এলভিরা রসন দে ডেলপিয়ানে
ড. এলভিরা রসন দ্য ডেলপিয়ানে (স্পেনীয়: Elvira Rawson de Dellepiane; জন্ম: ১৯ এপ্রিল, ১৮৬৭ - মৃত্যু: ৪ জুন, ১৯৫৪) জুনিনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত আর্জেন্টেনীয় প্রমিলা ও নারী ভোটাধিকারের আন্দোলনকর্মী ছিলেন।[১] বিবাহের পূর্বে তিনি এলভিরা রসন নামে পরিচিত ছিলেন। আর্জেন্টিনার ইতিহাসে দ্বিতীয় মহিলা হিসেবে চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।[২] মহিলা ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় আজীবন সোচ্চার ছিলেন তিনি; যা তাকে 'আর্জেন্টিনার মহিলা অধিকারের মাতা' হিসেবে চিহ্নিত করেছে।[৩]
ড. এলভিরা রসন দ্য ডেলপিয়ানে | |
---|---|
জন্ম | এলভিরা রসন দ্য ডেলপিয়ানে ১৯ এপ্রিল ১৮৬৭ |
মৃত্যু | ৪ জুন ১৯৫৪ | (বয়স ৮৭)
দাম্পত্য সঙ্গী | ড. ম্যানুয়েল ডেলপিয়ানে |
সন্তান | সাত |
পিতা-মাতা | গ্রিগোরিও ফানেস (পিতা) |
কর্মজীবন
সম্পাদনাস্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তিনি চিকিৎসক হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। ১৯০৭-১৯১৮ পর্যন্ত ডিপার্টামেন্টো ন্যাশিওন্যাল দ্য হাইজিন এবং ১৯১৯-১৯৩৪ পর্যন্ত কনসেজো ন্যাশিওন্যাল দ্য এদুকেসিওনে কাজ করেন। দেশের প্রথম বিদ্যালয় ক্যাফেটারিয়া প্রতিষ্ঠাসহ অনেকগুলো প্রকল্পে মনোনিবেশ ঘটান।[৩] ১৯১৯ সালে অ্যাসোসিয়েশন প্রো-ডেরেকস দ্য লা মুজের প্রতিষ্ঠায় অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।[২] ১৯২০ থেকে ১৯২২ পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিষয়ক অধ্যাপক ও ১৯২০-২২ মেয়াদে সামরিক অনাথ সন্তানদের জাতীয় গৃহের শিশু সেবার দায়িত্বে ছিলেন। ১৯১৬ সালে আসপালাতার ভ্যাকেশন কলোনিতে অবস্থিত অসুস্থ মহিলা শিক্ষকদের বিশ্রাম গৃহের প্রথম সংগঠক ও পরিচালক মনোনীত হয়েছিলেন।[৪] ১৯০৭ থেকে ১৯১৮ পর্যন্ত সময়কালে জাতীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চিকিৎসক পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও, ১৯১৯-১৯৩৪ সময়কালে জাতীয় শিক্ষা কাউন্সিলের দায়িত্বে ছিলেন এলভিরা।[৫]
নারী অধিকার
সম্পাদনাআর্জেন্টিনায় মহিলাদের অধিকারের বিষয়ে সোচ্চার থেকে ১৯০৫ সালে সেন্ট্রো ফেমিনিস্টা গঠন করেন যা পরবর্তীকালে সেন্ট্রো জুয়ানা ম্যানুয়েলা গরিত্তি নামে পরিচিতি পায়। ১৯১০ সালে মহিলাদের সাধারণ কোড প্রবর্তনে অগ্রদূতের পরিচয় দেন নিজেকে। সেলক্ষ্যে অ্যাসোসিয়াশিও প্রো-ডেরেকস দ্য লা মুজের; আর্জেন্টাইন লেখক আলফনসিনা স্তরনিসহ অনেকেই তার সাথে একাত্মতা পোষণ করে কাজ করেন।[৩]
তার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের উল্লেখযোগ্য অর্জন ছিল জাতীয় মহিলা কাউন্সিল গঠন করা।[৬] ১৯১০ সালে বুয়েনস আয়ার্সে অনুষ্ঠিত প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মহিলা কংগ্রেসে অংশগ্রহণ করেন তিনি।[৭] সমাজবিজ্ঞান, আইন ও শিক্ষা বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯১০ সালে মাতৃসদন জুয়ানা গরিত্তি গঠন করেন। ১৯১৯ সালে মহিলা অধিকার সংস্থা গঠন করেন। বিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলকভাবে এক গ্লাস দুধ পান করার প্রচলন ঘটান। এছাড়াও, বিদ্যালয় গৃহে মহিলাদের মর্যাদা ও অবস্থান বিষয়ে অনেকগুলো নিবন্ধ রচনা করেন এলভিরা।[৬]
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাসম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান তিনি। বাবা গ্রিগোরিও ফানেসকে আর্জেন্টিনার ইতিহাসের জনকরূপে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। এলভিরা বুয়েনস আয়ার্সে পড়াশোনা করেন। এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর, ১৮৯২ তারিখে বুয়েনস আয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে ডক্টরাল ডিগ্রি লাভ করেন। তার ডক্টরাল অভিসন্দর্ভ ছিল মহিলাদের স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কীয় যা আর্জেন্টিনার সুপরিচিত চিকিৎসক গ্রিগোরিও আরাওজ আলফারো কর্তৃক স্বীকৃতি পায়। এরপূর্বে তিনি ইকোল নরম্যাল দ্য মেন্দোজা থেকে শিক্ষায় সার্টিফিকেট পান ও চিকিৎসাশাস্ত্রে অধ্যয়নের পূর্বে এক বছর শিক্ষকতা পেশায় কাজ করেন।[৩][৬] এক বছর পূর্বে ডক্টর ম্যানুয়েল ডেলপিয়ানের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।[৪] এ দম্পতির সংসারে সাত সন্তান জন্মগ্রহণ করে।[৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Armus, Diego (৮ জুলাই ২০১১)। The Ailing City: Health, Tuberculosis, and Culture in Buenos Aires, 1870–1950। Duke University Press। পৃষ্ঠা 162–। আইএসবিএন 978-0-8223-5012-5। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ ক খ "Elvira Rawson de Dellepiane (1867-1954)"। University of Notre Dame। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ মে ২০১৬।
- ↑ ক খ গ ঘ "Elvira Rawson de Dellepiane (1867-1954)"। University of Notre Dame Hesburg libraries। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ ক খ Parker, William Belmont (১৯২০)। Argentines of Today (Public domain সংস্করণ)। Hispanic Society of America। পৃষ্ঠা 943–। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ Lavrín, Asunción (১৯৭৮)। Latin American women: historical perspectives। Greenwood Publishing Group। পৃষ্ঠা 252–। আইএসবিএন 978-0-313-20309-1। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ "Dellepiane Rawson, Elvira" (Spanish ভাষায়)। Faculty of Mathematics Physics and Astronomy, University of Cordoba। ১৬ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১৩।
- ↑ Balderston, Daniel; Guy, Donna Jay (১৯৯৭)। Sex and Sexuality in Latin America। New York University Press। আইএসবিএন 9780814712900।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ফাইন্ড এ গ্রেইভে এলভিরা রসন দে ডেলপিয়ানে (ইংরেজি)