এনভার হোজা

আলবেনিয়ার ২২ তম প্রধানমন্ত্রী

এনভার হালিল হোজা (আলবেনীয়: Enver Hoxha, ১৬ অক্টোবর ১৯০৮ - ১১ এপ্রিল ১৯৮৫) একজন আলবেনীয় কমিউনিস্ট রাজনীতিবিদ যিনি ১৯৪৪ সাল থেকে ১৯৮৫ সালে তার মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আলবেনিয়ার শ্রমিকের দল এর প্রথম সচিব ছিলেন। তিনি আলবেনিয়া গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট এর চেয়ারম্যান এবং ১৯৪৪ সাল থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন। তিনি ১৯৪৪ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত ২২ম আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বিভিন্ন সময়ে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরও দায়িত্ব পালন করেছেন।[]

এনভার হোজা
আলবেনিয়ার শ্রমিকদের দল এর প্রথম সেক্রেটারি
কাজের মেয়াদ
৮ নভেম্বর ১৯৪১ – ১১ এপ্রিল ১৯৮৫
পূর্বসূরীঅবস্থান প্রতিষ্ঠিত
উত্তরসূরীরমিজ আলিয়া
২২ন্ আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড
কাজের মেয়াদ
২২ অক্টোবর ১৯৪৪ – ১৯ জুলাই ১৯৫৪
রাষ্ট্রপতিওমর নিশানী
হ্যাকশি লেলেশি
ডেপুটিমাইসলিম পেজা
কোয়ে ইয়োজ
মেহমেত শেহু
পূর্বসূরীইব্রাহিম বিয়াকিয়াইউ
উত্তরসূরীমেহমেত শেহু
বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
২২ মার্চ ১৯৪৬ – ২৩ জুলাই ১৯৫৩
প্রধানমন্ত্রীনিজে
পূর্বসূরীওমর নিশানী
উত্তরসূরীবেহার শ্ত্তিলা
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মএনভার হালিল হোজা
(১৯০৮-১০-১৬)১৬ অক্টোবর ১৯০৮
এরগিরি (গিজিরোকাস্টার), জেনিনা ভাইলেট, উসমানীয় সাম্রাজ্য
মৃত্যু১১ এপ্রিল ১৯৮৫(1985-04-11) (বয়স ৭৬)
তিরানা, আলবেনিয়া জনসমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র
মৃত্যুর কারণভেন্ট্রিকুলার ফাইব্রিলেশন
সমাধিস্থলজনকবরস্থান, তিরানা, আলবেনিয়া
জাতীয়তাআলবেনীয়
রাজনৈতিক দলআলবেনিয়ার শ্রমিকের দল
দাম্পত্য সঙ্গীনজমিয়ে হোজা
সন্তান
প্রাক্তন শিক্ষার্থীমন্টপিলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়
ব্রাসেলস ফ্রি বিশ্ববিদ্যালয়
স্বাক্ষর

প্রাথমিক জীবনী

সম্পাদনা

এনভার হোজা ১৬ই অক্টোবর ১৯০৮ সালে ইরগিরিতে(বর্তমান জিরোকাস্টার) জন্মগ্রহণ করেন। দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে ১৯৩০ সালে ফ্রান্সের মন্টপেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাবৃত্তি পেয়ে সেখানে পড়াশোনা করতে যান। দেশে ফিরে ১৯৩৬ সালে স্কুলের শিক্ষকতায় আত্মনিয়োগ করেন।

১৯৩৯ সালে যখন ইতালির ফ্যাসিস্ট শাসক বেনিতো মুসোলিনি আলবেনিয়া আক্রমণ করেছিল, তখন নব্য গঠিত আলবেনিয়ান ফ্যাসিস্ট পার্টিতে যোগ দিতে অস্বীকার করায় হোজাকে শিক্ষকতার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। ফলে তিনি রাজধানী তিরানে একটি দোকান খোলেন। ১৯৪৭ সালে জার্মানির চ্যান্সেলর হিটলার কর্তৃক যুগোস্লাভিয়া আক্রমণের ফলে যুগোস্লাভিক কমিউনিস্টরা হোজাকে আলবেনিয়ায় কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করতে সাহায্য করে যা পরবর্তীতে লেবার পার্টি নামে পরিচিতি পায়। হোজা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রথম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।

প্রধানমন্ত্রীত্ব

সম্পাদনা

আলবেনিয়ার স্বাধীনতার পর ১৯৪৪ সাল হতে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত হোজা আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। একই সাথে ১৯৪৬ সাল হতে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত তিনি আলবেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৪ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি আলবেনিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের (হেড অব স্টেট) পদটি গ্রহণ করেন। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান সচিব হওয়ায় তিনি ১৯৮৫ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে সক্ষম হন।

সংস্কার

সম্পাদনা

হোজার দীর্ঘ শাসনে আলবেনিয়ার অর্থনীতিতে কার্যত বিপ্লব ঘটেছিল। সমাজতান্ত্রিক উপায়ে অর্থনৈতিক সংস্কার সাধনের লক্ষ্যে ধনী জমির মালিকদের কাছ থেকে চাষযোগ্য জমি বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং যৌথ খামার গড়ে উঠে। যা অবশেষে আলবেনিয়াকে খাদ্য শস্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলে। তার শাসনামলে মৃতপ্রায় শিল্প বিনিয়োগ পেয়ে পুনর্জীবিত হয়ে ওঠে, ফলশ্রুতিতে ১৯৮০ সালের মধ্যে তা মোট জাতীয় পণ্য উৎপাদনের অর্ধেকেরও বেশি অবদান রাখে। প্রতিটি গ্রামকে বিদ্যুতের আওতায় আনা হয় এবং শিক্ষার হার অভাবনীয় ভাবে বৃদ্ধি পায়।

স্বেচ্ছাচার ও দমন-পীড়ন

সম্পাদনা

হোজা স্ট্যালিনবাদ নামক রাজনৈতিক দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন। যাকে তিনি নিজ শাসনের জন্য হুমকি বলে মনে করতেন তাকে নিপীড়ন,গুম, এমনকি হত্যা এবং অনেক ক্ষেত্রে নির্বাসনে পাঠানোর নজির রয়েছে। প্রায় সকল ধর্মীয় উপাসনালয় বন্ধ করে দেয়া হয় এবং ধর্মীয় নেতাদের ভয়-ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে নিবৃত করার চেষ্টা করা হয়।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা