঞ্চল সমূহ
পাঞ্জাবদক্ষিণ ভারততিব্বত
বিশেষায়িত ইতিহাস
টঙ্কনরাজবংশঅর্থনীতি ভারততত্ত্ব
ভাষাবিজ্ঞানের ইতিহাসসাহিত্যনৌসেনা
সেনাবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসময়রেখা

সামুদ্রিক ইউরোপীয় ক্ষমতাদের মধ্যে বাণিজ্যের প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলে অন্যান্য উপকূলীয় ক্ষমতাদের ইউরোপের সাম্রাজ্য থেকে ভারতে এনেছিল। সপ্তদশ শতাব্দীর শুরুতে ওলন্দাজ প্রজাতন্ত্র, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ডেনমার্ক–নরওয়ে সবাই ভারতে বাণিজ্যকেন্দ্র স্থাপন করেছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর শুরুতে মুঘল সাম্রাজ্য চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছিল এবং পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের পর মারাঠা সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়েছিল। এর ফলে ভারতে অনেক দুর্বল ও অস্থায়ী রাজ্যের জন্ম হয়েছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষে ব্রিটেন ও ফ্রান্স সরাসরি ও মিত্র দেশীয় রাজাদের মাধ্যমে ভারতে তাদের অধিকার নিয়ে লড়াই করছিল। ১৭৯৯ সালে মহীশূরের শাসক টিপু সুলতানের পরাজয়ের ফলে ভারতে ফ্রান্সের প্রভাব কমে এসেছিল। এরপর ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ব্রিটেন দ্রুতগতিতে তার ক্ষমতা ভারতীয় উপমহাদেশের এক বড় অংশ জুড়ে বিস্তৃত করেছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝে ব্রিটিশরা ভারতের প্রায় সমস্ত অংশ জুড়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ক্ষমতা লাভ করেছিল। ব্রিটিশ ভারত, যা প্রত্যক্ষভাবে শাসিত ব্রিটিশ প্রেসিডেন্সি ও প্রদেশ দ্বারা গঠিত, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সবচেয়ে জনবহুল ও মূল্যবান অংশ ছিল এবং তাই এটি "ব্রিটিশ মুকুটে রত্ন" বলে পরিচিত।

ঔপনিবেশিক আমলে ভারত সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ১৯০০, ১৯২০, ১৯২৮, ১৯৩২১৯৩৬ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র এবং ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।[] ১৯৪৭ সালে ভারত তার স্বাধীনতা লাভ করেছিল এবং ধর্মের ভিত্তিতে তাকে ভারতপাকিস্তান অধিরাজ্যে ভাগ করা হয়েছিল[][][]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Corn, Charles (১৯৯৮)। The Scents of Eden: A Narrative of the Spice Trade । Kodansha। পৃষ্ঠা xxi–xxii। আইএসবিএন 978-1-56836-202-1The ultimate goal of the Portuguese, as with the nations that followed them, was to reach the source of the fabled holy trinity of spices ... while seizing the vital centers of international trade routes, thus destroying the long-standing Muslim control of the spice trade. European colonisation of Asia was ancillary to this purpose. 
  2. Donkin, Robin A. (২০০৩)। Between East and West: The Moluccas and the Traffic in Spices Up to the Arrival of Europeans। Diane Publishing Company। পৃষ্ঠা xvii–xviii। আইএসবিএন 978-0-87169-248-1What drove men to such extraordinary feats ... gold and silver in easy abundance ... and, perhaps more especially, merchandise that was altogether unavailable in Europe—strange jewels, orient pearls, rich textiles, and animal and vegetable products of equatorial provenance ... The ultimate goal was to obtain supplies of spices at source and then to meet demand from whatever quarter. 
  3. "The Land That Lost Its History"Time। ২০ আগস্ট ২০০১। ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  4. Mansergh, Nicholas (১৯৭৪), Constitutional relations between Britain and India, London: His Majesty's Stationery Office, পৃষ্ঠা xxx, আইএসবিএন 9780115800160, সংগ্রহের তারিখ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩  Quote: "India Executive Council: Sir Arcot Ramasamy Mudaliar, Sir Firoz Khan Noon and Sir V. T. Krishnamachari served as India's delegates to the London Commonwealth Meeting, April 1945, and the U.N. San Francisco Conference on International Organisation, April–June 1945."
  5. Fernandes, Leela (২০১৪)। Routledge Handbook of Gender in South Asia (ইংরেজি ভাষায়)। Routledgeআইএসবিএন 978-1-317-90707-7Partition of colonial India in 1947 – forming two nation-states, India and Pakistan, at the time of its independence from almost two centuries of British rule – was a deeply violent and gendered experience. 
  6. Trivedi, Harish; Allen, Richard (২০০০)। Literature and Nation  (ইংরেজি ভাষায়)। Psychology Press। আইএসবিএন 978-0-415-21207-6In this introductory section I want to touch briefly on four aspects of this social and historic context for a reading of Sunlight on a Broken Column: the struggle for independence; communalism and the partition of colonial India into independent India and East and West Pakistan; the social structure of India; and the specific situation of women. 
  7. Gort, Jerald D.; Jansen, Henry; Vroom, Hendrik M. (২০০২)। Religion, Conflict and Reconciliation: Multifaith Ideals and Realities (ইংরেজি ভাষায়)। Rodopi। আইএসবিএন 978-90-420-1166-3Partition was intended to create a homeland for Indian Muslims, but this was far from the case; Indian Muslims are not only divided into three separate sections, but the number of Muslims in India--for whom the Muslim homeland was meant--still remains the highest of all three sections. 

গ্রন্থপঞ্জি

সম্পাদনা

আরও পড়ুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা