ঐহোল
ঐহোল (অপর নাম ঐবল্লী, অহিবোলল বা আর্যপুরা) হল ভারতের কর্ণাটক রাজ্যে অবস্থিত একটি প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় বৌদ্ধ, হিন্দু ও জৈন স্মারকস্থল। এই স্মারকগুলি খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দী থেকে দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে নির্মিত হয়।[১][২][৩] তবে যে স্মারকগুলি এখনও বিদ্যমান রয়েছে তার অধিকাংশই নির্মিত হয়েছিল সপ্তম থেকে দশম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে।[৪] ঐহোল বাগলকোট জেলায় মালপ্রভা নদী উপত্যকার কৃষিজমি ও বেলেপাথরের পাহাড়ে ঘেরা একটি ছোটো গ্রাম হলেও একটি প্রধান প্রত্নক্ষেত্র। এখানে একশো কুড়িটিরও বেশি পাথরের তৈরি ও গুহা মন্দির দেখা যায়।[৫]
ঐহোল স্মারকমণ্ডলী | |
---|---|
অবস্থান | বাগলকোট, কর্ণাটক, ভারত |
নিকটবর্তী শহর | হুনগুন্ড |
স্থানাঙ্ক | ১৬°১′০৮″ উত্তর ৭৫°৫২′৫৫″ পূর্ব / ১৬.০১৮৮৯° উত্তর ৭৫.৮৮১৯৪° পূর্ব |
অঞ্চল | ৫ বর্গকিলোমিটার (১.৯ মা২) |
উচ্চতা (সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে) | ৮১০ মি (২,৬৫৭ ফু) |
নির্মিত | খ্রিস্টীয় চতুর্থ-দ্বাদশ শতাব্দী |
স্থাপত্যশৈলী | হিন্দু, জৈন, বৌদ্ধ মন্দির ও মঠ |
পরিচালকবর্গ | ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ |
ঐহোল হুনগুন্ড থেকে ৩৫ কিলোমিটার (২২ মা) দূরে অবস্থিত। চালুক্য স্থাপত্যকেন্দ্র বাদামী (বাতাপী) ও পাট্টাডাকাল ঐহোলের কাছেই অবস্থিত। ঐহোল ও বাদামী ষষ্ঠ শতাব্দীতে পরীক্ষামূলক মন্দির স্থাপত্য, প্রস্তরশিল্প ও নির্মাণকৌশলের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে। এর ফলে ষোলো ধরনের স্বতন্ত্র এবং ৪ ধরনের পাহাড় কেটে বানানো মন্দির গড়ে ওঠে।[৬] স্থাপত্য ও শিল্পকলার যে পরীক্ষানিরীক্ষা ঐহোলে শুরু হয়েছিল তা থেকেই সৃষ্টি হয়েছিল ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য পাট্টাডাকাল স্মারকগুচ্ছের।[৭][৮]
ঐহোলের মন্দিরগুলির মধ্যে শতাধিক মন্দিরই হিন্দু মন্দির, অল্প কয়েকটি জৈন ও বৌদ্ধ মন্দির দেখা যায়। এগুলি পরস্পরের খুব কাছাকাছি নির্মিত হয়েছিল। সমগ্র চত্বরটির আয়তন প্রায় ৫ বর্গকিলোমিটার (১.৯ মা২)।[৯] হিন্দু মন্দিরগুলি নির্মিত হয়েছিল শিব, বিষ্ণু, দুর্গা, সূর্য ও অন্যান্য দেবদেবীদের উদ্দেশ্যে। জৈন বসদি মন্দিরগুলি উৎসর্গিত হয়েছিল মহাবীর, পার্শ্বনাথ, নেমিনাথ ও অন্যান্য জৈন তীর্থংকরদের উদ্দেশ্যে।[১০] একমাত্র বৌদ্ধ স্মারকটি হল একটি মন্দির ও ছোটো বিহার। হিন্দু ও জৈন স্মারকগুলির মধ্যেও মঠ দেখা যায়। সেই সঙ্গে প্রধান মন্দিরগুলির কাছে শৈল্পিক খোদাইচিত্র সম্বলিত ধাপযুক্ত কূপও খনন করা হয়েছিল।[৮][১১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Himanshu Prabha Ray (২০১০)। Archaeology and Text: The Temple in South Asia। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 17–18, 27। আইএসবিএন 978-0-19-806096-3।
- ↑ Heather Elgood 2000, পৃ. 151।
- ↑ Jeffery D. Long (২০১১)। Historical Dictionary of Hinduism। Scarecrow। পৃষ্ঠা 29। আইএসবিএন 978-0-8108-7960-7।, Quote: "AIHOLE. Pronounced "Eye-ho-lé", village in northern Karnataka that, from the fourth to the sixth centuries CE, was a major city (...)"
