এবি সিদ্দিক
এবি সিদ্দিক (১৯২৭-৩ সেপ্টেম্বর ২০১২) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ৭০ এর গণপরিষদ সদস্য ও ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কুমিল্লা-২১ (বর্তমানে-চাঁদপুর-২) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।[১][২][৩]
এবি সিদ্দিক | |
---|---|
কাজের মেয়াদ ১৯৭৯-২০১২ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯২৯ [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মতলব দক্ষিণ, চাঁদপুর জেলা, বাংলাদেশ |
মৃত্যু | ৩ সেপ্টেম্বর ২০১২ ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৮৪–৮৫)
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
রাজনৈতিক দল | আওয়ামী লীগ |
সন্তান | ২ পুত্র, ১ কন্যা সন্তান |
পিতামাতা | হাসান আলী সরকার (পিতা) |
জন্ম ও শিক্ষা জীবন
সম্পাদনাসিদ্দিক ১৯২৭ সালে চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার বরদিয়া সরকার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম হাসান আলী সরকার। ১৯৩৯ সালে বরদিয়া মধ্য ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণ হয়ে মতলবগঞ্জ জে.বি. উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৪৩ সনে মতলব স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় পাশ করেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে সর্বোচ্চ নম্বরসহ ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ‘মি. জিন্নাহ ‘উর্দুই কেবল উর্দুই পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা হবে’ ঘোষণা দিলে যে সব ছাত্র তার প্রতিবাদ করে, সিদ্দিকি তাদের একজন। [৪]
কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনাসিদ্দিক প্রথম কর্মজীবন শিক্ষকতা পেশার মাধ্যমে শুরু করলেও ১৯৫১ সালে রাজকীয় পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগদান করে বিভিন্ন বিমান ঘাঁটিতে কর্মকাল কাটানোর পর পূর্ব পাকিস্তান বিমান বাহিনীর রিক্রুটিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তার জন্মস্থান এলাকা অনেক যুবককে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে নিয়োগ দেন। ১৯৬৪ সনে স্বেচ্ছায় বিমান বাহিনী থেকে অবসর নিয়ে বাঙালির স্বার্থ সম্পর্কিত সকল আন্দোলন ও কর্মকাণ্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বৃহত্তম মতলব থানার সভাপতি ও চাঁদপুর মহকুমা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নির্বাচিত হন। স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হলে চাঁদপুর মহকুমার প্রধান সংগঠক হিসেবে মুক্তিবাহিনীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কুমিল্লা-২১ আসনে থেকে এমপিএ, এমসিএ ও এমপি নির্বাচিত হন।[১] তিনি কর্মজীবনে মতলব উচ্চ বিদ্যালয়, মতলব কলেজসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ছিলেন।
সিদ্দিক এলাকায় ২টি কলেজ, কয়েকটি উচ্চ বিদ্যালয় ও অর্ধশত প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। মতলবের বিখ্যাত ‘আন্তর্জাতিক উদরাময় কেন্দ্র’ স্থাপনে এবং প্রসারণে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মতলব উপজেলা শাখা ও চাঁদপুর জেলা শাখার উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, মতলব দক্ষিণ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের প্রধান উপদেষ্টা ও মতলবগঞ্জ জে.বি. উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র সমিতির উপদেষ্টা ছিলেন।[৫]
মৃত্যু
সম্পাদনা৩ সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মৃত্যুবরণ করেন। জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে প্রথম জানাযা শেষে এই সাবেক সাংসদের মরদেহ মতলব দক্ষিণ উপজেলার বরদিয়া সরকার বাড়িতে দাফন করা হয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "মুক্তিযোদ্ধা এ বি সিদ্দিক আর নেই"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। ২৩ আগস্ট ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও সাবেক সাংসদ এবি সিদ্দিক আর নেই"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট এ বি সিদ্দিকের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী পালিত"। অধিকা নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ২৩ আগস্ট ২০১৯।