- ↑ Michell, George (1990), The Penguin Guide to the Monuments of India, Volume 1: Buddhist, Jain, Hindu, pp. 331–335, 1990, Penguin Books, আইএসবিএন ০১৪০০৮১৪৪৫
- ↑ Maurizio Forte; Stefano Campana; Claudia Liuzza (২০১০)। Space, Time, Place: Third International Conference on Remote Sensing in Archaeology। Archaeopress। পৃষ্ঠা 343–344। আইএসবিএন 978-1-4073-0659-9।
- ↑ Centre, UNESCO World Heritage। "Evolution of Temple Architecture – Aihole-Badami- Pattadakal"। UNESCO World Heritage Centre।
- ↑ World Heritage Sites – Pattadakal – More Detail, Archaeological Survey of India, Government of India (2012)
- ↑ ক খ Michell 2017, পৃ. 12–29, 78–86।
- ↑ Maurizio Forte; Stefano Campana; Claudia Liuzza (২০১০)। Space, Time, Place: Third International Conference on Remote Sensing in Archaeology। Archaeopress। পৃষ্ঠা 343–344। আইএসবিএন 978-1-4073-0659-9।
- ↑ Michell 2017, পৃ. 12–19।
- ↑ Himanshu Prabha Ray (২০১০)। Archaeology and Text: The Temple in South Asia। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 24–26। আইএসবিএন 978-0-19-806096-3।
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- Prasanna Kumar Acharya (২০১০)। An encyclopaedia of Hindu architecture। Oxford University Press (Republished by Motilal Banarsidass)। আইএসবিএন 978-81-7536-534-6।
- Prasanna Kumar Acharya (১৯৯৭)। A Dictionary of Hindu Architecture: Treating of Sanskrit Architectural Terms with Illustrative Quotations। Oxford University Press (Reprinted in 1997 by Motilal Banarsidass)। আইএসবিএন 978-81-7536-113-3।
- Alice Boner (১৯৯০)। Principles of Composition in Hindu Sculpture: Cave Temple Period। Motilal Banarsidass। আইএসবিএন 978-81-208-0705-1।
- Alice Boner; Sadāśiva Rath Śarmā (২০০৫)। Silpa Prakasa। Brill Academic (Reprinted by Motilal Banarsidass)। আইএসবিএন 978-8120820524।
- A.K. Coomaraswamy; Michael W. Meister (১৯৯৫)। Essays in Architectural Theory। Indira Gandhi National Centre for the Arts। আইএসবিএন 978-0-19-563805-9।
- Vinayak Bharne; Krupali Krusche (২০১৪)। Rediscovering the Hindu Temple: The Sacred Architecture and Urbanism of India। Cambridge Scholars। আইএসবিএন 978-1-4438-6734-4।
- Heather Elgood (২০০০)। Hinduism and the Religious Arts। Bloomsbury Academic। আইএসবিএন 978-0-304-70739-3।
- Gupte, Ramesh Shankar (১৯৬৭)। The Art and Architecture of Aihole: A Study of Early Chalukyan Art Through Temple Architecture and Sculpture। D.B. Taraporevala। ওসিএলসি 327494।
- Adam Hardy (১৯৯৫)। Indian Temple Architecture: Form and Transformation : the Karṇāṭa Drāviḍa Tradition, 7th to 13th Centuries। Abhinav। আইএসবিএন 978-81-7017-312-0।
- Stella Kramrisch (১৯৯৩)। The Hindu Temple। Motilal Banarsidass। আইএসবিএন 978-81-208-0224-7।
- Lippe, Aschwin (১৯৬৭)। "Some Sculptural Motifs on Early Calukya Temples"। Artibus Asiae। 29 (1): 5। জেস্টোর 3250288। ডিওআই:10.2307/3250288।
- George Michell (১৯৭৭)। The Hindu Temple: An Introduction to Its Meaning and Forms। University of Chicago Press। আইএসবিএন 978-0-226-53230-1।
- George Michell (২০০২)। Pattadakal। Oxford University Press। আইএসবিএন 978-0-19-565651-0।
- Michell, George l (২০১৪)। Temple Architecture and Art of the Early Chalukyas: Badami, Mahakuta, Aihole, Pattadakal। Niyogi Books। আইএসবিএন 978-93-83098-33-0।
- Michell, George (২০১৭)। Badami, Aihole, Pattadakal। Jaico (Reprinted, Orig Year: 2011)। আইএসবিএন 978-81-8495-600-9।
- Michael W. Meister; Madhusudan A. Dhaky (১৯৯৬)। Encyclopaedia of Indian Temple Architecture। American Institute of Indian Studies। আইএসবিএন 978-81-86526-00-2।
- Upinder Singh (২০০৮)। A History of Ancient and Early Medieval India: From the Stone Age to the 12th Century। Pearson Education। আইএসবিএন 978-81-317-1677-9।
- T. A. Gopinatha Rao (১৯৯৩)। Elements of Hindu iconography। Motilal Banarsidass। আইএসবিএন 978-81-208-0878-2।
- Ajay J. Sinha (২০০০)। Imagining Architects: Creativity in the Religious Monuments of India। University of Delaware Press। আইএসবিএন 978-0-87413-684-5।
- Burton Stein (১৯৭৮)। South Indian Temples। Vikas। আইএসবিএন 978-0706904499।
- Burton Stein (১৯৮৯)। The New Cambridge History of India: Vijayanagara। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-26693-2।
- Burton Stein; David Arnold (২০১০)। A History of India। John Wiley & Sons। আইএসবিএন 978-1-4443-2351-1।
- Kapila Vatsyayan (১৯৯৭)। The Square and the Circle of the Indian Arts। Abhinav Publications। আইএসবিএন 978-81-7017-362-5।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Aihole temples
- Official site of Bagalkot District
- Sacred Landscapes in Early Medieval South India: the Chalukya state and society (ca. AD 550–750) – Aihole
- Photos of Aihole British Library Collection
টেমপ্লেট:Hindu inscriptions and arts
টেমপ্লেট:Historical Places in North Karnataka টেমপ্লেট:Historical places of Chalukyas টেমপ্লেট:Tourism in India